মঙ্গলবার ● ৩ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » আলীকদমে ১কোটি ৬২ লক্ষ টাকার রাস্তার কাজে অনিয়ম
আলীকদমে ১কোটি ৬২ লক্ষ টাকার রাস্তার কাজে অনিয়ম
হাসান মাহমুদ, আলীকদম (বান্দরবান) প্রাতিনিধি :: স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়নাধিন আলীকদম পানবাজার চৈক্ষ্যং ত্রিপুরা পাড়া-(কলার ঝিরি) রাস্তা পাকাকরণ কাজে ব্যপক অনিয়ন দেখা গেছে। বালি ফিলিং, সাব বেইজ ও ম্যাকাডম ছাড়াই রাস্তাটির কার্পেটিং সম্পন্ন করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এই অনিয়নের সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছে স্থানীয় সরকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়-এলজিইডি আলীকদম এর উপসহকারী প্রকৌশলী করুনা চন্দ্র বিশ্বাস। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে সরকারী টাকার নয় ছয় করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। রাস্তায় অনিয়মের বিষয়টি স্বীকার করে করুনা চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আমরা ঠিকাদারকে বলবো রাস্তাটি ঠিক করে দেওয়ার জন্য। অন্যথায় আমরা চুড়ান্ত বিল দেবোনা। সাংবাদিকরা রাস্তার অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে করুনা চন্দ্র বিশ্বাস সাংবাদিকদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে সাংবাদিকের সাথে এলজিইডির এই কর্মকর্তার বাক বিতন্ডার সৃষ্টি হয়।
২০১৭-২০১৮ অর্থ সালে সিএইচটি এডিবি (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) খাত থেকে আলীকদম উপজেলাধীন কলার ঝিরি জবিরাম ত্রিপুরা পাড়া হইতে ৯০০ মিটার রাস্তা পাকা করণের জন্য ১কোটি ৬২ লক্ষটাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। যার গোটাটাই তছরুপ করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মায়াধন এন্টারপ্রাইজ।
মোট ৯০০ মিটারের এই রাস্তাটিতে ৮ ইঞ্চি বালি ফিলিং, ৬ ইঞ্চি সাব বেইজ এবং ৬ ইঞ্চি ম্যাকাডম হওয়ার পর রাস্তাটি কর্পেটিং হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মায়াধন এন্টারপ্রাইজ কোন প্রকার বালি ফিলিং, সাব বেইজ ও ম্যাকাডম না করেই রাস্তাটির নির্মান কাজ সম্পন্ন করেছে। অপরদিকে রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে কালভাট ও বক্সকালভাট নির্মানের নি¤œমানের ইট, খোয়া ও অনুমোদনহীন বালি ব্যবহার করছে প্রতিষ্ঠানটি।
স্থানীয় সচেতন ব্যক্তি ও ত্রিপুরা কল্যান পরিষদের উপদেষ্ঠা আগষ্টিন ত্রিপুরা বলেন, উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন শৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি আমি উত্থাপন করেও কোন প্রতিকার পাইনি। কেউই এবিষয়টিতে কর্ণপাত করেনি। আমি উপস্থিত থেকে কয়েক গাড়ি খারাপ মানের ইট ফেরত পাঠিয়েছি। তথাপিও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এবং এলজিইডির কর্মকর্তারা কাজটি সঠিক ভাবে করে নাই। এছাড়াও বালি ফিলিং, সাব বেইজ ও ম্যাকাডম না করার কারণে রাস্তাটি খুব শীগ্রই নষ্ট হয়ে যাবে। ইতিপুর্বে বিগত বর্ষায় রাস্তাটির অধিকাংশ স্থান ধ্বসে গেছে। আমি তীব্র নিন্দা জানাই যারা এধরণের অনৈতিক উপায়ে টাকার পাহাড় গড়ে জনগণের আর্থ ধ্বংস করছে, সেই সাথে অতি দ্রুত এই কাজের সাথে সংশ্লিষ্ঠ ব্যক্তিদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট বিনীত আহবান জানাচ্ছি।
এবিষয়ে ৩নং নয়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপু তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, বর্তমান সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন কর্মকান্ড দেশকে দিন দিন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কতিপয় স্বার্থান্ধ মহল সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে বাধাগ্রস্থ করতে তৎপর। অন্যথায় এলজিইডি’র নির্ধারিত ষ্টিমেট অনুযায়ী ৮ ইঞ্চি বালি ফিলিং, ৬ ইঞ্চি সাব বেইজ এবং ৬ ইঞ্চি ম্যাকাডম হওয়ার পর রাস্তাটি কর্পেটিং হওয়ার কথা থাকলেও নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তার কোন তোয়াক্কা না করে বালি ফিলিং, সাব বেইজ এবং ম্যাকাডম ছাড়া রাস্তাটি নির্মান করে দুঃসাহসিকতা দেখিয়েছে। এসব ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ।
নির্মাতা প্রতিষ্টান মায়াধন চাকমার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। অপরদিকে স্থানীয় সরকারের বান্দরবান জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান বলেন বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।