

বুধবার ● ২১ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » ঢাকা » মানুষের মন বুঝতে না পারায় সম্ভাবনা থাকা স্বত্বেও বামপন্থীরা বড় কিছু করতে পারেনি
মানুষের মন বুঝতে না পারায় সম্ভাবনা থাকা স্বত্বেও বামপন্থীরা বড় কিছু করতে পারেনি
আজ ২১ মে-২০২৫ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক জননেতা সাইফুল হক এর ‘ফ্যাসিবাদ, গণঅভ্যুত্থান, বিপ্লব ও সংবিধান বিতর্ক ‘ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বলেন, গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের বিজয়ের মধ্য দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন হলেও ফ্যাসিবাদের শেকড় উপডানো যায়নি।এক ফ্যাসিবাদের উচ্ছেদ হলেও নতুন করে নানা চেহারায় ফ্যাসিবাদী চিন্তা চেতনার বিস্তার ঘটছে। ছাত্র শ্রমিক জনতার গণঅভ্যুত্থানকে বিপ্লব নাম দিয়ে বহুক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে জবরদস্তি করা হচ্ছে। গণঅভ্যূত্থানের পর মানুষের মধ্যে আর এক ধরনের অস্বস্তি ও নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে।দ্রুত এই অবস্থার অবসান ঘটাতে না পারলে আমরা আমাদের গণঅভ্যুত্থানের অর্জন রক্ষা করতে পারবনা।
কালের দাবি প্রকাশনার উদ্যোগে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় অংশ নেবেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না , বইয়ের লেখক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ- বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.মোশরেকা অদিতি হক বিশিষ্ট সাংবাদিক মুস্তফা কামাল মজুমদার, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের আহবায়ক শেখ আবদুন নূর, সাংবাদিক ও গবেষক অনিন্দ্য আরিফ প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন কালের দাবি প্রকাশনার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকবর খান।
আলোচনা সভায় সাইফুল হকের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
আলোচনা সভায় অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, সাইফুল হকের বইটি গুরুত্বপূর্ণ। রাজনীতিসচেতন সবারই বইটি পড়া দরকার।
তিনি ফ্যাসিবাদের ইতিহাস উল্লেখ করে বলেন, ফ্যাসিবাদের পিছনে থাকে উন্মাদনার রাজনীতি : অন্যদেরকে ছোট করার রজনীতি।তিনি বলেন, তুলনামূলকভাবে অনগ্রসর পশ্চাৎপদ দেশেও ফ্যাসিবাদ আসতে পারে। তিনি বলেন উগ্র জাতীয়তাবাদী ধনি নিয়ে স্বাধীনতার পক্ষ বিপক্ষ তৈরী করে নিজেদের ফ্যাসিবাদী শাসনের পথ তৈরী করেছে।
তিনি বলেন বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও মানুষের মন না বুঝতে পারায় বামপন্থীরা এখনও বড় কিছু করতে পারেনি।
মাহমুদূর রহমান মান্না সাইফুল হকের বইটির প্রশংসা করে বলেন, গত আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বইয়ের কয়েকটি নিবন্ধ লিখিত। গণ মঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ের অনেক গুলো বিষয় নিয়েও তিনি লিখেছেন। বইটি সবার পড়া দরকার তিনি গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এখন কাজের চেয়ে কথা হচ্ছে বেশী।সংস্কার নিয়ে অনেক হৈচৈ; কিন্তু গত দশ মাসে কোথাও গুরুত্বপূর্ণ কোন সংস্কার হয়নি।সরকার কি করতে চায় তাও আর বোঝা যাচ্ছেনা।
সাইফুল হক বলেন, ব্যতিক্রম ছাড়া যেকোনো গণঅভ্যুত্থান মানুষকে মুক্ত করে, অধিকার প্রতিষ্ঠা করে, গণতান্ত্রিক পরিসর বৃদ্ধি করে। কিন্তু আমাদের হাজারো শহীদের রক্তেভেজা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান মানুষ নিরাপত্তা দেয়নি,জীবন জীবিকায় স্বস্তি আনেনি।বিপ্লবের নামে গায়ের জোরে বিশেষ বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য মানুষ ষোল বছর আন্দোলন করেনি।তিনি বিচার, সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচন দৃশ্যমান করে তুলতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
ড.মোশরেকা অদিতি হক বলেছে, ক্ষমতার মনস্তত্ত্ব হচ্ছে আঁকড়ে থাকা। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োজন, কিন্তু তা হতে হবে জনসম্মতির ভিত্তিতে। তিনি বলেন, ক্ষমতার উগ্রবাদী ফ্যাসিস্ট প্রয়োগ অনিবার্যভাবে প্রতিরোধের শক্তি গডে তোলে। আমাদের হার না মানা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আমরা তাই দেখেছি।
তিনি বলেন, ক্ষমতা মানুষকে বেপরোয়া করে তোলে।গত ক’ মাসে আমরা তার কিছু উদ্বেগজনক লক্ষ্মণ দেখছি।
তিনি বলেন,কারো হঠকারিতার আমরা আমাদের অর্জন নষ্ট হয়ে যেতে দিতে পারিনা।
কবি মোহন রায়হান বলেন, সাইফুল হক এখনও আমাদের স্বপ্নটা বাঁচিয়ে রেখেছেন। এখন দেশের দরকার তাঁর মত প্রজ্ঞাবান ও সাহসী নেতৃত্বের।তাঁর লেথা,কথা আর আপোষহীন রাজনৈতিক জীবন আমাদেরকে সাহস যোগায়।
অনিন্দ্য আরিফ বলেন, সাইফুল হক মৌলিক লেখক।তাঁর যাবতীয় লেখা গভীর রাজনৈতিক অংগিকার ও রাজনৈতিক তাগিদ থেকে।দেশের রাজনীতিকদের মধ্যে মতাদর্শিক,রাজনৈতিক চিন্তা দর্শন আর ব্যবহারিক সক্রিয়তায় তিনি অগ্রগামী একজন।