সোমবার ● ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » নওগাঁ » শুঁটকি উৎপাদনে ভাটা পড়েছে আত্রাইয়ের শুঁটকিপল্লী
শুঁটকি উৎপাদনে ভাটা পড়েছে আত্রাইয়ের শুঁটকিপল্লী
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: উত্তর জনপদের মৎস্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া গ্রামটি শুঁটকির গ্রাম হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিতি। এখানকার উৎপাদিত দেশিয় ছোটমাছের শুঁটকি প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি হওয়াতে এর কদর রয়েছে দেশজুড়ে। শুধু দেশেই নয়, ভারতেও রয়েছে এখানকার শুঁটকির কদর।
তবে এখন ভরা মৌসুম হলেও মাছের অভাবে ভাটা পড়েছে শুঁটকি উৎপাদনে। অল্পস্বল্প যে মাছ পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোও কিনতে হচ্ছে বেশি দামে।
আত্রাই উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রায় ২৫০ মেট্রিকটন শুঁটকি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্যে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এখানকার উৎপাদিত শুঁটকির বাজার মূলত দেশের রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও ঢাকায়। রপ্তানি হয় ভারতেও। এ উপজেলায় একসময় ৪০ জন ব্যবসায়ী শুঁটকি উৎপাদনে জড়িত থাকলেও বর্তমানে ১৫-১৮ জন ব্যবসায়ী শুঁটকি উৎপাদন কাজে জড়িত।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, আত্রাই রেল স্টেশনের দুই পাশ শুঁটকির মাছ শুকানোর চাতাল। নারী-পুরুষরা মাছ কাটা, ধোয়া, লবণ লাগিয়ে চাতালে শুকাতে দিচ্ছেন। সকালে রোদে দেওয়া ভেজা মাছগুলোও কেউ কেউ এপিঠ-ওপিঠ উল্টে রাখছেন। মাছের অভাবে অনেক চাতাল ফাঁকাও পড়ে থাকতে দেখা যায়।
স্থানীয় শুঁটকি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আত্রাই উপজেলা একটি বিল অধ্যুষিত এলাকা। উপজেলার মধ্যদিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী। পাশাপাশি ছোট যমুনা নদী ও আরও রয়েছে শতাধিক খাল-বিল। এসব নদী ও খাল-বিলের পানি কমতে শুরু করলে বাজারে উঠতে শুরু করে দেশীয় প্রজাতির টেংরা, পুঁটি, খলসে, টাকি, শোল, চাঁদাসহ নানা জাতের মাছ। কিন্তু চায়না দুয়ারি, সুতি, কারেন্ট ও ভাদাই জালের অবাধ ব্যবহারে পানি কমলে এবছর দেখা নেই মাছের। মাছের অভাবে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বন্ধ ছিলো অধিকাংশ চাতাল। এতে চাহিদা অনুযায়ী শুঁটকি উৎপাদন করতে পারছেন না। এছাড়াও শুঁটকি উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকেরা কর্মহীন হয়ে পড়ছে।
শুঁটকি ব্যবসায়ী ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের রামপদ শীল বলেন, ‘এ বছরের মাছের খুব অভাব। বাজারে যেটুকু মাছ পাওয়া যাচ্ছে তাও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। মানভেদে প্রতি কেজি ১০০-২২০ কেজিতে মাছ কিনতে হচ্ছে। প্রতিদিন ২০-২৫ মণ মাছের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় বাজার ও মৎস্য আড়ত ঘুরে ৭-১০ মণের বেশি মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী শুঁটকি উৎপাদন করতে পারছি না।
ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান ও সবদুল প্রামানিক বলেন, ‘কয়েকবছর আগেও এই সময় শুঁটকি পল্লী মুখোর থাকতো। কিন্তু এখন বর্ষার শুরুতেই সুতি, দুয়ারি ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরায় বাজারে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। মাছ পাওয়া গেলে এতদিন দুই-আড়াই মাস ব্যাবসা করা যেত। মাছের অভাবে অনেক চাতাল বন্ধ আছে। এ অবস্থায় চাতালের কাজে জড়িত নারী-পুরুষ শ্রমিকও বেকার হয়ে পড়ছেন।
নারী শ্রমিক আনজুমান বেগম বলেন, ‘মাছের অভাবে কাজ কমে গেছে। এই শুঁটকি মাছের চাতালে কাজ করে যে টাকা পায়, তা দিয়েই সংসার চলে। কাজ না পেয়ে অনেেেক বসে থাকে।
আত্রাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘শুঁটকির সঙ্গে জড়িতদের নিরাপদ ও মানসম্মতভাবে শুঁটকি তৈরিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। অসাধু উপায়ে মাছ শিকার বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।





আত্রাইয়ে যথাযথ মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
আত্রাইয়ে বেগম রোকেয়া দিবসে ৫ জয়িতাকে সংবর্ধনা
আত্রাইয়ে মাশরুম চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছে শাহাজাদী
আত্রাইয়ে ট্রাকচাপায় সেনা সদস্যের মৃত্যু
আত্রাইয়ে মেধা যাচাই অনুষ্ঠিত
আত্রাইয়ে ইটভাটা বন্ধের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
প্রেমের টানে পাকিস্থানি তরুণী বাংলাদেশে
আত্রাইয়ে ৫৪ তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন
আত্রাইয়ে জাতীয়তাবাদী যুবদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন