

শুক্রবার ● ১০ অক্টোবর ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » গৌরীপুরে অচল ১৮ লাখ টাকার পাবলিক টয়লেট
গৌরীপুরে অচল ১৮ লাখ টাকার পাবলিক টয়লেট
উবায়দুল্লাহ রুমি, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :: ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের কলতাপাড়ায় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সরকারি পাবলিক টয়লেট উদ্বোধনের দেড় বছর পরেও জনসাধারণের জন্য ব্যবহারযোগ্য হয়নি। ‘মানব সম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি প্রকল্প (জিওবি–বিশ্বব্যাংক)’ এর আওতায় ২০২২–২৩ অর্থবছরে নির্মিত এই টয়লেটটি এখন তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
সরকারি অর্থে নির্মিত হলেও পরিকল্পনার ত্রুটি ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে প্রায় ১৮ লাখ টাকার এই প্রকল্প থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সুফল পাচ্ছে না জনগণ। এলাকাবাসী মনে করছেন, দ্রুত টয়লেটটি চালু করা গেলে ভোগান্তি কমবে এবং সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কলতাপাড়া বাজার থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত পাবলিক টয়লেটটির দরজায় তালা ঝুলছে। অথচ এটি ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার কথা ছিল। টয়লেটটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো নিয়োজিত কর্মীও সেখানে দেখা যায়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, টয়লেট নির্মাণের পর থেকেই এটি অবহেলায় পড়ে আছে। তারা জানান, টয়লেটের চাবি এখনো জমিদাতার কাছেই রয়েছে।
এব্যাপারে জমিদাতা মো. আব্দুল হালিম জানান, নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এটিতে কেউ আসেনা, সচল রাখার জন্যে স্থানীয় মাদ্রাসার হুজুরের কাছে চাবি দেওয়া আছে। মাদ্রাসার ছাত্ররা মাঝেমধ্যে এটি ব্যবহার করছেন।
কলতাপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী একেএম মোস্তাফিজুর রহমান লালন বলেন, টয়লেটটি বাজার থেকে অনেক দূরে। তার আগে মাদ্রাসা থাকায় অনেকেই মাদ্রাসার টয়লেটই ব্যবহার করে। স্থান নির্ধারণের ত্রুটির ফলে অনেকে জানেননা এখানে একটি সরকারি পাবলিক টয়লেট রয়েছে, আর যারা জানেন দূরের কারনে কেউ যেতে চায়না।
স্থানীয় বাসিন্দা সাদেক মিয়া বলেন, শুরুর দিকে টয়লেটটি খোলা ছিল, কিন্তু অবস্থান অনুপযুক্ত হওয়ায় ব্যবহারকারী ছিল না। এখন বন্ধ পড়ে আছে। খুলে দিলে সাধারণ মানুষ এটির সুফলভোগ করতে পারতো। এখন এটি কেন বন্ধ তা বলতে পারছিনা।
একই মত প্রকাশ করেন ডাউকি গ্রামের এনামুল হক। তিনি বলেন, বাজারে এলে টয়লেটের প্রয়োজন পড়ে, কিন্তু বাধ্য হয়ে মাদ্রাসা বা মসজিদের টয়লেট ব্যবহার করি। সরকারি টয়লেট আছে, সেটা আমরা জানিও না। আবার সেটা তালাবদ্ধ!
কলতাপাড়া বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান কাজল অভিযোগ করেন, আমরা মসজিদের পাশে সুবিধাজনক জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে টয়লেট নির্মাণ করা হয়নি।
এ ব্যাপারে গৌরীপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ–সহকারী প্রকৌশলী মো. সালাহ্উদ্দীন সোহেল বলেন, আমরা টয়লেটটি হস্তান্তর করেছি। তবে কেন তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না, সেটি আমার জানা নেই।
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আফিয়া আমীন পাপ্পা বলেন, আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।