

বুধবার ● ১১ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » ফটিকছড়িতে কোরবানি পশুর চামড়া খালে : পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলা
ফটিকছড়িতে কোরবানি পশুর চামড়া খালে : পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলা
ফটিকছড়ি প্রতিনিধি :: ফটিকছড়িতে জবাই করা কুরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য দাম না পেয়ে হালদা নদীর শাখা তেলপারি খালে ফেলা হয়েছে। পচনধরা এসব গলিত চামড়ায় তেলপারি খালসহ হালদা নদীর মারাত্মক দুষণের সৃষ্টি হচ্ছে।
এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফটিকছড়ি থানায় পরিবেশ আইনে মামলা রুজু করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রোসাংগিরী তেলপারই খাল সরাসরি হালদার সাথে মিলিত হওয়া একটি খাল। পশুর চামড়া ব্যবসায়ীরা উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় শত শত পশুর চামড়া এ খালে ছুড়ে ফেলা হয়েছে। এর কারণে পশুর চামড়া ও বর্জ্যে পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা এমন অবস্থা দেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে অবগত করান। পরে উনি রোসাংগিরী ইউপি চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলার পর ৫/৬ জন শ্রমিক সাড়ে ৩ ঘণ্টা কাজ করার পর প্রায় ৬ শতাধিক পশুর গলিত চামড়া মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখা হয়।
এ ব্যাপারে, হালদা বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া জানান, “পশুর চামড়া ও বর্জ্য পচে হালদার পানির সাথে মিশে যাওয়ার নদীর পানি দূষিত ও বিবর্ণ হয়ে পড়েছে। গণসচেতনতা সৃষ্ট ও প্রশাসনিক ভাবে এটির সুরাহা করা না গেলে হালদার পানিতে অক্সিজেন হ্রাস ও অ্যামোনিয়া প্রডিউস হয়ে মাছ ও জীব-বৈচিত্র্য মারা যাবে।”
তিনি আরো জানান, “হালদা নদী সংযুক্ত খাল ও ছড়া কিংবা নদীতে বর্জ্য না ফেলতে বিভিন্ন পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এর পরেও বর্জ্যের সাথে চামড়াও ছুড়ে ফেলা হয়েছে। যাহা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এদিকে পশুর পচনধরা গলিত চামড়া হালদা নদীতে পতিত হওয়ার খবর পেয়ে আজ মঙ্গলবার পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের রিসার্চ অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যদের একটি দল সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা বিষয়টির সত্যতা পান এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের রিসার্চ অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিষয়টির সত্যতা পেয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি মঙ্গলবার নিজেই বাদী হয়ে ফটিকছড়ি থানায় অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জন দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে একটি মামলা করেছেন বলে জানান।
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের এই পদক্ষেপের বিষয়ে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গতকাল থেকেই সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন এবং চট্টগ্রাম অফিসকে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, তেলপারী খালটি রাউজানে গিয়ে হালদা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে।