

শুক্রবার ● ১ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » চাঁদপুরে ৪৮ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবহেলীত
চাঁদপুরে ৪৮ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবহেলীত
চাঁদপুর প্রতিনিধি :: দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র ৬ বছরের মাথায় চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার (পূর্বে যা ছিল হাজীগঞ্জ থানার অন্তর্গত) চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের দৈয়ার গ্ৰামে ১৯৭৭ সালের জানুয়ারি মাসে এলাকার কতিপয় শিক্ষানুরাগী ও জনহিতৈষী ব্যক্তির আর্থিক দান-অনুদান ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় এলাকার ছেলে-মেয়েদের মাঝে দ্বীনি শিক্ষা বিস্তারের জন্য “দৈয়ারা দারুছ সুন্নাত মবিনিয়া নেছারিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা” স্থাপিত হয়। স্থাপনকালে এলাকার মানুষের সহায়তায় দোচালা টিনের ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। স্থাপনের পর থেকে অদ্যাবধি যখন যে সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন ঐ সরকারের কর্তাব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদের বরাবরে বহু আবেদন নিবেদন করা সত্ত্বেও কোন সরকারই এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি সদয় দৃষ্টি দেননি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই বৃষ্টির মৌসুমে প্রবলবৃষ্টি ও ঝড়ে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের বইখাতা ভিজে যারপর নাই অবস্থা ! তদুপরি বহু বছর পূর্বে নির্মিত দোচালা টিনের ঘর গুলো জরাজীর্ণ ও নীচু হওয়ায় প্রখর রোদ্র ও গরমে হাঁসফাঁস অবস্থায় শ্রেণী কক্ষে বসে পাঠগ্ৰহনে ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে অংশগ্রহণ করা দুষ্কর হয়ে পড়ে বলে মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট আবু নোমান মোঃ আব্দুর রহমান এক প্রশ্নের উত্তরে জানান। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, শাহরাস্তি উপজেলার মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি এত অবহেলায়ও আজ পর্যন্ত নিভু নিভু করে টিকে আছে। আর কোন প্রতিষ্ঠান এমন অবহেলায় আছে বলে তার জানা নেই। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি যখন যে সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন তখন তাদের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করে বহু আবেদন নিবেদন করেও তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে অদ্যাবধি এই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম সুচারুভাবে পরিচালনা করে আসছে। সরকার কর্তৃক মাদরাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী ও আধুনিকায়নে যখন যে উদ্যোগ গ্ৰহন করেছেন তার সাথে এই প্রতিষ্ঠানটি তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সফল ও সার্থকভাবে সামিল হয়েছেন। শুরু থেকে অদ্যাবধি প্রতিষ্ঠানটির ফলাফল সন্তোষজনক।
বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০০ শতাধিক। কর্মরত শিক্ষক আছেন ১১জন এবং শিক্ষকের ৯টি পদে শূন্য রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির নামে ১ একর ২২ শতাংশ জমি রয়েছে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি যদিও হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু হায় এই প্রতিষ্ঠানটি যেন তার অস্তিত্ব রক্ষায় এখন অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছে! প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম চলছে ৭টি দোচালা টিনের ভাঙ্গাচুরা ঘরে। অবস্থা দেখে মনে হয় যেন এ অবস্থা দেখার কেউ নেই।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ ৪৮ বছরেও অদ্যাবধি এই দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি কোন সেমিপাকা বা পাকা শ্রেণী কক্ষ ভবন বরাদ্দ পায়নি। তাই উন্নয়ন বঞ্চিত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের সুবিধার্থে দ্রুত একটি নতুন আধুনিক বহুতল ভবন বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, একটি নতুন আধুনিক বহুতল ভবন বরাদ্দ চেয়ে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার বরাবরে এবছরের ১০ ফেব্রুয়ারি একটি আবেদন দাখিল করেছেন। তার কোন জবাব এখনও মিলেনি।
এমতাবস্থায় এই দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটির প্রতি কেন এমন অবহেলা ও বঞ্চনা এই বিষয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধি সহ আমজনতা জানতে চান?