

মঙ্গলবার ● ২৪ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আন্দোলন
ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আন্দোলন
ফটিকছড়ি প্রতিনিধি :: চাকরিতে ১৪ তম গ্রেড ও ‘টেকনিক্যাল পদমর্যাদা’ দেওয়াসহ ছয় দাবিতে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা।
সোমবার ২৪ জুন সকালে স্বাস্থকেন্দ্রের সামনে অবস্থান নিয়ে তাদের এই কর্মসূচি চলে।
অন্যদিকে, তাদের এই কর্মসূচির কারণে ২ থেকে ৩ ঘন্টা শত শত রোগী ভোগান্তিতে পড়েছেন। তারা ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে সেবা না পেয়ে ফিরে গেছেন। আবার কেউ স্বাস্থ্যসেবার প্রতি আস্থা হারিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
স্বাস্থ্য সহকারিদের দাবীর মধ্যে- পদোন্নতির ক্ষেত্রে উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত; সব স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শককে প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত; বেতন স্কেল পুননির্ধারনের সময় প্রাপ্ত টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা সম্পন্নকারীদের স্নাতক সমমানের স্বীকৃতি প্রদান।
মো. লোকমান নামের এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, ‘টেকনিক্যাল কাজ করি, কিন্তু গ্রেড নন-টেকনিক্যাল। এতে বৈষম্যের শিকার। অন্যান্য বিভাগে সমান গ্রেডে যারা চাকরি করত, তারা টপকে অনেক উপরের গ্রেডে গেছে। আমরা মর্যাদা চাই।’
মো. মহিউদ্দিন নামে আরেক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, ‘টিকাদানে সাফল্যের কারিগর আমরা। বেতন ১৬ তম গ্রেড দিয়ে শুরু। প্রমোশন হলেও বেতন কাঠামোর কোনো পরিবর্তন হয় না। বিভিন্ন সময়ে টেকনিক্যাল পদমর্যাদাসহ বেতন স্কেল উন্নতির জন্য আন্দোলন করলেও তা প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ।’
এদিকে, তাদের এই কর্মসূচি চলাকালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অভ্যন্তরে এবং বর্হি:বিভাগে শত শত রোগী ভোগান্তিতে পড়েছেন। রোগীরা ভোগান্তিতে পড়ে তারা ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে হাহাকার করে সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে। আবার কেউ কেউ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সেবার প্রতি অনাস্থা দেখিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন।
সেবা নিতে আসা কামরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার তাদের উন্নীত স্কেলে বেতন দিলেও তারা যথাসময়ে কেন্দ্রে আসেন না। সেবা দিতে টাকা দাবী করেন। টাকা ছাড়া সেবা দেন না। তাছাড়া নির্ধারিত সময়ের আগেই তারা অফিস ত্যাগ করেন। তাদের প্রতি সেবা গ্রহীতাদের আস্থা একেবারেই নেই। সরকারকে বিষয়টি নিয়ে ভাবা দরকার।’
আনোয়ার জাহিদ নামের এক শিশুর বাবা বলেন, ‘সকাল ৮টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। আমার পাঁচ বছরের শিশুকে টিকা দিতে এসেছি। মুমুর্ষ সন্তানের মুখের দিকে থাকানো যায়না। অতচ তারা সেবা না দিয়ে আছেন অনৈতিক আন্দোলনে। ভোগান্তির সীমা ছাড়িয়ে গেলেও তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা কী মানুষের কাতারে পড়ে?
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ইউএইচও) ডা. সৌনম বড়ুয়া বলেন, ‘এটা তাদের কেন্দ্র ঘোষিত চলমান আন্দোলন। এর কারণে রোগীরা যাতে সমস্যায় না পড়ে সে ব্যাপারে তাদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিষয়ে উর্ধ্বতনদের অবহিত করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘আন্দোলন করতে গিয়ে সেবা বিগ্নিত বা রোগী কষ্ট পাবেন এটা কোন ভাবেই কাম্য নয়। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়ে উর্ধ্বতনদের জানাবো।’