মঙ্গলবার ● ৪ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটি জেলা বিএনপি’র চার নেতা সাময়িক বহিষ্কার : অভিযুক্তরা বলছেন অংসুইপ্রু চৌধুরীকে রক্ষার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র
রাঙামাটি জেলা বিএনপি’র চার নেতা সাময়িক বহিষ্কার : অভিযুক্তরা বলছেন অংসুইপ্রু চৌধুরীকে রক্ষার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র
স্টাফ রিপোর্টার :: রাঙামাটি জেলা বিএনপি দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে চার নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। মঙ্গলবার ৪ মার্চ ২০২৫ জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু ও সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুন প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত নেতারা হলেন : আনোয়ারুল আজিম (আজম) সদস্য, রাঙামাটি জেলা বিএনপি, আলী আজগর বাদশা – সভাপতি, পৌর তাঁতী দল, রাঙামাটি পৌর কমিটি, অনতোষ দাশ সদস্য, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দল, রাঙামাটি ও সুমন চাকমা (ডাক্তার) ক্ষুদ্র ও সমবায় সম্পাদক, জেলা কৃষক দল, রাঙামাটি।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বহিষ্কৃত নেতারা দলের পদ ব্যবহার করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং নীতি-আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য বারবার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তারা তা উপেক্ষা করেন।
দলীয় গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) ধারা অনুযায়ী তাদের প্রাথমিক সদস্য পদসহ দলের সব পর্যায়ের পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং পরবর্তী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুন জানান, “দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ যদি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে, তার বিরুদ্ধেও একই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এই বহিষ্কারাদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাময়িক বহিষ্কার আদেশের বিষয়ে রাঙামাটি জেলা বিএনপি’র সদস্য আনোয়ারুল আজিম (আজম) বলেন, দলের পক্ষ থেকে আমি এখনো কোন চিঠি পায়নি।
গণমাধ্যমে এর মাধ্যমে জানতে পারলাম যাদের সাময়িক বহিষ্কার করেছেন তারা না-কি জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং নীতি-আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। বিএনপি জেলা নেতৃবৃন্দ আমাদেরকে কারণ দর্শনো নোটিশ দিলে আমরা আত্মপক্ষ সমর্থনে সুযোগ পেতাম।
মুল ঘটনাকে আড়াল করতে আওয়ামীলীগ পন্থি কিছু গণমাধ্যম কর্মীদের অপপ্রচারনা থেকে হয়তো আমাদের পার্টির জেলা নেতৃবৃন্দ তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কারাদেশ দিয়েছেন।
মূল ঘটনার বিষয়ে রাঙামাটি জেলা বিএনপির অভিযুক্ত নেতা আনোয়ারুল আজিম (আজম) বলেন, রাঙামাটির সাবেক সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন, দলীয় বিভিন্ন সংগঠনের পদ-বাণিজ্য এবং এলজিইডি, উন্নয়ন বোর্ড, ভুমি দখল বাণিজ্য, সড়ক ও জনপথ, গণপূর্ত বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরের উন্নয়নকাজের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্য, বন বিভাগের ভুয়া পারমিটের আড়ালে কাঠ পাচার এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন। আর এসব খাত থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতি করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
দীপংকরের এই অবৈধ সম্পদ অর্জনের বড় জোগানদাতা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ০৩ সেপ্টেম্বর-২০২৪ তারিখ রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে অংসুইপ্রু চৌধুরী পদত্যাগ করে আত্মগোপনে চলে যায়। অংসুইপ্রু চৌধুরীর বিরুদ্ধে কাউখালী, রাঙামাটি, রাঙ্গুনিয়া ও চট্টগ্রামে ডজনখানিক মামলা রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন তাকে খুজছে।
২৪ ফেব্রুয়ারি-২০২৫ (সোমবার) আমরা একটি বিশ্বস্থসূত্রে মাধ্যমে খবর পাই যে, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী রাঙ্গাপানি ও টেকনিক্যাল পাড়ার মাঝখানে মহাজন পাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে স্বপরিবারে আত্মগোপন করে আছে।
দিনের ১১টার সময় আমি জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে আবহিত করিলে জেলা নেতৃবৃন্দ আমাকে দলের লোকজনকে সাথে নিয়ে দুর্নীতিবাজ অংসুইপ্রু চৌধুরীর আত্মগোপনের বিষয়টি সঠিক কি-না যাচাই করার জন্য পরামর্শ দেন। নেতৃবৃন্দ এটাও আমাদের বলেন, অংসুইপ্রু চৌধুরীর আত্মগোপনে খোঁজ পেলে আমরা যেন রাঙামাটির জেলা বিনেপির নেতৃবৃন্দ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফোনে সংবাদ দেই।
আনোয়ারুল আজিম (আজম) আরো বলেন, আমাকে সহ যাদের রাঙামাটি জেলা বিএনপি সাময়িক বহিষ্কার করেছেন, আমি তাদের সাথে নিয়ে সুখিনীলগঞ্জ হয়ে টেকনিকেল পাড়া দিয়ে মহাজন পাড়ায় যে বাড়ির লোকেশন দেয়া হয়েছিলো সেই বাড়িতে আমরা যাচাইয়ের জন্য গেলে প্রথমে আমরা সেই বাড়ির দরজা চার পাশ থেকে বন্ধ পাই। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সংবাদ দিচ্ছি বলায় ভিতর থেকে বাড়ির দরজা খোলে দেয়া হয়। আনোয়ারুল আজিম বলেন, আমার সাথে থাকা দলীয় নেতারা বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে অংসুইপ্রু চৌধুরীর মা, স্ত্রী ও প্রতিবন্ধী তার এক সন্তানকে দেখতে পায়।
এসময় বাড়ির ভিতর টেবিল এর পড়ে থাকা ৪টি সচল মোবাইল পাওয়া যায়। অংসুইপ্রু চৌধুরীর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, মোবাইল ফোন ৪টি অংসুইপ্রু চৌধুরীর আমাদের আসার সংবাদ পেয়ে অংসুইপ্রু চৌধুরী বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
অনেক খোঁজা-খোজির পর ডজনখানিক মামলার আসামী অংসুইপ্রু চৌধুরীকে না পাওয়ার সংবাদ আমি নিজে (আনোয়ারুল আজিম প্রকাশ আজম) বিএনপির জেলা নেতৃবৃন্দকে জানালে তারা আমাদের ফিরে যেতে পারামর্শ দেন। অংসুইপ্রু চৌধুরী পালিয়ে যাওয়ার সময় ফেলে যাওয়া ৪টি মোবাইল ফোন তার স্ত্রীর হাতে দিয়ে আসা হয়।
আনোয়ারুল আজিম প্রকাশ আজম এসময় আরো বলেন, অংসুইপ্রু চৌধুরী রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান থাকাকালিন তথাকথিত হলুদ সাংবাদিক নামের কিছু আওয়ামীলীগের দোসর এবং রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের বর্তমান সদস্য আওয়ামীলীগের দোসরা অংসুইপ্রু চৌধুরীকে রক্ষার জন্য ২৪ ফেব্রুয়ারি-২০২৫ সোমবার ঘটনাটি রং মেখে বিভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
আনোয়ারুল আজিম প্রকাশ আজম বলেন, রাঙামাটি জেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করিলে আমাদের বিরুদ্ধে দলের পদ ব্যবহার করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং নীতি-আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে সেই বদনাম থেকে আমরা রেহাই পাবো ইনশাআল্লাহ।





ইগনাইট মিরসরাই’র নতুন কমিটি গঠন
বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে : চুয়েট ভিসি
রাঙামাটির ঘাগড়ায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি এলাকাবাসীর
মিরসরাইয়ে বিজিবির অভিযানে ভারতীয় গরু জব্দ
রাঙামাটি জেলা পরিষদের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি-৯৭ আদ্যোপান্ত শীর্ষক আলোচনা : চুক্তিতে অসংগতি থাকায় শান্তির বদলে অশান্তি বেড়েছে