বুধবার ● ২২ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » নাতির সঙ্গে ৬৫ বছরের নানী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায়
নাতির সঙ্গে ৬৫ বছরের নানী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায়
ময়মনসিংহ অফিস :: (৮ অগ্রহায়ন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.৪৭মি.) ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের সাউথকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় একসঙ্গে অংশ নিয়েছেন ৬৫ বছর বয়সের নানি সুন্দরী বেগম ও তার নাতি জিহাদ মিয়া (১০)। দশ বছরের নাতির সাথে পঁয়ষট্টি বছরের নানী পরীক্ষায় বসে সমালোচকদের দেখিয়ে দিয়েছেন ‘লেখাপড়া করার কোন বয়স নেই’ বলে অনেকেই মতামত ব্যক্ত করেছেন।
জানা গেছে,সুন্দরী বেগমের স্বামীর নাম আবুল হোসেন পেশায় একজন বর্গাচাষী কৃষক। তিনি ও তার স্ত্রী দুজনের কেউই লেখাপড়া জানতেন না। তাদের সংসারে চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে একজন সৌদিপ্রবাসী, দু’জন ভ্যানচালক। সংসারে অভাবের কারণে তারাও পড়াশুনা করতে পারেননি। শুধু ছোট ছেলে সাইদুল ইসলামকে কষ্ট করে এইচএসসি পাস করিয়েছেন আবুল হোসেন।
৬ বছর আগে সুন্দরী বেগম বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কাশিগঞ্জ শাখায় হিসাব খুলতে যান। সুন্দরী বেগম কোনো রকম স্বাক্ষর করতে শিখেছিলেন। তিনটি স্বাক্ষরের মধ্যে একটি স্বাক্ষর ভুল হওয়ায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ফাইলটি সুন্দরী বেগমের সামনে ছুড়ে মারেন। কেঁদে কেঁদে বাড়ি ফিরে তিনি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেন, যেকোনো মূল্যে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে বেরিয়ে আসবেন তিনি। পরের দিন নাতি জিহাদকে নিয়ে সাউথকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হন। প্রতিদিন বাড়ির কাজের পাশাপাশি নিয়মিত স্কুলে ক্লাস করতেন। ৬ বছর পরিশ্রমের পর এ বছর তিনি নাতির সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি করেছেন।
২১ নভেম্বর মঙ্গলবার বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পরীক্ষা চলাকালে চাউলাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ওই কেন্দ্রের ৩৭০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬৫ বছর বয়সী সুন্দরী বেগমও মনোযোগ দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন।
পরীক্ষা শেষে সুন্দরী বেগম জানান, কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের দুর্ব্যবহারে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে প্রতিজ্ঞা করে তিনি স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আমার এবং শশুরের পরিবার অতিদরিদ্র্র হওয়ায় ইচ্ছে থাকা সত্বেও পড়াশোনা করতে পারিনি। সন্তানদেরও পড়াশোনা করাতে পারিনি।
সুন্দরী বেগম বলেন, ৬৫ বছরে নাতির বয়সী সব শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ব্যাপক উৎসাহ ও সহযোগিতা পেয়ে আজ আমি শিক্ষায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছি। আমি সাবেক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ আহমেদ স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ আমার লেখাপড়ার প্রথম উৎসাহ তিনিই দিয়ে ছিলেন।
সাউথকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সালাম জানান,আমার স্কুলের ২৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে সুন্দরী বেগমও পরীক্ষায় ভাল করবে এবং তিনি নিরক্ষরতার অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বেরিয়ে আসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
চাউলাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র্র সচিব বদর উদ্দিন জানান, আমার ১৫ বছরের শিক্ষকতা জীবনে এমন বিরল দৃষ্টান্ত এই প্রথম দেখলাম।
পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, শিক্ষার কোন বয়স নেই, এটাই প্রমান করলেন সুন্দরী বেগম। তাকে আমি স্যালুট জানাই। অজ্ঞতা থেকে ফিরে আসুক সবাই।
ত্রিশাল উপজেলার সাবেক প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ আহমেদের সাথে এ ব্যাপারে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,সুন্দরী বেগমকে স্কুলে ভর্তি হলে তাকে আমি লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেই। আজ তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করছেন এবং আশা করি তিনি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল অর্জন করবেন।





বিএনপি আন্দোলন-সংগ্রামের শরিকদের সাথে বেঈমানী করেছে : লেবার পার্টির চেয়ারম্যান
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সব কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে রিট
ফুসফুসের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন জরুরি
প্রার্থীদের দলের প্রত্যয়নপত্র বাধ্যতামূলক : ভোটকেন্দ্র স্থাপনে ডিসি ও এসপিদের নেতৃত্বে জেলা কমিটি বাতিল : ইসি
বিভক্তি বিভাজনের পথে গণঅভ্যুত্থানের অর্জন বিসর্জন দেয়া যাবেনা- সাইফুল হক
পর্বতারোহী প্রকৌশলী কাওছার রূপক-কে জাতীয় পতাকা হস্তান্তর
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অলাভজনক করতে পারলে নির্বাচনে ইদুর দৌড় অনেক খানি বন্ধ করা সম্ভব
স্বাধীতনার ৫৩ বছরে প্রথম বার জাতীয় রাজনীতিতে জায়গা পেলেন দলিত জনগোষ্ঠীর নেতা ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু
পাসপোর্ট করতে আর লাগবে না পুলিশ ভেরিফিকেশন
সেনাবাহিনী প্রধানের কুয়েত সফর