শিরোনাম:
●   ঈশ্বরগঞ্জে প্রার্থীদের নিয়ে অবহিতকরণ সভা ●   গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একশ্রেণীর মাফিয়া চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে আছে ●   বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে প্রেস ইউনিটির নাম সংশোধন ●   রাবিপ্রবিতে GST গুচ্ছভুক্ত B ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত ●   গাজীপুরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে আহত-৪ ●   বান্দরবানে শিশু আইন-২০১৩ শীর্ষক ২ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা ●   রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় মাদকসহ গ্রেফতার-৫ ●   ঘোড়াঘাটে খাদ্য গুদাম সিলগালা কর্মকর্তা উধাও ●   নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি’র পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হলেন সাংবাদিক লিয়াকত ●   সন্দ্বীপে ভিক্ষুক পুনর্বাসনে গবাদি পশু বিতরণ ●   লন্ডনে এনায়েত খান মহিলা কলেজের সকল সদস্যদের মিলন মেলা ●   রেলের ভাড়া বৃদ্ধির পাঁয়তারা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মত ●   কাপ্তাই লেকে বেআইনী অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা দেড় বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি ●   মহান মে দিবস ও শ্রমিকশ্রেণীর মুক্তির সংগ্রাম ●   পার্বত্য চট্টগ্রামের বন ঝুঁকিপূর্ণ, সংরক্ষণের জন্য এর জরিপ করা প্রয়োজন : কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ●   আত্রাইয়ে তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন ●   ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ●   স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন সন্দ্বীপ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার ●   সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধন গড়ে তুলতে পারলেই স্মার্ট নাগরিক হওয়া সম্ভব : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   রুমার জঙ্গল থেকে গুলিবিদ্ধ দুইটি মরদেহ উদ্ধার ●   কাউখালীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিষয়ক মতবিনিময় সভা ●   মিরসরাইয়ে এসএসসি ২০২০ ব্যাচের দিবারাত্রি অলিম্পিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল ●   ২০২৩ সালের সেরা লিগ্যাল এইড অফিসার সিনিয়র সহকারী জজ মো. জুনাইদ ●   পার্বত্য শান্তিচুক্তি পাহাড়ের চিত্র বদলে দিয়েছে : কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ●   ৮ বছর পর খাগড়াছড়িতে ছাত্রলীগের সম্মেলন ●   ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে অনতিবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে বলুন ●   রাবিপ্রবিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত ●   মানিকছড়িতে অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে অর্ধ লক্ষ টাকা জরিমানা ●   কাপ্তাই হ্রদের চারটি উপকেন্দ্র থেকে সাড়ে ১৫ কোটির উর্ধ্বে শুল্ক আয় করেছে বিএফডিসি ●   পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তুলতে হবে : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী
রাঙামাটি, শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
শুক্রবার ● ২৭ এপ্রিল ২০১৮
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » বড়ুয়া সম্প্রদায় আজ রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্যের শিকার
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » বড়ুয়া সম্প্রদায় আজ রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্যের শিকার
১২০৮ বার পঠিত
শুক্রবার ● ২৭ এপ্রিল ২০১৮
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বড়ুয়া সম্প্রদায় আজ রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্যের শিকার

---নির্মল বড়ুয়া মিলন :: বাংলাদেশের সংবিধানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সমান অধিকারের স্বীকৃতি থাকলেও সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া বড়ুয়া জনগোষ্ঠী পার্বত্য অঞ্চলসহ বাংলাদেশে নানা বৈষম্যের শিকার। সংবিধানের নির্দেশনা এবং মানবিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশিল হয়ে সরকারের উচিত বড়ুয়া জনগোষ্ঠীসহ দলিত ও আদিবাসী (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী)জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সুনিদিৃষ্ট নীতিমালা গ্রহন করা। পদ্ধতিগত গণনা ব্যতিতই ধারনা করা হয়, এদেশে দলিত, আদিবাসী (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী) ও বড়ুয়াসহ বাঙালি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ভূক্ত প্রায় এক কোটি মানুষের বসবাস।
দলিত, আদিবাসী (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী) ও বড়ুয়াসহ বাঙালি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ভূক্ত জনগোষ্ঠী শিক্ষা, কর্মসংস্থানের অভাবে নিজেদের অধিকার আদায়ে সংঘবদ্ধ হতে পারেনি, ফলে তাদের অধিকার আদায়ে শক্তিশালি সংগঠনও দাঁড়াতে পারেনি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর উন্নয়নের মূল স্রোতধারা থেকে ছিটকে পড়ে এসব জনগোষ্ঠীর মানুষ।
রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তি করা হয়। এচুক্তিতে মুসলমান (বাঙ্গালি), চাকমা, হিন্দু, মারমা, তনচংগা, ত্রিপুরা, লুসাই, পাংখোয়া, ম্রো, খুমি, বম ও চাক সম্প্রদায়ভূক্ত জনগোষ্ঠীর কথা উল্লেখ থাকলেও পার্বত্য চুক্তিতে বাদ পড়ে যায় বড়ুয়া, অহমিয়া, সাওতাল, রাখাইন ও দলিত সম্প্রদায়ের নাম।
পার্বত্য চুক্তিটি আদিবাসী (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী)জনগোষ্ঠীর জনগণের মুক্তির সনদ বলা হলেও বৈষম্যে ও রাজনৈতিক কারণে বিশ বছরেও আদিবাসী (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী)জনগোষ্ঠীর আস্তা অর্জন করতে পারেনি।
পার্বত্য চুক্তিতে পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯ (রাঙামাটি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯, বান্দরবান পার্বত্য জেলা সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯) “পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ” এর নাম সংশোধন করে তদপরিবর্তে এই পরিষদ “পার্বত্য জেলা পরিষদ” নামে অভিহিত থাকবে বলে আইনও জাতীয় সংসদে করা হয় এবং রাষ্ট্রপতি’র অনুমোদিত আইনটি তিন পার্বত্য জেলায় বহাল আছে।
আইন করে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চাকমা সম্প্রদায়ভূক্ত জনগোষ্ঠী, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ মারমা সম্প্রদায়ভূক্ত জনগোষ্ঠী ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ ত্রিপরা সম্প্রদায়ভূক্ত জনগোষ্ঠী পরিচালনার বিধান করা হয়।
এ আইনের কারণে পার্বত্য অঞ্চলে মুসলমান (বাঙ্গালি),হিন্দু,তনচংগা, লুসাই, পাংখোয়া, ম্রো, খুমি, বম, চাক বড়ুয়া, অহমিয়া, সাওতাল, রাখাইন ও দলিত সম্প্রদায়ের বৈষম্যের শিকার।
যেমন : ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তিতে পাংখোয়া সম্প্রদায়কে অর্ন্তভূক্ত করে অনেক ভাল কাজ করা হয়েছে, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে এ সম্প্রদায়ের জন্য ১জন করে সদস্য তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে ৩জন সদস্য রাখার প্রবিধান রাখা হয়েছে। আমি পাংখোয়া সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা সন্মান রেখেই বলছি, তিন পার্বত্য জেলায় পাংখোয়া সম্প্রদায়ের তিন হাজার জনসংখ্যা হবেনা। পাংখোয়া সম্প্রদায়কে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে ৩জন সদস্য হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে কিন্তু তিন পার্বত্য জেলায় বড়ুয়া, অহমিয়া, সাওতাল, রাখাইন ও দলিত সম্প্রদায়ের প্রায় ৫০ হাজারের অধিক মানুষ স্থানীয়ভাবে বসবাস, তার পরও এসব সম্প্রদায়ের মানুষকে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে সম্প্রদায়ভূক্ত অংশিজন হিসাবে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি। এটাই হচ্ছে সরকারের বৈষম্যে।
এছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্পর্কিত ১২ এপ্রিল-২০১০ তারিখে সম্পাদিত গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়ন করেন। এ আইনের তফসিল (ধারা ২ (১) এবং ধারা ১৯ দ্রষ্টব্য) {বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও শ্রেণীর জনগণের নাম} চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, তঞ্চঙ্গ্যা, বম, পাংখোয়া, চাক, খিয়াং, খুমি, লুসাই, কোচ, সাঁওতাল, ডালু, উসাই (উসুই), রাখাইন, মণিপুরী, গারো, হাজং, খাসিয়া, মং, ওরাও, বর্মণ, পাহাড়ী, মালপাহাড়ী, মুন্ডা ও কোল সম্প্রদায়কে অর্ন্তভূক্ত করে সচিব আশফাক হামিদ বাংলাদেশ গেজেট প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বাঙ্গালী বৌদ্ধ বলে খোড়া যুক্তি দেখিয়ে উপরের উল্লেখিত গেজেটে বড়ুয়া সম্প্রদায়কে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি। এটাই হচ্ছে রাষ্ট্রিভাবে বড়ুয়া সম্প্রদায়র প্রতি সরকারের বৈষম্য। বাংলাদেশ সরকারের কোন গেজেটে বা নথিতে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের নাম তালিকায় অর্ন্তভূক্ত নাই। তাই বড়ুয়দের ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যাথাও নাই।
এবিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ডা. বাদল বরণ বড়ুয়া বলেন, বড়ুয়া’রা মূলত ভূইয়া মগ বা মারমাগ্রী এবং বড়ুয়া সম্প্রদায়ের মধ্য মুৎসদ্দী, চৌধুরী, তালুকদার, সিংহ ও রুদ্র ইত্যাদি নিজস্ব গোত্র রয়েছে। যেমন : চাকমা সম্প্রদায়ের মধ্যে রায়, দেওয়ান, তালুকদার ও খীসা ইত্যাদি গোত্র রয়েছে আবার মারমা সম্প্রদায়ের মধ্যে মগ, চৌধুরী ও রোয়াজা ইত্যাদি গোত্র আছে। বাংলাদেশে বড়ুয়া ও দলিত সম্প্রদায় ব্যাতিত প্রতিটি সম্প্রদায়ের তালিকা গেজেট আকারে আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের বড়ুয়া সম্প্রদায়ের নাম সরকারের কোন তালিকায় নাই। এছাড়া সমতলে বসবাসকারি বড়ুয়া সম্প্রদায়ের আর পাহাড়ে বসবাসকারি বড়ুয়া সম্প্রদায়ের সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা এক নয়। এবিষয়টি সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. বাদল বরণ বড়ুয়া আরো বলেন, দেখুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে এদেশ সবার কিন্তু উগ্র সম্প্রদায়ের কিছু সংখ্যক মানুষের কারণে বড়ুয়া সম্প্রদায় আজ রাষ্ট্রিয়ভাবে বৈষম্যের শিকার এবং আগামী ৫০ বছর পর এদেশে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের নাম থাকবে বলে মনে হয় না। এছাড়া পার্বত্য তিন জেলায় একটি গোষ্ঠী বড়ুয়াদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে, আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান করে দেখেছি গুটি কয়েক অনলাইন পত্রিকা, মিডিয়া ও একটি গয়েন্দা সংস্থা অকারণে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের নাম ব্যবহার করে স্থানীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে দুরত্ব তৈরী করছে। এর মুল কারণ হচ্ছে, পার্বত্য অঞ্চলে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন যেন সুসংগঠিত বা সাংগঠনিক ভাবে একতাবদ্ধ হতে না পারে এবং পার্বত্য অঞ্চলে যুগ যুগ ধরে এক সাথে বসবাস করা আদিবাসীদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও বড়ুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকে রোষানলে ফেলার অপচেষ্টা।ইদানিং আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের আরো একটি বিষয় লক্ষ্যে করছি, যে সব সাংবাদিক বা পত্র-পত্রিকা বড়ুয়া সম্প্রদায়কে নিয়ে তাদের স্বপক্ষে লিখতে বা বলতে চায় সেই সব পত্র-পত্রিকার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের পক্ষ থেকে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকে আরো সাহসের সাথে এবং সাবধানে সতর্কতার সাথে ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করার পরামর্শ দেন। এছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্পর্কিত ১২ এপ্রিল-২০১০ তারিখে সম্পাদিত গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রনীত আইনের তফসিল (ধারা ২ (১) এবং ধারা ১৯ দ্রষ্টব্য) {বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও শ্রেণীর জনগণের নাম} সংশোধন করে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের নাম গেজেটভূক্ত করার দাবি জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ডা. বাদল বরণ বড়ুয়া।





আর্কাইভ