রবিবার ● ২২ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » ঢাকা বিভাগ » বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠায় মাইকেল মধুসুদন দত্তের অবদান চিরস্মরণীয় : আসাদুজ্জামান নূর
বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠায় মাইকেল মধুসুদন দত্তের অবদান চিরস্মরণীয় : আসাদুজ্জামান নূর

ঢাকা প্রতিনিধি ::  ২২ নভেম্বর রোববার : সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন,মাইকেল মধুসুদন দত্ত  ছিলেন একজন মুক্ত মনের মানুষ ৷ তিনি তার লেখনির মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে যেভাবে  সমৃদ্ধ করেছেন, প্রতিষ্ঠিত করেছেন,মানুষকে উজ্জিবিত করেছেন সে কথা বাঙালী  জাতি চির দিন স্মরণ রাখবে ৷ বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করতে মহাকবি মাইকেল  মধুসুদন দত্তসহ যেসব শ্রেষ্ঠ কবি সাহিত্যিকরা ভূমিকা রেখে গেছেন সেই  অবদানকে ধরে রাখতে তাদের লেখনী নিয়ে চর্চা চালিয়ে যেতে হবে ৷
শনিবার সন্ধ্যায় ৭টায় দাঁড়াও পথিক- বর, জন্ম যদি তব বঙ্গে শিরোনামে  মাইকেল মধুসুদন দত্ত স্মরণে আয়োজিত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান  অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন ৷ যশোর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ঢাকায়  শাহবাগস্থ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল হলে আলোচনা ও  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ৷ আসাদুজ্জামান নূর বলেন, সাহিত্য  সংস্কিৃতির সবচে বড় দিক হচ্ছে পড়া ও জানা ৷ সমস্যা হচ্ছে কতোটুকু পড়েছি  আমরা ৷ আর কতোটুকুই বা’ পড়বো ৷ আমাদের মধ্যে মধূসুদন,রবিদ্র,নজরুলকে নিয়ে  চর্চার ঘাটতি আছে ৷ এই ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে বেশী বেশী করে তাদের লেখা পড়তে  হবে ৷ মন্ত্রী সমকালীন সময়ের কিছু ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে যেভাবে  মুক্ত চিনত্মার মানুষের ওপর নানামুখি হামলার কারণে সংস্কৃতি চর্চা  বাধাগ্রস্থ হচ্ছে ৷ তাই,সবাই মিলে এক প্রতিহত করতে হবে ৷ একইসঙ্গে এখন থেকে  শিশুদের মধ্যে সংস্কৃতি চর্চার চেতনা সৃষ্টি করতে হবে ৷ যশোর জেলা প্রশাসক  ড.মো. হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অতিরিক্ত  জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন ৷ মুখ্য আলোচক ও আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন কবি  রেজাউদ্দিন ষ্টালিন ও কবি খসরু পারভেজ ৷
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে মাইকেল মধুসুদন দত্তের জীবন ও আদর্শ তুলে  আলোচনায় অংশ নেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বেগম ইসমাত আরা সাদেক, জনপ্রশাসন  মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, সংস্কৃতি বিষয়ক  মন্ত্রণালয়ের সচিব আকতারী মমতাজ, সাবেক সিনিয়র সচিব ড. রণজিত্ কুমার  বিশ্বাস এনডিসি, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ  চৌধুরী,বিশিষ্ট কবি নির্মলেন্দু গুন ও ঢাকাস্থ যশোর এসাসিয়েশনের নেতা  আবদুর রশিদ প্রমুখ ৷
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বেগম ইসমাত আরা সাদেক  মাইকেল মধুসুদন দত্ত তার সাহিত্য কর্মদিয়ে আমাদেরকে ঋণি করে গেছেন ৷ এখন  আমাদের দায়িত্ব হবে তার সৃষ্টিকর্মকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো ৷ প্রতিমন্ত্রী  যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের আগে মাইকেল মধুসুদন দত্ত’র  নাম অন্তভুক্ত করার অভিমত প্রকাশ করেন ৷
মধুসূদন স্মৃতিবিজড়িত এমএম কলেজ সম্পর্কে কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন,  মধুসূদনের নামে প্রতিষ্ঠিত যশোরের এম এম কলেজ নামটি যথার্থ নয় ৷ এমএম কলেজ  নাম দেখে  নতুন কোনো মানুষ এটিকে মধুসূদন চিহ্নিত করতে পারবে না ৷ কেউ হয়তো  মনে করবে মদন মোহন বলে ৷ সুতরাং এই কলেজটির নামকরণ বাংলায় মহাহবি মাধুসূদন  কলেজ হওয়া জরুরি ৷
জনপ্রশাসন সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, যে কবিতা একজন কবিকে  আরেকটি কবিতা লিখতে অনুপ্রেরণা দেয় না তা কবিতা বলা যাবে কী না সন্দেহ আছে ৷  সে অর্থে মধুসূদন স্বার্থক কারণ তার কবিতা একজন কবিকে সেভাবেই উজ্জীবিত  করে ৷
মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে কবি রেজাউদ্দীন স্টালিন বলেন, মাইকেল মধুসুদন  দত্ত বাংলা ভাষার মুক্তিদাতা ৷ বাংলায় ইংরেজি মিশ্রন একট স্টাইল হয়ে  দাড়িয়েছে ৷ এ ধরণের প্রনবতা ভাষাকে হুমকির মুখে ফেলবে ৷
বাংলা সাহিত্যের অনিরুদ্ধ অহঙ্কার মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত স্মরণে  আলোচনায় অন্যান্য বক্তারা বলেন,বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ মহাকবি ছিলেন  মাইকেল মধুসুদন দত্ত ৷ তিনি তার লেখনির মাধ্যমে ইউরোপীয় সাহিত্যের সাথে  বাংলা সাহিত্যের একটি মেলবন্ধন সৃষ্টি করেছেন ৷ তিনি চেয়ে ছিলেন বাংলাভাষি  জনগোষ্ঠী শাসক শ্রেণীর সাহিত্যের মাধ্যে নিজেরদের সমৃদ্ধ করুক ৷ তাদের  মতোই একটি শাসক শ্রেণীতে উনি্নত হোক ৷ তাই তার কাব্যেই বাংলার প্রথম  বিদ্রোহের কথা উঠে আসে ৷ সেই বিদ্রোহ পুরনো সাহিত্যের বিরুদ্ধে,  দ্বিধাবিভক্ত হিন্দু সমাজের বিরুদ্ধে,সর্বপরি ইংরেজ বেনিয়াদের  বিরুদ্ধে ৷
বক্তারা বলেন, মধুসূদন ছিলেন সেই কবি যিনি মেঘনাদবধ কাব্য রচনা করে  বাঙালির মনে প্রথম জাগিয়ে দিয়েছিলেন স্বাধীনতার আকাঙ্খা ৷ অমিত প্রতিভাধর  মাইকেল মধুসূদন বাংলা ভাষায় সূচনা করেন সনেট, রচনা করেন এ ভাষার প্রথম  আধুনিক কমেডি ও ট্রাজেডি৷ সৃষ্টি করেন এ ভাষায় প্রথম মহাকাব্ য৷ পশ্চিমা  আধুনিক কাব্যধারা অনুসরণ করে তিনি প্রথম বাংলা কবিতা রচনা করেন এবং  বিশ্বনাটকের সমান্তরালে লিখেন অসামান্য নাটক ৷ তিনি বাংলা কবিতার ইতিহাসে  বীরত্বব্যঞ্জক কাব্যশক্তি ও অতল গভীর মেধার যে ছাপ রেখেছেন, তা অতুলনীয় ও  চিরস্থায়ী হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে ৷ তার রচনাবলী সমাজ কে করেছে বিকশিত,  আলোকিত ৷ তার লেখনিতে প্রকাশ পেয়েছে মাতৃভূমির প্রতি গভীর মমত্ববোধ৷ দেশের  প্রতি, ভাষার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা তার রচনাবলীর অন্যতম বৈশিষ্ট ৷ অন্যায়  অসত্যের বিরুদ্ধে মাইকেলের কলম থেমে যায়নি ৷ জমিদার বংশে জন্ম নিয়েও  দারিদ্রোর সাথে সংগ্রাম করে চরম অর্থ কষ্টে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৷
আলোচনা শেষে  দ্বিতীয়ভাগে ছিলো মনোজ্ঞ এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷ এতে  যশোর জেলা ও কেশবপুর উপজেলা উপজেলার শিল্পীরা অংশ নেন ৷ প্রসঙ্গত, যশোর জেলা  প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথম বারের মতো জেলার বাইরে ঢাকায় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক  অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ৷

      
      
      



    আগামীকাল ৪ নভেম্বর  নির্বাচন কমিশনের সাথে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎকার    
    বাজুস এর নতুন সভাপতি নির্বাচিত হলেন এনামুল খান দোলন    
    বাজুস এর নতুন সহ-সভাপতি  হলেন  ইকবাল হোসেন চৌধুরী    
    তীরে এসে তরি ডোবাবেন না : সাইফুল হক    
    দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন    
    ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেলের প্রাপ্যতা নিশ্চিতের তাগিদ    
    ফেব্রুয়ারীর জাতীয় নির্বাচনকে কোনভাবে ঝুঁকিতে নিক্ষেপ করা যাবেনা    
    চিকিৎসাহীনতার কারণেই মৃত্যু হয়েছে জুলাই যোদ্ধা গাজী সালাউদ্দিনের : আবু হাসান টিপু    
    উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাফল্য আশাব্যঞ্জক, তবে যথেষ্ট নয়    
    গাজীপুরে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত