বুধবার ● ৪ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » নাচে-গানে গাইবান্ধায় সাঁওতালদের বাহা পরব
নাচে-গানে গাইবান্ধায় সাঁওতালদের বাহা পরব
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল সম্প্রদায় নিজস্ব ঐতিহ্যে নেচে-গেয়ে আনন্দের সাথে বরণ করলেন ঋতুরাজ বসন্তকে। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামদিয়া ইউনিয়নের মোত্তালেব নগর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাহা পরব বা বসন্ত উৎসবে মেতে ওঠে আদিবাসী সাঁওতালরা। বুধবার (৪ মার্চ) অবলম্বনের আয়োজনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন সহযোগিতা করে। নাচে-গানে-মাদলে আদিবাসী সাঁওতালরা তাদের নিজস্ব কৃষ্টি সংস্কৃতিতে বাহা পরবের মাধ্যমে বরণ করেন ঋতুরাজ বসন্তকে।
সকালে পুজা-অর্চনার পর বাহা পরবের প্রথম অংশে আলোচনা সভা ও পরে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সাঁওতাল সাংস্কৃতিক দলের সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনা দর্শকদের মুগ্ধ করেন। এতে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর ৬টি ইউনিয়নের ৮টি সংস্কৃতিক দল অংশগ্রহণ করে।
বিভিন্ন বর্ণের আদিবাসী-বাঙালিদের আগমনে মিলন মেলায় পরিণত হয় গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লী। বাহা পরব মানুষের সাথে প্রকৃতির এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের প্রতীক। সাঁওতালি ভাষায় বাহা মানে ফুল। বাহা পরব হল সাঁওতালদের ফুলের পার্বণ। ফাল্গুন মাস সাঁওতালদের বছরের প্রথম মাস। প্রতি বছর বসন্তের শুরুতে মানে ফাল্গুন মাসে এই পার্বণ পালন করা হয় প্রতিটি সাঁওতাল পল্লীতে। গ্রামের এই প্রান্তে ‘জাহের থান’ নামে এক পবিত্র স্থানকে কেন্দ্র করে বাহা পরবটি পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন, গাইবান্ধা জেলা উদীচীর সভাপতি অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুম, গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান, সাংস্কৃতিক কর্মী দেবাশিষ দাশ দেবু, রণজিৎ সরকার, অবলম্বনের নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্তী, ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, আদিবাসী নেত্রী কেরিনা হাসদা প্রমুখ। এতে সভাপতিত্ব করেন বাহা পরব উদ্্যাপন কমিটি আহবায়ক এ্যামিলি হেমব্রম।
দীর্ঘদিন পর এ ধরনের উৎসবের সুযোগ পেয়ে সাঁওতালরা সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত উৎসবের মহড়া দিতে থাকে। উৎসবের জন্য কেনা হয় নতুন কাপড়। উৎসবস্থল আদিবাসীদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া সম্বলিত ফেস্টুনে সুসজ্জিত করা হয়।
বাহা পরব উপলক্ষে মেলায় আদিবাসীদের বেশ স্টলে তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যেও সামগ্রী প্রদর্শিত হয়।
বহু সংস্কৃতি, বহু ভাষা আর বহু জাতির সম্মিলনে বাংলাদেশ একটি জাতি-বৈচিত্র্যের দেশ। এ দেশের পাহাড় থেকে সমতলে ৪৫টি আদিবাসী জাতি বাস করে- যাদের রয়েছে স্বতন্ত্র্য ভাষা ও নিজস্ব সংস্কৃতি। সংখ্যায় প্রায় ২৫ লক্ষাধিক, যা মূল বাঙালি জনগোষ্ঠীর প্রায় ২ ভাগ। এদেশের বৈচিত্র্যময় আদিবাসী ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে সংখ্যাগুরু বাঙালিদের পরিচয় নেই বললেই চলে। প্রধান জনগোষ্ঠীর অবহেলা এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের অভাবে আদিবাসীদের ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি আজ প্রায় বিপন্ন। কিছু কিছু এর মধ্যেই হয়ে গেছে বিলুপ্ত।
গাইবান্ধায় স্বামী-স্ত্রীর কলহ মীমাংস করায়
এলাকাবাসী মামলার আসামী
গাইবান্ধা :: স্বামী আব্দুল কাদের ও স্ত্রী হালিমা বেগমের কলহ মীমাংসা করে দিয়ে এলাকাবাসী হয়েছেন মামলার আসামী। ঘটনাটি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপরহাটি ইউনিয়নের মরুয়াদহ গ্রামের।
জানা গেছে, ওই গ্রামের হাফিজার রহমানের মেয়ে হালিমা বেগমের সাথে ২০০৯ সালে ৫০ হাজার টাকা দেন মোহরে রেজিস্ট্রি করে একই উপজেলার শান্তিরাম গ্রামের মৃত কাবেজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল কাদেরের বিয়ে হয়। দীর্ঘদিন ঘর সংসার করার পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে দেনদরবারের একপর্যায়ে ২০১৯ সালের ২৪ আগস্ট এলাকায় শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ শালিস বৈঠকে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ এবং একই দিনে পুনরায় বিবাহ রেজিস্ট্রি করা হয়। এজন্য ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়। এরপর তারা ঢাকায় গিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করারপর তাদের মধ্যে আবার নতুন করে মনোমালিন্য সৃষ্টি হলে জোরপূর্বক হালিমা বেগমকে বাড়িতে পাঠায়। কিন্তু স্বামী আব্দুল কাদের পরবর্তীতে ২২ অক্টোবর স্ত্রী হালিমা বেগম এবং শালিস বৈঠকে উপস্থিত থাকা এলাকার নুরুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, দুলু মিয়া ও মঞ্জুরুল ইসলামকে আসামী করে সুন্দরগঞ্জ আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সমবায় অফিসারকে নির্দেশ দেন। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বাদির পক্ষে পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে বিবাদীদের সঠিকভাবে সাক্ষী গ্রহণ না করে তদন্ত সম্পন্ন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গাইবান্ধায় ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল
গাইবান্ধা :: খুলনার কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিউজ্জামান রাসেল ও নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জে ছাত্রলীগ কর্মী রাকিব হত্যা এবং অন্যান্যদের উপর নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার সর্বোচ্চ শাস্তি ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে বুধবার ছাত্রলীগ গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে শহরে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
পরে দলীয় কার্যালয় চত্বরে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রলীগ জেলা শাখার সভাপতি আসিফ সরকারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেন মামুনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগ গাইবান্ধা পৌর শাখার আহবায়ক কামাল আহমেদ বাবু, যুগ্ম আহবায়ক জুলফিকার রহমান রাসেল, ফাহিম ইসলাম দ্বীপ, মেহেদী হাসা, লিখন জাহিদ হাসান, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক জিতেন্দ্রনাথ সরকার, যুগ্ম আহবায়ক আসিফ মাহমুদ সিফাত, শ্যাম সরকার, সুমন সরকার জয়, গাইবান্ধা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মোন্নাফ মাসুম প্রমুখ।