

মঙ্গলবার ● ২১ অক্টোবর ২০২৫
প্রথম পাতা » ঢাকা » নিরপেক্ষতার পরীক্ষায় সরকার এখনও পাশ করতে পারেনি
নিরপেক্ষতার পরীক্ষায় সরকার এখনও পাশ করতে পারেনি
আজ মঙ্গলবার সকালে সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আহুত সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক জননেতা সাইফুল হক গণ -অভ্যুত্থানের গণআকাংখ্যা বাস্তবায়ন ও জাতীয় নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ আট দফা দাবিতে আগামী ২৪ অক্টোবর ঢাকা সমাবেশ ও গণমিছিলের কর্মসূচী ঘোষণা দিয়েছেন। ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেলা ২.৩০ এ এই সমাবেশ শুরু হবে।
জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত, বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের উপযোগী করে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢেলে সাজানো, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত, সন্ত্রাস , চাঁদাবাজি, দখলবাজি বন্ধ, দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়ার তৎপরতা বন্ধের দাবি এই সমাবেশ ও গণ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক বলেন, রাজনৈতিক দলসমূহের কারও কারও উগ্র ও প্রতিহিংসাপরায়ণ বক্তব্য- বিবৃতি, সরকারের অকার্যকারীতা, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পেশাগত দায়িত্বে দূর্বলতাসহ বিভিন্ন কারণে এখনও ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় -সন্দেহ অব্যাহত রয়েছে।
গত কয়েক দিন ধরে প্রথমে ঢাকার মিরপুরে ক্যামিকেল গোডাউনে, তারপর চট্টগ্রামে ইপিজেডে, এবং তিনদিন আগে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কার্গো ওয়ার হাউজে যে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড সংঘঠিত হয়েছে তা নিছক একটি দূর্ঘটনা বলে মনে হয় না। এসব ঘটনা পরিকল্পিত কোন নাশকতার অংশ কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। তিনি ঘটনার নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার আহবান জানান। তা না হলে সামনের দিনগুলোতে এই ধরনের আরও আশংকা থাকবে।তিনি অগ্নিকান্ডে নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন , আহতদের সুচিৎসা ও প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবী জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক বলেন, নিরপেক্ষতার পরীক্ষায় সরকার পাশ করেনি।এই পরীক্ষায় সরকারের ফেল করার সুযোগ নেই।তিনি বলেন,ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সরকারের দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সরকারকে দ্রুত যাবতীয় পক্ষপাতদুষ্টতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।বিতর্কিত উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে প্রয়োজনে দক্ষ উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রকৃতপক্ষে দলনিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের বৈশিষ্ঠ অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
তিনি অবিলম্বে সরকারের মধ্যে থাকা সরকারগুলো ভেংগে দেয়া দাবি জানান। তিনি আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সমগ্র প্রশাসনকে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন সরকারের কার্যকরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার আহবান জানান।
তিনি বলেন, সমগ্র প্রশাসনকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে ঢেলে সাজাতে হবে।সরকার, প্রশাসন ও আইন শৃংখলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হলে নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ভেংগেপড়া সমগ্র নির্বাচন ব্যবস্থার উপর জনআস্থা প্রতিষ্ঠিত করা এবং স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার সাথে আগামী ফেব্রুয়ারীতে জাতীয় নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি এগিয়ে নেয়া। তিনি নির্বাচন কমিশনকে সরকার, রাজনৈতিক দল বা বিশেষ কোন মহল থেকে যেকোনো ধরনের অন্যায়, অযৌক্তিক ও অনৈতিক দাবি, চাপ বা হুমকি দৃঢ়চিত্তে মোকাবেলা করার আহবান জানান।
তিনি বলেন, অঢেল অর্থব্যয়সহ নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ, ধর্মীয় অনুভূতির ব্যবহার বন্ধ এবং নির্বাচনের সত্যিকার গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত না হলে নির্বাচন অর্থহীন হয়ে যাবে।নির্বাচনকালীন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়সমূহ নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে নিয়ে আসাও জরুরি।
সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সিকদার হারুন মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সংগঠক বাবর চৌধুরী, যুবরান আলী জুয়েল প্রমুখ।