শিরোনাম:
●   গাবতলীতে বিএনপি নেতা আতিকের নামাজে জানাজা সম্পন্ন ●   কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা জরুরি ●   সানরাইজ স্পেকট্রাম বাংলা রেডিও ৩০ বছর পূর্তিতে গুনীজন সম্মাননা প্রদান ●   ঈশ্বরগঞ্জে ছোট ভাইয়ের দায়ের কুপে বড় ভাইয়ের মৃত্যু ●   শ্রেষ্ঠ এসআই হলেন গাবতলী মডেল থানার কুদ্দুস ●   কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলায় ৬ শিক্ষার্থীর প্রাণহানি ঘটনায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নিন্দা ●   চুয়েটের বাসে হামলা, পেটানো হয়েছে শিক্ষার্থীদের ●   ঝিনাইদহে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা ●   ৩ দফা দাবীতে প্রজন্ম ৭১ এর কুষ্টিয়ায় মানববন্ধন ●   বগুড়ায় বৃক্ষরোপন ও চারাগাছ বিতরণ ●   ঈশ্বরগঞ্জে মাদ্রাসা শিক্ষিকার আত্মহত্যা ●   রাবিপ্রবি স্থাপনা প্রকল্পের মাস্টার প্ল্যান বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত ●   মোরেলগঞ্জে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে লতিফিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন ●   ঘোড়াঘাটে পোনা মাছ অবমুক্তকরণ ●   কুষ্টিয়া কুমারখালীতে ৩ দিনে ৩ খুন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ●   পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালনা বোর্ড এর ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ১ম সভা ●   বাগেরহাট পৌরসভায় অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ সড়কই খানাখন্দে ভরা মানুষের ভোগান্তি চরমে ●   রাউজানে একরাতে দুই কৃষকের ৫টি গরু চুরি ●   পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২৬ বছর পূর্তি উদযাপিত ●   প্রধানমন্ত্রীর অনভিপ্রেত বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেবার আহবান ●   গাজীপুরে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস পালন ●   মাঝরাতে উত্তাল ঢাবি : ছাত্রলীগের চার নেতার পদত্যাগ ●   পরিচয় মিলেছে ৪শত কোটি টাকার মালিক সেই পিয়নের ●   ড. এফ দীপংকর বৌদ্ধ ভিক্ষুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার : হত্যা না আত্মহত্যা ●   ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া ●   নবীগঞ্জে সড়ক নির্মান কাজের অনিয়ম ●   মোরেলগঞ্জের নীলকুঠি কুঠিবাড়ীর অস্বিত্ব বিলুপ্তির পথে ●   নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটির সভা ●   ঈশ্বরগঞ্জে ফুট ব্রীজের পাটাতন বিধ্বস্ত : যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ●   ঘোড়াঘাটে ওয়ার্ল্ড ভিশনের সমাপনী আলোচনা সভা
রাঙামাটি, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
বুধবার ● ২৪ জানুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » লেনিন মৃত্যু শতবর্ষ : লেনিন পরবর্তী একশো বছর ও রাষ্ট্র - বিপ্লবের প্রশ্ন
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » লেনিন মৃত্যু শতবর্ষ : লেনিন পরবর্তী একশো বছর ও রাষ্ট্র - বিপ্লবের প্রশ্ন
২৭৪ বার পঠিত
বুধবার ● ২৪ জানুয়ারী ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

লেনিন মৃত্যু শতবর্ষ : লেনিন পরবর্তী একশো বছর ও রাষ্ট্র - বিপ্লবের প্রশ্ন

--- সাইফুল হক :: (প্রথম অংশ) ২১ জানুয়ারী ২০২৪ রুশ বিপ্লবের নেতা ও আন্তর্জাতিক শ্রমিকশ্রেণীর মহান নেতা লেনিন এর মৃত্যু শতবর্ষ।এই দিনে এই বিপ্লবীর প্রতি আমাদের অপার শ্রদ্ধা আর ভালবাসা।

মানব জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ব্যক্তিত্বের মধ্যে লেনিন অন্যতম। লেনিন ও তাঁর বিপ্লবী সহযোদ্ধারা মানবসম্পদ ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। লেনিন ইউটোপিয়ান বিপ্লবী ছিলেন না; ছিলেন বাস্তববাদী বিপ্লবী। লেনিনের বিপ্লবী মতাদর্শ ও বিপ্লবী রাজনৈতিক তৎপরতার প্রভাব হয়েছে সুদুরপ্রসারী ও বিশ্বব্যাপী। শোষণ ও বঞ্চনার পুঁজিবাদী - সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থার বিপরীতে সাম্যবাদী সমাজের লক্ষে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা যে গড়ে তোলা সম্ভব লেনিন ও তাঁর বলশেভিক বিপ্লবী পার্টির সহযোদ্ধারা রাশিয়ায় বাস্তবে তা প্রমান করেছেন।

লেনিন ছিলেন যুগান্তকারী এই রুশ বিপ্লবের প্রধান নেতা।তিনি এই বিপ্লবের মতাদর্শিক - রাজনৈতিক ভিত্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সশরীরে এই বিপ্লবে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন।পুঁজিবাদের দূর্বলতম গ্রন্থী রাশিয়ায় ১৯১৭ সালে শ্রমিকশ্রেণীর নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সংগঠিত করে সাম্যভিত্তিক এক নতুন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন।

মানব ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলীর অন্যতম হচ্ছে রুশ বিপ্লব; যা শোষণ ও বৈষম্যমুলক অমানবিক পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থার বিকল্প হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। রুশ বিপ্লব শ্রমদাসত্বের অবসান ঘটিয়ে শোষণহীন সাম্যভিত্তিক নতুন এক মানবিক ও গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা, মানুষে মানুষে নতুন সম্পর্ক, নতুন সভ্যতা, নতুন মূল্যবোধ, অগ্রসর নতুন
সংস্কৃতির উদ্বোধন ঘটিয়েছিল।এই বিপ্লব সকল শৃংখল থেকে মানুষের মানবিক সত্তার মুক্তির অজুত সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছিল; সমাজতান্ত্রিক যাবতীয় ইউটোপিয়ার খোলস ফেলে দিয়ে রুশ দেশের বিশেষ বাস্তবতায় সাম্যের সমাজ নির্মানের এক নতুন ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু করেছিল।

লেনিনের রাষ্ট্র বিপ্লবের চিন্তা ও অনুশীলনে ১৮৭১ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে সংঘটিত ঐতিহাসিক প্যারি কমিউনের অভিজ্ঞতা ছিল রুশ বিপ্লবের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্যারি কমিউনের অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা ব্যতিরেকে রুশ বিপ্লব এভাবে হোত কিনা বলা মুশকিল।

১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের আগে আগে লেনিন তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘রাষ্ট্র ও বিপ্লব ‘ লিখছিলেন। কিন্তু বইটি শেষ করতে পারেন নি।এর মধ্যেই রাশিয়ায় বিপ্লবী পরিস্থিতি পেকে উঠায় বইয়ের শেষ অংশের কাজ বাদ দিয়ে তাঁকে রাশিয়ায় বিপ্লবের প্রানকেন্দ্রে ছুটে যেতে হল। তিনি মজা করে বললেন, বিপ্লবের উপর বই লেখার চেয়ে এখন সরাসরি বিপ্লবে অংশগ্রহণটাই গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুতঃ রুশদেশের আগুয়ান শ্রমিকশ্রেণী লেনিনের ‘রাষ্ট্র ও বিপ্লব’ বইটি পড়ে বিপ্লব করতে পারেননি।বিপ্লবের পরেই কেবল ১৯১৮ সালে লেনিনের এই গুরুত্বপূর্ণ আকর গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।

মার্কস- এংগেলস এর বিপ্লবী ভাবাদর্শ ও রাজনীতির উত্তরসুরী হিসাবে তুলনাহীন যোগ্যতা ও দক্ষতায় রাশিয়ায় বিপ্লবী পরিবর্তনে লেনিনের নেতৃত্বে তাঁর বলশেভিক পার্টির সহযাদ্ধারা রাশিয়ায় বিপ্লবী কর্মযজ্ঞ শুরু করেছিলেন।

লেনিন কোনভাবেই কেতাবী মার্কসবাদী বিপ্লবী ছিলেন না।কেতাবী মার্কসবাদী হলে রুশ দেশে বিপ্লব হোত না।পুঁজিবাদের বিকাশ, সাম্রাজ্যবাদী স্তরে তার প্রবেশ , তার অভ্যন্তরীণ গভীর সংকট ও সীমাবদ্ধতা, নতুন অজেয় শ্রেণী হিসাবে শ্রমিকশ্রেণীর উত্থান ও বিকাশ, রাষ্ট্র তথা গোটা শাসন ব্যবস্থার সংকট ও বৈপরিত্য বিবেচনায় নিয়ে লেনিন রুশ বিপ্লবের তাত্বিক কাঠামো, রণনীতি ও রণকৌশল নির্ধারণ করেছিলেন।মার্কস - এংগেলস যেখানে অগ্রসর পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে তাদের সাম্যবাদী দর্শন ও রাজনীতির তত্ব নির্মাণ করেছিলেন এবং ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও জার্মানীকে শ্রমিক বিপ্লবের সবচেয়ে উপযোগী হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন লেনিনকে সেখানে তুলনামূলকভাবে সংকটগ্রস্থ অবিকশিত পুঁজিতান্ত্রিক পশ্চাৎপদ কৃষিনির্ভর দেশ রাশিয়ায় সমাজ বিপ্লবের জন্য নতুন রাজনৈতিক প্রস্তাবনা হাজির করতে হয়েছিল। বস্তুতঃ এই চিন্তা, নতুন বিপ্লবী তত্ব ও কঠিন বিপ্লবী অনুশীলনের মধ্য দিয়েই সাম্রাজ্যবাদী যুগের মার্কসবাদ - লেনিনবাদ বিকশিত হয়ে উঠেছিল।মাত্র ৫৪ বছরের স্বল্পআয়ুর লেনিন সমাজতান্ত্রিক পুনর্গঠনের বিশাল কর্মযজ্ঞ বেশীদিন এগিয়ে নিতে পারেননি।

লেনিনের অকাল মৃত্যুর পর তার সহকর্মীরা নানা সীমাবদ্ধতা নিয়েও রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে নিয়েছিলেন এবং পুঁজিবাদের বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার একটা ভিত্তি গড়ে তুলেছিলেন। রুশ বিপ্লব দুনিয়াব্যাপী সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনে নতুন গতি ও সম্ভাবনা তৈরী করেছিল। এর মধ্য দিয়ে মানুষের অধিকার ও মুক্তির স্বপ্নও নতুন স্তরে উন্নীত হয়েছিল।

দুনিয়াব্যাপী লেনিনের বিপ্লবী রাজনৈতিক তৎপরতা ও রুশ বিপ্লবের প্রভাব পড়েছে অপরিসীম। এই বিপ্লব আলোড়ন তুলেছিল বিশ্বব্যাপী। এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশ, এক দেশ থেকে আরেক দেশে নানাভাবে এই বিপ্লবের ডাক ছড়িয়ে পড়েছিল। রুশ বিপ্লব দেশে দেশে বিপ্লবী পার্টি ও বিপ্লবী সংগ্রাম বিকাশে প্রবলভাবে অনুপ্রেরণা যোগানোর পাশাপাশি ঔপনিবেশিক শাসন -শোষণ বিরোধী জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম ও দুনিয়ার নানা প্রান্তে স্বাধীনতার সংগ্রামকেও বিপুলভাবে প্রনোদনা ও উৎসাহ যুগিয়েছে।

রাশিয়া তথা সোভিয়েত ইউনিয়নসহ পৃথিবীর দেশে দেশে সমাজতান্ত্রিক পুনর্গঠন - সমাজতন্ত্রের অনুশীলন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক,সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতির দিক থেকে তার ঐতিহাসিক ন্যায্যতার প্রমাণ দিয়েছে ; মানবিক সমাজ হিসাবেও তার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। শিল্প, কৃষি, সেবাখাতে প্রায় অবিশ্বাস্য প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্য,শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ সাম্যভিত্তিক মানবিক উন্নয়ন সূচকে বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধন করেছিল; মুক্ত করে দিয়েছিল মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সৃজনশীল কর্মউদ্যোগকে।বৈপ্লবিক এইসব অগ্রগতি ও উল্লম্ফন তাক লাগিয়ে দিয়েছিল পুঁজিবাদী বিশ্ব ও তার মোড়লদেরকে।

মতাদর্শিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় নানা বিচ্যুতি, ঘাটতি ও দূর্বলতার কারণে ৭২ বছর পর খোদ সোভিয়েত ইউনিয়নেই এই ব্যবস্থা টেকেনি সত্য; কিন্তু পুঁজিবাদী - সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থা এখনও টিকে থাকলেও তা কোন দিক থেকেই সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার চেয়ে উন্নত, মানবিক ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা হিসাবে প্রমাণ করতে পারেনি; পারেনি তার ধারাবাহিক নিদারুন সংকটের কোন নিদান দিতে ; বরং গোটা পুঁজিবাদী ব্যবস্থা তার অবশিষ্ট উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক চরিত্র হারিয়ে ক্রমে আরও অগণতান্ত্রিক, স্বৈরতান্ত্রিক, প্রবল কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী চরিত্র গ্রহণ করছে।মানুষকে শ্রমদাসত্বের পাশাপাশি বহুমাত্রিক শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে রাখছে।এই ব্যবস্থায় মানব জাতির যে কোন মুক্তি নেই তা স্পষ্ট ।

লেনিন পরবর্তী গত একশো বছরে আন্তর্জাতিক পুঁজিবাদ তার ভিতরকার মৌলিক দ্বন্দ্ব, সংকট ও স্ববিরোধীতার সুরাহা করতে না পারলেও তার গভীর সংকটসমূহ পাশ কেটে যাওয়া বা চাপা দিয়ে রাখার ক্ষেত্রে নানা অভিনব পথ ও কৌশল অবলম্বন করেছে। এ কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে নিজেদের মধ্যকার বিরোধ - বৈরিতা তারা খানিকটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যেও রাখতে পেরেছে।

পাশাপাশি সোভিয়েত ইউনিয়নসহ সমাজতান্ত্রিক দেশসমূহের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পসমূহের বহুমাত্রিক প্রভাবে অনেক পুঁজিতান্ত্রিক দেশকেও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিজেদের মত করে সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনী গড়ে তুলতে হয়েছে।সোভিয়েত ইউনিয়নসহ সমাজতান্ত্রিক শিবিরের বিলুপ্তির পর ইতিমধ্যে অনেকগুলো দেশেই আবার এসব সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প তুলে নেয়া হয়েছে বা সংকুচিত করা হয়েছে।

সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর পুঁজিবাদী - সাম্রাজ্যবাদী দুনিয়ার আনন্দ- উচ্ছ্বাস বেশীদিন টেকেনি।বিগত ক’দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পুঁজিবাদী দুনিয়ার অধিকাংশ দেশসমূহকে মারাত্মক সব সংকট ও মন্দা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে।নিয়ন্ত্রিত ও রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপযুক্ত বাজার অর্থনীতিকে সচল করে সংকট উত্তরণের নানা প্রচেষ্টা চলছে।কর্মসংস্থানহীন প্রবৃদ্ধির ধারা জোরদার হচ্ছে; উৎপাদনের সাথে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক ব্যতিরেকেই আয় ও সম্পদের বিশাল মজুদ গড়ে উঠছে।করোনার অতিমারীও পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থার স্ববিরোধ প্রকট করে তুলেছে।
হালআমলে ইউক্রেন - রাশিয়া যুদ্ধ, ফিলিস্তিনে ইজরায়েলী আগ্রাসন ও অব্যাহত গণহত্যাসহ দুনিয়ার নানা প্রান্তে আঞ্চলিক যুদ্ধসমূহ সাম্রাজ্যবাদী দুনিয়ার চরম অমানবিক, ক্লেদাক্ত ও নিষ্ঠুর রাজনৈতিক - সমর অর্থনীতির আসল চেহারা কিছুটা তুলে ধরেছে।কোনভাবেই এসব তারা লুকিয়ে রাখতে পারছেনা।বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক পুঁজির মুনাফার ক্রমহ্রাসমান ধারা পুঁজিতান্ত্রিক উৎপাদন সার্কেলের নানা সংকট ঘনীভূত করে তুলছে।জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তনজনীত বিপর্যয়, অভিবাসন সমস্যাসহ নানা দূর্যোগ পুৃঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদের কেন্দ্রেও নানা ধরনের সংকট বাড়িয়ে তুলছে।

এই বিশ্ব বাস্তবতায় সাম্যভিত্তিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার গণআকাঙ্ক্ষা, গণআকুতি ক্রমে আবারও প্রবল হয়ে উঠছে; সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিও নানাভাবে আবার দানা বাঁধছে।অধিকার ও মুক্তি অর্জনে দুনিয়ার দেশে দেশে পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদী আদিপত্য বিরোধী শ্রেণী ও গণসংগ্রাম নতুন মাত্রা ও নতুন বৈশিষ্ট নিয়ে নতুন রুপে গড়ে উঠছে।এই সংগ্রাম আর বিপ্লব যে রুশ বিপ্লবের ধ্রুপদী মডেলে হবেনা- তা প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু শ্রমিকশ্রেণীসহ নিপীড়িত শোষিত - বঞ্চিত মানুষের এই বিপ্লবী সংগ্রাম নতুন আদলে, নতুন ফরমে যে বিকশিত হবে তা নিয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই।এই সংগ্রাম কোন দেশে কোন অঞ্চলে ঠিক কি বৈশিষ্ট আর চেহারা নিয়ে বিকশিত হবে তা নির্ভর করছে বিশেষ দেশ, বিশেষ অঞ্চলের অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অবস্থা, জনচেতনা এবং আন্দোলন - সংগঠনের প্রকৃতি ও শক্তির উপর। গোটা এই রাজনৈতিক অভিযাত্রায় লেনিন ও রুশ বিপ্লবের শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা প্রাসঙ্গিক হিসাবেই উপস্থিত থাকবে।

লেনিন পরবর্তী একশো বছরে দুনিয়ায় নানা দিক থেকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে সন্দেহ নেই। কিন্তু যে পর্যন্ত শোষণ ও বঞ্চনানির্ভর নিষ্ঠুর ও অমানবিক পুঁজিতান্ত্রিক - সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থা বহাল আছে ততদিন মানুষের অধিকার ও মুক্তি অর্জনে সাম্যভিত্তিক সমাজব্যবস্থার জরুরত থাকবে।এই সংগ্রামে লেনিন, তার বিপ্লবী চিন্তা ও কর্মযজ্ঞ থাকবে আলোকবর্তীকা হিসাবে। আন্তর্জাতিক শ্রমিকশ্রেণী তথা মুক্তিকামী মানুষের কাছে লেনিন থাকবেন অনুপ্রেরণার উৎস হিসাবে।

২১ জানুয়ারী-২০২৪ ইংরেজি।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)