শিরোনাম:
●   ঘোড়াঘাটে খাদ্য গুদাম সিলগালা কর্মকর্তা উধাও ●   নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি’র পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হলেন সাংবাদিক লিয়াকত ●   সন্দ্বীপে ভিক্ষুক পুনর্বাসনে গবাদি পশু বিতরণ ●   লন্ডনে এনায়েত খান মহিলা কলেজের সকল সদস্যদের মিলন মেলা ●   রেলের ভাড়া বৃদ্ধির পাঁয়তারা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মত ●   কাপ্তাই লেকে বেআইনী অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা দেড় বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি ●   মহান মে দিবস ও শ্রমিকশ্রেণীর মুক্তির সংগ্রাম ●   পার্বত্য চট্টগ্রামের বন ঝুঁকিপূর্ণ, সংরক্ষণের জন্য এর জরিপ করা প্রয়োজন : কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ●   আত্রাইয়ে তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন ●   ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ●   স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন সন্দ্বীপ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার ●   সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধন গড়ে তুলতে পারলেই স্মার্ট নাগরিক হওয়া সম্ভব : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   রুমার জঙ্গল থেকে গুলিবিদ্ধ দুইটি মরদেহ উদ্ধার ●   কাউখালীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিষয়ক মতবিনিময় সভা ●   মিরসরাইয়ে এসএসসি ২০২০ ব্যাচের দিবারাত্রি অলিম্পিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল ●   ২০২৩ সালের সেরা লিগ্যাল এইড অফিসার সিনিয়র সহকারী জজ মো. জুনাইদ ●   পার্বত্য শান্তিচুক্তি পাহাড়ের চিত্র বদলে দিয়েছে : কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ●   ৮ বছর পর খাগড়াছড়িতে ছাত্রলীগের সম্মেলন ●   ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে অনতিবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে বলুন ●   রাবিপ্রবিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত ●   মানিকছড়িতে অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে অর্ধ লক্ষ টাকা জরিমানা ●   কাপ্তাই হ্রদের চারটি উপকেন্দ্র থেকে সাড়ে ১৫ কোটির উর্ধ্বে শুল্ক আয় করেছে বিএফডিসি ●   পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তুলতে হবে : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   ঘোড়াঘাটে ২ ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ড্রাইভার ও হেলপার নিহত ●   অবিলম্বে ‘হিট ইমারজেন্সী ‘ জারী করুন, সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন ●   ইউএসএ বাংলা সাহিত্য সম্মেলনে আসতে শুরু করেছেন দুই বাংলার কবি সাহিত্যিকগন ●   ঈশ্বরগঞ্জে মহিলা এমপি ব্যরিস্টার ফারজানাকে বরণ ●   মানিকছড়িতে ছাদ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু ●   অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা ●   নিরাপদ সড়কের প্রয়োজনীয়তা
রাঙামাটি, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
বুধবার ● ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » পরবাস » দেশ ভেদে নাগরিক দায়বোধের তফাৎ​
প্রথম পাতা » পরবাস » দেশ ভেদে নাগরিক দায়বোধের তফাৎ​
৫৭১ বার পঠিত
বুধবার ● ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

দেশ ভেদে নাগরিক দায়বোধের তফাৎ​

---উত্তর আমেরিকার ভূখণ্ডে প্রথম পা রেখেছিলাম নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে। গত শতকের নব্বই দশকের একেবারে গোড়ার দিকে। সেই থেকে প্রতিনিয়ত নানা বিপত্তির মধ্য দিয়ে কেটে গেল এতগুলো বছর। না বিপত্তি শব্দটা বলা বোধ হয় ঠিক হলো না, আসলে ওগুলো ছিল উত্তর আমেরিকার জীবনধারার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবার নানা স্তর। সমাজ-সামাজিকতা, শিল্প-সংস্কৃতি, দর্শন, যাপিত জীবন, আচার-আচরণ, চিন্তা-চেতনা, চলন-বলন, ইত্যাদি সবই তো এখানে যথেষ্ট ভিন্ন। এই সমাজের একজন হতে হলে, এদের চলনটা ধারণ করতে হবে বৈকি। আর সেই ধারণ করাটা সরল কোনো কাজ তো নয়। এত নিজেকে বদলাবার বিষয়, সেকি অতই সোজা?
তো ওই জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরেই ঘটে গেল প্রথম বিপত্তিটা। আমাকে নিতে যার বিমানবন্দরে আসবার কথা ছিল তাকে দেখছি না কোথাও। বিশাল অ্যারাইভাল লাউঞ্জের এপাশ থেকে ওপাশ অবধি বেশ কয়েকবার তাকে খুঁজতে গিয়ে পিপাসায় কাতর হয়ে পড়লাম। লাউঞ্জের মধ্যেই একটা কনভেনিয়েন্ট স্টোরে গিয়ে ছোট এক বোতল পানি হাতে নিয়ে সুন্দরী দোকানির কাছে দাম জানতে চাইলাম। বলল, এক ডলার। আমি আশ্চর্যান্বিত হয়ে হা করে বেশ কিছুক্ষণ তার মুখের দিকে চেয়ে রইলাম। বলে কি! এতটুকু এক বোতল পানির দাম এক ডলার? এক ডলারে তখন বাংলাদেশি ৩২ টাকা পাওয়া যেত। আর ৩২ টাকায় বাংলাদেশে ও রকম অনেক বোতল শরবত কেনা যেতে পারত। ছোট্ট মফস্বল শহর থেকে উঠে এসেছি আমি, জীবনে কাউকে পানি বেচতে দেখিনি। সামান্য দুই ঢোক পানি, তার দাম ৩২ টাকা! পানির বোতল হাতে নিয়ে ওই নারীর সুন্দরপনা মুখ খানার দিকে হা করে চেয়ে কথাগুলো ভাবছি, আর মনে মনে বলছি, কোথায় এলাম রে বাবা! কিন্তু এখন আর ভেবে কী হবে, এসেতো পড়েছিই, অবস্থা অনেকটা পড়েছ যবনের হাতে, খানা খেতে হবে সাথে—এমনই।

আড়ষ্টভাব কাটল সুন্দরীর কথায়, বলল ওটি কি কিনবেন আপনি? হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়ে মানিব্যাগ থেকে ২০ ডলারের একটি নোট বের করে তার হাতে দিলাম। হাসিমুখে নোটটি নিয়ে সে আমাকে ১৮ ডলার ৯৩ সেন্ট ভাঙতি ফেরত দিল। আমি অঙ্কে কাঁচা নই। বললাম তুমি ১৯ ডলার ফেরত দেবে, ৭ সেন্ট কম দিলে কেন? সে বলল আপনি বোধকরি প্রথম এসেছেন নিউইয়র্কে। এখানে পণ্য কিনলে ক্রেতাকে শতকরা সাত ভাগ হারে ট্যাক্স দিতে হয়। ট্যাক্স দিতে হয়! কথাটি ওর মুখের থেকে কেড়ে নিয়ে নাক-চোখ কুঁচকে, কপালের চামড়া ভাঁজ করে, এক বিশাল প্রশ্ন আকারে ওর দিকেই ছুড়ে দিলাম। ট্যাক্স শব্দটা তার আগে শুনেছি বটে, কিন্তু জীবনে এই প্রথম দিতে হলো! দোকানি নারী ধীরস্থির, শান্তচিত্ত ও স্মিতহাস্যে বলল, আস্তে আস্তে আপনি ট্যাক্স দেওয়াটা বুঝে যাবেন।লেখক
না ট্যাক্স দেওয়াটা আজও বুঝিনি আমরা। আমাদের বাংলাদেশিদের মননে ট্যাক্স দেওয়া ব্যাপারটি নেই। আমি শুধু বাংলাদেশে বসবাসকারী বাঙালিদের কথাই বলছি না। আমরা যারা প্রবাসী বাংলাদেশি, তারাও স্বপ্রণোদিত হয়ে, নিজস্ব উদ্যোগে, সঠিক হিসাবে ট্যাক্স পরিশোধের সংস্কৃতি অর্জন করতে পারিনি। কী প্রক্রিয়ায় ট্যাক্স কম দেওয়া যায়, বা না দিয়ে পারা যায়, সেটিই যেন আমাদের ভাবনা। একটি রাষ্ট্র তো জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বিকশিত হবে। অন্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ জীবনধারণের মৌলিক উপাদানগুলোর ব্যয়নির্বাহ রাষ্ট্রকে তো জনগণের ট্যাক্সের টাকায়ই করতে হবে। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরেও কী আমাদের দেশটি ভিক্ষার ঝুলি বা বিদেশি ঋণের টাকায় চলবে? ট্যাক্স দেব না এটি যেন আমাদের জাতীয় প্রবণতা।
সম্প্রতি বাংলাদেশের সকল সংবাদমাধ্যমের প্রধান খবর ছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের টিউশন ফিয়ের ওপরে সরকারের ধার্যকৃত ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) প্রত্যাহারের দাবিতে ছাত্রদের চলমান আন্দোলন। এ নিয়ে প্রাজ্ঞজনেরা নানা কথা বলছেন। আমি বিষয়ের বেশি গভীরে যেতে চাই না। শিক্ষার্থীরা বলছে তারা ভ্যাট দেবে না, সরকার বলছে ভ্যাট দেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বিশ্ববিদ্যালয়ওয়ালারা বলছে শিক্ষাদান কোনো পণ্য বিক্রি নয়, ওটি সেবাকার্য। সুতরাং ভ্যাট চাওয়া ঠিক নয়। আমরা কে না জানি, বাংলাদেশের অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষাকে পণ্য হিসেবেই কেনাবেচা করছে, সেবা হিসেবে নয়। দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মুনাফার পুরোটাই কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার উন্নয়নে ব্যয় করতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা কি তাই, তেমনটা হচ্ছে কি? এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। অথচ সরকারকে ট্যাক্স দেবার কথা এলেই সবাই বেজার! ট্যাক্স না দেওয়ার ব্যাপারে ছাত্র-শিক্ষক-কর্তৃপক্ষ ও এক শ্রেণির সুধীজন সকলেই এককাট্টা! এই টিউশন ফিয়ের ওপরে ভ্যাট কে দেবে বা কত দেবে তা নিয়ে তর্ক হোক, কিন্তু সরকারের কোষাগারে ট্যাক্স যাবেই না, এমন যুক্তি আত্মঘাতী।
ভিন্ন আরেকটি ঘটনা বলি। ৮-১০ বছর আগে দৈনিক ইত্তেফাকে ছোট্ট একটি খবর বেরিয়েছিল। মোটা দাগে খবরটির সারকথা এ রকম—বাংলাদেশের আয়কর অধিদপ্তর দেশের সকল আইনজীবীদের আয়কর বিভাগের সঙ্গে নিবন্ধিত হতে বলেছে। অর্থাৎ উকিল সাহেবদের প্রত্যেকের যেন একটি করে আয়কর শনাক্তকরণ নম্বর থাকে (টিআইএন) ও বছর শেষে যেন তারা তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাবটি দাখিল করেন। আর যদি কারও আয় করযোগ্য হয় তো তিনি দেশের অন্য নাগরিকদের মতো করেই প্রচলিত হারে কর পরিশোধ করবেন। এমন সার্কুলার জারি করে তৎকালীন সরকার মহা বিপাকে পড়েছিলেন। উকিল সাহেবরা এই নিবন্ধিত হওয়া ও আয়ের হিসাব দাখিলের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি সুনজরে দেখলেন না। কর দেওয়া তো অনেক দূরের কথা। সরকারের বিরুদ্ধে সেই সময়ে তারা আন্দোলনের হুমকিধমকিও দিয়েছিলেন। এমনতর মানসিকতা কী উকিল বাবুদের শোভা পায়? তারা একটি দেশের আইনের রক্ষক-চালক, তারা শিক্ষিত-সচেতন ও রোজগেরে নাগরিক, তারাও ট্যাক্স দেবেন না! বলুন দেখি তাহলে ট্যাক্স দেবে কারা? দেশ চালানোর টাকা আসবে কোথা থেকে?
এই ট্যাক্স দেওয়া নিয়ে কানাডীয়দের (মূল ধারার কানাডীয়) মানসিকতার একটা নমুনা বলে আজ শেষ করব। ২০১০ সালের জানুয়ারির প্রচণ্ড শীতের মধ্যে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে টরন্টো জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছি। সকাল নয়টার অ্যাপয়েন্টমেন্ট সেরে বেরোতে বেরোতে বেলা সাড়ে এগারোটা বাজল। তো ওই বেরোবার পথে সদর দরজা সংলগ্ন রাস্তার ওপর দেখি ১৫-২০ জনের একটি দল প্লাকার্ড হাতে পিকেটিং করছেন। রাস্তায় চলমান গাড়িগুলোর চালকদের কেউ কেউ ভেঁপু বাজিয়ে তাদের সমর্থনও জানাচ্ছেন। একজন পিকেটারের কাছে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, তোমাদের দাবি কি? বলল, বাজেটে টাকার কমতি এই অজুহাতে হাসপাতালের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সার্ভিস বন্ধ করে দেবার পাঁয়তারা চলছে। আবার মেডিকেল টেকনিশিয়ানের ছাঁটাই করারও নাকি পরিকল্পনা আছে। এগুলোরই বিরুদ্ধাচরণ করছি আমরা। তার কথার পিঠে আমি বললাম, টাকা না থাকলে কর্তৃপক্ষ সব সার্ভিস দেবেই বা কীভাবে? সে বলল, ওটি হবে না, হাসপাতালের সেবা কমানো চলবে না, প্রয়োজনে সরকারকে ট্যাক্স বাড়িয়ে টাকার সংস্থান করতে হবে। বাংলাদেশি মানসিকতা আমার, বললাম ট্যাক্স বাড়ালে প্রদেশব্যাপী জনসাধারণ আন্দোলন করবে না? সে বোধ হয় আমার কনসার্নটি ঠিক বুঝতে পারল না। বলল সংগত কারণে ট্যাক্স বাড়লে প্রতিবাদ হবে কেন? আরও বলল, কি বলছ তুমি? হাসপাতালের সেবা কমাটা তোমার জীবনমরণ সমস্যা। এ জন্য (প্রয়োজন পড়লে) তুমি বর্ধিত হারে ট্যাক্স দেবে না? বাড়তি ট্যাক্স না দিয়ে তুমি কি প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে মরতে চাও? আমি ছোট্ট করে বললাম, তাহলে বলা যায় তোমরা ট্যাক্স বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করছ! আমার এহেন জিজ্ঞাসায় সে বেশ বিরক্ত হলো। তবুও ভদ্রতা করে বলল, স্বাস্থ্যসেবা পেতে চাইলে আমাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে যাও।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)