

মঙ্গলবার ● ২৯ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » রাউজানে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ : আহত-৫০
রাউজানে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ : আহত-৫০
রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :: চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের ৫০ জনের বেশি আহত হওয়ার খবর মিলেছে। বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার ২৯ জুলাই বিকেলে ৪টার দিকে উপজেলার সত্তারঘাট এলাকার চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় দুই গ্রুপের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটছে। জানা যায়, দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা গোলাম আকবর খোন্দকারের গাড়ি ভাঙচুর ও ৪-৫টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আহত ও গুলিবিদ্ধরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে রাউজানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে ৪ টায় বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি ও রাউজান উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি মরহুম মহিউদ্দিন আহমেদের সুলতানপুর শহীদ বাবর বাড়িতে কবন জিয়ারতে যাচ্ছিল।
এসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়েছে।
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা ৯ আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির বিশাল সমাবেশ উপলক্ষে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে সত্তারঘাট পৌঁছাতে দু’পক্ষের মুখোমুখি হলে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। এই ঘটনায় দু’পক্ষের অনেকেই আহত হয়।
আহতরা হলেন : গোলাম আকবর খন্দকার, আনোয়ার হোসেন, নাসিম উদ্দিন চৌধুরী, হেলাল, তাসফি, সুমন, গাজী সুলতান আহত, রেওয়াজ উদ্দিন, নিজাম উদ্দিন, অনিক, মিরাজ, জনি, রিয়াদ, আজগর, শাহাদাৎ মিজা, রিবন, আমির, ইমন, সাজ্জাদ, সুমন, সাইমন, রিপন, গিয়াস উদ্দিন মুন্না, তারেক, সোহেল চৌধুরী, রবিউল, আব্দুর শুক্কুর বলে জানা গেছে।
ঘটনাস্থলে গোলাম আকবর খন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কবর জিয়ারতে যাচ্ছিলাম। জানতে পারি, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করছে। এতে আমার সন্দেহ হয়। পরে আমি বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিষয়টি জানিয়ে রাখি। তারা আমাকে নিশ্চিত করেন, কোন সমস্যা নেই, আমরা আছি। এরপর আমি আসছি। কিন্তু হাটহাজারী পার হয়ে রাউজানে প্রবেশ করতে না করতেই শুরু হয় আমাদের উপর হামলা।
এবিষয়ে মুঠোফোনে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী জানান, আমি গত এক সাপ্তাহ ধরে অসুস্থ। এই ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
জানা যায় ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি। ঘটনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র্যাবের একটি দল উপস্থিত হলে হামলায় জড়িতরা দ্রুত ঘটনাস্থল ছাড়তে থাকে।
এ বিষয়ে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারি বিএনপির উপজেলা শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব ফিরোজ আহমেদ বলেন, তাদের শান্তিপূর্ণ প্রচারণা র্যালি ও সমাবেশে খোন্দকার সমর্থকরা ফটিকছড়ি থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে হামলা করেছে। এই হামলায় তাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
অন্যদিকে বিএনপি’র গোলাম আকবর খোন্দকার গ্রুপের উপজেলা শাখার আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, তিনি হাসপাতালে আহত কর্মীদের চিকিৎসায় ব্যস্ত আছেন। পরে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন।
এদিকে রাউজানে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার পরপরই চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন গোলাম আকবর খোন্দকার। শিগগিরই চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠন করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
মঙ্গলবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, গোলাম আকবর খন্দকার কবর জিয়ারতে যাচ্ছিল। অপরপক্ষের লোকজন মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে যাওয়া সময় দু’পক্ষের মুখোমুখি হয়।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে ওসি জানান।