শিরোনাম:
●   স্কুলের মালামাল নিয়ে যাওয়ায় থানায় অভিযোগ ●   সন্দ্বীপে অগ্নিকাণ্ডে ৪টি দোকান পুড়ে ছাই ●   কুষ্টিয়াতে সামাজিক দ্বন্দে স্বজনদের হামলায় ভাতিজা নিহত ●   আবারো উত্তপ্ত রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা ●   রাজধানীতে তিন পার্বত্য জেলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যসমৃদ্ধ বিপনী বিতান উদ্বোধন ●   প্রেমিকার সঙ্গে বিয়ে না হওয়ায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে পল্লী চিকিৎসকের আত্মহত্যা ●   এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েও শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত পূর্ণ বিশ্বাসের ●   উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : বিয়ানীবাজারে প্রতিক বরাদ্দ ●   রাঙামাটি লেকসিটি নার্সিং কলেজে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালন ●   তহসিলদার শরিফুলের ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ ভুক্তভোগীরা ●   ঈশ্বরগঞ্জে কোটি টাকা ইজারা বকেয়া আদায়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা ●   গুইমারায় সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামী গ্রেফতার ●   মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রম থেকে উদ্ধার করা সেলিমের কিডনি সচল অপুষ্টি ও রক্তস্বল্পতায় ভোগছেন ●   দাখিলেও দেশসেরা ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদরাসা ●   সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে ●   মিল্টন সমাদ্দারের কেয়ার থেকে উদ্ধারকৃত সেলিমের কিডনি অক্ষত ●   আইনজীবি সমিতির কার্যকরি কমিটির সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় এডভোকেট মঈনুলকে সংবর্ধনা ●   ঈশ্বরগঞ্জে টেন্ডার ছাড়াই স্কুলের মালামাল বিক্রির অভিযোগ সভাপতির বিরুদ্ধে ●   পাইন বাগান নব নির্মিত মাদরাসার ভবন ও হেফজ খানার উদ্বোধন ●   বামপন্থী নেতা হায়দার আকবর খান রনোর মৃত্যুতে বিভিন্ন সংগঠনের শোক ●   ঘোড়াঘাটে ট্রাক চাপায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীর মৃত্যু ●   রাবিপ্রবিতে GST গুচ্ছভুক্ত C ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত ●   চুয়েটে ফাউন্ডেশন ট্রেইনিং ফর ফ্যাকাল্টি মেম্বার্স-২ শীর্ষক প্রশিক্ষণ ●   ঝালকাঠিতে ব্ল্যাকমেইল করে ছাত্রীকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত শিক্ষক গ্রেপ্তার ●   টেকসই স্বাস্থ্য উন্নয়নে হেলথ প্রমোশন কর্মসূচি বাস্তবায়ন জরুরি ●   গোলাপগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান এলিম, ভাইস-চেয়ারম্যান নাবেদ, শিলা ●   মিরসরাই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নয়ন বিজয়ী ●   কুষ্টিয়া সদরে আতাউর রহমান খোকসায় শান্ত চেয়ারম্যান নির্বাচিত ●   সন্দ্বীপে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের চেক বিতরণ ●   গোলাপগঞ্জে পুনঃনির্বাচিত মঞ্জুর কাদির শাফি এলিম
রাঙামাটি, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
রবিবার ● ১০ মে ২০২০
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » করোনা দুর্যোগ-প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্বেই মুক্তি : বহ্নিশিখা জামালী
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » করোনা দুর্যোগ-প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্বেই মুক্তি : বহ্নিশিখা জামালী
৭১১ বার পঠিত
রবিবার ● ১০ মে ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

করোনা দুর্যোগ-প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্বেই মুক্তি : বহ্নিশিখা জামালী

---গত ক’মাস ধরে পৃথিবী নামক গ্রহে মনুষ্য প্রজাতি এক অভূতপূর্ব অবিশ্বাস্য জীবনযাপন করছে। অদৃশ্য ও অজানা এক শত্রু মানুষের গতি আর কোলাহল থামিয়ে দিয়েছে। ঘরবন্দী করেছে কোটি কোটি মানুষকে। হাজার হাজার বছর ধরে যারা পৃথিবী জুড়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছে, প্রাণ-প্রৃকতি আর জীববৈচিত্রের স্বাভাবিক ধারার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে, তাকে যথেচ্ছ ব্যবহার ও ধ্বংস করে নিজেদের সভ্যতা গড়ে তুলেছে আজ তা সত্যি সত্যি বিরাট হুমকির মুখে। এ পর্যন্ত কোন প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মানুষকে এভাবে ঘরের চার দেয়ালে আটেেক রাখতে পারেনি। কিন্তু কোভিড- ১৯ নামক এক ভাইরাস মানুষের স্বাভাবিক জীবন আচরণকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। মানবকূলকে বাধ্য করছে আত্মরক্ষার প্রয়োজনে ঘরে বন্দী থাকতে। মানুষের জন্য এই পরিস্থিতি ছিল অবিশ্বাস্য ও অকল্পনীয়। প্রকৃতিকে দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে মানুষ তার সভ্যতা আর উন্নয়নের শীর্ষে পৌঁছানোর যে গরিমা প্রকাশ করে আসছিল আজ করোনা ভাইরাস নামক অদৃশ্য এক প্রতিপক্ষ নির্মমভাবে তার প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে। মানুষকে ঘরে তুলে দিয়ে প্রকৃতি এখন নিজের মত করে তার স্বাভাবিক রূপ লাবণ্য নিয়ে নিজেকে সাজিয়ে তুলছে।

মানুষ যখন মহাকাশ জয় করে চলেছে, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তারা যখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে স্বাগত জানাচ্ছে, সমগ্র এই গ্রহকে এক বৈশ্বিক গ্রামে পরিণত করেছে, জল - স্থল-অন্তরীক্ষ যখন মানুষের নিয়ন্ত্রণে তখন সবাইকে অবাক করে দিয়ে এই ভাইরাস বর্তমান সভ্যতা আর উন্নয়নের অন্তঃসারশূন্যতাকে উন্মোচন করে দিয়েছে। সমরশিল্পের জন্য উন্নত পুঁজিবাদী দেশগুলো যখন বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরছ খরছ করছে, আকাশচুম্বী অট্টালিকা আর চোখ ধাঁধানো নগর গড়ে তুলছে, সমাজের একাংশের আত্মকেন্দ্রীক ভোগবাদীতা যখন চরমে তখন দেখা গেল একটি ভাইরাসের কাছে তারা কত অসহায় ! তাদের আত্মম্ভরী জারিজুরী কত নগ্নভাবেই না ধরা পড়লো। দেখা গেল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপের মত শিল্পোন্নত মহাপরাক্রমশালী দেশগুলোতে কার্যকরি কোন চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। নেই ভাইরাস প্রতিরোধী প্রয়োজনীয় মাস্ক, স্যানিটাইজার, সংক্রমণ পরীক্ষার কীট, ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্যসেবীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী; নেই প্রয়োজনীয় অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর ইত্যাদি ইত্যাদি। কথিত উন্নয়নের কাছে গণস্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা যে কোন গুরুত্বই পায়নি সেটাই আর একবার প্রমাণিত হল। সবচেয়ে বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে এই ভাইরাসের সংক্রমন ক্ষমতা সম্পর্কে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান আর চিকিৎসা পদ্ধতি এখনো পর্যন্ত সুস্পষ্ট কোন ধারনাই দিতে পারেনি।

বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাস ইতিমধ্যে ৩২ লক্ষাধিক মানুষকে আক্রান্ত করেছে। মৃত্যুর মিছিলে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ। চীন-দক্ষিণ কোরিয়াসহ কয়েকটি দেশকে বাদ দিলে গোটা পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত ভাইরাসজনিত সংক্রমনের বিস্তার ঘটছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার আমাদেরকে সতর্ক করে দিয়ে যাচ্ছে যে, প্রাণঘাতি এই ভাইরাস থেকে সহজে মানবজাতির মুক্তি নেই। অনেক গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এই ভাইরাস এক বছর, দু’বছর কিংবা তারও বেশী সংক্রমন ছড়িয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে। বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে শতাধিক গবেষণাগারে এই ভাইরাস প্রতিরোধের টিকা বা ভ্যাকসিন আবিস্কারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা চলছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কার্যকর কোন ভ্যাকসিনের সন্ধান মেলেনি। আগামী ক’মাসের মধ্যে হয়ত কিছু টিকা বা ভ্যাকসিনের দেখা মিলতে পারে। কিন্তু এ ভ্যাকসিন কোভিড- ১৯ কে পুরোপুরি নির্মূল করবে বিজ্ঞানীরা এমন কোন নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না। এই ধরনের টিকা বা ভ্যাকসিন মানুষের শরীরে ভাইরাস সংক্রমণ হয়ত অনেকখানি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসবে, কিন্তু তার পুরোপুরি বিনাশ এখনও পর্যন্ত প্রকটা অসম্ভব প্রকল্প মাত্র। গত দেড়/দুই দশকে ‘সার্স, মারস্ ’ বা ‘ইবোলা’ ভাইরাসকে অনেকখানি নিয়ন্ত্রণে রাখা গেছে। কিন্তু তাকে পুরোপুরি বিনাশ করা যায়নি।

উন্নয়নের বর্তমান ধারা যদি অব্যাহত থাকে, করোনা মহামারি থেকে মানুষ যদি কোন প্রয়োজনীয় শিক্ষা গ্রহণ না করে তাহলে আগামীতে এ ধরনের নানা গুপ্তঘাতক জীবানু সংক্রমনের আশঙ্কা থেকেই যাবে।

গুপ্তঘাতক এসব ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মানুষ এখন নিজের সুরক্ষায় স্বেচ্ছায় গৃহবাসকে বেছে নিয়েছে। গৃহবন্দীত্বকেই তারা নিরাপদ মনে করছে। কিন্তু এই অবরুদ্ধ জীবন কি তাদেরকে এই সংক্রমন থেকে বাঁচার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে ? মাটি, পানি, বায়ু যদি বিষাক্ত থেকে যায়, প্রাণ-প্রকৃতি, জীব- বৈচিত্র্য যদি বিপন্ন ও বৈরী অবস্থায় থাকে তাহলে গৃহবাস কি করে নিরাপদ থাকবে ? নগর পুড়লে তো দেবালয়ও রক্ষা পাইনি, পাবে না।

পৃথিবীর মানুষ আজ এমন এক প্রাণঘাতি ভাইরাসের মুখোমুখি যার জন্য তাদের অধিকাংশেরই দায়দায়িত্ব নেই। গত কয়েক শতাব্দী ধরে, বিশেষ করে শিল্প বিপ্লবের পর প্রাণ-প্রকৃতি, জীব- বৈচিত্র্যকে যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে, বনাঞ্চলকে যেভাবে উজাড় করা হয়েছে, প্রকৃতির স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট করে নদী, নালা, খাল-বিল দুষিত করে বায়ুমন্ডলকে বিষাক্ত করে অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের মধ্য দিয়ে বায়ুমন্ডলের ওজন স্তরকে যেভাবে নষ্ট করা হয়েছে তার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় মানুষকে আজ অজানা অদৃশ্য ভয়ঙ্কর সব জীবানুর মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বিজ্ঞানী, গবেষক ও পরিবেশবাদীরা এই দুয়ের মধ্যে গভীর আন্তঃসম্পর্কের কথা অনেকদিন ধরে বলে আসছিলেন। বর্তমানকালে ভাইরাসের এই অভূতপূর্ব সংক্রমনকে প্রকৃতির প্রতিশোধ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হচ্ছে।

মানুষ তার নিজস্ব সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য কি না করেছে! কৃষি জমি ধ্বংস করেছে, শিল্পায়নের থাবায় কলকারখানার কালো ধোয়ায় ও বর্জ্য নিঃসরণে মাটি, পানি, বায়ু মারাত্মকভাবে দুষিত ও বিষাক্ত করেছে। দখলে-দুষণে - বালু উত্তোলনে একসময়ের খরস্রোতা নদী মরে গিয়ে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। নদীর পানি প্রবাহ রুদ্ধ করায়, কখনো কখনো উৎসমুখ বন্ধ করে দেয়ায় শত শত নদীর অকাল মৃত্যু ঘটেছে, মরুকরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। শত শত অনুজীব, গুল্ম, লতা-পাতাসহ অসংখ্য প্রাণের বিলুপ্তি ঘটেছে। স্থানীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রাকৃতির ভারসাম্যের চরম অবনতি ঘটেছে। লক্ষ লক্ষ টন বর্জ্য, জাহাজের ফার্নেস ওয়েল, পোড়া কালো তেল ও মবিল অবাধে নদী ও সমুদ্রে ফেলায় সেখানকার পানিও বিষাক্ত হয়েছে। হাজারও ধরনের জলজ প্রাণ ও অনুজীব বিপন্ন হয়েছে। ল্যাটিন আমেরিকার আমাজন, আফ্রিকা বা অস্ট্রেলিয়ার মাইলের পর মাইল বন প্রাকৃতিক দাবানল ও মনুষ্যসৃষ্ট অগ্নিকান্ডে যখন পোড়ে তখন যে আসলে পৃথিবীর ফুসফুসটাই পোড়ে, এই উপলব্ধি এখনো পর্যন্ত মানুষের মধ্যে ততটা গভীর নয়। করোনা ভাইরাস সংক্রমনে আমরা আমাদের ফুসফুস আর তার কর্মক্ষমতা নিয়ে কতই না উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় দিনরাত পার করছি! মানব দেহের এই ফুসফুস রক্ষায় আমাদের নিরন্তর প্রচেষ্টার সীমা নেই। অথচ দশকের পর দশক ধরে আমরাই পৃথিবীর ফুসফুসকে বিপন্ন ও সংকটের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছি। বনাঞ্চল যখন পোড়ে তার সাথে তখন কেবল গাছপাল আর লতাপাতা পোড়েনা, পুড়তে থাকে লক্ষ লক্ষ পশু-পাখি,জীবআর অনুজীব। এ আগুন কোন কোন স্থান, দেশ বা মহাদেশের স্বাভাবিক জীবনচক্রকেই পাল্টে দেয়। পরিবর্তন ঘটায় সামগ্রিক বাস্তুতান্ত্রিক পরিবেশের। এসবের প্রতিক্রিয়া হয় সুদূরপ্রসারী।

করোনা ভাইরাসের মত প্রাণঘাতি ভাইরাসসমূহ প্রাকৃতিক এই ভারসাম্যহীনতার সুযোগে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে নেয় মানবদেহে। বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই অসংখ্য তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বলে আসছেন যে, করোনা ভাইরাস কোন গবেষণাগার থেকে উৎপত্তি হয়নি বরং প্রকৃতির নানা ধরনের ভারসাম্যহীনতা থেকে, বিশেষ কোন প্রাণী বা প্রজাতি থেকেই তার উৎপত্তি। কিন্তু এটা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রাজনীতির শেষ নেই। মার্কিন বিশেষজ্ঞ ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা যেখানে করোনা ভাইরাস মানবসৃষ্ট নয় বলে আসছেন, সেখানে ট্রাম্প করোনাকে ‘চীনা ভাইরাস ‘হিসাবে আখ্যায়িত করে ধারাবাহিক অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছেন। শুরুতেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাসের সংক্রমন ক্ষমতার ব্যাপারে রাষ্ট্র ও সরকারগুলোকে বারবার সতর্ক করলেও পৃথিবীর আরও অনেক দেশের মত দুই মাস ট্রাম্প এটাকে কোন আমলে আনেননি। প্রাণঘাতি এই ভাইরাসের ভয়াবহ বিস্তারের পরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রথী-মহারথীরা এখনও পর্যন্ত কেবল এর টোটকা সমাধানের পেছনে ছুটছেন। কিন্তু উন্নয়নের নামে যে বিধ্বংসী পরিবেশে এ সকল ভাইরাসের জন্ম এবং আগামীতে আরও নতুন নতুন ভাইরাস দেখা দেয়ার আশঙ্কা তার উৎস ও উৎপত্তি সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত নীতি-নির্ধারকদের বিশেষ কোন মনোযোগই নেই।

প্রাণ-প্রকৃতি, জীব- বৈচিত্র বিনাশী এবং মাটি, পানি ও বায়ুমন্ডল দুষিত ও বিষাক্ত হওয়ার মত পরিবেশে যে সকল ভাইরাসের জন্ম তাকে পরিবর্তন করা না গেলে মানবজাতিকে আরও নতুন নতুন বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে। সে কারণে আমাদের উন্নয়ন, অগ্রগতি, জীবনধারা ও পরিবেশ ভাবনার আমূল পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা জরুরীভাবে দেখা দিয়েছে। যত দ্রুত আধিপত্য বিস্তারকারী বিশ্বকর্তাদের এ উপলব্ধি হবে ততই মানবকুলের জন্যে তা মঙ্গল বয়ে আনবে।
করোনা ভাইরাসের আবির্ভাবের গত চার মাসেই প্রকৃতি বিস্ময়করভাবে নিজেকে বদলাতে শুরু করেছে। নিজেকে আগের রূপে ফিরিতে আনতে চাইছে। মহাকাশ বিজ্ঞানীরা বলছেন গত চারমাসে বায়ুমন্ডলে ওজন স্তরের ক্ষতি ও প্রকৃতির বহুমুখী সর্বনাশ হিলিং হতে শুরু করেছে। বাতাসে দুষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে শুরু করেছে। দুষণ ও বিষাক্তকরণ হ্রাস পাওয়ায় নদীর পানিও তার স্বাভাবিক রঙে ফিরে আসছে। নদী-সমুদ্র উপকুলে ডলফিনদের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে ;পাখীরা আবার আপন নীড়ে ফিরছে।

প্রকৃতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি মানুষকে প্রকৃতির এই পরিবর্তনগুলোকে বিশেষভাবে বিবেচনায় নেয়া দরকার। প্রকৃতির সাথে বৈরীতা নয়, বরং প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে প্রাকৃতিক ভারসাম্যকে পরম যত্নে লালন করা দরকার। তা না হলে আরও অসংখ্য প্রাণঘাতি ভাইরাস জন্ম নেয়ার রাস্তা উন্মুক্ত থাকবে; মানবজাতি তা কখনোই হতে দিতে পারে না।

বহ্নিশিখা জামালী- সম্পাদক, লেখক, শ্রমজীবী নারা মৈত্রীর সভাপতি ।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)