শিরোনাম:
●   তীব্র দাবদাহে মধ্যে কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার প্রক্রিয়া করেছে বন বিভাগ ●   কাপ্তাই সড়কে রাতেও চলছে চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ●   রাঙামাটিতে চোরাই কাঠ ও বিদেশী সিগারেটসহ ৩০ লক্ষ টাকার মালামাল জব্দ করেছে দক্ষিণ বন বিভাগ ●   পাহাড়ি দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে সাংবাদিক এর বাগান বাড়ি পুড়ে দেয়ার আজ ২ মাস : ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা প্রকাশ ●   আঞ্চলিক পরিষদসহ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ৩৫ বছর পরিচালিত হচ্ছে অনির্বাচিতদের দ্বারা ●   রাঙামাটির চার উপজেলায় প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ : ৮ মে নির্বাচন ●   কল্পনা অপহরণ মামলা রাঙামাটি কোর্টে ডিসমিস করায় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ক্ষোভ প্রকাশ ●   নিরীহ মানুষকে গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে ২৫ এপ্রিল রাঙামাটিতে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ ●   আনসারের অস্ত্রলুটের ঘটনায় রুমা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ৭ জন কারাগারে ●   বান্দরবানে গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ ●   নিজের অস্ত্র দিয়ে মাথায় গুলি করে আনসার সদস্যদের আত্মহত্যা ●   কাপ্তাই হ্রদকে বাঁচাতে ও বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে হ্রদের ড্রেজিং করা দরকার ●   রাবিপ্রবিতে ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয় সভা ●   ঝালকাঠি ২ উপজেলায় তিন পদে ২৪ জনের মনোনয়ন দাখিল ●   রুমা-থানচি ব্যংক ডাকাতির মামলায় কেএনএফ এর আরও ৫ জন রিমান্ডে ●   অপসংবাদিকতা রোধে সাংবাদিকদের ডাটাবেজ প্রণয়নে কাজ করছে প্রেস কাউন্সিল ●   খাগড়াছড়িতে বলি খেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ●   প্রচন্ড তাপদাহে পানির জন্য চলছে হাহাকার : পানি শূন্য কুষ্টিয়ার গড়াই নদী ●   ১৫ দিনের ঈদযাত্রায় ২৯৪ জনের মৃত্যু ●   নিত্যপণ্যের তুলনায় তামাকপণ্য সস্তা : দাম বাড়ানোর দাবি ●   তীব্র দাবদাহে ৭ দিন বন্ধ দেশের সকল স্কুল,কলেজ ও মাদ্রাসা ●   কোটি টাকা আত্মসাৎ : কুষ্টিয়া শহর সমাজসেবা কর্মকর্তার শাস্তি হল বদলি ●   ঈশ্বরগঞ্জে বাড়ির সীমানা নিয়ে দ্বন্দ্বে নিহত-১ ●   রোগী পারাপারের সী-এম্বুল্যান্স না থাকায় চরম দুর্ভোগের শিকার সন্দ্বীপবাসী ●   দেশের শান্তির জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   পার্বত্য চট্টগ্রামে আগে আমরা কেউ স্বাধীনভাবে আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে আনন্দ উল্লাস করতে পারতাম না : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   জামেয়া মদিনাতুল উলুম মহিলা মাদ্রাসার ফান্ড রেইজিং এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ●   অনির্বাণ যুব ক্লাবের কার্যকরী পরিষদ গঠিত ●   রাউজানে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু ●   রাজধানীতে পাহাড়ি প্রাণের উৎসব বৈসাবি পালিত
রাঙামাটি, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
সোমবার ● ৪ জুন ২০১৮
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » মাদক নির্মূল ক্রসফায়ার নয় : জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বনেই বন্দুকযুদ্ধ
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » মাদক নির্মূল ক্রসফায়ার নয় : জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বনেই বন্দুকযুদ্ধ
৭৫৫ বার পঠিত
সোমবার ● ৪ জুন ২০১৮
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মাদক নির্মূল ক্রসফায়ার নয় : জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বনেই বন্দুকযুদ্ধ

---নজরুল ইসলাম তোফা:: “মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে”, ”মাদক এক ভয়ংকর কীট, জীবনকে কুরে কুরে খায়”, “মাদক পরিহার করুন এবং নিজে বাঁচুন, আগামী প্রজন্মকে বাঁচান”, “অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীর ছোবল থেকে বর্তমান ও আগামী নতুন প্রজন্মকে বাঁচান”, “আমরাও বাঁচতে চাই, মাদকমুক্ত জীবন চাই” এমন মাদক বিরোধী প্রচারপত্র বিতরণ, উদ্বুদ্ধকারী বহু স্লোগান সংবলিত পোস্টার, ব্যানার, প্লেকার্ড বা আয়োজনে রয়েছে পথসভা কিংবা পথে পথে গণমানুষের কন্ঠস্বরে ধ্বনিত হয় মাদকবিরোধী প্রতিবাদ সহ অনেক র‌্যালি। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগেই আয়োজন হচ্ছে মাদক বিরোধী আলোচনা সভা এবং সেমিনার। মাদকদ্রব্য ব্যবহার এবং এর অবৈধ পাচারের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা সহ বিভিন্ন কর্মসূচি হচ্ছে সারা দেশে। বাংলাদেশের এমন এ সমস্যা ক্রমাগতভাবেই দিনে দিনেই যেন বিপুল আকার ধারণ করছে। তাই মাদকদ্রব্য থেকে পরিত্রাণের জন্যই বর্তমান সরকার “জিরো টলারেন্স” নীতি অবলম্বন করছে।
মাদকের অপব্যবহার ও মাদকাসক্তি নিয়ে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশ যারপর নাই উদ্বিগ্ন। জনসাধারণের মধ্যেই মাদকাসক্তির বিস্তৃতি দেশের অর্থনীতি এবং সামাজিক আবরণের উপরেই অসুভ প্রভাব ফেলে।এদেশেও আশির দশক থেকে মাদকের ক্রমবর্ধমান অপব্যবহার জাতিকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। সমীক্ষা থেকে ধারনা করা যায় যে, বাংলাদেশের মাদকাসক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বিশ্বের মাদকাসক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি হারের প্রায় দ্বিগুণ। এমন দেশের মাদকাসক্তির অধিকাংশই তরুণ প্রজন্ম এবং তাদের শতকরা ৮০ ভাগ মাদকাসক্তদের বয়স ১৫ থেকে ২৯ এর মধ্যে।মাদকাসক্তির ক্ষেত্রে এদেশের ভৌগোলিক অবস্থান খুবই নাজুক বৈকি। মাদক উৎপাদন কারী গোল্ডেন ট্রাংগেল ও গোল্ডেন ক্রিসেন্টের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান রয়েছে। তাই বাংলাদেশকে ঘিরেই গোল্ডেন ট্রাংগেল সৃষ্টিকারী তিনটি মাদকদ্রব্য উৎপাদনকারী দেশ হলো: মায়ানমার, থাইল্যান্ড এবং লাওস। আর গোল্ডেন ক্রিসেন্ট সৃষ্টিকারী দেশ গুলো হলো হচ্ছে: পকিস্তান, আফগানিস্তান এবং ইরান। সুতরাং এমন ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই বাংলাদেশ মাদক পাচারের ট্রানজিট হিসেবে বহু দিন ধরেই ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমানে বাংলাদেশে এ মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার ও পাচার সংক্রান্ত বিষয়কে নিয়ে যেন সরকার নড়েচড়েই বসেছে। বিগত দশকের শুরুতে বিভিন্ন ভাবে সরকার বন্ধ করার নিয়োম নীতি গ্রহণ করলেও এখন যেন একটু কঠোর ভাবে অর্থাৎ বলা যায় চিরুনি অভিযান। দেখা যায় যে, এখন পর্যন্তই বিপুল পরিমাণ মাদক দ্রব্য উদ্ধারসহ অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। আবার কাউকে না কাউকেই মেরে ফেলছে। অতীত ইতিহাস স্মরণেই বলতে পারি এমন ধরনের কর্মসূচি এদেশে কখনোই ছিল না। কিন্তু সরকার হঠাৎ করেই যেন নড়ে চড়ে বসেছে। তারা নাকি দীর্ঘ দিন থেকেই এ বিষয় নিয়ে
অনেক উদ্বিগ্ন। তাই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সহ সকল গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়েই গোপন ভাবে একটি বৃহৎ তালিকা তৈরি করেছে।
মাদকমুক্ত একটি সমাজ গঠনের প্রয়াস নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ‘আসাদুজ্জামান খান কামাল’ বলেন, মাদককে নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যেন এমন অভিযান চলতেই থাকবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে মাদক গেড়ে বসেছে বলেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে সরকারকে কর্ণপাত করাচ্ছে। সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে মাদক চক্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বাহিনীর অভিযান হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যেমন জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলেন, সুতরাং তেমনি ভাবে মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্স ঘোষণায় আগামী নির্বাচন পরিকল্পনা করছেন। সরকারের এ সুন্দর উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য বলেই মনে করি। কিন্তু সারা দেশে চলমান মাদক বিরোধী সাঁড়াশি অভিযান চলছে তা অবশ্যই যেন ভয়াবহ।বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অনেকেই দেখতে চান না। বন্ধের দাবি জানিয়েও আসছেন, অনেক গুনী জন ব্যক্তি, তম্মধ্যে প্রধান ১০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি হচ্ছেন: গল্পকার ও কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, নির্মাতা ও অভিনেতা রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, মামুনুর রশীদ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, কবি নির্মলেন্দু গুণ, মফিদুল হক, গোলাম কুদ্দুছ ও হাসান আরিফ। গণমাধ্যমেই তাঁদের পাঠানো বিবৃতিতে বলেয়েছেন, সমগ্র দেশে মাদক বিরোধী যে ধরনের একটি ভয়ংকর অভিযান চলছে, তার যথাযথ যৌক্তিকতা অনুধাবন করেছে।বাংলাদেশে খুব কম পরিবার রয়েছে যারা মাদকের ভয়াবহতায় নিজ পরিবার রক্ষা করতে পেরেছে। সে দিক থেকে সঙ্গত কারণেই যেন সর্ব স্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনও পাচ্ছে এমন এই মাদকবিরোধী অভিযানে।
আসলে মাদক শুধু বাংলাদেশ নয়, বর্তমান বিশ্ব যে কঠিন সঙ্কটের মুখো মুখি তা হলো মাদকের বিস্তার, যা তারুণ্যের সম্ভাবনাকে অনেকাংশেই নিষ্ক্রিয় করে মরন পথে ধাবিত করছে। প্রয়োজন আছে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান তবে মেরে ফেলা ধারাটি প্রশ্নবিদ্ধ।
মানুষকে উন্নত জীবন দিতে অবশ্যই মাদক পরিহার প্রয়োজন। কিন্তু গভীর উদ্বেগের সঙ্গেই গুনী জনরা অনেক দক্ষতার সহিত লক্ষ্য করেছেন, প্রতি দিনই অসংখ্য মানুষ বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছে। তাতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থায় এমন মৃত্যু কখনোই গ্রহণ যোগ্য নয়। বলা যায় সংবিধান প্রদত্ত এমন ভাবে মানব জীবনকে মেরে ফেলার অধিকার কারও নেই। গণ মাধ্যম ও বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ায় কিছু নিহত ব্যক্তিদের সম্পর্কে বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। তা অবশ্যই জনগণকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন যা বলেছে তা হলো, মাদক সন্ত্রাসীদের মুল শেকড় উৎপাটনে র‌্যাব প্রধানের ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে কোনো প্রকারের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে দায়িত্ব হলো মূল মাদক অপরাধীকেই খুঁজে বের করা সহ তাদেরকেই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো। কিন্তু বিচার আর কোথায় পশুর মতো হত্যা হচ্ছে। এ হত্যারই বা শেষ কোথায়। জনগণের চাওয়া, মাদকের বিরুদ্ধে আইন করে বিচার হোক। এমন বিচার বাংলার মানুষ চায়, কিন্তু এ ক্রসফায়ার তো কোন সমাধান নয়।
আবার দেখি ক্রসফায়ারকে যেন নতুন নামে অভিহিত করে বলা হচ্ছে “বন্দুকযুদ্ধ”। বন্দুক যুদ্ধে নিহত করাটাই তো আর মাদক নির্মূলের সমাধান বলে মনে করছে না এদেশের সুশিক্ষিত সুশীল সমাজ। এ ভাবে হত্যা করা গণতান্ত্রিকরাষ্ট্র ও সমাজে অকল্পনীয়। বলতেই পারি, টেকনাফে নিহত পৌর কমিশনার একরামের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পূর্ব অভিযোগের তথ্য গণ মানুষের কাছে আলোচনায় উঠে আসেনি। সুতরাং এই একটি ঘটনা সমগ্র অভিযানকেই প্রশ্নবিদ্ধ এবং জনগণকে আতঙ্কিত করতে যথেষ্টই হবে বলে মনে করি। সামাজিক সুস্থ্যতা অবশ্যই জণসাধারণ চায়। তাই বলে এমন অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেই হয় তো নয়, মাদক দ্রব্যের ছড়াছড়ির পরিবেশে একটা সুস্থ্য পরিবারে কখনোই একজন সুস্থ্য সন্তান গড়ে তোলা উঠতে পারে না। সরকার যদি চেষ্টা করে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বা নির্মূল অল্প সময়ের মধ্যে অবশ্যই করতে পারবে তা সকলেই বিশ্বাস করে। সুতরাং এটাকেও নিয়ে কোনো রাজনীতি করা ঠিক হবে না। অবশ্যই বাংলাদেশের জনগণ খুব চতুরতার সহিত দেখছেন, বুঝছেন এবং সামনে নির্বাচনকেও নিয়ে ভাবছেন।

লেখক : নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)