সোমবার ● ২৯ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » দক্ষিন অঞ্চলের জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান কুয়াকাটর পরেই সোনারচর
দক্ষিন অঞ্চলের জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান কুয়াকাটর পরেই সোনারচর
পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের দক্ষিণ পাশে ও বঙ্গপ সাগরের তীর ঘেসেই সোনারচরে এর অবস্থান। সোনারচরে সোনা নেই ঠিকই কিন্তু আছে সোনার অঙ্গের বালি। সূর্যের প্রখর রোদ যখন বালির উপর পরে দূর থেকে তা দেখতে সোনার মতই। এভাবে ৩০ এর দশকে জেগে ওঠা অপার সম্ভাবনা সৌন্দর্যের দ্বীপটির নাম পাল্টে গিয়ে হয় সোনারচর। স্বাধীনতার পর শুরু হয় বনায়ন।সোনারচরে রয়েছে ৫ হাজার একরের বিশাল বনভূমি।
পটুয়াখালী বন বিভাগের তথ্য মতে, সুন্দরবনের পরেই আয়তনের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বনাঞ্চল। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সু-বিশাল সমুদ্র সৈকত।
দেখা যাবে যা কিছু : এলাকাবাসীর কাছে সোনারচর নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের আধার।
সাগরে যখন জোয়ারের জল উথলে ওঠে তখন চাদের আলোয় অন্য এক সৌন্দর্যে রূপ নেয় সোনারচর। প্রতিনিয়তই তীরে আছরে পড়ছে ছোট-বড় ঢেঁউ। ঝুরঝুরে বালি গলে পড়ছে লোনা জলে। সবুজ ঘন অরণ্যের নিবিরতা ছেয়ে আছে চারপাশে। ছোট-ছোট নৌকা চলছে বড়-বড় ঢেঁউয়ের তালে। বিভিন্ন ধরণের জাল ফেলে মাছ ধরছে জেলেরা। সাগর থেকে আসা খালগুলোতে মাকড়শার মত অসংখ্য ঠেলা জাল দিয়ে ঠেলছে শিশুরা।
সৈকতে দেখবেন যা : বনাঞ্চলের কাছাকাছি গেলে হয়ত সহজেই চোখে পরবে বুনো মোষ, হরিণ, শুকর,বানর, মেছো বাঘসহ আরো সব বন্য প্রাণীর উপর। এসব দেখতে হলে সাত সকালেই বেড়িয়ে পড়তে হবে নৌকা নিয়ে।
সৈকতে দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যাবে সূর্যাস্ত কিংবা সূর্যোদয়ের মনোরম দৃশ্য। চোখে পরবে নানা ডানা ঝাপটানো নাম না জানা পাখির দল। তাদের কিচির মিচির শব্দে সন্ধ্যার পরিবেশ টুকু উপভোগ করা যাবে নিজের মত করে। দেখতে পাবেন সমুদ্রগামী হাজারো জেলের জীবন সংগ্রাম। সমুদ্রের নীল জলরাশি আর সবুজ প্রকৃতির এমন নিরিবিলি জায়গা সহজে কোথাও পাওয়া যাবে না। দেখেশুনে প্রবল ইচ্ছা যদি জেগেই যায় তাহলে জমিও কিনতে পারেন সোনারচরের সৌন্দর্য দ্বীপে।
সোনারচরের লম্বা পথ : দেশের মানচিত্রটি সামনে ধরলে দেখা যাবে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষে অবস্থান করছে সাগরকন্যা হিসেবে খ্যাত পটুয়াখালী।সেখান থেকে দ্বীপ রাজ্য
গলাচিপা হয়ে আপনাকে জলযানে পৌঁছাতে হবে সোনারচরে। কারণ এই দীর্ঘ সময়ে সোনারচরের সাথে গলাচিপার ভাল কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। হিসাব করলে গলাচিপা শহর থেকে এই দ্বীপের দুরত্ব প্রায় ‘একশ’ কিলোমিটার। সেখানকার বদনাতলী ঘাটে দাঁড়ালে নীল জলরাশি ছাড়া কিছুই চোখে পড়বে না। কিছু দূরে গেলে আপছা নজরে পড়বে সোনারচরের সবুজ বনাঞ্চল। পথের দূরত্ব বেশী হলেও সৌন্দর্য্য পিপাসুদের মনের খোরাক নিভৃতির কারণে তিন ঘন্টার পথকে মনে হবে ৩০ মিনিট। লঞ্চযোগে প্রথমে গলাচিপা থেকে যেতে হবে চরমোন্তাজ। সেখান থেকে ট্রলারে পাড়ি দিতে হবে বুড়াগৌরাঙ্গ মোহনা। সব মিলিয়ে লাগবে সাড়ে ৬ ঘন্টা। সোনারচরে কেউ কেউ কটেজ, হোটেল, মোটেল করার চিন্তা ভাবনা করলেও এখন পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি। তাই মন চাইলে বন বিভাগের জরাজীর্ণ ডাক বাংলোটিতে থাকা যায়। আর রাত যাপনের ইচ্ছা হলে সোজা চলে আসতে হবে চরমোন্তাজে। এখানে একাধিক হোটেল, মোটেল রয়েছে। বৃষ্টির কিংবা শীতের শান্ত প্রকৃতিতে কেউ যখন কুয়াকাটায় যান তাদের অনেকেই এ সময় ঘুরে আসেন সোনারচর। আর কুয়াকাটা থেকে স্পীডবোট রিজার্ভ করে সোনারচর যাওয়ার সু-ব্যবস্থাও রয়েছে।
পর্যটকদের প্রত্যাশা এমন একটি হৃদয়কাড়া স্থান ভ্রমণ করা যা স্মৃতির ক্যানভাসে সুদীর্ঘ সময় প্রোথিত থাকে। সোনার চর ‘বাউলি বন’ তেমনই একটি নান্দনিক স্থান। প্রকৃতির দুই আনন্দের মাঝেই যেন তারা খুঁজে পায় জীবনের অনাবিল শান্তি। সোনার চর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে বাউলি বন অনন্য। একটি নতুন আকর্ষণ সংযোজন হয়েছে কুয়াকাটা পর্যটন জোনে। ‘বাউলি’ শব্দের অর্থ জনশূন্য স্থান বা খোসা-ছাড়ানো মাসকলাই। তবে অধিকাংশের মতে এ বন এলাকায় এক সময় কোন জন বসতি ছিলো না। উল্লেখযোগ্য লোকালয় না থাকায় এ বনের নাম করণ হয় বাউলি বন। বন বিভাগের জমির ওপর বেড়ে ওঠছে চির সবুজ ঝাউ বন।
ইউনিয় সমুদ্রপাড়ে এ বাউলি বনটির অবস্থান। ইতোমধ্যে এ সবুজ বন ভ্রমণ বিলাসি পর্যটকদের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে। দৃষ্টি নন্দন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে বাউলি বনের রয়েছে বিশেষ সুনাম। এ জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক-দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠেছে এ বন। এ সবুজ বনের পরশ দীর্ঘ দিনের কর্মক্লান্ত মনে এনে দেয় সজীবতা। এক বুক নির্মল বায়ু সেবনে ঘুচে যায় মানসিক অবসাদ। তিন শ্রেণির ঝাউ গাছ প্রকৃতি পূজারির কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। লম্বা ও সাড়ি সাড়ি গাছগুলো প্রকৃতির মাঝে যেন নীরব শৃঙ্খলার শিক্ষা প্রদান করে আগত পর্যটকদের। মরুদ্যান মরুপথের ক্লান্ত পথিকের কাছে সুশীতল প্রশান্তিময় স্থান।
ঠিক তেমনি দেশ-বিদেশের ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের হৃদয় জুড়ানো প্রশান্তির জায়গা হচ্ছে বাউলি বন। মাঝারি ও ছোট আকারের গাছগুলোর ফাঁকে শরীর লুকিয়ে সেলফিসহ বিভিন্ন ঢংয়ের ছবি তুলছে বেড়াতে আসা পর্যটক। চিকন কোমল সবুজ পাতাগুলো দখিনা বাতাসে ঢেউ তুলছে। আর পাতার ফাঁকে বাতাস ঢুকে এক অন্য রকম শব্দ ধ্বনি বিমোহিত করে প্রকৃতি প্রেমীদের। এ যেন বন দেবী আগত অতিথিদের বরণ করছে মোহনীয় বাঁশির সুরে। হাতে হাত রেখে দীর্ঘ দিনের লালিত কথাগুলো বলতে যেন একদম ভুল করেন না প্রিয়জন। অন্যদিকে পর্যটক শিল্পিরা হৃদয়কাড়া কথা ও সুরে মাতিয়ে রাখেন পুরো বিনোদন এলাকা।
এছাড়া এ বাউলি বনের কাছেই রয়েছে লাল কাকঁড়ার বিচরণ।বেড়াতে আসা অসংখ্য পর্যটক এ লাল কাঁকড়ার সাথে খেলায় মেতে ওঠে। আর মোবাইল ক্যামেরায় তুলে নেয় বালু চরে লাল কাঁকড়ার তুলিতে আঁকা নানা রকম আল্পনার ছবি। একদিকে বিশাল সাগরের শোঁ শোঁ শব্দ আর অপরদিকে নয়নাভিরাম ঝাউবনে পাগলা হাওয়ায় মন নিয়ে তারা হারিয়ে যায় অজান্তে। সারা দুপুর দৌড়-ঝাঁপ করার পর ক্ষুধা নিবারণের জন্য রয়েছে বাহারি সামুদ্রিক মাছের খাবারের দোকান। ইচ্ছে করলেই যে কোন পর্যটক খাবার দোকানে বসে খেতে পারেন তার পছন্দের ভাজা মাছ ও সাদা ভাত।
প্রথম দিকে এ বন এলাকায় পর্যদকদের বিনোদন সুবিধা বলতে তেমন কিছু ছিলো না। স্থানীয় বাসিন্দারা ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের দিকে বাউলি বনে পর্যটকদের যাতায়াতের পরিবেশ সৃষ্টি করেন। ২০ জানুয়ারি ২০১৬ সালে পর্যটকদের জন্য খাবার দোকান ও পর্যটক ছাউনি তৈরি করেন স্থানীয় দোকানিরা। তাদের কাছে জানা যায়, এখানে প্রতিমাসে পর্যটকদের চার-পাঁচটি বনভোজন সম্পন্ন হয়। ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত প্রতিনিয়ত পর্যটক আসে এ বাউলি বনে। সরকার ও স্থানীয়দের সহায়তায় পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সম্মত
পরিবেশ সৃষ্টি করা হলে এটাও হতে পারে সুস্থ বিনোদন কেন্দ্র এমন মত প্রকাশ করেছেন পর্যটন বিশেষজ্ঞরা।





পটুয়াখালীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার অভিযোগ যুবদল নেতা তসলিম এর বিরুদ্ধে
পটুয়াখালীতে ৪ লাখ পিস ইয়াবা সহ ১৬ জন গ্রেফতার
পটুয়াখালীতে জমি নিয়ে হামলায় আহত-২
পটুয়াখালীতে আনসার ও ভিডিপি’র জেলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত
জেলেদের জালে ধরা পড়েছে বিশাল আকৃতির ৮টি পাখি মাছ
কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে তিল চাষ
পটুয়াখালীতে দুই সন্তানের জননীকে নির্যাতনের অভিযোগ
গলাচিপায় প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ
গলাচিপায় ডাকাত সন্দেহে গ্রেপ্তার-২
কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা