শিরোনাম:
●   আত্রাইয়ে গাঁজা-মদসহ মা-মেয়ে গ্রেপ্তার ●   চুয়েটে পুরকৌশল বিভাগের সেমিনার অনুষ্ঠিত ●   রাউজানে দেয়াল ধসে কিশোরের মৃত্যু ●   চবিতে পিসিসিপির কমিটি গঠন ●   তেল খরচ লাখ টাকা, ভেটেরিনারি ক্লিনিক এর চিকিৎসা কোথায় ? ●   পার্বতীপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে গাঁজাসহ পিতা ও পুত্র গ্রেফতার ●   কুষ্টিয়ার শীর্ষ চরমপন্থী লিপ্টন ও ট্রিপল মার্ডারে রাজু শোন অ্যারেস্ট ●   কালের কণ্ঠ মাল্টিমিডিয়ার বর্ষপূর্তি উদযাপন ●   মাধবপুরে বাস-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক নিহত ●   আলীকদমে দুর্গম পাহাড়ে মেডিক্যাল ক্যাম্প করেছে বিজিবি ●   তায়কোয়ানডো এডহক কমিটিতে বিতর্কিত ব্যক্তি জনি ●   নিউইয়র্কে দুই দিনব্যাপী ইসলামিক কনভেনশন অনুষ্ঠিত ●   রাবিপ্রবি’তে জুলাই বিপ্লবের স্মরণে র‌্যালি ●   ৩ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে গণতন্ত্র মঞ্চের কর্মসূচী ঘোষিত হবে ●   ফটিকছড়ি পৌরসভার ৫০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা ●   পার্বতীপুরে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা ●   নবীগঞ্জে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় যৌথ বাহিনীর অভিযান : আটক-১৩ ●   ফটিকছড়িতে মায়া হরিণ সাবক উদ্ধার ; চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় হস্তান্তর ●   চুয়েটের ১৩৯তম সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত ●   আত্রাইয়ে পুত্রের হাতে পিতা খুন ●   নবীগঞ্জে ৩ সন্তানের জননী শেফালীর লাশ উদ্ধার ●   ঈশ্বরগঞ্জে গণধর্ষণের অভিযোগে চাচা সহ গ্রেফতার-২ ●   পার্বতীপুরে ৫পরিবারের চলাচলের রাস্তা অবরুদ্ধ ●   আলীকদমে ইয়াবাসহ আটক এক যুবক ●   চুয়েটে প্রথমবারের মতো টেডএক্সচুয়েট অনুষ্ঠিত ●   ঈশ্বরগঞ্জে হামলায় আহত আব্দুল্লাহ ফকিরের মৃত্যু ●   রাঙামাটির জিপি ও বিএনপি নেতা এড. মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে পেশাগত আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ●   অন্তর্বর্তী সরকারকে বিতর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে হবে ●   সুপ্রদীপ চাকমা আদিবাসী পরিচয়ের দাবির প্রেক্ষেতি নিন্দা জানিয়েছে পিসিসিপি ●   উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার বক্তব্য সংবিধান বিরোধী অবস্থান
রাঙামাটি, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
বুধবার ● ২১ জুন ২০১৭
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » কাউখালীতে বন্যা ও পাহাড় ধ্বসের কারনে জন জীবন বিপর্যস্থ
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » কাউখালীতে বন্যা ও পাহাড় ধ্বসের কারনে জন জীবন বিপর্যস্থ
বুধবার ● ২১ জুন ২০১৭
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

কাউখালীতে বন্যা ও পাহাড় ধ্বসের কারনে জন জীবন বিপর্যস্থ

---কাউখালী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি :: (৭আষাঢ় ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৫৪মি.) গত বেশ কিছুদিন যাবৎ প্রবল বর্ষণ অব্যাহত থাকায়, পাহাড়ী ঢলের কারনে সৃষ্ঠ বন্যায় পাহাড় ধ্বসের ফলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাউখালী উপজেলায় বর্তমান জন জীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে।
সুত্র মতে, গত ১৩ জুন থেকে তিন পার্বত্য জেলায় প্রবল বর্ষণ শুরু হয়। বর্ষনের ফলে তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড়ী ঢলের ফলে বন্যার সৃষ্টি সেই সাথে শুরু হয় পাহাড় ধ্বসের ফলে পাহাড়ের পাশে থাকা মানুষ এর ঘরের উপর বসত বাড়ির উপর পাহাড় ধ্বসে পড়ে হতাহতের ঘটনায় বহু লোকজন ক্ষতিগ্রস্থ হন। অনেকে হারান তার পিতা, মাতাকে, অনেকে হারান তার প্রিয় বুকের ধন সন্তানকে। অনেকে হারান তার পরিবারের সকল সদস্যকে। হতাহত হন তাদের গৃহ পালিত গবাঁধী পশু হাঁস, মুরগী ,গরু,ছাগল, শুকুর, নষ্ঠ হয় নিজেদের অনেক কষ্ঠের উপার্জিত অর্থের দ্বারা করা লক্ষ লক্ষ টাকার ফলজ বাগান, বনজ বাগান। নষ্ঠ হয় রাস্তা ঘাট, কৃষিজ জমি, বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ সহ বিভিন্ন স্থাপনা।
প্রাকৃতিক দ্বারা সৃষ্ঠ এই দুর্যোগের ফলে আজ দিশে হারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বসবাসরত হাজার হাজার লোকজন। গৃহহীন হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন কোন আশ্রয় কেন্দ্রে। কোন রকম বেচেঁ থাকার আপ্রাণ চেষ্টা যেন এসব ভুক্ত ভুগীদের পিছু ছাড়ছেনা। সেই সাথে অব্যাহত রয়েছে প্রবল বর্ষণ, পাহাড়ী ঢল। যেন মানুষ প্রাকৃতিকের কাছে আজ বড় অসহায়।
উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানা যায়, প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের কারনে সৃষ্ঠ বন্যায় এবং পাহাড় ধ্বসে এ পর্যন্ত কাউখালী উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে অন্তত কমপক্ষে ২২জন লোক প্রাণ হারান। তার মধ্যে ১নং মডেল ইউনিয়নে একই পরিবারের ৪জন। ২নং ফটিকছড়ি ইউনিয়নে ১জন। ৩নং ঘাগড়া ইউনিয়নে ১৫জন। তার মধ্যে একই পরিবারের ৩জন, আরো এক পরিবারের ২জন। ৪নং কলমপতি ইউনিয়নে ১জন। এবং প্রবল বর্ষণ সেই সাথে বজ্রপাতে আরো ১জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ১৫ জনের মতো লোক। তার মধ্যে উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থ লোক সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজারের মতো। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সংখ্যা ২৮শতের মতে প্রায়। ক্ষতিগ্রস্থ হন উপজেলার ৫টি মাদ্রাসা,স্কুল ও মসজিদ, মন্দির ২১টি, ধ্বংসপ্রাপ্ত সড়ক কাচাঁ/পাকা ১৯ কিঃমিঃ ধ্বংস হয় অনেক গুলি বাধঁ, মৎস্য খামার ২৫টি, ক্ষতিগ্রস্থ নলকুপ ১০টির মতো। পুকুর ও জলাশয ২৫টি বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার কমল বরন সাহা কর্তৃক প্রাকৃতিক দুর্যোগে সৃষ্ঠ ক্ষতিগ্রস্থ উপজেলার এই তথ্য সুত্রে জানা যায়। তিনি সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সার্বক্ষনিক মনিটরিং করছি। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের কাছে যত দ্রুত সম্ভব আমরা উপজেলা দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ অর্থ পৌছে দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। এবং আমাদের চেষ্ঠা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
অপরদিকে বর্তমানে কাউখালী উপজেলায় সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসাবে দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, পাহাড় ধ্বসে পড়া বাড়িঘর থেকে মাটি অপসারন সেই সাথে খালের দু পাশে বসবাসরত পরিবারগুলির ঘর বাড়ি হতে কাদাঁ মাটি সরানো সেই সাথে থাকার জন্য একটু নিরাপদ আশ্রয়স্থল। কিন্তু এখনো প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢল অব্যাহত থাকার কারনে মানুষ দিশেহারা এবং চিন্তিত। অন্যদিকে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি মুসলমানদের বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। কিন্তু একদিকে প্রবল বর্ষণ অন্যদিকে পাহাড়ী ঢল মানুষ আজ সম্পুর্ন বিপর্যস্থ।
সরেজমিনে গুরে দেখা যায়, উপজেলার কাশখালী, ঘিলাছড়ি, নাইল্যাছড়ি, বেতছড়ি, বেতবুনিয়া, ঘাগড়া, কার্বারী পাড়া, কচুখালী, হেমন্ত পাড়া এসব এলাকায় পাহাড় ধ্বসে মানুষের বাড়িঘর,রাস্তাঘাট, বিদ্যৎ লাইন বিচ্ছিন্ন, মৃত গবাধী পশু মাটি চাপা দেওয়ার চিত্র, বিধ্বস্থ বাড়িঘর হতে মাটি সরানোর কাজ, বনজ, ফরজ বাগান হতে ভেঙে পড়ে যাওয়া গাছ কাটা, রাস্তার উপর থেকে পাহাড় ভেঙে পড়া মাটির স্তুপ অপসারন করা, ভেঙে যাওয়া নিজ আশ্রয় স্থল ভেড়ার ঘর সংস্কার করা সারা উপজেলার একই চিত্র যেন এখন সভাইর। এ প্রসঙ্গে বেতবুনিয়ার বাসিন্দা উসুই প্রু, কার্বরী পাড়ার নিমাচাই মারমা, ঘিলাছড়ির আব্দুল লতিফ, কাশখালীর আব্দুর রশিদ সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন আমরা আজ বড় অসহায় আমাদের ৪০-৪৫ বছরেও এমন পাহাড়ী ঢল এবং বন্যা সেই সাথে পাহাড় ধ্বস দেখিনি। হটাৎ করে কি হয়ে গেলো আমরা কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা। যে ক্ষতি আমাদের হয়েছে তা কোন রকম ফোশাঁনোর মতো নয়। অন্যদিকে বেতবুনিয়া মডেল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খইচাবাই তালুকদার সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধি কে বলেন, যেভাবে প্রবল বর্ষণ এবং পাহাড়ী ঢল শুরু হয়েছে সেই সাথে পাহাঢ় ধ্বস তাতে করে মনে হচ্ছিল যেন আমরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। নাই বিদ্যুৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বৃষ্টি সাময়িক বন্দ হলে লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যাবস্থা করা যেন একটা মহাবিপদে পরিনত হয়েছে। এখন পর্যন্ত এই বিপদ হতে উত্তোরনে চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।
অপরদিকে এই প্রাকৃতিক বিপর্য়য়ে ক্ষতিগ্রস্থ নিহত ও আহত পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল হতে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কাউখালী উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় নিহত প্রতিজনকে নগদ ২০ হাজার টাকা ও ৩০ কেজি করে চাল, আহত প্রতিটি পরিবারকে নগদ ৫হাজার টাকা ও ২০ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়। সেই সাথে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে কাউখালী উপজেলা আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলায় নিহত প্রতি জনকে নগদ ২০ হাজার করে টাকা ও ২০ কেজি করে চাল ও আহত ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিটি পরিবারকে নগদ ৫ হাজার করে টাকা ও ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। এবং আংশিক ও সাধারন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের জন্য জেলা প্রশাসকের ত্রাণ তহবিল হতে মোট ১০ টন চাল (জিআর) বরাদ্ধ প্রদান করা হয় বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সুত্রে জানা যায়।
বন্যা পরবর্তী ও পাহাড় ধ্বসের পর কাউখালী উপজেলার সার্বিক পরিস্থিতি প্রসংগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমনী আক্তার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন যেহুতু প্রবল বর্ষণ ও পাহাড় ধ্বসের ফলে উপজেলায় ২২জনের মতো লোক নিহত হন অন্তত ১৫জনের মতো আহত হন আমরা তাৎক্ষনিকভাবে সরকার প্রদত্ত উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নগদ অর্থ ও চাল, চিরা মুড়ি,দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতা করেছি। পাশাপাশি উপজেলায় ৬টি আশ্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার ব্যাবস্থা করেছি যেহুতু প্রাকৃকি দুর্যোগ হয়েছে সেহুতু মানুষের ক্ষয়ক্ষতি তো হয়েছে আর এই ক্ষয় ক্ষতির ফলে লোকজন একটু বিপর্যস্থ তো হবেই এটাই স্বাভাবিক বিষয়।
বর্তমানে কাউখালী উপজেলার সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও মানুষজন প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের আতংকের মধ্যে রয়েছেন। মানুষজনকে পাহাড়ের পাশ থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে মাইকিং করা হচ্ছে। অপরদিকে আগত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে উপজেলার কোথাও মানুষের মধ্যে ঈদ আনন্দ পরিলক্ষিত হয়নি। তা ছাড়া গত ১৩ জুন প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হলেও কিন্তু সে সময় অনেক সহযোগিতা পায়নি ক্ষতিগ্রস্থরা।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)