

বুধবার ● ১১ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » অপহরণের ৯ দিন পর মুক্তিপন ছাড়াই উদ্ধার হলো দুলাল মিয়া
অপহরণের ৯ দিন পর মুক্তিপন ছাড়াই উদ্ধার হলো দুলাল মিয়া
হাসান মাহমুদ, আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি :: অপহরনের ৯ দিন পর বুধবার বেলা ১২ টা ৫০ মিনিটে উদ্ধার করা হয়েছে দুলাল মিয়া (৩৬) কে। নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের ৩০ বিজিবির বড়বেতী বিওপি’র একটি অপারেশন দলের সহযোগীতায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, কারবারী, সাংবাদিক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমানার আলীকদম অংশের ৭৮ নং পালার এলাকায় গিয়ে অপহৃত দুলালকে উদ্ধার করেন।
পরবর্তী বেলা আনুমানিক ২ টার সময় ৩০ বিজিবি’র বড়বেতী ক্যাম্প কমান্ডার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ¤্রাে, ৩নং নয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন, বিএনপি নেতা জুলফিকার আলী ভূট্টো, ফরিদুল আলম, ইয়াংরিং কারবারী সহ প্রায় শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে অপহৃত দুলাল মিয়াকে তার বড় ভাই হেলাল উদ্দিন ও নয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন এর কাছে হস্তান্তর করেন। বেলা আড়াইটায় দুলাল মিয়াকে তার পরিবারের কাছে সম্পুর্ণ সুস্থ অবস্থায় হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে গত ০৩ জুন তাকে অপহরণ করা হয়। পরিবারের লোকজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের দ্বারস্থ হন এবং দুলাল মিয়াকে অপহরন করা হয়েছে বলে দাবি করেন। এর পর গত রবিবার আরকান এলাকার তনডং মুরুং নামে এক ব্যক্তিকে সন্দেহের বসে আটক করে স্থানীয় জনতা। এসময় তনডং মুরুং অপহরনকারীদের পরিচিত হওয়ার সুবাদে তনডং মুরুং অপহরনকারীদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন।
এর পর ৪নং কুরুক পাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং মুরুং তনডং মুরুংকে উপর্যুপরী জিজ্ঞাসাবাদ ও অপহরণকারীদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। নানামুখি চাপের পর গত ১০ জুন রাতে অপহরণকারীরা ৩০ বিজিবি’র বড়বেতী কেম্প কমান্ডারকে দুলাল মিয়াকে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
গত ০৪ জুন অপহরণের অভিযোগ এনে নিখোঁজ দুলাল মিয়ার বড় ভাই হেলাল উদ্দিন (৫৬) জনৈক মসজুর আলম, পিতা- ইছহাক আহমদকে বিবাদী করে আলীকদম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করেছেন আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন। অভিযোগে দাবি করা হয়, গত ৩ জুন দুুপুর আনুমানিক ৩টার দিকে আলীকদম থানাধিন ৪নং কুরুক পাতা ইউনিয়নের অন্তর্গত ৬ নং ওয়ার্ডের ছোটবেতী এলাকায় গায়াল কেনার জন্য যান মনজুর আলম। এসময় মনজুর আলম অপহৃত দুলাল মিয়াকে ১ হাজার টাকা রোজ বেতনের লেবার হিসেবে সাথে নিয়ে যান। অপহরণকারীরা গর্জনপাতা এলাকা থেকে মনজুর আলম এবং দুলাল মিয়াকে ধরে ফেললেও মনজুর আলম কৌশলে পালিয়ে আসে বাড়ীতে। সেখানেই ঘটে বিপত্তি।
দুলাল মিয়ার বড় ভাই মোঃ হেলাল মনজুর আলম এর কাছ থেকে দুলাল মিয়াক বিষয়ে জানতে চাইলে মনজুর আলম জানান, দুলাল মিয়াকে অজ্ঞাতনামা ৫ জন মুরুং সন্ত্রাসী অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, দুলাল মিয়াকে উদ্ধারকালে অপহরণকারীরা দুলাল মিয়াকে অপহরণের কারণ হিসেবে জানায়, বিগত বেশ কিছুদিন আগে স্থানীয় জনৈক আবুল কাশেম, রুহুল আমিন, জিয়াউল ও প্রদীপ নামক ব্যক্তিরা তাদেরকে চেতনানাশক পানীয় দিয়ে বেহুশ করে তাদের কাছে থাকা ২৫ লক্ষ টাকার ইয়াবা ছিনতানই করে নিয়ে আসে। তবে এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয় নাই।