শিরোনাম:
●   আন্তর্জাতিক ‘আদিবাসী’ দিবসকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্ত ●   রাউজানে আগ্নেয়ান্ত্রসহ গ্রেপ্তার-১ ●   গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ ●   গাজিপুরে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে মানববন্ধন ●   নির্বাচন সংক্রান্ত ঘোষণার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সরকারের দূরত্ব কমে আসবে ●   কুষ্টিয়ায় পৃথক স্থান থেকে দুই নারী ও এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার ●   পাইশিখই মারমার উপর সন্ত্রাসীদের হামলার নিন্দা জানিয়েছে পিসিসিপি ●   আত্রাইয়ে জুলাই যোদ্ধাদের কবরে প্রশাসনের শ্রদ্ধা নিবেদন ●   খাগড়াছড়িতে জামায়াতে ইসলামীর গণমিছিল ●   গণ -অভ্যুত্থানের বিজয়কে খন্ডিত করা ফেলা হচ্ছে ●   কাউখালীতে স্বৈরাচার পতন দিবস উপলক্ষে ইসলামী আন্দোলনের গণমিছিল ●   রাঙামাটিতে সরকার রাজনীতিক দলগুলোর ভিতর বিভাজনের রাজনীতি করছে ●   রাতে ৬ ইঞ্চি করে ছেড়ে দেওয়া হলো কাপ্তাই লেক এর ১৬ টি জলকপাট ●   অজ্ঞাত কারণে জুলাই ঘোষণা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় অধিকাংশ রাজনৈতিক দলকে বাইরে রাখা হয়েছে ●   আত্রাইয়ে অস্ত্রসহ বিএনপি নেতা আটক ●   খাগড়াছড়িতে এসএসসি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ●   চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি রাবিপ্রবি ক্যাম্পাস পরিদর্শন ●   ঝালকাঠিতে জুলাই যোদ্ধা পরিচয়ে আসামী ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ ●   জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে রাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ভূমিকা শীর্ষক স্মৃতিচারণা ●   বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির এমডি সাইফুল বদলি : নতুন এমডি আবু তালেব ●   ভানু বড়ুয়ার মৃত্যুতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের শোক ●   ঈশ্বরগঞ্জে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা সভা ●   উচ্চ শিক্ষায় নরওয়ে যাচ্ছেন চুয়েটের আট শিক্ষার্থী ●   জুলাই সনদের পর জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তালবাহানার কোন অবকাশ নেই ●   ঈশ্বরগঞ্জে মামলা দায়েরের ৪৮ দিন পর ধর্ষক গ্রেফতার ●   পঞ্চাশ বছর ধরে ভোগাচ্ছে একটি রাস্তা : কচুগাছ রোপণ করে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ ●   ই-সিগারেট কারখানা স্থাপনের অনুমোদন না দেয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে প্রজ্ঞা-আত্মা ●   বিদ্যুৎ পৃষ্ঠ হয়ে কাতারে রাঙ্গুনিয়ার এক প্রবাসীর মৃত্যু ●   পার্বতীপুরে জুয়ার আসরে যৌথবাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার-২৩ ●   রাউজানে বিএনপির দুই নেতার সহিংসতা তদন্তে কেন্দ্রীয় কমিটি
রাঙামাটি, শনিবার, ৯ আগস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
শনিবার ● ৯ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » আন্তর্জাতিক ‘আদিবাসী’ দিবসকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্ত
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » আন্তর্জাতিক ‘আদিবাসী’ দিবসকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্ত
শনিবার ● ৯ আগস্ট ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

আন্তর্জাতিক ‘আদিবাসী’ দিবসকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্ত

------ সত্যান্বেষী :: ৯ আগস্ট-আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। প্রতি বছর এই দিনটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে একটি কৃত্রিম উত্তাপ তৈরি করা হয়। কিছু সংগঠন নিজেদের “আদিবাসী” দাবি করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি তোলে, আলাদা পতাকা তোলে, একে কেন্দ্র করে বিদেশি অর্থে রাষ্ট্রবিরোধী এজেন্ডাও চালায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশে কি আদৌ আদিবাসী নামে কোনো বৈধ জনগোষ্ঠী রয়েছে? ইতিহাস ও বাস্তবতা কি এই দাবিকে সমর্থন করে? উত্তর হলো-না।

তাহলে আদিবাসী হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড কী ?
জাতিসংঘ ও আইএলও-র মতে, আদিবাসী হওয়ার জন্য কিছু মূল শর্ত রয়েছে:

১. তারা ঐ অঞ্চলে রাষ্ট্র গঠনের পূর্বে থেকেই বসবাসকারী প্রাচীন জনগোষ্ঠী হবে।
২. তাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি থাকবে এবং রাষ্ট্রের মূল জনগোষ্ঠী থেকে স্বতন্ত্র হবে।
৩. তাদের অস্তিত্ব ও পরিচয় ঐ অঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীন শিকড়বিশিষ্ট হবে।

তাহলে দেখা যাক—বাংলাদেশে যারা নিজেদের আদিবাসী দাবি করেন, তারা আসলে কে, এবং কোথা থেকে এসেছেন?

১. চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, লুসাই - অভিবাসী, আদিবাসী নয়

এই গোষ্ঠীগুলোর মূল উৎপত্তি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। তারা ঐতিহাসিকভাবে বর্তমান মায়ানমার, ত্রিপুরা রাজ্য ও আরাকান (বর্তমান রাখাইন) অঞ্চল থেকে আগত।

চাকমা:
ইতিহাস অনুযায়ী, চাকমা জনগোষ্ঠী ১৫-১৬ শতকে মায়ানমার ও ত্রিপুরা অঞ্চল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে আসে। চাকমা রাজা ত্রিপুরা থেকে বিতাড়িত হয়ে এই অঞ্চলে আশ্রয় নেয়।
[সূত্র: B.L. Chatterjee, The Chakmas of the Chittagong Hill Tracts, 1959]

মারমা:
মারমারা মূলত বার্মার আরাকান রাজ্যের বৌদ্ধ জাতিগোষ্ঠী। ১৭৮৪ সালে বার্মিজ আক্রমণে আরাকান দখল হলে তারা পালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে চলে আসে।
[সূত্র: Parimal Ghosh, Colonialism, Class and a Nation: The Making of Modern India, 2001]

ত্রিপুরা:
ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী ত্রিপুরা রাজ্য থেকে ব্রিটিশ শাসনের সময় চাষাবাদ ও চুক্তিভিত্তিক কারণে বাংলাদেশে (তৎকালীন ব্রিটিশ বাংলায়) আসে।

লুসাই:
মূলত ভারতের মিজোরাম অঞ্চল ও মায়ানমার সীমান্ত এলাকা থেকে আসা এই জনগোষ্ঠী বাংলায় খুব সামান্য সংখ্যায় বাস করে, এবং তারাও অভিবাসিত।

এদের কেউই ব্রিটিশ আগমনের পূর্বে এই অঞ্চলে ছিল না। তাই আদিবাসী হওয়ার প্রথম ও প্রধান শর্ত-”রাষ্ট্র গঠনের পূর্বে থেকেই বসবাসকারী”-তারা পূরণ করে না।

২. সাঁওতাল, ওঁরাও, মুন্ডা, পাহান, কুড়্মি- চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক, ব্রিটিশ আমলে আগমন

এই গোষ্ঠীগুলোকে আজ রাজশাহী, দিনাজপুর, নওগাঁ, পটুয়াখালী, নেত্রকোণা, ময়মনসিংহে পাওয়া যায়। কিন্তু তারা আদিবাসী নয়, বরং ব্রিটিশরা ১৮৫০-১৯০০ সালের মধ্যে চা-বাগান ও কৃষি খামারে শ্রমিক হিসেবে নিয়ে এসেছিল।
সাঁওতালদের আদি নিবাস বর্তমান ঝাড়খণ্ড ও বিহার রাজ্যে।
ওঁরাও ও মুন্ডারা মূলত ছত্তিশগড় ও উড়িষ্যা থেকে আনা হয়।
তারা এখনও নিজেদের মূল উৎসব “সারহুল”, “বাহা” পালন করেন, যা মূলত ভারতীয় সংস্কৃতিভিত্তিক।
এরা বাংলাদেশে দুই শতাব্দীরও কম সময় ধরে আছেন, ফলে তাদেরও “আদিবাসী” বলে চালানো সম্পূর্ণ ইতিহাসবিরোধী।

৩. আন্তর্জাতিক দিবসকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্ত
এরা নিজেদের আদিবাসী দাবি করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে “জাতিগত নিপীড়ন” এর অভিযোগ আনে।
অনেক ক্ষেত্রে আলাদা পতাকা, আলাদা জাতীয় পরিচয় প্রচার করে যা রাষ্ট্রীয় ঐক্য ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।
বিদেশি অর্থে পরিচালিত কিছু এনজিও এই দাবিকে ইন্ধন দেয়, যার লক্ষ্য “স্বীকৃতির” আড়ালে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ও জাতিসত্তার বিভাজন।

বাংলাদেশের সংবিধান কী বলে?
বাংলাদেশের সংবিধানের কোথাও “আদিবাসী” শব্দটি নেই। ২০১১ সালের পঞ্চদশ সংশোধনীতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়:
“বাংলাদেশে বসবাসরত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, উপজাতি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও জনগোষ্ঠীর ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষার্থে রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
(২৩(ক) অনুচ্ছেদ)
এখানে “আদিবাসী” শব্দ এড়িয়ে চলা হয়েছে, কারণ রাষ্ট্র আদিবাসী পরিচয়কে বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

রাষ্ট্রের করণীয় কী?
বাংলাদেশে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলো আমাদের রাষ্ট্রের নাগরিক। তাদের অধিকার, সংস্কৃতি ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্তু “আদিবাসী” নামে ভিন্ন পরিচয়ের দাবিতে বিভ্রান্তি ছড়ানো, আলাদা পতাকা ব্যবহার, কিংবা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকা—এগুলো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
রাষ্ট্রের উচিত:
১. “আদিবাসী” নাম ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলন ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।
২. শিক্ষা, গণমাধ্যম ও সচেতনতা কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণকে ইতিহাস ও বাস্তবতা জানানো।
৩. সংবিধানের কাঠামো মেনে জাতীয় ঐক্যের বার্তা দেওয়া।

বাংলাদেশ একটি একক জাতি রাষ্ট্র। এখানে “আদিবাসী” নামে আলাদা কোনো জাতি, আলাদা কোনো ভূমির মালিকানা বা আলাদা কোনো রাষ্ট্রীয় দাবি সংবিধান মেনে চলতে পারে না। ইতিহাসও এর পক্ষে নয়। তাই বিভ্রান্তি নয়-বাস্তবতার ভিত্তিতে এখন সময় এসেছে স্পষ্ট করে বলার: বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই, যারা আছে, তারা আমাদের নাগরিক—কিন্তু তারা অভিবাসী, আদিবাসী নয়।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)