বুধবার ● ১ আগস্ট ২০১৮
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহ যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্র এখন ব্যাক্তিগত পোল্ট্রি ফার্ম
ঝিনাইদহ যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্র এখন ব্যাক্তিগত পোল্ট্রি ফার্ম
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (১৭ শ্রাবণ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১০.৫১মি.) ঘড়ির কাটা তখন মঙ্গলবার দপুর ১২টা। ঘটনাস্থল ঝিনাইদহ যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্র অফিসের তিনটি রুম খোলা। ফ্যান ঘুরছে আপন মনে। প্রতিটা রুমে লাইট জ্বলছে। অফিসের কর্মকর্তার সংখ্যা ৭ জন। আর কর্মচারী ১৯ জন। হাজিরা খাতাগুলো টেবিলের উপর রাখা। তাতে সবার সাক্ষর করা। কিন্তু কর্মকর্তা কর্মচারীদের কারোরই উপস্থিতি নেই। এমন চিত্র শুধু একদিনের নয়, প্রতিদিনের। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ঝিনাইদহ যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্রের ডেপুটি কো-অডিনেটর কৃষিবিদ এম এ খালিদ যোগদানের পর থেকে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে কর্মস্থলে আসেন না। তিনি গাইবান্ধা থেকে বদলী হলেও থাকেন ঈশ্বরদী শহরে। ঝিনাইদহ যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্রের এক নারী প্রশিক্ষকের সাথে যৌন কেলেংকারীর ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে তিনি আর অফিস করেন না। মাসের শেষে বেতন ও অন্যান্য টাকা পৌছে দেওয়া হয় তার নিজস্ব একাউন্টে। অফিসের ফাইল সাক্ষর করেন বাড়িতে বসে। আর হাজিরা খাতায় তার পক্ষে জাল সাক্ষর করেন ক্যাশিয়ার আমজাদ হোসেন ও পিয়ন আনোয়ার হোসেন। অভিযোগ উঠেছে গত বছর ছুটি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ঝিনাইদহ যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্রের এক নারী প্রশিক্ষককে নিয়ে যান ঈশ্বরদীর নিজ বাড়িতে। সেখানেই তার উপর যৌন নিপীড়ন চালান ডেপুটি কো-অডিনেটর এম এ খালিদ। পরবর্তীতে ওই নারী গর্ভবর্তী হয়ে পড়েন। এ নিয়ে তার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া বিবাদের খবরটি ডিপার্টমেন্টে হৈ চৈ ফেলে দেয়। গাইবান্ধা যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্রের আরেক ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর জাকাত আলী এক লিখিত পত্রে খালিদের নারী কেলেংকারী ও আর্থিক ক্ষতি সাধনের বিষয়টি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচলককে অবহিত করেন। ওই সময় ডেপুটি কো-অডিনেটর এম এ খালিদ ঝিনাইদহে বদলী হলেও থাকতেন গাইবান্ধার ডরমেটরি ভবনে। ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল ৩৪.০১.৩২০০.০০০.১৮.৪২.২০০৫ নং স্মারকে দেওয়া ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে গাইবান্ধায় একটানা ১২ বছর থাকার সুবাদে এক ছাত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ডেপুটি কো-অডিনেটর এম এ খালিদ। তাছাড়া ঝিনাইদহের ওই নারী প্রশিক্ষকের সাথেতও তিনি মোবাইলে ম্যাসেজ প্রদান ও অশ্লিল আলাপ আলোচনার রেকর্ড খালিদের স্ত্রী জানতে পারেন। এ নিয়ে তার স্ত্রীর সাথে দাম্পত্য কলহ চলছে। ডেপুটি কো-অডিনেটর এম এ খালিদ যে অফিস করেন না তা নিয়ে ঝিনাইদহ যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্রের ২১ জন কর্মকর্তা কর্মচারী মহাপরিচালক বরাবর ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর ২০৩ নং স্মারকে লিখিত অভিযোগ করেন। এতো কিছুর পরও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচলক অফিস নীরব ভুমিকা পালন করছে। অফিসে ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর না থাকায় প্রশিক্ষনার্থীরা তথ্য নিতে এসে ঘুরে যাচ্ছে। প্রশিক্ষনার্থীরা অংশ না নিলেও তাদের নামে টাকা উত্তোলন করে নেওয়া হচ্ছে। অনেক সময় অফিস থেকে প্রশিক্ষনার্থীদের বলা হয় “তোমাদের অফিসে আসা লাগবে না। একবারে সার্টিফিকেট নিয়ে যেও”। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার সময় সদর উপজেলার গান্না গ্রামের অমিত কুমার আসেন প্রশিক্ষনের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে। তিনি এসে দেখেন অফিসে কেউ নেই। এক ঘন্টা অপেক্ষা করে তিনি দুপুর একটার দিকে চলে যান। তখনও লাঞ্চ আওয়ার বা নামাজের সময় হয়নি। সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, অফিসের সেডগুলোতে সরকারী মালামাল ও বিদ্যুৎ ব্যাবহার করে মুরগী পালন করছেন দ্বিতীয় শ্রেনীর কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও কর্মচারী জসিম উদ্দীন। ব্যক্তিগত মুরগী পালনের খরচ অফিস থেকেই বহন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার দুপুরে অফিসটি পরিদর্শনকালে দেখা গেছে অফিসের সহকারী প্রশিক্ষক জসিম উদ্দীন ও ক্যাশিয়ার আমজাদ হোসন অফিসের বাইরে লুঙ্গি পরে ঘোরাঘুরি করছেন। দুপুর ১২টার সময়েও অফিসে কেও নেই কেন ? এমন প্রশ্ন করা হলে ক্যাশিয়ার আমজাদ হোসেন সোজা উত্তর দেন দুপুরের খাবার খেতে গেছেন। পরক্ষনে তিনি আবার আগের কথা ঘুরিয়ে বলেন জোহরের নামাজ পড়তে গেছেন। সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ক্যাশিয়ার আমজাদ হোসেন লুঙ্গি পরে পানির জাগ হাতে অফিসের নিচে দাড়িয়ে ছিলেন। এদিকে সরকারী সুযোগ সুবিধা নিয়ে অফিস ভবনে ব্যক্তিগত মুরগী পালন সম্পর্কে সহকারী প্রশিক্ষক জসিম উদ্দীন জানান, উর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি নিয়েই মুরগী পালন করা হচ্ছে। এতে দোষের কিছু না। এক টানা অফিসে অনুপস্থিতির বিষয়টি জানতে ঝিনাইদহ যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্রের ডেপুটি কো-অডিনেটর কৃষিবিদ এম এ খালিদের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি। এমনকি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচলক (ডিজি) আ,ন, আহম্মদ আলীও ফোন রিসিভ করেন নি। তবে ঝিনাইদহ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচলক শাহিদুল ইসলাম জানান, ডেপুটি কো-অডিনেটর কৃষিবিদ এম এ খালিদ দীর্ঘদিন ধরেই অফিসে আসেন না। অফিসে না আসার কারণে যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্রটিতে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। কর্মকর্তা কর্মচারীরা ঠিক মতো অফিসই করেন না। তিনি বলেন এ বিষয়ে মহাপরিচালক বরাবর একাধিকবার পত্র দিয়ে জানানো হয়েছে।





ঝিনাইদহে পিকাপের ধাক্কায় নসিমন ড্রাইভার নিহত
কুষ্টিয়া গণপূর্ত অফিসেই ১৮ বছর’ আ’লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত অনুপ কুমার সাহা
কুষ্টিয়া সিভিল সার্জনে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক
ঝিনাইদহে দীর্ঘ ২৩ বছর পর পৈত্রিক জমি ফিরে পেলেন সাবেক প্রকৌশলী
চুয়াডাঙ্গার শিক্ষা প্রকৌশলী কমিশন বাণিজ্যে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়
কুষ্টিয়ায় হাসপাতালের পুকুর থেকে যুবতীর লাশ উদ্ধার
কুষ্টিয়ায় বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
কুষ্টিয়া চেম্বারের ‘এ’ গ্রুপের পরিচালক পদে নির্বাচন সম্পন্ন
জাকির এর উদ্যোগে কুষ্টিয়া শহর নতুন রূপে সেজেছে
কুষ্টিয়ার আদালতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে পালাল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ