শিরোনাম:
●   পালাতক আসামি মিশন চাকমাকে ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ ●   রাঙামাটিতে ইউপিডিএফের আর্ধদিবস অবরোধ পালিত ●   জয়পুরহাটে আন্তর্জাতিক দাবা টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ ●   কুষ্টিয়া জেলা আ’লীগের সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ●   নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ কলেজের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত ●   রাউজানে বজ্রপাতে কৃষকের ২টি গরুর মৃত্যু ●   গাজীপুরে মাদক বিরোধী সেমিনার অনুষ্ঠিত ●   সন্দ্বীপে কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় চাচিকে কোপালো ●   সড়কদুর্ঘটনা এড়াতে রাবিপ্রবিতে চালক ও হেলপারদের প্রশিক্ষণ ●   রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় যুক্ত হলো নতুন গাড়ি ●   ঈশ্বরগঞ্জে বিরোধপূর্ণ জমি জোর দখলের চেষ্টা, দোকানপাট ভাংচুর ●   কাউখালীতে চরমোনাইর ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত ●   লংগদুতে পিসিজেএসএস এর গুলিতে ইউপিডিএফের দুইজন নিহত ●   রাঙ্গুনিয়াতে পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যু ●   ২০ মে রাঙামাটিতে অর্ধদিবস অবরোধের ডাক দিয়েছে ইউপিডিএফ ●   ঘোড়াঘাটে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৮ জনের কারাদণ্ড ●   প্রজন্ম ক্রীড়া সংঘের দিবারাত্রি মিনিবার ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ●   লংগদুতে সন্তু গ্রুপের সদস্যরা ইউপিডিএফ এর দুই সদস্যকে হত্যার নিন্দা ●   রাউজানে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন ●   প্রধানমন্ত্রী চান বাংলাদেশের সকল মানুষ এক ছাতার নিচে বাস করবে : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   সন্দ্বীপে কালভার্ট নয় যেন মরণ ফাঁদ ●   নির্বাচনী ডিউটিতে অর্থের বিনিময়ে অপ্রশিক্ষিত আনসার সদস্য নিয়োগের অভিযোগ ●   উচ্চশিক্ষার্থে নরওয়ে যাচ্ছে চুয়েটের ৮ শিক্ষার্থী ●   উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কমবে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ ●   আগামীতে কারা দেশ চালাবে ? …সাইফুল হক ●   পার্বত্যবাসীর কল্যাণে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   কাউখালীতে প্রান্তিক পর্যায়ে মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত ●   চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস রেগুলেশন ১৯০০ বাতিলসহ কেএনএফের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নির্মূলে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রাখার দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সংবাদ সম্মেলন ●   খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে ইউপিডিএফের ডাকা আধাবেলা অবরোধ পালিত ●   শিক্ষা বিস্তারে প্রাথমিক শিক্ষকদের গুরুত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি
রাঙামাটি, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
সোমবার ● ৬ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » পরিবেশ দূষণরোধে প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » পরিবেশ দূষণরোধে প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা
৪৯০ বার পঠিত
সোমবার ● ৬ জুন ২০১৬
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পরিবেশ দূষণরোধে প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা

---লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল :: এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘বন্য প্রাণী ও পরিবেশ, বাঁচায় প্রকৃতি বাঁচায় দেশ’৷ বিশ্ব জুড়ে বন্য প্রাণী হত্যা ও চোরাচালান বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উল্লেখিত মূল প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে৷ প্রসঙ্গত বন্য প্রাণী বলতে বাংলাদেশ ১৯৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৫৭৮ জাতের পাখি, ১২৪ জাতের সরীসৃপ, ১৯ জাতের উভয়চরকে সনাক্ত করা হয়েছে৷ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে ২৩ প্রজাতির বণ্য প্রাণীর অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন৷ এই তালিকায় আছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিতাবাঘ, হাতি, অজগর, কুমির, হরিয়াল ইত্যাদি৷ বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশে ২৭টি বন্য প্রাণী প্রজাতির অস্তিত্ব বিপন্ন৷ আরো ৩৯টি প্রজাতি হুমকির সম্মুখীন৷ গত শতাব্দীতে ২০টি প্রজাতি বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে৷ এর মধ্যে আছে ৩ ধরনের গন্ডার, বুনো মহিষ, এক ধরনের কালো হাঁস, নীল গাই, কয়েক ধরনের হরিন, রাজ শকুন, মিঠা পানির কুমির প্রভৃতি৷ মানুষের সুস্থ্যভাবে বেঁচে থাকার এবং স্বাভাবিক জীবন-যাপনের স্বার্থে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা আবশ্যক৷ বাংলাদেশের সুন্দরবনের বাঘ, হরিন, কুমির, অজগরসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী হত্যা চলছে৷ এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বাঘের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির বাজার গড়ে উঠেছে৷ এর সঙ্গে জড়িত সুন্দরবন সংলগ্ন ৪টি উপজেলার স্থানীয় কিছু শিকারী এবং বাইরে থেকে আসা চোরাচালানী চক্র৷ মূলতঃ কবিরাজি ঔষধ, আধ্যাত্মিক বিশ্বাস, গয়না এবং দর্শনীয় বস্তু হিসেবে বাঘের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি হচ্ছে৷ এইভাবে বাঘ নিধন চলতে থাকলে বাংলাদেশ থেকে চিরতরে এই প্রাণিটি হারিয়ে যাবে৷ বিশ্বে অনেক দেশ থেকে বাঘ বিলুপ্ত হয়ে গেছে৷ বাংলাদেশের সুন্দরবনে বর্তমানে মাত্র ১০৬টি বাঘ আছে বলে জানা যায়৷ আমাদের জাতীয় পশু ও বীরত্বের প্রতীক বাঘকে রক্ষা করতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন৷ তানাহলে আমাদের জাতীয় পশু বাঘ চিরতরে এদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে৷ পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের অভিমত জলবায়ু পরিবর্তনে যেসব সংকট সৃষ্টি হবে তা মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়৷ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও পরিবর্তিত পরিবেশে টিকে থাকার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি পর্যায়ের দক্ষতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে ধীরে ধীরে৷ তথ্যমতে, গত ১০০ বছরে বাংলাদেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ০.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে ০.৫ মিটার৷ বিশেষজ্ঞদের মতে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বৃদ্ধি পেলে বৃহত্তর খুলনার শতকরা ৬৫ ভাগ, বরিশালের ৯৯ ভাগ, নোয়াখালীর ৪৪ ভাগ, ফরিদপুরের ১২ ভাগ ও পুরো পটুয়াখালী এলাকা তলিয়ে যাবে৷ ফলে উদ্বাস্তু হবে দেশের প্রায় ২ কোটি মানুষ৷ বিশেষজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন ভূপৃষ্ঠের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও কৃষির পরিবর্তনের মাধ্যমে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রায় ১৫ কোটি মানুষ পরিবেশগত দুর্যোগের সম্মুখীন হবে৷ জানা যায়, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে দেশের আভ্যন্তরীণ নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি ঘটবে৷ ফলে মোট ভূখণ্ডের ২০ ভাগ ক্ষতির সম্মুখীন হবে৷ এছাড়া লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে দেশের ৩২ ভাগ ভূমিকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং সুন্দরবনের ৪ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর ভূমিসহ বনায়নকৃত বনভূমি পর্যায়ক্রমে ধ্বংস হতে থাকবে৷ পরিবেশ বিজ্ঞানীরা পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন, ১৷ উন্নত বিশ্বের পারমানবিক অস্ত্র পরীক্ষা ২৷ কলকারখানা ও গাড়ীর কালো ধোঁয়া ৩৷ শস্য ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার ৪৷ ফসলের জমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার প্রয়োগ ৫৷ কলকারখানা থেকে নিক্ষিপ্ত রাসায়নিক বর্জ্য ৬৷ অপরিকল্পিত ও যত্রতত্র তৈরী করা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৭৷ শব্দ দূষণ ৮৷ বাতাসের বিষাক্ত গ্যাস ৯৷ নদী ও জলাধার দূষণ ১০৷ যত্রতত্র বর্জ্য ও ময়লা-আবর্জনা রাখা ১১৷ বায়ু দূষণ ১২৷ পানি দূষণ ১৩৷ অপ্রতুল সুয়ারেজ ১৪৷ ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ ১৫৷ নদী ও জলাধারে পায়ু বর্জ্য ও শিল্প বর্জ্য নিক্ষেপ করা ১৬৷ ফসলের জন্যে অধিক পানি সেচ ১৭৷ অধিকহারে বৃক্ষ নিধন ও বনভূমি উজাড় ১৮৷ বন্য প্রাণী নিধন ১৯৷ পাহাড় ও টিলা কেটে ধ্বংস করা ২০৷ খাল-নালা ও জলাভূমি ভরাট করা ২১৷ ভূমিক্ষয় ২২৷ গ্রীণ হাউজ প্রভাব ২৩৷ আবহাওয়া ভূমন্ডলীর তাপ বৃদ্ধি ২৪৷ সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ২৫৷ মরুময়তা ২৬৷ ওজনস্তর ক্ষয় ২৭৷ পলিথিন ও প্লাস্টিক দ্রব্যের যথেচ্ছা ব্যবহার ২৮৷ ধূমপান, তামাক এবং তামাকজাত সামগ্রীর ব্যবহার ইত্যাদি৷ পরিবেশ বিপর্যয়ের উল্লেখিত ক্ষতিকর দিকগুলো চিহ্নিত করে সেই সাথে ব্যাপক গণসচেতনতা বাড়াতে হবে৷ এজন্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে৷ পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচতে হলে আমাদের এখনি যথাযথ পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে৷ পরিবেশ উন্নয়ন ও দূষণ রোধে গণসচেতনতা আরো বৃদ্ধি করতে হবে৷ আর এই কাজে প্রশাসন ও গণমাধ্যম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে৷ আমাদের সুস্থ্যভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন দূষণমুক্ত নিরাপদ পরিবেশ৷ পরিবেশ দূষণ ও দূষণরোধে নিজেদের সচেতনতা ও দায়িত্ববোধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ কোন একক ব্যক্তি বা সংগঠনের পক্ষে অনেক সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়৷ এজন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক সম্মিলিত প্রচেষ্টা৷ এক্ষেত্রে প্রশাসন ও গণমাধ্যমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা প্রয়োজন৷ আসুন, পরিবেশের ক্ষতিকর বিষয় সম্পর্কে আমরা নিজেরা সচেতন হই এবং অন্যদেরকে সচেতন করে তোলার মাধ্যমে আমাদের পরিবেশকে নিরাপদ এবং আগামী প্রজন্মের জন্য সুস্থ্য-সুন্দর করে গড়ে তুলি৷

লেখক  : লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল
শিক্ষক, কলাম লেখক, প্রাবন্ধিক ও সংগঠক





আর্কাইভ