শিরোনাম:
●   মিরসরাইয়ে পিকাপ-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত-৩ ●   মিরসরাইয়ের রূপসী ঝরনার কূপে ডুবে কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু ●   অনতিবিলম্বে ইরানে হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধে ইজরায়েলকে বাধ্য করার ডাক ●   কুষ্টিয়ায় শীর্ষ সন্ত্রাসী লিপটনের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ●   মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া কমিটি এর বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন ●   পার্বতীপুর বিনোদন স্পর্টগুলো তাপদাহে ভ্রমন পিপাষূ সমাগম কম ●   আলীকদমে ইয়াবা উদ্ধার : আটক-৩ ●   রাঙামাটি সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির উদ্যোগে মিলাদ মাহফিল ●   ফটিকছড়িতে ৫ ডাকাত গ্রেফতার ●   কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের করোনা পিসিআর ল্যাবের সব যন্ত্রাংশ চুরি ●   নরসিংদীতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন ●   লন্ডন বৈঠক রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও সন্দেহ অবিশ্বাস অনেকখানি দূর করবে ●   রাঙামাটিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ●   ২১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেশবাসীকে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির শুভেচ্ছা ●   ফটিকছড়িতে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু ●   আলীকদমে রহস্যজনক মৃত্যু : দুই পর্যটকের লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ-১ ●   রাঙ্গুনিয়াতে নিজ দোকান থেকে মিঠুন দাসের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ●   আলীকদমে পর্যটকের মৃতদেহ উদ্ধার : নিখোঁজ-২ ●   পার্বতীপুর রেলস্টেশনে সেনাবাহিনীর অভিযানে টিকিট কালোবাজারি আটক ●   অপহরণের ৯ দিন পর মুক্তিপন ছাড়াই উদ্ধার হলো দুলাল মিয়া ●   বন্ধ হওয়া মোবাইল টাওয়ার চালুর দাবিতে গণস্বাক্ষর ●   ফটিকছড়িতে কোরবানি পশুর চামড়া খালে : পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলা ●   সৌরভের মৃত্যুতে আত্রাইয়ে বিভিন্ন মহলের শোক ●   উপ সচিবের ভাই শীর্ষ চরমপন্থী নেতা লিপ্টনসহ গ্রেফতার-৩ ●   কুরবানির পশুর চামড়ার সিন্ডিকেট আগের চেয়ে বেশী সক্রিয় : উপযুক্ত দাম নাই ●   চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনাকে কেন্দ্র করে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অনভিপ্রেত ●   আজ নিতেই হবে এমন প্রতিজ্ঞা বলে পশু ক্রয়ে ছুটছেন ক্রেতারা ●   রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের কমিটি গঠন ‎ ●   ফটিকছড়িতে পশু জবাই ও মাংস কাটা সরঞ্জাম কেনার হিড়িক ●   মধ্যপাড়া পাথর খনি লোকসান কাটিয়ে লাভে পথে
রাঙামাটি, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
সোমবার ● ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন-২০০১, একটি পর্যালোচনা
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন-২০০১, একটি পর্যালোচনা
সোমবার ● ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন-২০০১, একটি পর্যালোচনা

---এডভোকেট কামাল হোসেন সুজন :: পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন-২০০১ সমন্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ মূলত অজ্ঞাত। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন পর্যায়ে বাংলাদেশে ভূমি জরিপ হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমিজরিপ সম্ভব হয়নি। স্বাধীনতার পর দেশ পুর্নগঠনের প্রাক্কোলে ১৯৭২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের কতিপয় অতি উৎসাহী উপজাতীয় নেতা পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বায়িত্ব শাসেনর দাবীতে উন্মুখ হয়ে পরে। নবগঠিত স্বাধীন দেশে এমন উদ্ভট দাবী মেনে নিতে পারেনি বঙ্গবন্ধরু সরকার। সরকার উপজাতীয় নেতাদের এমন অন্যয্য দাবী পরিত্যাগের বিষয়ে নানান ভাবে আলোচনা করেও ব্যর্থ হয়েছিল। বিকল্প পথে হাটতে শুরু করে উপজাতীয় কতিপয় বিপদগামী নেতা, ১৭৭২ সালে গঠন করে জেএসএস, ১৯৭৫ সালে গঠন করে সশস্ত্র শন্তিবাহিনী, শুরু হয় পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তি ও বেজে উঠে যুদ্ধের দামামা। সরকার তার অখন্ডতা রক্ষার্থে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা শক্তি বৃদ্ধি করেছিল কিন্ত সেনাবাহিনীর উপর ব্যপক চুরা গুপ্তা হামলা সরকারকে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের অখন্ডতা রক্ষার জন্য ঢাল সরুপ ১৯৭৮-১৯৮২ সাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলা হতে প্রায় দের লক্ষ বাঙ্গালী পরিবারকে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাস জমিতে পুর্নবাসন করা হয়। প্রত্যক পুর্নবাসিত পরিবারকে ২-৫ একর খাস জমি সরকার কর্তৃক বরাদ্ধ দিয়ে বন্দেবস্তী দেওয়া হয়। পুর্নবাসিত জনগোষ্ঠির উপর শান্তি বাহানী ব্যাপক হামলা ও হত্যা যজ্ঞ চালায়, বাড়ী-ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, যার ফলে তৎকালে প্রায় অর্ধেক বাঙ্গালী জনগোষ্ঠি পার্বত্য চট্টগ্রাম ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। বাকী অধিকাংশ জনগোষ্ঠিকে নিরাপত্তার কারনে ১৯৮৫ সাল হইতে সেনা ছাউনির পাশে গুচ্ছগ্রামে বন্দি করা হয়। বাঙ্গালীদের ফেলে যাওয়া জমি উপজাতীয়রা দখল করে বসতি স্থাপন করে। শান্তি বাহানীর হামলা ও হত্যাযজ্ঞে প্রায় ৩০ হাজার বাঙ্গালী প্রাণ হারায়, ৪০ হাজার বাঙ্গালী আহত হয়। বাঙ্গালীদের মত সাধারণ উপজাতীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হয় ব্যপক, ৯৭ হাজার পরিবার নিরাপত্তার প্রয়োজনে ভারতে আশ্রয় গ্রহন করে। যুদ্ধ বিধ্বস্থ পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘ ২ যুগের হানা-হানি ও অশান্তির ইতি টানতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বরঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সম্পন্ন হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি-১৯৯৭ সালের অন্যতম নিয়ামক ছিল অত্রাঞ্চলের ভূমির বিরোধ নিষ্পত্তি। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমির বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষে চুক্তির আলোকে ২০০১ সালে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন-২০০১ প্রনয়ন করে, আঞ্চলিক পরিষদের ব্যপক বাধার মূখে ২০১৩ সালে আইনটি সংশোধন করা হয়। আইন মোতাবেক বর্তমান কমিশন চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ার উল হক সর্বশেষ গত ১২/০৯/২০১৯ইং তারিখে রাঙ্গামাটি সার্কিট হাউসে কমিশন সভায় মিলিত হয়ে আগামী অক্টোবর হইতে বিরোধ নিষ্পত্তিতে কমিশন শুনানীর কাজ শুরু করবে বলে পার্বত্যবাসীকে আশ্রস্থ করেন।
প্রসঙ্গ হলঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনের আওতায় সুবিধাভূগী পক্ষ-প্রতিপক্ষ এই আইন সমন্ধে কতটুকু অবজ্ঞাত। আমার ধারনা মতে পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকাংশ লোক এই আইন সমন্ধে অনবগত। যারা এই আইনের আওতায় ভূমির বিরোধ নিষ্পত্তি করিতে চায় কিংবা যারা এই আইনের আওতায় পড়বে, তারা যদি এই আইন ও আইনের রসায়ন না বোঝে তবে কিভাবে ভূমির বিরোধ নিষ্পত্তি কঠিন হবে। এই আইনটি একটি প্রসিডিউরাল আইন যার কোন সাবেসটেন্টিভ আইন নাই। এই আইনের মূল থীম মানলে সুবুর না মানলে মুগুর।প্রথমেই জানা যাক এই আইনের ৩নং ধারায় প্রত্যক জেলায় ৫ সদস্য বিশিষ্ঠ যে কমিশন গঠন হইবে (১) চেয়ারম্যান(একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি), (২) সদস্য-০১(আঞ্চলিক পারষদের চেয়ারম্যান বা তার প্রতিনিধি), (৩) সদস্য-০২(জেলা পারষদের চেয়ারম্যান), (৪) সদস্য-০৩(সার্কেল চীফ বা তার প্রতিনিধি), (৪) সদস্য-০৪(চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বা তার প্রতিনিধি)।
কমিশন আইনের ৭(৩) নং ধারায় বলা হয়েছে; ৫সদস্যর মধ্যে চেয়ারম্যান ও অন্য ৩ জন সদস্য মিলে ৪ জনের উপস্থিতিতে কোরাম সংখ্যক গঠিত হবে। এইখানে বোধধয় হল আঞ্চলিক পরিষদ বা সার্কেল চীফের মতামতের বাইরে কমিশন নিষ্ক্রিয় থাকবে, চেয়ারম্যান কার্যত আনুষ্ঠানিক ব্যক্তি মাত্র, চেয়ারপার্সন নয়।
কমিশন আইনের ৬(ক)নং ধারায় বলা হয়েছে; পুর্নবাসিত শরনার্থীদের ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ, অবৈধ বন্দোবস্তী ও বেদখলকৃত ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথাগত নিয়ম বা পদ্ধতিতে সমাধান করা হবে। প্রথাগত নিয়ম কোন আইন দ্বারা স্বীকৃতি লাভ না করলে তাহা আইনে পরিনত হয় না। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথাগত নিয়ম কোন আইন দ্বারা সিদ্ধ নয়, তবে কমিশন কিভাবে প্রথাগত নিয়ম দ্বারা আইনের সমাধান করবেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথাগত নিয়ম মহামান্য হাইকোর্ট সাপোর্ট করে না, স্থানীয় দেওয়ানী-ফৌজদারী আদালত সাপোর্ট করে না। প্রথাগত নিয়মে বলা হয়েছে দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়েরে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে ১০০/-ঠিকা কোর্ট ফি দিয়ে মামলা দায়ের করা যাবে কিন্ত বিজ্ঞ দেওয়ানী আদালত, ঠিকা কোর্ট ফি না মেনে দেশের প্রচলিত আইনে কোর্ট ফি দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে। প্রথাগত নিয়মে নাগরিক সনদ ও উত্তরাধিকারী সনদ হেডম্যানের সুপারিশে জেলা প্রশাসকগণ প্রনয়ন করবে কিন্ত দেওয়ানী আদালত বলছে নাগরিক সনদ ও উত্তরাধিকারী সনদ বিধিমত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান প্রনয়ন করবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথাগত নিয়মে হেডম্যানের সুপারিশ ছাড়া ভূমি রেজিস্ট্রি হবে না কিন্ত আদালতের মাধ্যমে চুক্তি প্রবলের মামলা করে প্রচলিত নিয়মে হেডম্যানের সুপারিশ ছাড়াই ভূমি রেজেস্ট্রি সম্পন্ন করা সম্ভব। তবে দেশের প্রচলিত আইনের বাইরে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথাগত নিয়মে কমিশন ভূমির বিরোধ কিভাবে নিষ্পত্তি করবে তা সাধারণের বোধগম্য নয়। প্রথাগত নিয়মকে আমি শ্রদ্ধা করি তবে তা শুধু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির জন্যই প্রজোয্য, বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির জন্য প্রযোয্য নয়।
কমিশন আইনের ১৬নং ধারায় বলা হয়েছে; কোন পক্ষ কর্তৃক দাখিলকৃত আবেদনের উপর কমিশনের যে কোন সিদ্ধান্ত দেওয়ানী আদালতের ডিক্রী বা আদেশের সামিল হবে। ভোক্তভোগী কোন পক্ষ কমিশনের আদেশে সংক্ষুব্ধ হতে পারবে না, কমিশনের আদেশ মেনে নিতে হবে নতুবা দ-বিধি-১৮৬০ এর ২২০ধারা এবং ফৌজদারী কার্যবিধি-১৮৯৮ এর ৪৮০ ধারায় শাস্তি ভোগ করতে হবে, কমিশনের আদেশের বিরোদ্ধে আপীল বা রিভিশন করা যাবে না। এই ধারা এই আইনকে সংবিধানের ১০২ধারাকে পদদলিত করেছে যা আসীম ক্ষমতার নামান্তর।
কমিশন আইনের ১৯নং ধারায় বলা হয়েছে; যদি কোন পক্ষ এই আইনের আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্দ হয় তবে তা আদালত অবমাননার অনুরুপ শাস্তি ভোগ করতে হবে। অথাৎ এটি একটি অপ্রতিরোধ্য আইন।
কমিশন আইনের ২০নং ধারায় বলা হয়েছে; যদি এই আইনের অধীন কোন কমিশন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারী সরল বিশ^াসে কোন কাজ করেন এবং উক্ত কাজের ফলে যদি কোন পক্ষ প্রতিপক্ষ ক্ষতিগ্রস্থ হয় তবে ঐ কর্মকর্তার বিরোদ্ধে ফৌজদারী আইনের আশ্রয় নেওয়া যাবেনা। অথাৎ কমিশনের যে কোন কর্মচারী স্বেচ্ছাধীন কোন পক্ষের উপর অন্যায় করলে তার প্রতিকার চাওয়াও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন-২০০১ প্রনয়নের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে জেলা জজ আদালত ও দেওয়ানী আদালত ছিলনা। ২০০৮ সালে পার্বত্য তিন জেলায় দেওয়নী আদালত ও আপীল আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, দেওয়ানী আদালতে হাজার হাজার মোকদ্দমা চলমান আছে, ভূমির বিরোধ নিয়ে কিংবা উপজাতী-বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির মাঝে পক্ষ-প্রতিপক্ষ হিসাবে বিরোধপুর্ন জায়গা নিয়ে মামলা চলমান আছে, আপীল মামলা চলমান আছে, মহামান্য হাইকোর্টে রীট পিটিশন চলমান আছে, তবে এসব বিরোধ আদালতে থাকবে না কমিশনে নতুন করে আবেদনে যেতে হবে তা কমিশন আইনে পরিস্কার করে বলা নাই। যেখানে দেওয়ানী আদালত দেওয়ানী আইন-১৯০৮ মোতাবেক সকল দেওয়ানী বিষয়ের বিরোধপুর্ন মিমাংসায় বিচারিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সেখানে ভূমি কমিশনের সিদ্ধান্ত দেওয়ানী আদালতের ডিক্রীর শামিল কেন হবে। দেওয়ানী আইন-১৯০৮ এর ১ম অধ্যায়ের ১(৩)নং ধারায় বলা হয়েছে এই আইন সমগ্র বাংলাদেশে প্রজোয্য হবে, তবে কমিশন আইন কিভাবে দেওয়ানী আইনকে ডিনাই করে অনুরুপ কার্যক্রম পরিচালিত করবে। কমিশন আইনের ১১(১)নং ধারায় বলা হয়েছে; সাক্ষ্য গ্রহনের ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন-১৮৭২ অনুসারে সাক্ষ্য গ্রহন করা হবে। ১১(৫)নং ধারায় বলা হয়েছে; সাক্ষ্য গ্রহনের ক্ষেত্রে শপথ আইন-১৮৮৩ প্রযোয্য হইবে। সাক্ষ্য গ্রহনের ক্ষেত্রে কে সাক্ষিকে কিভাবে জেরা করবে সে বিষয়ে কোন কিছু বলা নেই, কারন জেরা না করলে সাক্ষ্য আইনানুসারে মূল্যহীন। আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ কমিশনে আছে কিনা, প্রসিকিটর থাকবে কিনা, এসব বিষয়ে সাধারণ মানুষ এখনও সম্পুর্ন অন্ধকারে রয়েছে। সাধারণ মানুষকে অন্ধকারে রেখে কমিশন যদি আঞ্চলিক পরিষদের ইশারায় কোন সিদ্ধন্তে উপনীত হয় তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক শান্তি প্রক্রিয়া ও চলমান উন্নয়ন ব্যহত হবে। দুই যুগের রক্তক্ষয়ী সংঘাত ও পরস্পরের অবিশ^াস ভূলে সকলে মিলে আজ উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার দিকে ধাবমান পর্বত্যবাসী যে কোন ভূল সিদ্ধান্তের বলিতে যেন পুরোনো রুপে ফিরে না আসে। পার্বত্যবাসী হাজারও দুঃখ বেদনাকে পেছনে ফেলে নতুন স্বপ্নের দিকে দাবমান। আমার জানামতে শতশত মামলা দেওয়ানী আদালতে চলমান যা দখল-বেদখল নিয়ে উপজাতীয়-বাঙ্গালীদের মাঝে মূল বিরোধ, এসকল দেওয়ানী মামলার ভবিষৎ কি হবে, এসকল দেওয়ানী মামলা আদৌ দেওয়ানী আদালতে চলবে কি না তা অস্পষ্টই থাকছে। সব কিছু মিলে পার্বত্যবাসী ভূমির বিষয় নিয়ে শংকায়-উৎকন্ঠায় দিনানিপাত করছে। ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনের অধীন প্রনিত বিধিমালায় যেন বিচারক নিয়োগ, আইনজীবী নিয়োগ বা পক্ষ-প্রতিপক্ষের প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। যে কোন পার্বত্যবাসী যেন ভূমির অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়। আমরা পার্বত্যবাসী আরো বেশি আশাবাদী হতে চাই যেন ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আঞ্চলিকতা ও আইনের উর্দ্ধে উঠে মানবতা ও মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে কাজ করে। সবিশেষে বলব সরকার ও পার্বত্যবাসীর অজস্র ত্যাগের ফলে রচিত পাব্যত্য চুক্তির আলোকে গঠিত ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনকে পার্বত্যবাসীর পক্ষ থেকে স্বাগতম।





উপ সম্পাদকীয় এর আরও খবর

পাহাড়ে নববর্ষ ও চৈত্রসংক্রান্তির সাতরঙা উৎসব : মো. রেজুয়ান খান পাহাড়ে নববর্ষ ও চৈত্রসংক্রান্তির সাতরঙা উৎসব : মো. রেজুয়ান খান
সিয়াম সাধনার পুরস্কার : ঈদুল ফিতরের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য সিয়াম সাধনার পুরস্কার : ঈদুল ফিতরের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য
পার্বত্য চুক্তির ২৭ বছর : শান্তি চুক্তি পাহাড়ে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ পার্বত্য চুক্তির ২৭ বছর : শান্তি চুক্তি পাহাড়ে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ
একেএম মকছুদ আহমেদ এর সাংবাদিকতায় ৫৫ বছর :  গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ, হামলা ও হুমকি বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থি একেএম মকছুদ আহমেদ এর সাংবাদিকতায় ৫৫ বছর : গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ, হামলা ও হুমকি বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থি
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মৌলভীবাজারের পাঁচগাঁওয়ের দূর্গাপূজা ও কিছু কথা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মৌলভীবাজারের পাঁচগাঁওয়ের দূর্গাপূজা ও কিছু কথা
পার্বত্য চুক্তির ২৬ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ কি-কি বৈষম্যের স্বীকার তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা পার্বত্য চুক্তির ২৬ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ কি-কি বৈষম্যের স্বীকার তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা
আন্তর্বর্তীকালিন সরকার পাহাড়ের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিলে নিতে হবে গভীর বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে আন্তর্বর্তীকালিন সরকার পাহাড়ের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিলে নিতে হবে গভীর বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে
সবকিছু কেড়ে নিয়েছে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার আওয়ামীলীগ সবকিছু কেড়ে নিয়েছে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার আওয়ামীলীগ
রাঙামাটিতে ঐক্যবদ্ধ বড়ুয়া সমাজ গড়ে তোলার সম্ভবনার পথ দেখা দিয়েছে রাঙামাটিতে ঐক্যবদ্ধ বড়ুয়া সমাজ গড়ে তোলার সম্ভবনার পথ দেখা দিয়েছে
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৯০০ সালের রেগুলেশান, (সংশোধিত) ১৯২০ আইনটি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পরিপন্থি নয় কি ? বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৯০০ সালের রেগুলেশান, (সংশোধিত) ১৯২০ আইনটি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পরিপন্থি নয় কি ?

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)