বুধবার ● ১৪ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » মোরেলগঞ্জে ডায়রিয়ার প্রকোপ : আক্রান্ত শতাধিক
মোরেলগঞ্জে ডায়রিয়ার প্রকোপ : আক্রান্ত শতাধিক
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে শেষ চৈত্রের প্রচণ্ড দাবদাহ ও বৃষ্টির দেখা না-মেলায় বিশুদ্ধ পানির সংকটে মোরেলগঞ্জপৌরসভাসহ ১৬টি ইউনিয়নে পানিবাহিত ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সরা। ৫০শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে অন্যান্য রোগীর তুলনায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাই বেশি। ফাঁকা নেই ডায়রিয়া ওয়ার্ডের কোনো বেড। বারান্দায় ঠাই নিয়েছেন অনেক রোগী। গত ৭দিনে ডায়রিয়া আক্রান্ত ১শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। তাছাড়া, হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন অনেক রোগী। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরো বহু মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।উপজেলায়গত ৭ দিনে সরকারি হিসাবে শিশুসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে শতাধিক । বেসরকারিভাবে এ সংখ্যা আরও বেশি। সূত্রমতে, বেসরকারিভাবে ডায়রিয়ায় ১৬টি ইউনিয়নে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন শতাধিক। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৪৪ জন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি বলে জানান মোরেলগঞ্জ হাসপাতালের কর্তব্যরত জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে উপজেলার সর্বত্র বিশুদ্ধ খাবার পানির চরম সংকট চলছে। চৈত্রের খরতাপে এলাকার পুকুরসহ পানির উৎসগুলো শুকিয়ে গেছে। তাছাড়া, নলকুপের পানিও লবণাক্ত। ফলে, গ্রামের মানুষ দুষিত পানি পান করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে প্রাপ্তবয়ষ্করাই বেশি। অন্যান্য বছরের তুলনায় ডায়রিয়া রোগীর চাপ এবার কয়েকগুণ বেশি বলে হাসপাতাল সূত্র দাবি করছে।
মোরেলগঞ্জের পৌরসভার ভাইজোড়া গ্রাম থেকে আজ বুধবার ১৪ এপ্রিল রিজিয়া বেগম(৫৫) বলেন, তাদের এলাকার কোনো পুকুরে পানি নেই। দু-একটি পুকুরে পানি থাকলেও তা কোনো মানুষ খেতে পারে না। পানির রঙ নষ্ট হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে সেই পানি ফিটকিরি দিয়ে খেতে হচ্ছে। এলাকার মানুষ সেই দুষিত পানি খেয়ে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
শনিবার থেকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশু রোগীদের মধ্যে রয়েছে ভাইজোড়া গ্রামের রাব্বি (২০ মাস), উত্তর সুতালড়ী গ্রামের ইউনুছ (২৪মাস), ধানসাগর গ্রামের ফাহিম (১৯মাস, কালিকাবাড়ি গ্রামের তাইয়ব (আড়াই মাস), বিশারিঘাটা গ্রামের সুমাইয়া (১০ মাস), , গুলিশাখালী গ্রামের আরাফাত(১৬মাস), সন্ন্যাসী গ্রামের মরিয়ম (২৭ মাস), সাজিদ (৭ মাস), ধানসাগর গ্রামের আরাফাত (১৫ মাস), পিসি বারইখালী গ্রামের ওমর খলিফা( ২৫ মাস), কালিকাবাড়ি গ্রামের শর্মি (১৭ মাস), ফুলহাতা গ্রামের মনিহা ( ১১মাস), পূর্ব সরালিয়া গ্রামের জান্নাতি (৭ মাস), খাউলিয়া গ্রামের আবু কবর ( ২৩মাস), বারইখালী গ্রামের সাইম (২৩ মাস), এ রকম অর্ধশতাধিক শিশু গত ১ সপ্তাহ ধরে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চিকিৎসা নিতে আসা অভিভাবক শেখ সাথী ইসলাম, শাহিদুল ইসলামসহ একাধিক অভিভাবক ক্ষোভের সাথে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ থেকে ৫০ শর্য্যায় উন্নিত হলেও এর সুফল পাচ্ছেনা থেকে রোগীরা। সংকট রয়েছে বেডের। রোগীদের বেডগুলো পুরাতন জরার্জীণ অবস্থা। তার পরেও প্রতিনিয়ত চিকিৎসা নিতে আশা রোগীদের একটি বেডের জন্য তদবিরে দৌড়াতে হচ্ছে চিকিৎসকদের দ্বারে দ্বারে। বেড না পেয়ে বাধ্য হয়ে অনেককেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে ফ্লোরে। আরো কয়েকজনরে সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা পানি সমস্যার কারণেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হেমায়েত হোসেনজানান, অনেক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে ইমারজেন্সিতে চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছে। আজ বুধবার ১৪ এপ্রিল সকালে এমন দুইজন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বহু মানুষ ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে বলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের মাধ্যমে জানা গেছে।
মোরেলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কয়েক বছর ধরে কর্মরত নার্সিং সুপারভাইজার জানান, এবার ডায়রিয়া রোগীর চাপ অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। অন্যসব বছরে সারা মাসে দুই-চারজন্য রোগী আসতো। কিন্তু এবার হঠাৎ করে ৫দিনেই নারী-পুরুষ ও শিশু মিলে ১শজন রোগী ভর্তি হয়েছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডের বেড ফাঁকা না থাকায় রোগীদের বারান্দায় রাখা হয়েছে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে এলাকায় বিশুদ্ধ পানির ব্যাপক সংকট রয়েছে। একারণে বেশিরভাগ মানুষ বাধ্য হয়ে দুষিত পানি পান করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। পানি সমস্যা সমাধান না হলে ডায়রিয়ার প্রকোপ আরো বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
ডা. কামাল হোসেন মুফতি বলেন, ভর্তি রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালে খাবার স্যালাইন, আইভি স্যালাইন এবং অন্যান্য ওষুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।
করোনা লকডাউনে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম থাকবে স্বাভাবিক: রিয়ার এডমিরাল মোহম্মদ মুসা বন্দর চেয়ারম্যান
বাগেরহাট :: করোনা মহামারির দ্বিতীয় ধাপে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সরকার ঘোষিত লকডাউনের মধ্যেও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমসহ সকল কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। করোনার প্রার্দুভাব বৃদ্ধিতে রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম স্বাভাবিক রাখতে দেশে উৎপাদিত পণ্য ও কাঁচামাল সরবরাহ ঠিক রাখতে মোংলা বন্দরে এখন ২৪ ঘন্টা স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে।
এর আগে গত ৭ এপ্রিল থেকে প্রথম দফার লকডাউনে এক সপ্তাহে বন্দরে জাহাজ আগমন করে ২১টি, গতবছর সমসাময়িক সময়ে জাহাজ আগমন করেছে ১৮টি। কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ২৬০,৫৬৭ মেট্রিক টন, গতবছর সমসাময়িক সময়ে ছিল ২০০০০৩ মেট্রিক টন। কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩৭৩ টিইইউজ এবং ৭১১৭ মেট্রিক টন।
এছাড়াও এসময়ে বন্দর থেকে ২৭২টি গাড়ি ডেলিভারি করা হয়েছে। জাহাজ, কার্গো, গাড়ি ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর ক্ষেত্রে সকলসূচক উর্ধমূখী হওয়ার ফলে বন্দরের আয় স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) মোঃ মোস্তফা কামাল জানান, করোনাকালীন সময়ে লকডাউনের মধ্যে মোংলা বন্দরের যে সকল পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে ডাল, ছোলা, ম্যাগনেসিয়াম সালফেট, কয়লা, হোয়াইট ক্লিংকার, পাথর, গ্যাস, কিচেন সিংক, ডাটা কেবল, ফেব্রিক্সস, এলইডি লাইট, ক্যালসিয়াম কার্বোনেট,অ্যালুমিনিয়াম সীট, এমএসি স্টীল, লেনটাইলস, মেশিনারিজ, চাল ও গাড়ি।
মোংলাবন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহম্মদ মুসা বলেন, ইতোমধ্যে মোংলা বন্দরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে অফিস করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবের ফলে সর্তকতা হিসেবে মোংলা বন্দর নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে, স্বাস্থ্য বিধি মেনে দর্শনার্থী প্রবেশ (সীমিত আকারে),অফিসে প্রবেশের ক্ষেত্রে তাপমাত্রা পরীক্ষা, বন্দরের অফিস সমূহে এবং বন্দর এলাকায় “করোনার” সতর্কীকরণমূলক বিভিন্ন ধরনের ব্যানার স্থাপন, বন্দরের মসজিদ সমূহে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায় ইত্যাদি।
বন্দর চেয়ারম্যান আরো বলেন, এছাড়াও লকডাউনের মধ্যে বন্দর কার্যক্রম সচল রাখতে মোংলা বন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ, ব্যাংক, শিপিং এজেন্ট, সিএনএফ এজেন্ট, স্টিভের্ডস ও অন্যান্য বন্দর ব্যবহারকারীর সমন্বয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আমরা যেহেতু বন্দরে সকল স্টেক হোল্ডারদের সমন্বয়ে কাজ করছি ফলে করোনার মধ্যে মোংলা বন্দরে কার্যক্রম ২৪ ঘন্টা চলমান থাকবে বলে জানায় বন্দর চেয়ারম্যান।





কুষ্টিয়া সিভিল সার্জনে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক
ঝিনাইদহে দীর্ঘ ২৩ বছর পর পৈত্রিক জমি ফিরে পেলেন সাবেক প্রকৌশলী
চুয়াডাঙ্গার শিক্ষা প্রকৌশলী কমিশন বাণিজ্যে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়
কুষ্টিয়ায় হাসপাতালের পুকুর থেকে যুবতীর লাশ উদ্ধার
কুষ্টিয়ায় বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
কুষ্টিয়া চেম্বারের ‘এ’ গ্রুপের পরিচালক পদে নির্বাচন সম্পন্ন
জাকির এর উদ্যোগে কুষ্টিয়া শহর নতুন রূপে সেজেছে
কুষ্টিয়ার আদালতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে পালাল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ
ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে কুষ্টিয়ার ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
কুষ্টিয়ায় স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করল আটককৃত স্বামী