

মঙ্গলবার ● ৫ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » ঢাকা » গণ -অভ্যুত্থানের বিজয়কে খন্ডিত করা ফেলা হচ্ছে
গণ -অভ্যুত্থানের বিজয়কে খন্ডিত করা ফেলা হচ্ছে
আজ সকালে সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সংহতি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নানা পদক্ষেপ রাজনৈতিক দল ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিবর্তে বিভক্তি বিভাজন আরও বাড়িয়ে তুলছে।এই ধারা চলতে থাকলে গণ -অভ্যুত্থানের অর্জন বিসর্জনে পর্যবসিত হতে পারে।
তিনি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন গণ -অভ্যুত্থানের বীর শহীদদের। তিনি বলেন, এটা লজ্জার যে আহতদের অনেকেরই এখনও উপযুক্ত চিকিৎসা হয়নি।নিহত ও আহতদের অধিকাংশ পরিবারের এখনও যথাযথ পুনর্বাসন নিশ্চিত হয়নি।
তিনি বলেন, এটা দুঃখজনক যে, সরকার গণঅভ্যুত্থানের পরিবর্তনকামী জন আকাংখ্যা ধারন করতে পারেনি।নিজেদের শরিরী ভাষাতেও তারা গণ আকুতি আর জনপ্রত্যাশার প্রতিফলন দেখাতে পারেননি।
তিনি বলেন, গত একবছরে বৈষম্যের বিলোপে কোন উদ্যোগই নেয়া হয়নি।গেল এক বছরে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, কর্মহীনতা, বিনিয়োগে ভাটা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতিতে কিছুটা শৃংখলা ফিরেছে৷ কিন্তু অর্থনীতির দুর্বৃত্তায়নের গোটা ব্যবস্থা প্রায় অক্ষুণ্ণ রয়েছে।অর্থনৈতিক মাফিয়াদের সাথে সরকার ও তাদের প্রশ্রয়ে থাকা নানা অংশের একধরনের বোঝাপড়া তৈরী হয়েছে।
তিনি বলেন, এটা স্পষ্ট যে, রাজনৈতিক দল ও জনগণের সমর্থন ও সহযোগিতা সরকার প্রজ্ঞার অভাবে কাজে লাগাতে পারেনি।শুরুতেই আন্দোলনে থাকা ছাত্র তরুনদের প্রতি নিশর্ত আনুগত্য দেখাতে যেয়ে বাকিদের কাছ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে অহেতুক প্রতিদ্বন্দ্বী বানিয়ে ফেলেছেন।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাজনৈতিক দল ও জনগণের উপর নির্ভর না করে সরকারের মধ্যে থাকা সরকারগুলো নানা গুরুত্বপূর্ণ সংবেদনশীল ইস্যুতে মব সন্ত্রাসের উপর নির্ভর করতে চেয়েছেন।এর ফলাফল হয়েছে এক আধা নৈরাজ্য।এই পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণ করছে রাজনৈতিক লুম্পেন ও অর্থনৈতিক দূর্বত্তরা।একারণে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা আরও বিপদের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হয়েছ।
ক্রমে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।সরকারের কার্যকারিতা বলে তেমন কিছু থাকছেনা।
তিনি বলেন, শুরু থেকেই আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করেছি গণ- অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া রাজনৈতিক ও জনগণের মধ্যে ঐক্য ও সমঝোতা গড়ে তোলার পরিবর্তে সরকার যেন ভাগ বিভাজনকেই তাদের নীতি হিসাবে গ্রহণ করেছে।ইতিমধ্যে সরকার তাদের নিরপেক্ষ গুরুতরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এর সর্বশেষ এক নজির হচ্ছে আজ বিকালে সরকার প্রধান যে জুলাই ঘোষণা প্রদান করতে যাচ্ছেন অজ্ঞাত কারণে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলকে ঘোষণা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়েছে।সরকারের এসব পদক্ষেপ ও আচরণ তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে অপ্রয়োজনীয় ও অনাকাঙ্ক্ষিত নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। গণ অভ্যুত্থান বিজয়কে সরকার খন্ডিত করে ফেলছে।এ কারণে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আমন্ত্রিত হয়েও জুলাই ঘোষণা অনুষ্ঠানে যোগদান থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ম্যান্ডেট হচ্ছে তাদের ঘোষণা অনুযায়ী গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করে জাতীয় সংসদের নির্বাচন এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার অবসান ঘটলে বিদ্যমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিরও খানিকটা অবসান হবে বলে আশা করা যায়। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন অনতিবিলম্বে বিচার,সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট যাবতীয় সন্দেহ, বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তার অবসান ঘটবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান,আনছার আলী দুলাল, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, বাবর চৌধুরীসহ মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।