শিরোনাম:
●   পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন ●   রাউজানে দোল উৎসব পালিত ●   ঘোড়াঘাটে বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে বঙ্গবন্ধু তাঁত শিল্প ●   ঝালকাঠিতে ১২০ টাকায় পুলিশ হলো ১৭ তরুণ-তরুণী ●   প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের স্মরণসভায় এমপি হানিফ ●   ঘোড়াঘাটে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ফিটকিরি মেশানো ভেজাল মধু ●   মাটিরাঙ্গায় ভারতীয় চিনিসহ গ্রেফতার-২ ●   বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম রাউজানের তামিম ●   মানবিক তরুণরা দেশ ও জাতির নেতৃত্বে : মনোওর আলী ●   রাউজানে প্রবাস ফেরত যুবকের কৃষিতে বাজিমাত ●   এমপি হাবিব এর আপেল রিয়েল এস্টেটে দোয়া অনুষ্ঠানে যোগদান ●   তামাক নিয়ন্ত্রন আইন দ্রুত সংশোধনের প্রতিশ্রুতি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ●   রাউজানে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে সিএনজি গাছে সাথে ধাক্কা আহত-৬ ●   মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণ ফেসবুক ●   মাটিরাঙ্গায় চিনি বোঝাই ট্রাক জব্দ : আটক-২ ●   মুসলিম সভ্যতার প্রাচীন ঐতিহ্য রাউজানের সাহেব বিবি মসজিদ ●   মাটিরাঙ্গায় দেশীয় এলজিসহ গ্রেফতার-১ ●   রাজাপুরে ট্রান্সফর্মার চুরির হিড়িক, দুই সপ্তাহে ১১ ট্রান্সফর্মার চুরি ●   রাজধানীতে গরু মাংস ৬’শ টাকা, আলীকদমে ৯’শ টাকা হয় কি করে? দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে আছে; বললেন: ইউএনও ●   চুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা ●   সিন্ডিকেটকে কোলে বসিয়ে বিরোধীদলের ওপর দায় চাপাচ্ছে সরকার : গণতন্ত্র মঞ্চ ●   রাবিপ্রবি’তে জাতির পিতার ১০৪ তম জন্মদিন উদযাপিত ●   ঘোড়াঘাটে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত ●   ঈশ্বরগঞ্জে পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ গঠন বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত ●   বাংলাদেশের শিশুদের জন্য শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   কুষ্টিয়ার গড়াই রেলসেতুর পিয়ার স্ট্রাকচারের অবস্থা নাজুক ●   ছোটহরিণা ১২ বিজিবি’র পক্ষ থেকে এতিমখানায় ইফতার ও এক মাসের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ ●   সরকার ও সরকারি দল রাজনীতিতে পচন ধরিয়ে দিয়েছে : সাইফুল হক ●   গুরু শিষ্যের প্রেমময় জীবন ●   ঈশ্বরগঞ্জে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ চালক আহত
রাঙামাটি, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
শুক্রবার ● ২৬ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » মুরুংদের জীবন যাত্রা
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » মুরুংদের জীবন যাত্রা
৮৮৭ বার পঠিত
শুক্রবার ● ২৬ অক্টোবর ২০১৮
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মুরুংদের জীবন যাত্রা

---হাসান মাহমুদ, আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি :: (১১ কার্তিক ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.০৩মি) মুরং বাংলদেশের একটি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠির নাম (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী)। বাংলাদেশের শুধুমাত্র পার্বত্য বান্দরবান জেলার আলীকদম, লামা, নাইক্ষ্যংছড়ি ও থানচি উপজেলায় এদের বসবাস। বর্তমানে এই চার উপজেলায় মুরুংদের সংখ্যা ঠিক বলা না গেলেও এটুকু বলা যায় যে, এ অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তর জাতি গোষ্ঠী মুরুং। মুরুং শব্দটি একটি বহুবচন শব্দ, যার একবচন হল ‘ম্রো’। যার অর্থ মানুষ। মানুষ একটি বহুবচন শব্দ হলেও এই জনগোষ্ঠির লোকজন তাদের নামের সাথে ম্রো শব্দটি ব্যবহার করার একে একবচন শব্দ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আদি ইতিহাস- আজ থেকে দেড় হাজার বছর পূর্বের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তখনকার সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালীদের আধিপত্য থাকলেও আনুমানিক ১৪৩০ খ্রিঃ অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৫৮৮ বছর আগে ম্রোরা বান্দরবান জেলার লামা, আলীকদম, থানছি ও নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় আশ্রয় নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকে। এর পূর্বে ম্রোদের আদিনিবাস ছিল মায়ানমারের আরাকান রাজ্যে। বর্তমানে মায়ানমারের আকিয়াব জেলায় ম্রোদের বসবাস বিদ্যমান।
ধর্ম- ম্রোদের আদি ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ম্রোরা মূলতঃ প্রকৃতি পূজারী। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এসব উপজেলায় মিশনারী কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে অধিকাংশ ম্রো খ্রিষ্ঠান ধর্মে ধর্মান্তরিত হচ্ছে। এদের মধ্যে কিছু অংশ বৌদ্ধ বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বি হলেও খ্রিষ্ঠান ধর্মের পাশাপাশি ম্রোদের বড় একটি অংশ ক্রামা ধর্ম পালন করে আসছে। গো-হত্যা মরুংদের উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান।
ক্রামা ধর্ম ও বর্ণমালা- আশির দশকের মাঝামাঝি অর্থাৎ ১৯৮৫ সালের কথা। বান্দরবান জেলার সুয়ালক স্কুলের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র মেনলে ম্রো। পড়াশুনায় ততটা মনোযোগী না হলেও মেধায় মননে একজন আদর্শ ছাত্র ছিলেন তিনি। ১৯৮৫ সুয়ালক স্কুলের ৫ম শ্রেণী ছাত্র। হঠাৎ একদিন কাউকে কিছু নাবলেই নিরুদ্দেশ হয়ে যান তিনি। দীর্ঘদিন তাকে কোথাও খোঁজাখুজি করে পাওয়া যাচ্ছিলনা। প্রায় ছয় মাস পর অর্থাৎ ১৯৮৬ সালে তিনি নিজ থেকেই ফিরে আসেন এলাকায়। এসে “রিয়াংখুতি” নামের একটি গ্রন্থ তুলে দিলেন মুরুংদের হাতে এবং এবং বললেন এটি মুরুংদের ধর্মগ্রস্থ। এই গ্রন্থটি দিয়ে তিনি “ক্রামা” নামের একটি ধর্মের ঘোষনা দিলেন। নিজেও শুরু করলেন ক্রামা ধর্মের প্রচারণা। ১৯৮৬ সালের কোন এক সময় তিনি পূনরায় নিরুদ্দেশ হয়ে যান। অদ্যবধি তিনি নিরুদ্দেশ রয়েছেন। তখন থেকে মুরুংদের বড় একটি অংশ ক্রামা ধর্মের অনুসরণ করে আসছে।
বর্তমান অবস্থান- বিশেষ করে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী এলাকায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ম্রোদের বসবাস রয়েছে। এর অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে পানীয় জল। সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদী থেকে যাতে সহজে পানীয় জল সংগ্রহ করা যায় তার জন্যই এই দুটি নদী কেন্দ্রীক ম্রোদের বসতি গড়ে উঠেছে। তবে মাতামুহুরী নদী কেন্দ্রীক এদের বসবাস অধিক উল্লেখযোগ্য।
উল্লেখ্য মাতামুহুরী বাংলাদেশের একামত্র নদী, যার উৎপত্তিস্থল ও সমাপ্তি দুটোই বাংলাদেশে। এছাড়াও পাহাড়ে মুরুংদের চাষকৃত কৃষিজাত পন্য বাজারজাত করার সুবিধার্থেও তাদের নদী কেন্দ্রীক বসবাস।
বসবাস- মুরুংরা সাধারণত মাটিতে বসতি স্থাপন করেনা। মাটি থেকে ৭-৮ ফুট উচ্চতায় টং ঘর নির্মান করেই মুরুংরা বসবাস করে। এর মূল কারণ হচ্ছে বন্য জীব যন্তু থেকে রক্ষা পাওয়া। মুরুংদের মধ্যে অনেকেই তাদের ঘরে জীব জন্তুর মাথা ঝুলিয়ে রাখতে দেখা যায়। মুরুংদের মধ্যে কয়েকটি গোত্র রয়েছে; এর মধ্যে- ঙারুয়া, প্রেনজু, জালা, কানবক, নাইজাহ তাং, দেং প্রভৃতি। তাদের পিতৃতান্তিক সমাজ ব্যবস্থায় কায়েকটি পরিবার নিয়ে একটি পাড়া গঠন করা হয় এবং প্রতি পাড়ায় একজন করে কারবারী নিযুক্ত থাকে। আবার পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রচলিত রাজ প্রথায় কয়েকটি পাড়া নিয়ে একজন করে হেডম্যান নিযুক্ত থাকে। তবে এই হেডম্যান প্রথা শুধু মুরুংদের জন্য নয়। বরং পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি বাঙ্গালী প্রত্যেকের জন্যই হেডম্যানরা কাজ করে থাকে। মুরুংরা নারী পূরুষ সমান পরিশ্রমী। নারীরাও পুরুষের পাশাপাশি জুম চাষে সমান পারদর্শী।
মুরুং নারীরা সাধারণত নাভির নিচ থেকে হাটুর উপর পর্যন্ত “ওয়াংকাই” নামক এক টুকরো কাপড় পরিধান করে। আর পুরুষরা শুধুমাত্র “ডং” নামের নেংটির মত একটুকরো কাপড় পরিধান করে। যা শুধুমাত্র লজ্জাস্থানকেই ঢেকে রাখে। মুরুং যুবকরা যৌবনে পদার্পন করার পর নারীদের মত চুল লম্বা রাখতে শুরু করে এবং খোঁপা করে তাতে চিরুনী গেঁথে রাখে। একই ভাবে মুরুং মেয়েরা কানে ও খোঁপায় বিভিন্ন পাহাড়ি ফুল গেঁথে সাজতে ভালবাসে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অনেকেই আধুনিকতার ছোয়ায় এসেছে। বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছে ম্রো-সন্তানরা।
বিয়ে- ম্রোদের সাধারণত একই গোত্রের মধ্যে বিয়ে হয়না। তবে মজার বিষয় হল, ম্রোদের বিয়েতে বর পক্ষ কণে পক্ষকে ১ শত ১০ টি রৌপ্য মূদ্রা এবং মায়ের দুধের দাম হিসেবে ১০টি রৌপ্য মূদ্রা প্রদান করতে হয়। তবে তাদের মধ্যে তালাক প্রথা বিদ্যমান।
সংস্কৃতি- মুরুং সংস্কৃতিতে “ফ্লুং” বাশিই গোটা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে। মুরুংরা বিভিন্ন ধর্মিয় আচার অনুষ্ঠান, বিয়ে ইত্যাদি অনুষ্ঠানে ফ্লুং বাঁশির শুরে শুরে নৃত্য করে মুরুং যুবক যুবতীরা। এই সময় সাঁজ হিসেবে মুরুং যুবক যুবতীরা গালে, কপালে ও ঠোঁটে আলতার মত রঙের প্রলেপ দেয় এবং কানে ও খোঁপায় পাহাড়ি ফুল গুছে রাখে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)