বুধবার ● ২ ডিসেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » কৃষি » লাউয়ের মাচায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন
লাউয়ের মাচায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই প্রতিনিধি :: করোনা ক্রান্তিকালে অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে নওগাঁর আত্রাইয়ে শীতকালীন সবজি চাষের পাশাপাশি চাষিরা এখন মাচা পদ্ধতিতে নানান জাতের লাউ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।
কৃষিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ফলে এখন বারোমাসই উৎপাদন হচ্ছে বিভিন্ন সবজিসহ লাউ। সহজ পদ্ধতি এবং গাছের গুনগত মান ভালো থাকায় ফলন বেশি পেয়ে চাষিদের কাছে এখন মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
এক চাষির দেখে প্রতিবেশি অন্য চাষিরাও মাচায় লাউ চাষ শুরু করেছেন। অল্প সময়ে বেশি লাভ হওয়ার কারণে নানান জাতের লাউ চাষ এখন সনাতন পদ্ধতির বদলে মাচায় চাষ করে অধিক লাভের স্বপ্ন দেখছেন স্থানীয় চাষিরা।
প্রতিদিনই পাইকারী এবং খুরচা দরে জমিতে থেকে লাউ বিক্রি হওয়ায় বাজারে দেয়ার ঝামেলা না থাকায় এটা আরও ভালো দিক দেখছেন চাষিরা। স্থানীয় কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শে উন্নত জাতের বীজ চাষিরা হাতে পাওয়ায় মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রায় প্রতি মাসেই গাছের ডগায় ডগায় নানান ওজনের লাউ ঝুলছে।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের ওয়াজেদ আলী লিটন বলেন, একটু বাড়তি আয়ের আশায় প্রতিবেশি কৃষককের দেখে মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ করেছি। দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে গাছগুলো ঠিক রাখায় গাছের ডগায় ডগায় প্রচুর পরিমাণে ছোট বড় মাঝাড়ি ওজনের লাউ ধরেছে। এবং আমি লাভবানও হয়েছি।
কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, আমি মূলত ব্যবসা করি। বাড়ির পাশে নানান জাতের সবজি চাষের পাশাপাশি মাচা পদ্ধতিতে উন্নতমানের বীজ দিয়ে লাউ চাষ করি। প্রায় পাঁচ মাস বয়সের মধ্যে ছোট বড় ও মাঝাড়ি মিলে প্রায় এক হাজার পিস লাউ বিক্রি করেছি। বাজার মূল্য শুরুতে ভালো পেলেও শেষ মহুর্তে আশানূরুপ দর পাইনি। ফলে যে পরিমাণ লাভের আশা করছিলাম তার চেয়ে কিছুটা কম হয়েছে। সব মিলে আমি দিনদিন সবজিসহ লাউ চাষের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি।
এ বিষয়ে আত্রাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ কে এম কাউছার হোসেন জানান, মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ লাভজনক হওয়ায় আত্রাইয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আমরা সরাসরি চাষিদেরকে আগ্রহী করে তোলার লক্ষে সার্বিক পরামর্শসহ উন্নত জাতের বীজ দিয়ে সহযোগিতা করছি। এই পদ্ধতিতে লাউ চাষে রোগবালাই কম ও ফলন বেশি হওয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছে। প্রায় প্রতি মাসেই এই লাউ গাছে ধরে। কীটনাশকমুক্ত লাউ হওয়ায় বাজারে বিক্রির কোনো সমস্যা না হওয়ায় এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।