সোমবার ● ১০ নভেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » কাউখালীর দুর্গম এলাকায় ইউপিডিএফের বাধা সত্ত্বেও সেনাবাহিনীর মানবিক কার্যক্রম সম্পন্ন
কাউখালীর দুর্গম এলাকায় ইউপিডিএফের বাধা সত্ত্বেও সেনাবাহিনীর মানবিক কার্যক্রম সম্পন্ন
কাউখালী :: রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের রিফিউজিপাড়া, লেভারপাড়া, নোয়া আদম, বাদলছড়ি ও মইনে পাড়া, এগুলো এমন সব দুর্গম পাহাড়ি জনবসতি, যেখানে আজও স্বাস্থ্যসেবা মানুষের নাগালের বাইরে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে দূরত্ব প্রায় ৯-১০ কিলোমিটার; মাঝখানে ঝিরি-ঝর্ণা, খাড়া পাহাড়ি পথ ও প্রতিকূল ভৌগোলিক বাস্তবতা।
এসব কারণে অসুস্থ মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে। ঠিক এই বাস্তবতার মুহূর্তেই মানবিকতার অগ্নিশিখা হয়ে পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
উপজেলার ৩ নং ঘাগড়া ইউনিয়নের হারাঙ্গীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আজ সোমবার ১০ নভেম্বর ২০২৫ দিনব্যাপী রাঙামাটি রিজিয়নের আওতাধীন রাঙামাটি সদর জোনের সার্বিক সহযোগিতায় চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।
রাঙামাটি জোনের মেজর মিনহাজুল আবেদিনের নেতৃত্বে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ও শিশু বিশেষজ্ঞ আবিদ দাশ, মেজর জান্নাতুন নাঈম (ডিজিও গাইনি বিশেষজ্ঞ) এবং ক্যাপ্টেন নাহিদা আক্তার (মেডিকেল অফিসার) এর সমন্বয়ে ক্যাম্পে নারী, শিশু ও প্রবীণসহ সীমিত সংখ্যক স্থানীয় জনগণ চিকিৎসা সেবা ও বিনামূল্যে ঔষধ গ্রহণ করেন।
ক্যাম্পে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণ করার পরিকল্পনা করা হয়। এজন্য ছিল ব্যাপক ব্যাপক প্রস্তুতি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পার্বত্য চুক্তি বিরোধী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) মেডিকেল ক্যাম্প শুরুর আগে থেকেই এলাকাবাসীর ওপর ভয়ভীতি ও চাপ সৃষ্টি করে, যাতে তারা সেনাবাহিনীর পরিচালিত চিকিৎসা ক্যাম্পে অংশ না নেয়। সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন পাহাড়ি পাড়ায় ঘুরে সাধারণ মানুষকে হুমকি দেয় যে, মেডিকেল ক্যাম্পে গেলে জরিমানা ও শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। এই ভয়ভীতির কারণে বহু অসুস্থ মানুষ চিকিৎসা নিতে সাহস পাননি। রাঙামাটি রিজিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেনাবাহিনী সর্বদা পার্বত্য অঞ্চলের জনগণের কল্যাণে নিবেদিত। শান্তি, নিরাপত্তা ও মানবিক সহায়তার প্রতি সেনাবাহিনীর অঙ্গীকার অটুট, এবং যে কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভয়ভীতি বা বিভ্রান্তিমূলক কর্মকাণ্ড জনগণের সেবায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। সেনাবাহিনী ভবিষ্যতেও এ ধরনের মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
মেজর মিনহাজুল আবেদিন বলেন, “দুর্গম পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কল্যাণে সেনাবাহিনী জনহিতকর কার্যক্রম পরিচালনা করে; চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা সহায়তা, শীতবস্ত্র প্রদানসহ নানামুখী মানবিক কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতাতেই দিনব্যাপী মানবতার ডাকে এই চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।” ইউপিডিএফের বাধার পরও সেনাবাহিনীর সদস্যরা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও ধৈর্য নিয়ে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যান। যারা চিকিৎসা নিয়েছেন, তারা সেনাবাহিনীর এ উদ্যোগে সন্তুষ্টি ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। চিকিৎসা সেবা প্রদানকালে জনপ্রতিনিধি মন্টু রঞ্জন চাকমা, শিক্ষক প্রদীপ চাকমা এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সকাল থেকে সেনাবাহিনী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে কিন্তু ইউপিডিএফ এর ভয়ভীতি ও বাধায় মানুষ আসতে পারেনি। পরবর্তীতে বেলা বাড়ার সাথে সাথেই মানুষ চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে আসেন। একজন প্রবীণ পাহাড়ি বাসিন্দা বলেন, “চিকিৎসা পেতে বাধা দেওয়া কোনো সংগঠনের কাজ হতে পারে না। এটি জনগণের মৌলিক অধিকার। ইউপিডিএফ এর বাধা সত্ত্বেও চিকিৎসা সেবার মত মানবিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। সেনাবাহিনী আমাদের পাশে আছে, তারা আমাদের মানুষের মতো দেখে।” এই চিকিৎসা সেবা কেবল ওষুধ বা চিকিৎসা নয়; বরং ভ্রাতৃত্ব, আস্থা, সম্প্রীতি ও মানবিক বন্ধনের এক গভীর বার্তা। পাহাড় ও সমতলের মানুষের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্মিলিত অগ্রযাত্রার এই অঙ্গীকারই দেশকে এগিয়ে নিতে পারে নতুন ভিত্তিতে।





বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটার তৈরিতে কাজ শুরুর কথা জানালেন আসিফ আকবর
আগামী কাল বিপ্লবী যুব সংহতির রাঙামাটি জেলা কাউন্সিল
মিরসরাই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন নুরুল আমিন
চিৎমরম বৌদ্ধবিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব সম্পন্ন
বেণুবন উওমানন্দ ধর্মবন বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব ও সংবর্ধনা
বনরূপা ব্যবসায়ী সমিতির নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ