শুক্রবার ● ২৯ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে তৃণমূলের রাজনীতি
বিশ্বনাথে ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে তৃণমূলের রাজনীতি
মোঃ আবুল কাশেম,বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে৷ জমে উঠছে তৃণমূলের রাজনীতি৷ নৌকা ও ধানের শীষ নিয়ে ইউপি নির্বাচনে আবারও মুখোমুখি হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বলে খ্যাত বিএনপি৷ দুই শিবিরেই চলছে জোর প্রস্তুতি৷ দলীয় একক চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাইয়ে ইতোমধ্যে মাঠ জরিপ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ৷
অন্যদিকে, ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূলে প্রার্থী বাছাইয়ে একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন পাঠিয়েছে বিএনপি৷ দেশের প্রধান এই দুই রাজনৈতিক দলের বাইরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলেও দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রসত্মুতিপর্ব চলছে৷ প্রচারনায় পিছিয়ে নেই জাতীয় পার্টি প্রার্থীদের৷ বিশ্বনাথ প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলায় ৩ মাস আগ থেকেই শুরম্ন হয়েছে নির্বাচনী আমেজ৷
ইতিমধ্যে অনেক লন্ডন প্রবাসী প্রার্থীরা দেশে আসতে শুরু করেছেন৷ আগামী মার্চ মাসে প্রথম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ ফলে এ নির্বাচনকে ঘিরে বিশ্বনাথ উপজেলার তৃণমূলের রাজনীতি জমে উঠেছে৷ শো-ডাউনসহ বিভিন্নভাবে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ দিতে বড় দুই দলের সম্ভাব্য ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীরা মাঠে নেমে পড়েছেন৷ দলীয় সমর্থন পেতে ধর্না দিচ্ছেন দল দুটির শীর্ষ নেতাদের দ্বারে দ্বারে৷ তবে ইউপি নির্বাচনেও দলের বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে শঙ্কায় উভয় দলই৷ দল দুটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা অপকটেই স্বীকার করছেন, এত ইউনিয়ন পরিষদে দলের একক প্রার্থী বাছাই করা বেশ কঠিনই হবে৷ তবে বিদ্রোহী প্রার্থী ঠেকাতে তাঁদের চেষ্টার কোন ক্রুটি থাকবে না৷
এবারের ইউপি নির্বাচনে ৮টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে অনন্ত ২০জন লন্ডন প্রবাসী বিভিন্ন দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করা ছাড়া ও বর্তমান, সাবেক, স্বতন্ত্র ও দলীয় প্রার্থীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদন্ধীতার জন্য মাঠে প্রচার প্রচারনায় প্রায় সক্রিয় রয়েছেন৷
উপজেলা প্রবাসী অধু্যষিত হওয়ায় প্রায় প্রতিটি নির্বাচন হয় অনেক ব্যয় বহুল৷ যদি ও নির্বাচন আচরনবিধিতে ব্যয়ের পরিমান নির্ধারন করা তাকে কিন্তু এ উপজেলায় ভিন্ন৷ প্রচুর পরিমানে টাকার ছড়াছড়িতে নির্বাচনী হিসেব নিকেশ অনেক সময় পাল্টে যায়৷
এখন পর্যন্ত যত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নাম শুনা যাচ্ছে : বিশ্বনাথ ইউনিয়ন: উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা ছয়ফুল হক, আ.লীগ নেতা শাহ আসাদুজ্জামান, উপজেলার বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক হাজী আবদুল হাই, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাস্টার এমাদ উদ্দিন, উপজেলা জাপার যুগ্ম-সম্পাদক রফিকুল আলম লালু, যুক্তরাজ্য প্রবাসী মহিউদ্দিন পলাশ, মদরিছ আলী মফজ্জুল,শফিক উদ্দিন৷
লামাকাজী ইউনিয়ন: উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সমপাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া, প্রবাসী আলী হোসেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী রইছ আলী, আ.লীগ নেতা আবুল খয়ের লাল মিয়া৷
খাজাঞ্চী ইউনিয়ন: উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও বর্তমান চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী, বিএনপি নেতা আখছিল আলী সরকার, জেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মঈনুল হক, সেচ্ছাসেবকদল নেতা কয়েছ আলী, আ.লীগ নেতা কবির হোসেন কুব্বার, শংকর দাশ৷
অলংকারী ইউনিয়ন: উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান লিলু মিয়া, বিএনপি নেতা চেরাগ আলী, জামায়াত নেতা আব্দুল মুকসিত আক্তার, ইউপি আ.লীগের সভাপতি আরশ আলী৷
রামপাশা ইউনিয়ন : বর্তমান চেয়ারম্যান আ.লীগ নেতা আনোয়ার খান, আ.লীগ নেতা আজিজুর রহমান, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক বশির আহমদ, বিএনপি নেতা খছরুজ্জামান খছরু, জয়নাল আবেদিন, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর, সেচ্ছাসেবকদল নেতা কাওছার খান৷
দৌলতপুর ইউনিয়ন: চেয়ারম্যান ও ইউপি বিএনপির সভাপতি আব্বাস আলী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান আমির আলী, সাবেক চেয়ারম্যান ও জাপা নেতা মোশাররফ হোসেন, জামায়াত নেতা বাবুল মিয়া মাষ্টার, আওয়ামীলীগ নেতা আছাব উদ্দিন, প্রবাসী কদর উদ্দিন,আবুল কালাম খান. মিরাশ আলী৷
দেওকলস ইউনিয়ন: বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউপি বিএনপির সভাপতি তাহিদ মিয়া, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম মতছিন, ইউপি আ.লীগ সভাপতি আবদুল মুমিন, সাবেক চেয়ারম্যান ছত্তার মিয়ার পুত্র আবুল হাসানাত৷
দশঘর ইউনিয়ন -উপজেলা বিএনপি’র সহ সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শফিক উদ্দিন আহমদ, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা হাবিবুর রহমান ছাতির, বিএনপি নেতা আবুল হোসেন, তরম্নণ সমাজসেবক এমাদ খান৷ শেষ মুহুর্তে এই প্রার্থী তালিকা আরো দীর্ঘ হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন৷
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার প্রথম বারের মতো দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচনেও মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থিতা৷ প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে ডজন ডজন সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে থাকায় তাদের মধ্যে থেকে একক দলীয় প্রার্থী বাছাই খুবই কঠিন হবে বলে মনে করছে বিশেস্নষকরা৷
তবে রাজনৈতিক নেতাদের মতে, সব ইউপিতে একক প্রার্থী নির্বাচন করা কঠিন হলেও তারা শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাবেন৷ কোন ইউপিতে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷
শুধু আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপিই নয়, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলও দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে৷
সকল দলের শীর্ষ নেতারা একক চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে৷ দুই জোটের ব্যানারে নির্বাচনের সম্ভাবনা না থাকায় প্রধান দুই জোটে থাকা শরীক দলগুলোও এককভাবে ইউপি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও সুত্রে জানা গেছে৷
আপলোড : ২৯ জানুয়ারী ২০১৬ : বাংলাদেশ : সময় : রাত ১২.১০মিঃ