শিরোনাম:
●   পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন ●   রাউজানে দোল উৎসব পালিত ●   ঘোড়াঘাটে বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে বঙ্গবন্ধু তাঁত শিল্প ●   ঝালকাঠিতে ১২০ টাকায় পুলিশ হলো ১৭ তরুণ-তরুণী ●   প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের স্মরণসভায় এমপি হানিফ ●   ঘোড়াঘাটে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ফিটকিরি মেশানো ভেজাল মধু ●   মাটিরাঙ্গায় ভারতীয় চিনিসহ গ্রেফতার-২ ●   বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম রাউজানের তামিম ●   মানবিক তরুণরা দেশ ও জাতির নেতৃত্বে : মনোওর আলী ●   রাউজানে প্রবাস ফেরত যুবকের কৃষিতে বাজিমাত ●   এমপি হাবিব এর আপেল রিয়েল এস্টেটে দোয়া অনুষ্ঠানে যোগদান ●   তামাক নিয়ন্ত্রন আইন দ্রুত সংশোধনের প্রতিশ্রুতি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ●   রাউজানে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে সিএনজি গাছে সাথে ধাক্কা আহত-৬ ●   মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণ ফেসবুক ●   মাটিরাঙ্গায় চিনি বোঝাই ট্রাক জব্দ : আটক-২ ●   মুসলিম সভ্যতার প্রাচীন ঐতিহ্য রাউজানের সাহেব বিবি মসজিদ ●   মাটিরাঙ্গায় দেশীয় এলজিসহ গ্রেফতার-১ ●   রাজাপুরে ট্রান্সফর্মার চুরির হিড়িক, দুই সপ্তাহে ১১ ট্রান্সফর্মার চুরি ●   রাজধানীতে গরু মাংস ৬’শ টাকা, আলীকদমে ৯’শ টাকা হয় কি করে? দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে আছে; বললেন: ইউএনও ●   চুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা ●   সিন্ডিকেটকে কোলে বসিয়ে বিরোধীদলের ওপর দায় চাপাচ্ছে সরকার : গণতন্ত্র মঞ্চ ●   রাবিপ্রবি’তে জাতির পিতার ১০৪ তম জন্মদিন উদযাপিত ●   ঘোড়াঘাটে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত ●   ঈশ্বরগঞ্জে পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ গঠন বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত ●   বাংলাদেশের শিশুদের জন্য শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   কুষ্টিয়ার গড়াই রেলসেতুর পিয়ার স্ট্রাকচারের অবস্থা নাজুক ●   ছোটহরিণা ১২ বিজিবি’র পক্ষ থেকে এতিমখানায় ইফতার ও এক মাসের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ ●   সরকার ও সরকারি দল রাজনীতিতে পচন ধরিয়ে দিয়েছে : সাইফুল হক ●   গুরু শিষ্যের প্রেমময় জীবন ●   ঈশ্বরগঞ্জে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ চালক আহত
রাঙামাটি, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
রবিবার ● ২৪ জানুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » করোনার দ্বিতীয় ঢেউ” মৌসুমি ভাইরাল জ্বরের সমস্যা ও প্রতিকার
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » করোনার দ্বিতীয় ঢেউ” মৌসুমি ভাইরাল জ্বরের সমস্যা ও প্রতিকার
৮০৭ বার পঠিত
রবিবার ● ২৪ জানুয়ারী ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ” মৌসুমি ভাইরাল জ্বরের সমস্যা ও প্রতিকার

ছবি: সংবাদ সংক্রান্তডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ :: করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। অনেকে আবার বলছেন, আমাদের দেশে প্রথম ঢেউ এখনো শেষ হয়নি। যে যা–ই বলুক, করোনাভাইরাস এখনো আমাদের জীবনে এক আতঙ্কের নাম। এই আতঙ্ক বহুগুণ বেড়ে যায় যদি বাড়িতে জটিল রোগে আক্রান্ত একজন রোগী থাকেন তাহলে মহাবিপদ ।করোনা একটি ভয়ংকর ছোঁয়াচে ভাইরাস। স্পর্শ ও শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর এই ভাইরাস তাদেরই খুব সহজে আক্রান্ত করতে পারে, যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম। তাদের ক্ষেত্রে ভাইরাস সংক্রমণের যাবতীয় জটিলতাও বেশি।জ্বর,সর্দি কাশির রোগীরা এর মধ্যে অন্যতম।মৌসুম পরিবর্তনের এ সময় হাঁচি–কাশি নতুন কিছু নয়, তবে করোনাকালে থাকতে হবে সচেতন আবহাওয়া পরিবর্তন নতুন কিছু নয়, সাধারণের কাছে এটি ‘ফ্লু’ বা ‘ভাইরাল ফ্লু’ হিসেবে পরিচিত।এ বিষয়ে বাংলাদেশের বিশিষ্ট হোমিও গবেষক ডা.এম এম মাজেদ তাঁর কলামে লিখেন…. এই শীতের
ঠাণ্ডার মধ্যে অনেকের মৌসুমি জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়। এই জ্বর ভাইরাস দ্বারা দ্রুত একজনের মাধ্যমে আরেকজনে সংক্রমিত হয়। তবে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এমন ভাইরাল জ্বরের প্রতিরোধ করা সম্ভব।ভাইরাস জীবাণুর সংক্রমনের ফলে এই সর্দি-জ্বর সাত দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ওষুধ ও পুষ্টিকর খাবার খেলে এই জ্বর দ্রুত ভালো হয়ে যায়।
এমন আবহাওয়ার বেশি মাত্রায় সক্রিয় হয়ে পড়ছে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া। যার জেরেই জ্বর ও সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ছে৷ সঙ্গে শরীরজুড়ে ব্যথা৷ তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কিছু নেই৷ ভাইরাসের কারণে জ্বর হলে সাধারণত সাত দিনের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়। তবে হঠাৎ করে যাতে ঠান্ডা না লাগে, তার জন্য সতর্ক থাকতে হবে৷
★মৌসুমি ভাইরাল জ্বরের লক্ষণঃ-
মূলত জ্বর, কেউ কেউ মাথাব্যথা, সর্দি, অরুচি, গাব্যথা, কাশির উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন। তবে আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। এ সময় ঠান্ডা-সর্দির কারণে কান বন্ধ হতে পারে। কান বন্ধের সঙ্গে কানে ব্যথাও থাকতে পারে। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত। অনেক সময় শিশুদের প্রচণ্ড সর্দি লেগে যায়। কোনো কোনো শিশুর ক্ষেত্রে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বর হতেও দেখা দিতে পারে। তবে বড়দের ক্ষেত্রে জ্বর ততটা তীব্রভাবে না-ও হতে পারে।
* হঠাৎ জ্বর আসে এবং সাত দিন ধরে চলতে থাকে। ১০২-১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বর হয়।
* শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায়। এই জ্বরের সঙ্গে প্রচণ্ড মাথাব্যথা থাকে। গায়ে, হাত, পায়ে তথা শরীরের পেশিতে অসহ্য ব্যথা করে।
* বেশিরভাগ সময় শরীরে জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি থাকে। প্রকৃতির হাওয়া বদলে নাক বন্ধ থাকে; নাক দিয়ে পানি পড়ে।
* মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে খিদে কমে যায় ও বমি বমি ভাব থাকে। শিশুদের ক্ষেত্রে মুখ লাল হয়ে যায়।
★পরামর্শঃ-
* জ্বর কখনই বাড়তে দেয়া যাবে না। জ্বর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুরো শরীর নরম কাপড় কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে মুছে ফেলতে হবে।
* হঠাৎ করে ঠান্ডা যাতে না লাগে, তার জন্য বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে৷ জ্বর হলে গোসল বন্ধ না করে প্রতিদিন একই সময়ে গোসল করতে হবে। চুল ও শরীরের পানি ভালো করে মুছে দিন, যাতে নতুন করে ঠান্ডা না লাগে।
* দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়া স্বাভাবিক রাখতে হবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পুষ্টিকর খাবার, সে জন্য পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। শীতের এই সময়ে আদা-লেবুর সংমিশ্রণে রঙ চা খেতে পারেন।
* অসুস্থ ব্যক্তিকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। শীতকালে অনেকেরই পানির পিপাসা সেভাবে অনুভূত হয় না। আর এ কারণে পানি পানের পরিমাণও কমে যায়। যদিও রোগ প্রতিরোধের জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সুস্থ থাকার জন্য শীতকালে পিপাসা না লাগলেও পর্যাপ্ত পানি পান করুন। বাহিরের খাবার খাওয়া থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে।★হোমিওসমাধানঃ-
হোমিওপ্যাথি হলো লক্ষণ ভিত্তিক চিকিৎসা বিজ্ঞান। এতে রোগের নামের কোন মূল্য নাই। তাই জ্বরের ঔষধও নির্বাচন করতে হবে জ্বরের লক্ষণ অনুসারে ; জ্বরের নাম অনুসারে নয়। জ্বরের নাম বার্ড ফ্লু, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু নাকি কালাজ্বর- এসবের কোন গুরুত্ব নাই হোমিওপ্যাথিতে ঔষধ যদি জ্বরের লক্ষণের সাথে মিলিয়ে দিতে পারেন, তবে সেটি ভাইরাস জ্বরও থেকে মুক্ত করে দিবে অথবা টাইফয়েড বা অন্য যে-কোন নামের জ্বরই হউক, নির্মূল করে দিবে। জ্বরের তাপ যখন খুব বেশী থাকে, তখন ঔষধ খেতে নাই। এতে জ্বরের তাপ আরো বেড়ে যেতে পারে। কাজেই জ্বরের তাপ যখন কিছুটা কমে আসে, তখন ঔষধ খাওয়া উচিত। তবে যে-সব জ্বরে উচ্চতাপমাত্রা এক নাগাড়ে চলতে থাকে, তাপ কমেই না ; সে-সব জ্বরে বেশী তাপমাত্রার মধ্যেও ঔষধ খাওয়াতে হবে। জ্বরের তাপমাত্রা যদি খুব বেশী থাকে, তবে ঔষধ খাওয়ানোর সাথে সাথে মাথায় ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে, গামছা/তোয়ালে ভিজিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে ঘনঘন। কিছু জ্বর এমন আছে (যেমন ভাইরাস জ্বর) যা একদিন, দুইদিন বা তিনদিনের কমে নিয়নত্রণে আসে না। সেক্ষেত্রে লক্ষণ মিলিয়ে যে ঔষধ প্রযোজ্য হয়, সেটি খাওয়ানো বন্ধ করবেন না।
জ্বর না কমার কারণে ঔষধ নির্বাচন ভুল হয়েছে মনে করে অযথা ঘনঘন ঔষধ পরিবর্তন করবেন না। হ্যাঁ, রোগ লক্ষণ যদি পরিবর্তন হয়ে যায়, তবে নতুন লক্ষণ যেই ঔষধের সাথে মিলে সেটি খাওয়ানো শুরু করুন। যেমন প্রচণ্ড তাপ, অস্থিরতা, মৃত্যুভয় ইত্যাদি লক্ষণ নিয়ে জ্বর শুরু হওয়ায় একোনাইট খাওয়ালেন; দুদিন পর দেখা গেলো রোগী রোগীর অস্থিরতা, মৃত্যুভয় ইত্যাদি লক্ষণে চলে গেছে, সে বেহুঁশের মতো পড়ে থাকে, এখন একোনাইট বন্ধ করে জেলসিমিয়াম খাওয়ানো শুরু করা উচিত। স্বাভাবিক অন্যান্য খাবারের সাথে চিনি লেবু দিয়ে শরবত করে খাওয়াবেন ঘনঘন ; এতে শরীরে দুর্বলতা আসতে পারবে না। জ্বরের রোগী যদি অদ্ভুত কিছু খেতে চায় এবং সেটি যদি তার জন্য ক্ষতিকর না হয়, তবে তাকে খেতে দেওয়া উচিত। যেমন জ্বরের সাথে যদি কারো গ্যাস্ট্রিক আলসার থাকে আর সে যদি লেবু খেতে চায় তবে দুয়েক বার খেতে দেওয়া যেতে পারে কিন্তু ইহার বেশী ঠিক হবে না।
হোমিও চিকিৎসাঃ-
একোনাইটঃ- একোনাইট হলো হোমিওপ্যাথিতে জ্বরের এক নাম্বার ঔষধ। যে-কোন রোগই হউক(জ্বর-কাশি-ডায়েরিয়া-আমাশয়-পেট ব্যথা-মাথা ব্যথা-শ্বাসকষ্ট প্রভৃতি), যদি শুরু থেকেই মারাত্মক রূপে দেখা দেয়, তবে একোনাইট হলো তার এক নাম্বার ঔষধ। একোনাইটকে তুলনা করা যায় ঝড়-তুফান-টর্নেডোর সাথে- প্রচণ্ড কিন্তু ক্ষণস্থায়ী। জ্বরও যদি তেমনি হঠাৎ করে মারাত্মক আকারে শুরু হয়, তবে একোনাইট সেবন করুন। যে-সব জ্বর আসেত আসেত শুরু হয় বা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে, সে-সব রোগে একোনাইট খেতে পারেন। তাতে জ্বর পুরোপুরি না সারলেও অন্তত নব্বই ভাগ নিয়ন্ত্রণে এসে যাবে। পরবর্তীতে লক্ষণ অনুযায়ী অন্য ঔষধ প্রয়োগ করতে পারেন। একোনাইটের জ্বরের লক্ষণ হলো প্রথম থেকেই ভীষণ উত্তাপ নিয়ে জ্বর শুরু হয়, রোগী অস্থির হয়ে পড়ে, জ্বরের উৎপাত এত বেশী হয় যে তাতে রোগী মৃত্যুর ভয়ে কাতর হয়ে পড়ে। যে-কোন জ্বরের শুরু থেকে একোনাইট খাওয়াতে থাকলে জ্বর একশভাগ যদি নাও সারে অন্তত নিয়নত্রণে চলে আসবে এবং জ্বরের গতি খারাপের দিকে যেতে পারবে না। হ্যাঁ, জ্বরের উত্তাপ কমে আসলে অর্থাৎ জ্বরের তীব্রতা হ্রাস পেলে একোনাইট সেবন বন্ধ করে দিবেন। একোনাইট প্রয়োগের পর যদি জ্বর দুর্বল হয়ে যায় কিন্তু পুরোপুরি না সারে, সেক্ষেত্রে দুয়েক মাত্রা সালফার ঔষধটি খাওয়াতে পারেন।
* ব্রায়োনিয়ারঃ- ব্রায়োনিয়ার জ্বরের প্রধান লক্ষণ হলো রোগীর ঠোট-জিহ্বা-গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে থাকে এবং প্রচুর পানি পিপাসা থাকে এবং রোগী অনেকক্ষণ পরপর একসাথে প্রচুর ঠান্ডা পানি পান করে। রোগী অন্ধকার এবং নড়াচড়া অপছন্দ করে ; কারণে এতে তার কষ্ট বৃদ্ধি পায়। কোষ্টকাঠিন্য দেখা দেয় অর্থাৎ পায়খানা শক্ত হয়ে যায়। রোগীর মেজাজ খুবই বিগড়ে থাকে এবং সে একলা থাকতে পছন্দ করে (কারণ মানুষ কাছে থাকলেই তাকে নড়াচড়া করতে হতে পারে, যাতে তার কষ্ট বেড়ে যাবে)। প্রলাপ বকার সময় তারা সারাদিনের পেশাগত কাজের কথা বলতে থাকে।* রাস টক্সঃ-রাস টক্সের জ্বরের প্রধান লক্ষণ হলো প্রচণ্ড অস্থিরতা। রোগী এতই অস্থিরতায় ভোগে যে, এক পজিশনে বেশীক্ষণ সিহর থাকতে পারে না। রোগীর শীতভাব এমন বেশী যে, তার মনে হয় কেউ যেন বালতি দিয়ে তার গায়ে ঠান্ডা পানি ঢালিতেছে। শরীরে প্রচুর ব্যথা থাকে এবং শরীর মোচড়াতে ভালো লাগে। এই কারণে শুয়ে থাকলেও সে নড়াচড়া করে এবং এপাশ ওপাশ করতে থাকে। বর্ষাকাল, ভ্যাপসা আবহাওয়া বা ভিজা বাতাসের সময়কার যে-কোন জ্বরে রাস টক্স এক নাম্বার ঔষধ। রাস টক্সের জ্বর সাধারণ রাতে বেলা বেড়ে যায়। রাস টক্স খাওয়ার সময় ঠান্ডা পানিতে গোসল বা ঠান্ডা পানিতে গামছা ভিজিয়ে শরীর মোছা যাবে না। কেননা ঠান্ডা পানিতে রাস টক্সের একশান নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য কুসুম কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে।
*বেলেডোনা : তিনটি লক্ষণের উপর ভিত্তি করে বেলেডোনা ঔষধটি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে, যথা-উত্তাপ, লাল রঙ এবং জ্বালা-পোড়া ভাব। জ্বরে যদি উত্তাপ বেশী থাকে, জ্বরে যদি মুখমন্ডল বা চোখ লাল হয়ে যায়, জ্বরের সাথে যদি প্রচণ্ড মাথা ব্যথা থাকে কিংবা জ্বরের সাথে যদি রোগী প্রলাপ বকতে থাকে, তবে বেলেডোনা তাকে উদ্ধার করবে নিশ্চিত। বেলেডোনার জ্বর সাধারণত হঠাৎ মারাত্মক আকারে দেখা দেয় এবং জ্বরের তীব্রতায় খুবই দ্রুত রোগী প্রলাপ বকতে শুরু করে। রোগী ভয়ঙ্কর সব জিনিস দেখে, ভয়ে পালাতে চেষ্টা করে এবং অনেক সময় মারমুখী হয়ে উঠে।
*জেলসিমিয়ামঃজেলসিমিয়ামের জ্বরের প্রধান লক্ষণ হলো রোগীর মধ্যে ঘুমঘুম ভাব থাকে বেশী, রোগী অচেতন-অজ্ঞান-বেহুশের মতো পড়ে থাকে। দেখা যাবে গায়ে প্রচণ্ড জ্বর অথচ রোগী নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। জেলসিমিয়ামের জ্বরে মাথা ঘুড়ানি থাকে, শরীর ভারভার লাগে, শরীর ব্যথা এবং দুর্বলতা থাকে। মাত্রাতিরিক্ত দুর্বলতার কারণে রোগী নড়াচড়া করতে পারে না এবং একটু নড়াচড়া করতে গেলে শরীর কাঁপতে থাকে। জ্বরের সময় পিপাসা থাকে না।
*বেপ্টিশিয়াঃ-টাইফয়েড জ্বরের ঔষধ হিসেবে বেপ্টিশিয়ার খুব সুনাম আছে। মাতালের মতো হাবভাব, গোলাটে চাহনি, মাথাব্যথা, গলা ব্যথা এবং সারা শরীরে টনটনে ব্যথা এই ঔষধের অন্যতম লক্ষণ। রোগীর শরীরে ব্যথা এত বেশী থাকে যে, খুব নরম বিছানাও তার কাছে শক্ত মনে হয়। রোগীর শরীরে দুর্বলতা-অবসন্নতা থাকে অকল্পনীয় রকমের বেশী। চোখের পাতা পর্যন্ত ভারী ভারী লাগে। চেতনার খুবই অভাব। যেমন ডাক্তার কিছু জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেওয়ার পুর্বেই রোগী ঘুমিয়ে পড়ে। কোন ব্যাপারেই রোগী তার মনোযোগ ঠিক করতে পারে না। রোগী মনে করে তার শরীর দুইটা; আবার মনে করে তার শরীর টুকরা টুকরা হয়ে বিছানায় ছড়িয়ে আছে এবং সে টুকরাগুলো একত্র করে জোড়া লাগানোর চেষ্টা করে।
* আর্সেনিক এল্বঃ-শরীরের নির্দিষ্ট কোন স্থানের রোগের সাথে যদি জ্বর আসে, সেখানে ঘা-ক্ষত-পচনের সৃষ্টি হয়, রোগীর মধ্যে প্রচণ্ড অস্থিরতা এবং মৃতুভয় থাকে, সেক্ষেত্রে আর্সেনিক প্রয়োগে যাদুর মতো ফল পাওয়া যাবে। রোগীর বাইরে থাকে ঠান্ডা কিন্তু ভেতরে থাকে জ্বালা-পোড়া। গরম পানি খাওয়ার জন্য পাগল কিন্তু খাওয়ার সময় খাবে দুয়েক চুমুক। বাসি-পচাঁ-বিষাক্ত খাবার খেয়ে জ্বর হলে অথবা অন্য যে-কোন সমস্যা হলো আর্সেনিক খেতে ভুল করবেন না।
* ভিরেট্রাম ভিরিডিঃ- ভিরেট্রাম ভিরিডি-র জ্বরের লক্ষণ অনেকটা একোনাইটের মতো মারাত্মক। তবে এতে বুক ধড়ফড়ানি থাকে বেশী এবং জিহ্বার মাঝখানে টকটকে লাল একটি দাগ থাকে।
* পালসেটিলাঃ-পালসেটিলার জ্বরের প্রধান লক্ষণ হলো গলা শুকিয়ে থাকে কিন্তু কোন পানি পিপাসা থাকে না। অন্যান্য লক্ষণ হলো শীত শীত ভাব বেশী থাকে, ঘুমঘুম ভাব থাকে এবং বিকাল দুটা-তিনটার দিকে জ্বর বৃদ্ধি পায়। শরীরের এক অংশ গরম এবং অন্য অংশ ঠান্ডা থাকে। গরম, আলো-বাতাসহীন, বদ্ধ ঘরে বিরক্ত বোধ করে। হাতে জ্বালাপোড়া থাকে, ফলে সেটি বিছানার ঠান্ডা জায়গায় রাখার চেষ্টা করে। ঠান্ডা বাতাস, ঠান্ডা খাবার, ঠান্ডা পানি পছন্দ করে। আবেগপ্রবন, অল্পতেই কেঁদে ফেলে এমন লোকদের ক্ষেত্রে বেশী প্রযোজ্য।
* এন্টিম টার্টঃ-
এন্টিম টার্টের জ্বরের প্রধান লক্ষণ হলো জ্বরের সাথে পেটের কোন না কোন সমস্যা থাকবেই। ইহার জ্বরের প্রধান লক্ষণ হলো জিহ্বায় সাদা রঙের মোটা স্তর পড়বে এবং বমি বমি ভাব থাকবে। তাছাড়া দুর্বলতা, শরীরের ভেতরে কাঁপুনি, ঘুমঘুম ভাব, বুকের ভেতরে প্রচুর কফ ইত্যাদি থাকতে পারে।
* ফররাম ফসঃ- ফেরাম ফস ঔষধটি যে-কোন জ্বরের প্রথম দিকে ব্যবহার করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যায়। সাধারণত যারা ভীতু, সেনিসিটিভ এবং রক্তশুণ্যতায় ভোগে তাদের জ্বরে ফেরাম ফস ভাল কাজ করে।
* মার্ক সলঃ-মার্ক সল ঔষধটির জ্বরের প্রধান লক্ষণ হলো প্রচুর ঘাম হয় কিন্তু রোগী আরাম পায় না। কারণ ঘাম দিয়ে জ্বর নেমে যাবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু জ্বর নামে না। তাছাড়া ঘামে দুর্গন্ধ বা মিষ্টি গন্ধ থাকে। রোগী ঠান্ডা পানির জন্য পাগল। জ্বর রাতের বেলায় বেড়ে যায়। মুখের লালা বৃদ্ধি পায়। ঘামে যাদের কাপড়ে হলুদ দাগ পড়ে যায়, তাদের যে-কোন রোগে মার্ক সল উপকারী। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে যে-সব জ্বর হয়, তাতে মার্ক সলের কথা প্রথমে চিন্তা করতে হবে।
* নেট্রাম মিউরঃ-সর্দি জ্বর এবং যে-সব জ্বর একবার পুরো সেরে যায় এবং আবার দেখা দেয় (সবিরাম জ্বর/ম্যালেরিয়া) তাতে নেট্রাম মিউর কাযর্কর। নেট্রাম মিউরের জ্বরে প্রচণ্ড মাথাব্যথা থাকে। ঠোটের মধ্যে ফোস্কা পড়ে। সাধারণত সকাল ৯টা থেকে ০১টার দিকে জ্বর আসে এবং একদিন পরপর আসে।
* ফসফরাস : ফসফরাসের জ্বরের প্রধান লক্ষণ হলো রোগী বরফের মতো কড়া ঠান্ডা পানি খেতে চায়, হাতের তালুতে জ্বালাপোড়া করে এবং একা থাকতে ভয় পায়। তাছাড়া মেরুদন্ড থেকে মনে হয় তাপ বেরুচ্ছে, বুক ধড়ফড়ানি, উৎকন্ঠা থাকে। জ্বর সন্ধ্যার দিকে বৃদ্ধি পায়। সন্ধ্যার দিকে রোগী খুব অস্থির থাকে।
* ফসফরিক এসিডঃ-
ফসফরিক এসিডের জ্বরের রোগী হয় নির্বোধের মতো, তার চারপাশে যা কিছু ঘটছে সেদিকে তার কোন খেয়াল থাকে না। রোগী কথা বলতে চায় না। জ্বরের সাথে ডায়েরিয়া থাকে এবং কখনও কখনও মারাত্মক ডায়েরিয়া থাকে। অত্যধিক গ্যাস জমে পেট ফেঁপে থাকে। সাধারণত অত্যধিক যৌনকর্ম করে দুর্বল হয়ে পড়া লোকদের মধ্যে এই জাতীয় লক্ষণ দেখা যায়।★সালফারঃ-সালফারের জ্বরের প্রধান লক্ষণ হলো রাতের বেলা রোগীর পায়ে জ্বালাপোড়া থাকে। ফলে ঘুমের সময় সে তার পা দুটি লেপ-কাঁথার বাইরে বের করে রাখে। তাছাড়া যথেষ্ট পিপাসা থাকে এবং জ্বর সকাল ১১টার দিকে বৃদ্ধি পায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময় গরম হয়ে উঠে।
* চায়নাঃ-চায়নার জ্বর হলো সবিরাম জ্বর যাতে একবার জ্বর ওঠে এবং তারপর জ্বর পুরোপুরি সেরে যায় এবং তারপর পুণরায় জ্বর ওঠে (ম্যালেরিয়ার মতো)। জ্বর আসে প্রতিদিন বা একদিন পরপর তবে এক ঘণ্টা আগে। যেমন গতকাল যদি সকাল দশটায় জ্বর এসে থাকে তবে আজ আসবে সকাল নয়টায় এবং আগামীকাল আসবে সকাল আটটায়। জ্বরের তিনটি অধ্যায় থাকে- প্রবল শীত, জ্বর এবং প্রচুর ঘাম। চায়নার ম্যালেরিয়া জ্বর কখনও রাতে আসে না।
* ইউপেটোরিয়াম পারফোঃ- ইউপেটোরিয়াম পারফো প্রধানত ডেঙ্গু জ্বরে ব্যবহৃত হয়। কেননা এতে ডেঙ্গু জ্বরের মতো প্রচণ্ড শরীর ব্যথা আছে। শরীরে এমন প্রচণ্ড ব্যথা থাকে যেন মনে হয় কেউ শরীরের সমস্ত হাড় পিটিয়ে গুড়োঁ করে দিয়েছে। সাধারণত পিঠে, মাথায়, বুকে, হাত-পায়ে এবং কব্জিতে বেশী ব্যথা হয়। পানি বা খাবার যাই পেটে যায় সাথে সাথে বমি হয়ে যায়। আইসক্রীম বা ঠান্ডা পানি খেতে ইচ্ছে হয়। রোগী খুবই অস্থির থাকে, এক মুহূর্ত স্থির হয়ে বসতে পারে না। ইনফ্লুয়েঞ্জা বা সিজনাল ভাইরাস জ্বরেও যদি প্রচণ্ড শরীর ব্যথা থাকে তবে ইউপেটোরিয়াম প্রযোজ্য।
* থুজা : যে-কোন টিকা (বিসিজি, ডিপিটি, পোলিও ইত্যাদি) নেওয়ার কারণে জ্বর আসলে তাতে থুজা একটি অতুলনীয় ঔষধ। তাছাড়া জ্বরের মধ্যে কেউ যদি ‘উপর পড়ে যাওয়ার’ স্বপ্ন দেখে, তবে সেটি যেই নামের জ্বরই হোক না কেন, থুজা তাকে নিরাময় করে দিবে।
* চিনিনাম সালফঃ-
যে-সব জ্বর খুব টাইম মেনে চলে অর্থাৎ ঘড়ির কাটায় কাটায় উঠে এবং নামে, তাতে চিনিনাম সালফ প্রযোজ্য। মাথা ব্যথা মাথার পেছন থেকে কপালের দিকে আসে। ব্ল্যাক ওয়াটার ফিভার বা কালা পানির জ্বর নামে এক ধরণের মারাত্মক ম্যালেরিয়া জ্বরে এটি উপকারী যাতে লাল বা কালো রঙের প্রস্রাব হয়ে থাকে। জ্বর ওঠার পূর্বে কাঁপিয়ে শীত লাগার সময় কোন রক্তনালী ফোলে ওঠা চিনিনাম সালফের একটি প্রধান লক্ষণ।
* স্যাম্বুকাস নাইগ্রারঃ-জ্বরে স্যাম্বুকাস নাইগ্রার প্রধান লক্ষণ হলো ঘুমের মধ্যে রোগীর শরীর থাকে শুকনা এবং গরম কিন্তু ঘুম ভেঙে গেলে ভীষণ ঘামতে থাকে এবং শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। কাশি বা অন্য কোন রোগেও যদি এই লক্ষণ থাকে, স্যাম্বুকাস প্রয়োগে সেটি নিরাময় হবে।
* ইন্ডিগোঃ-সাধারণত কৃমির উৎপাতের কারণে জ্বর হলে ইন্ডিগো ভালো কাজ করে। যে-কোন কৃমির ঔষধই গর্ভবতীদের খাওয়ানো নিষিদ্ধ, তেমনি এটিও।
* ওপিয়াম : সাধারণত ভয় পাওয়ার কারণে কোন রোগ হলে তাতে ওপিয়াম প্রয়োগ করে ভালো ফল পাওয়া যায়। একইভাবে ভয় পাওয়ার কারণে জ্বর আসলে তাতে ওপিয়াম প্রয়োগ করতে হবে।সহ আরো অনেক ঔষধ লক্ষণের উপর আসতে পারে তাই নিজে নিজে মেডিসিন ব্যবহার না অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন,পরিশেষে করোনা সংক্রমণ আগের চেয়ে একটু বাড়ছে। তাই সবার মাস্ক পরতেই হবে। মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে যা যা করার সরকারের তাই করতে হবে। নইলে হঠাৎ করে সংক্রমণ বেড়ে গেলে তখন সমস্যা দেখা দিতে পারে চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম ব্যবস্থা।

লেখক
ডাঃ মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
সম্পাদক ও প্রকাশক,দৈনিক স্বাস্থ্য তথ্য
স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা, হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটি কেন্দ্রীয়কমিটি
কো-চেয়ারম্যান হোমিওবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
ইমেইলঃ[email protected]
মোবাইল: ০১৮২২-৮৬৯৩৮৯





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)