শিরোনাম:
●   কোটি টাকা আত্মসাৎ : কুষ্টিয়া শহর সমাজসেবা কর্মকর্তার শাস্তি হল বদলি ●   ঈশ্বরগঞ্জে বাড়ির সীমানা নিয়ে দ্বন্দ্বে নিহত-১ ●   রোগী পারাপারের সী-এম্বুল্যান্স না থাকায় চরম দুর্ভোগের শিকার সন্দ্বীপবাসী ●   দেশের শান্তির জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   পার্বত্য চট্টগ্রামে আগে আমরা কেউ স্বাধীনভাবে আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে আনন্দ উল্লাস করতে পারতাম না : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   জামেয়া মদিনাতুল উলুম মহিলা মাদ্রাসার ফান্ড রেইজিং এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ●   অনির্বাণ যুব ক্লাবের কার্যকরী পরিষদ গঠিত ●   রাউজানে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু ●   রাজধানীতে পাহাড়ি প্রাণের উৎসব বৈসাবি পালিত ●   যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক আসামি গ্রেফতার ●   সন্দ্বীপে গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ ●   বান্দরবান অঞ্চলে সশস্ত্র তৎপরতা জাতীয় ও জননিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে ●   গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে শেষ মুহুর্তে ঈদের কেনাকাটায় ব্যাস্ত সবাই ●   অরাজকতা, নাশকতা স্বাধীন সার্বভৌম দেশে কাম্য হতে পারে না : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   সিলেটে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিতরণ ●   অর্থ সংগ্রহের জন্য এই হামলা হয়েছে বলে এখন পর্যন্ত সরকার মনে করছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ●   গুইমারায় মাদকসহ গ্রেফতার-৪ ●   সনাতন যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   ঈশ্বরগঞ্জে ধলাই খাল ব্রীজ উদ্বোধন ●   অসংক্রামক রোগে মৃত্যু বাড়ছে, মোকাবেলায় বাড়ছে না বরাদ্দ ●   রাউজানে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে শিশুর মৃত্যু : আহত-২০ ●   সিলেটে সেলাই কারিগরা ব্যস্ত সময় পার করছেন ●   পানছড়িতে পাহাড় কাটার অপরাধে জরিমানা ●   কুষ্টিয়া পৌর মেয়র এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের তদন্ত শুরু ●   খাগড়াছড়িতে বর্ণিল আয়োজনে ৫দিনব্যাপী বৈসাবী উৎসবের উদ্বোধন ●   রুমায় অপহৃত সোনালী ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার ●   সিলেটে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি ●   ঈশ্বরগঞ্জে পবিত্র ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষ উদযাপনে প্রস্তুতি সভা ●   সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা এখন তলানীতে : সাইফুল হক ●   ঘোড়াঘাটে দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে দখলের পায়তারা
রাঙামাটি, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
শুক্রবার ● ২৭ এপ্রিল ২০১৮
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » বড়ুয়া সম্প্রদায় আজ রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্যের শিকার
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » বড়ুয়া সম্প্রদায় আজ রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্যের শিকার
১২০৫ বার পঠিত
শুক্রবার ● ২৭ এপ্রিল ২০১৮
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বড়ুয়া সম্প্রদায় আজ রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্যের শিকার

---নির্মল বড়ুয়া মিলন :: বাংলাদেশের সংবিধানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সমান অধিকারের স্বীকৃতি থাকলেও সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া বড়ুয়া জনগোষ্ঠী পার্বত্য অঞ্চলসহ বাংলাদেশে নানা বৈষম্যের শিকার। সংবিধানের নির্দেশনা এবং মানবিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশিল হয়ে সরকারের উচিত বড়ুয়া জনগোষ্ঠীসহ দলিত ও আদিবাসী (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী)জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সুনিদিৃষ্ট নীতিমালা গ্রহন করা। পদ্ধতিগত গণনা ব্যতিতই ধারনা করা হয়, এদেশে দলিত, আদিবাসী (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী) ও বড়ুয়াসহ বাঙালি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ভূক্ত প্রায় এক কোটি মানুষের বসবাস।
দলিত, আদিবাসী (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী) ও বড়ুয়াসহ বাঙালি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ভূক্ত জনগোষ্ঠী শিক্ষা, কর্মসংস্থানের অভাবে নিজেদের অধিকার আদায়ে সংঘবদ্ধ হতে পারেনি, ফলে তাদের অধিকার আদায়ে শক্তিশালি সংগঠনও দাঁড়াতে পারেনি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর উন্নয়নের মূল স্রোতধারা থেকে ছিটকে পড়ে এসব জনগোষ্ঠীর মানুষ।
রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তি করা হয়। এচুক্তিতে মুসলমান (বাঙ্গালি), চাকমা, হিন্দু, মারমা, তনচংগা, ত্রিপুরা, লুসাই, পাংখোয়া, ম্রো, খুমি, বম ও চাক সম্প্রদায়ভূক্ত জনগোষ্ঠীর কথা উল্লেখ থাকলেও পার্বত্য চুক্তিতে বাদ পড়ে যায় বড়ুয়া, অহমিয়া, সাওতাল, রাখাইন ও দলিত সম্প্রদায়ের নাম।
পার্বত্য চুক্তিটি আদিবাসী (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী)জনগোষ্ঠীর জনগণের মুক্তির সনদ বলা হলেও বৈষম্যে ও রাজনৈতিক কারণে বিশ বছরেও আদিবাসী (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী)জনগোষ্ঠীর আস্তা অর্জন করতে পারেনি।
পার্বত্য চুক্তিতে পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯ (রাঙামাটি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯, বান্দরবান পার্বত্য জেলা সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯) “পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ” এর নাম সংশোধন করে তদপরিবর্তে এই পরিষদ “পার্বত্য জেলা পরিষদ” নামে অভিহিত থাকবে বলে আইনও জাতীয় সংসদে করা হয় এবং রাষ্ট্রপতি’র অনুমোদিত আইনটি তিন পার্বত্য জেলায় বহাল আছে।
আইন করে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চাকমা সম্প্রদায়ভূক্ত জনগোষ্ঠী, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ মারমা সম্প্রদায়ভূক্ত জনগোষ্ঠী ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ ত্রিপরা সম্প্রদায়ভূক্ত জনগোষ্ঠী পরিচালনার বিধান করা হয়।
এ আইনের কারণে পার্বত্য অঞ্চলে মুসলমান (বাঙ্গালি),হিন্দু,তনচংগা, লুসাই, পাংখোয়া, ম্রো, খুমি, বম, চাক বড়ুয়া, অহমিয়া, সাওতাল, রাখাইন ও দলিত সম্প্রদায়ের বৈষম্যের শিকার।
যেমন : ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তিতে পাংখোয়া সম্প্রদায়কে অর্ন্তভূক্ত করে অনেক ভাল কাজ করা হয়েছে, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে এ সম্প্রদায়ের জন্য ১জন করে সদস্য তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে ৩জন সদস্য রাখার প্রবিধান রাখা হয়েছে। আমি পাংখোয়া সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা সন্মান রেখেই বলছি, তিন পার্বত্য জেলায় পাংখোয়া সম্প্রদায়ের তিন হাজার জনসংখ্যা হবেনা। পাংখোয়া সম্প্রদায়কে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে ৩জন সদস্য হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে কিন্তু তিন পার্বত্য জেলায় বড়ুয়া, অহমিয়া, সাওতাল, রাখাইন ও দলিত সম্প্রদায়ের প্রায় ৫০ হাজারের অধিক মানুষ স্থানীয়ভাবে বসবাস, তার পরও এসব সম্প্রদায়ের মানুষকে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে সম্প্রদায়ভূক্ত অংশিজন হিসাবে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি। এটাই হচ্ছে সরকারের বৈষম্যে।
এছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্পর্কিত ১২ এপ্রিল-২০১০ তারিখে সম্পাদিত গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়ন করেন। এ আইনের তফসিল (ধারা ২ (১) এবং ধারা ১৯ দ্রষ্টব্য) {বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও শ্রেণীর জনগণের নাম} চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, তঞ্চঙ্গ্যা, বম, পাংখোয়া, চাক, খিয়াং, খুমি, লুসাই, কোচ, সাঁওতাল, ডালু, উসাই (উসুই), রাখাইন, মণিপুরী, গারো, হাজং, খাসিয়া, মং, ওরাও, বর্মণ, পাহাড়ী, মালপাহাড়ী, মুন্ডা ও কোল সম্প্রদায়কে অর্ন্তভূক্ত করে সচিব আশফাক হামিদ বাংলাদেশ গেজেট প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বাঙ্গালী বৌদ্ধ বলে খোড়া যুক্তি দেখিয়ে উপরের উল্লেখিত গেজেটে বড়ুয়া সম্প্রদায়কে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি। এটাই হচ্ছে রাষ্ট্রিভাবে বড়ুয়া সম্প্রদায়র প্রতি সরকারের বৈষম্য। বাংলাদেশ সরকারের কোন গেজেটে বা নথিতে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের নাম তালিকায় অর্ন্তভূক্ত নাই। তাই বড়ুয়দের ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যাথাও নাই।
এবিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ডা. বাদল বরণ বড়ুয়া বলেন, বড়ুয়া’রা মূলত ভূইয়া মগ বা মারমাগ্রী এবং বড়ুয়া সম্প্রদায়ের মধ্য মুৎসদ্দী, চৌধুরী, তালুকদার, সিংহ ও রুদ্র ইত্যাদি নিজস্ব গোত্র রয়েছে। যেমন : চাকমা সম্প্রদায়ের মধ্যে রায়, দেওয়ান, তালুকদার ও খীসা ইত্যাদি গোত্র রয়েছে আবার মারমা সম্প্রদায়ের মধ্যে মগ, চৌধুরী ও রোয়াজা ইত্যাদি গোত্র আছে। বাংলাদেশে বড়ুয়া ও দলিত সম্প্রদায় ব্যাতিত প্রতিটি সম্প্রদায়ের তালিকা গেজেট আকারে আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের বড়ুয়া সম্প্রদায়ের নাম সরকারের কোন তালিকায় নাই। এছাড়া সমতলে বসবাসকারি বড়ুয়া সম্প্রদায়ের আর পাহাড়ে বসবাসকারি বড়ুয়া সম্প্রদায়ের সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা এক নয়। এবিষয়টি সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. বাদল বরণ বড়ুয়া আরো বলেন, দেখুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে এদেশ সবার কিন্তু উগ্র সম্প্রদায়ের কিছু সংখ্যক মানুষের কারণে বড়ুয়া সম্প্রদায় আজ রাষ্ট্রিয়ভাবে বৈষম্যের শিকার এবং আগামী ৫০ বছর পর এদেশে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের নাম থাকবে বলে মনে হয় না। এছাড়া পার্বত্য তিন জেলায় একটি গোষ্ঠী বড়ুয়াদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে, আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান করে দেখেছি গুটি কয়েক অনলাইন পত্রিকা, মিডিয়া ও একটি গয়েন্দা সংস্থা অকারণে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের নাম ব্যবহার করে স্থানীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে দুরত্ব তৈরী করছে। এর মুল কারণ হচ্ছে, পার্বত্য অঞ্চলে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন যেন সুসংগঠিত বা সাংগঠনিক ভাবে একতাবদ্ধ হতে না পারে এবং পার্বত্য অঞ্চলে যুগ যুগ ধরে এক সাথে বসবাস করা আদিবাসীদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও বড়ুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকে রোষানলে ফেলার অপচেষ্টা।ইদানিং আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের আরো একটি বিষয় লক্ষ্যে করছি, যে সব সাংবাদিক বা পত্র-পত্রিকা বড়ুয়া সম্প্রদায়কে নিয়ে তাদের স্বপক্ষে লিখতে বা বলতে চায় সেই সব পত্র-পত্রিকার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের পক্ষ থেকে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকে আরো সাহসের সাথে এবং সাবধানে সতর্কতার সাথে ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করার পরামর্শ দেন। এছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্পর্কিত ১২ এপ্রিল-২০১০ তারিখে সম্পাদিত গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রনীত আইনের তফসিল (ধারা ২ (১) এবং ধারা ১৯ দ্রষ্টব্য) {বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও শ্রেণীর জনগণের নাম} সংশোধন করে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের নাম গেজেটভূক্ত করার দাবি জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ডা. বাদল বরণ বড়ুয়া।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)