

মঙ্গলবার ● ১ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » ফটিকছড়ি পৌরসভার ৫০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
ফটিকছড়ি পৌরসভার ৫০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
ফটিকছড়ি প্রতিনিধি :: চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের ৫০ কোটি ২ লাখ ২৫ হাজার ৭০২ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) পৌরসভার হলরুমে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ বাজেট ঘোষণা করেন।
যা গত অর্থ বছরের ৩১ কোটি ৬২ লক্ষ ৯ হাজার ৩৯১ টাকার চেয়ে ৬৩ দশমিক ২১ শতাংশ বেশি।
বাজেটে রাজস্ব আয় ১১ কোটি ৭৭ লাখ ৫৬ হাজার ৬৫০, উন্নয়ন ৩৯ কোটি ৫৮ লাখ ৪৯ হাজার ৮৬৫, মূলধনে ১৬ লাখ ১৯ হাজার ১৮৫ টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়া ব্যয় খাতে রাজস্ব ব্যয় বাজেটে অবকাঠামো উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৩৯ কোটি ৫৮ লাখ, স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা খাতে ৬০ লাখ, শিক্ষা ও সংস্কৃতি খাতে ১৮ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
বাজেট আলোচনায় পৌরসভার উন্নয়ন, নাগরিক সেবা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে পৌর প্রশাসক ও সভাপতির বক্তব্যে মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, পৌর নাগরিকদের সুবিধা নিশ্চিত করতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে বাজেট বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
এসময় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নজরুল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথ, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সৌনাম বড়ুয়া, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রাজীব আচার্য্য, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা তানভির আহমদ সিদ্দিকি, ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আহমেদ, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসানুল কবির, পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন চৌধুরী, সহকারী প্রকৌশলী বিকাশ চন্দ্র দাস প্রমুখ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাঁচতে চায় শিক্ষার্থী জিহাদ
ফটিকছড়ি :: যে সময়টায় ছুটোছুটি আর বিদ্যালয়ে থাকার কথা, সে সময়টিতে সে অলস বিছানায়। তার শরীরে ক্লান্তি এবং দুর্বলতা। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মো. আজিজুল হক জিহাদ (১৭) নামের এক শিক্ষার্থীর কিডনি বিকল হয়ে শুয়ে আছে বিছানায়।
অন্য তরুণদের মতো সেও বিদ্যালয়ে যেতে চায়। মা-বাবার আদর পেয়ে বড় হয়ে পৃথিবীতে থাকতে চায়। তাকে সুস্থ করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টায় নিজেদের সবটুকু উজার করে দিয়েছেন মা-বাবা।
আমিও আপনাদের সাথে বাঁচতে চাই। পৃথিবীর আলো-বাতাস দেখতে চাই। মানুষের জন্য বড় হয়ে কাজ করতে চাই। আমি একটু নিয়মিত চিকিৎসা ও মেডিসিন পেলেই সম্পুর্ণ সুস্থ হয়ে বাঁচতে পারবো।
এক ভিড়িও বার্তায় এভাবেই বেঁচে থাকার আকুতি জানিয়েছে কিশোর মো. আজিজুল হক জিহাদ। নিজের একটি কিডনি বিকল হবার পর আরেকটি কিডনিতে গত ৮ বছর ধরে কোন রকম বেঁচে আছে সে। সেটিও বর্তমানে বিকলের পথে। এটিতে জীবন চলা নিয়েও শঙ্কিত এই কিশোর। ফলে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে পাশে চান মানবিক ও বিত্তবান মানুষদের।
জিহাদ চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি পৌরসভার মাহালিয়াটিলা গ্রামের বাসিন্দা। সে রাঙ্গামাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাবা আবুল কাশেম ওমানে শ্রমিকের কাজ করেন আর মা লিলু আকতার একজন গৃহিনী।
জিহাদের জীবন জুড়েই যেন প্রতিকূলতা। জীবন যুদ্ধে বারবার হোঁচট খেতে হচ্ছে তাকে। মৃত্যুর দুয়ারে থেকে করছেন পড়ালেখা। স্বপ্ন মানুষের মত মানুষ হয়ে সেবা দেবেন। পরিবারের সহায় হবেন। দূর হবে দুঃখ। কিন্তু দূর্ভাগ্য যেন তার পিছু ছাড়ছে না।
রাঙ্গামাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘জিহাদ খুবই ভালো ও মেধাবী। নিয়তির কি নির্মমতা টগবগে ছেলেটি অর্থের কাছে হার মেনে চরমভাবে চিকিৎসায় ধুকছে। দেশের কোটি মানুষ যদি একটি করে টাকা দিয়েও তার প্রতি সদয় হয় তাহলে বাঁচবে এই মেধাবী। আমরা কি পারিনা তার প্রতি সদয় হতে?
২০১৪ সালে জিহাদের প্রথম কিড়নির সমস্যা ধরা পড়ে। ফলশ্রতিতে ২০১৮ সালে ভারতে গিয়ে চিকিৎসা শেষে একটি কিডনি অপসারণ করা হয়। বাকি থাকা সেই কিডনিটির অবস্থাও এখন নাজুক। বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. মো. মারুফুল ইসলামের তত্বাবধানে রয়েছেন জিহাদ। তার পরামর্শে প্রতি মাসে একটি করে ইনজেকশন প্রয়োজন। যার মূল্য ৪০ হাজার টাকা। দীর্ঘ ১২ বছর চিকিৎসা চালিয়ে দরিদ্র বাবা-মা এখন সবকিছু হারিয়ে পাগলপ্রায়। ব্যয়বহুল এই চিকিৎসা চালাতে তারা অক্ষম। ফলে মানবিক মানুষের দিকে হাত বাড়িয়েছেন তারা। দু:সহ যন্ত্রনায় থাকা পরিবারটি এখন পীড়িত। মানুষের কাছে তাদের চাওয়া- সন্তান আগের মতো খেলবে, মেঠাবে স্বজনদের উৎকন্ঠার সেই ক্ষণ।
বিষয়টি অনেকে স্বাভাবিকভাবে নিলেও মা লিলু আকতার (৪৫) হাল ছাড়ছেন না। তিনি যে জিহাদকে পৃথিবীতে এনেছেন, সেই পৃথিবী থেকে নিজের আগে বিদায় দিতে চান না। একথা ভাবতেই পারছেন না গর্ভধারিনী। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ‘জীবন যুদ্ধে হার না মানা এক মা আমি। সর্বস্ব দিয়েও সন্তানকে রেখে মরতে চাই। সন্তানের জন্য আমার রিক্ত এই দুই হাত সবার তরেই।’
জিহাদকে সহযোগিতা পাঠাবেন বিকাশ/নগদ; ০১৮২৪২৯৬৪৩৭ (মা)