সোমবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » কুষ্টিয়াতে সাধারণ মানুষের সুপেয় খাবার পানি সংকট
কুষ্টিয়াতে সাধারণ মানুষের সুপেয় খাবার পানি সংকট
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :: গড়াই নদী শুকিয়ে যাওয়া, সাবমার্চেবল টিউবওয়েল পাম্প মেশিন বসিয়ে পানি উত্তোলন করার কারণে খাওয়ার পানির সংকটে পড়েছে কুষ্টিয়ার সাধারণ খেটে খাওয়া নিরীহ মানুষ গুলো। কুষ্টিয়ার বেশীর ভাগ এলাকায় দেখা গিয়েছে বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট।শহরের প্রায় অধিকাংশ টিউবওয়েল থেকে পাওয়া যাচ্ছে না পরিমান মত পানি। কুষ্টিয়ার গড়াই নদী আজ প্রায় মৃত অবস্থায় আছে। গত ফাল্গুন মাসের শুরুতেই পানির প্রবাহ নেই গড়াই নদীতে, এখন নতুন বছরের বৈশাখ মাসেও গড়াই পরিনত হয়েছে ছোট খালে। গড়াই রেল ব্রিজ ও সড়ক সেতুর ব্রীজের অধিকাংশ পিলার চরে আটকে গেছে। সেই সাথে নেমে গেছে পানির স্তর। এর প্রভাবে কুষ্টিয়া পৌর এলাকাসহ আসে পাশের অধিকাংশ নলকুপে উঠছে না পানি। এমনকি পৌরসভার থেকে সরবরাহকৃত সাপ্লাই পানির উৎপাদনও কমে গেছে। পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারণে প্রায় সব এলাকার নলকূপ হয়ে গেছে অকেজো। দ্রুত বৃষ্টি পাত না হলে সমস্যা আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফারাক্কার বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় কুষ্টিয়ায় চলতি খরা মৌসুমে বিশুদ্ধ পানির এমন সংকট দেখা দিয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট নিচে পানির স্তর নেমে আসায় এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। শহরতলীসহ পৌরসভার প্রায় অর্ধেক টিউবওয়েল অকেজো হয়ে পড়েছে । টিউবওয়েলে পানি না ওঠায় শহরের বেশীর ভাগ এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির চরম সংকট। প্রায় ৭ মাস বৃষ্টি না হওয়া, কুষ্টিয়ার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মার শাখা নদী গড়াই শুকিয়ে যাওয়া এবং ঘরে ঘরে সাবমার্চেবল বসানোর কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন। এই পানি সংকটের কারণে কুষ্টিয়া শহরের অভিজাত এলাকার বাসিন্দারা প্রতি বাড়িতে বাড়িতে সাবমার্চেবল টিউবওয়েল বসানো ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বাজার ঘুরে দেখা গেছে সাবমার্সেবল বসানোর জন্য পাইপ পর্যন্ত শেষ হয়ে গেছে। সাবমার্সেবল বসানোর কারনে আশেপাশের টিউবওয়েলের পানি গুলো টেনে নিচ্ছে যে কারণেই টিউবওয়েল গুলোতে পানি উঠছে না। আর এর ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ বাসিন্দারা। পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার মধ্যে ৩৭ হাজার হোল্ডিং রয়েছে। এই হোল্ডিংয়ের আওতায় ৪ হাজার ৬ শত টিউবওয়েল স্থাপন করা আছে । চলতি খরা মৌসুমে পানির স্তর স্বাভাবিক ভাবে ২৪ ফিট থাকার কথা থাকলেও সেখানে পানি স্তর আরো ৮/১০ ফিট নিচে নেমে গেছে। ফলে টিউবওয়েল গুলোতে পানি উঠছে না। এ সমস্যা শহরের কমলাপুর, থানাপাড়া, আমলাপাড়া, কুঠিপাড়া এলাকায় সংকট বেশি দেখা দিয়েছে । শুষ্ক মৌসুমে গড়াই নদীতে পানি না থাকায় নদীর তীরবর্তী এলাকা গুলোতে পানি সংকট তীব্রতা ধারন করেছে। এছাড়াও শহর ও শহরতলী এলাকায়, হাউজিং এলাকাসহ শহরের সব স্থানে একই অবস্থা কম বেশি বিরাজ করছে। পৌরসভার সূত্র আরো জানায়, পৌরসভার মধ্যে অনেকে পানির সংযোগ লাইন নেয়নি। বর্তমানে পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়ায়, মানুষ ছুটে আসছে পৌরসভাতে। প্রতিদিন প্রায় ৪০/৪৫ টি আবেদন পড়ছে পানির লাইন নেয়ার জন্য। সংযোগ দেয়া হচ্ছে প্রায় ২৫টি। চলতি বছরের গত তিন মাসে মোট ৪ শত ৬৮ টি পানির সংযোগ লাইন দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে জানুয়ারী মাসে ১০০টি, ফেব্রুয়ারী মাসে ৯০টি ওবং মার্চ মাসে সবচেয়ে বেশি ২৭৮ টি সংযোগ লাইন দেয়া হয়েছে। কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, চলতি শুস্ক মৌসুমে শহরের বেশির ভাগ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। ৪ হাজার ৬ শত টিউবওয়েলের মধ্যে প্রায় অর্ধেক টিউবওয়েল অকেজো হয়ে পড়ে আছে। প্রতিদিনই পৌর বাসিন্দারা টিউবওয়েলে পানি না ওঠার অভিযোগ নিয়ে আসছে। তাদেরকে পৌরসভার পানির সংযোগ লাইন নেয়ার জন্য আহবান করা হচ্ছে। এ সংকট দেখা দেয়ায় আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিদিন ২০/২৫ টি পৌরসভার বিশুদ্ধ পানির সংযোগ লাইন দেয়া হচ্ছে। পানির লেয়ার অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে । আগামী ৫/৭ দিনের মধ্যে বৃষ্টি পাত না হলে সমস্যা আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কুষ্টিয়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইব্রাহিম মোঃ তৈমুর জানান, কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলায় ওয়াটার টেবিল ওয়াইজ আমরা কাজ করছি। প্রতি শুস্ক মৌসুমে বিষয়টি মনিটরিং করা হয়ে থাকে। তারপর টিউবওয়েল দেয়ার চেষ্টা করি। তবে এ বছর পানির স্তর অনেকটাই নিচে নেমে গেছে। এর আগে তারা টিউবওয়েল দিতাম, সেখানে ৮০ ফিট হাউজিং এর স্থলে এখন ১০০ ফিট দিতে হচ্ছে। যাতে করে শুস্ক মৌসুমে পানি ওঠে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কিছুটা পানির স্তর নেমে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে, সেগুলো মনিটরিং করা হচ্ছে। তবে এরমধ্যে কুষ্টিয়া শহরে পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। স্বাভাবিক ২০ ফিট স্তরের স্থলে ৩০ ফিট নিচে পানির স্তর নেমে গেছে। অর্থাৎ ১০ ফিট পানি নিচে নেমেছে। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, কুষ্টিয়া শহরের বেশির ভাগ বাসা বাড়ীতে ইচ্ছা মত টিউবওয়েল এবং পাম্প মেশিন বসিয়ে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। যার ফলে এ সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে এঅবস্থা আরো প্রকট ভাবে ধারন করেছে। তবে কুষ্টিয়া পৌরসভার মধ্যে যাতে পানি সংকট না হয় সে জন্য চলতি ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে কুষ্টিয়া পৌরসভাকে ৭ টি প্রডাক্শন টিউবওয়েল হস্তান্তর করা হয়েছে। আগামী ৫০ বছরের মধ্যে কুষ্টিয়া শহরে পানির স্তর ভূগর্ভস্থরের আরো নিচে নেমে পানি সংকটের ভয়াবহতা তীব্র রূপ ধারণ করবে। সেই সাথে স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যাবে। এজন্য আগে থেকেই পৌরসভার উদ্যোগে প্রতিটি বাসাবাড়ীতে পানির লাইন দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ৪ হাজার ৬ শত টিউবওয়েল স্থাপন করা আছে । চলতি খরা মৌসুমে পানির স্তর স্বাভাবিক ভাবে ২৪ ফিট থাকার কথা থাকলেও সেখানে পানি স্তর আরো ৮/১০ ফিট নিচে নেমে গেছে। ফলে টিউবওয়েল গুলোতে পানি উঠছে না। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ নিরীহ খেটে খাওয়া মানুষেরা সুপেয় খাবার পানি থেকে বঞ্চিত হবে।





কুষ্টিয়ায় বৃদ্ধার গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার
কুষ্টিয়া গণপূর্ত অফিসেই ১৮ বছর’ আ’লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত অনুপ কুমার সাহা
কুষ্টিয়া সিভিল সার্জনে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক
চুয়াডাঙ্গার শিক্ষা প্রকৌশলী কমিশন বাণিজ্যে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়
কুষ্টিয়ায় হাসপাতালের পুকুর থেকে যুবতীর লাশ উদ্ধার
কুষ্টিয়ায় বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
কুষ্টিয়া চেম্বারের ‘এ’ গ্রুপের পরিচালক পদে নির্বাচন সম্পন্ন
জাকির এর উদ্যোগে কুষ্টিয়া শহর নতুন রূপে সেজেছে
কুষ্টিয়ার আদালতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে পালাল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ
ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে কুষ্টিয়ার ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি