রবিবার ● ৫ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » গৃহবধু ধর্ষন মামলা থেকে বাঁচতে আসামীদের মিথ্যা মামলা
গৃহবধু ধর্ষন মামলা থেকে বাঁচতে আসামীদের মিথ্যা মামলা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :: (২১ কার্তিক ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৪৭মি.) সিরাজগঞ্জের সলঙ্গার দেওভোগ গ্রামে গৃহবধুকে ধর্ষনের চেষ্টা মামলা থেকে বাঁচতে আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসামীরা নির্যাতিত গৃহবধুর স্বামী ও স্বজনদের ফাঁসাতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা করছে। এলাকাবাসী অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার পুর্বক আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, সলঙ্গা থানার দেওভোগ উত্তরপাড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী শিউলী খাতুনকে গত ২৬ আগষ্ট বাড়িতে একা পেয়ে একই গ্রামের মোতালেব হোসেনের ছেলে মোস্তফা ও জাহিদুল ইসলাম ধর্ষন চেষ্টা করে। এ ঘটনায় থানা মামলা করতে গেলে মামলা না নেয়ায় ওই গৃহবধু ২৮ আগষ্ট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কোর্টে মোস্তফা ও জাহিদুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পরই আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ওই গৃহবধুর স্বামীকে মিথ্যা মামলা ও হত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিতে শুরু করে। এ অবস্থায় গৃহবধু শিউলী খাতুন নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে আরো একটি মামলা দায়ের করে। এরপর আসামীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় আসামীরা ২৯ অক্টোবর আদালতে হাজির হয়ে জামিনে মুক্ত হয়। জামিন পাবার পর আরো বেপোরোয়া ওঠে এবং গৃহবধু ও তার স্বজনদের ফাঁসাতে ৩০ অক্টোবর রাতে আসামী মোস্তফা, জাহিদুল ও মোতালেব নিজেদের ফার্মের প্রায় দেড়শত মুরগি বিষ প্রয়োগে মেরে ফেলে। পরের দিন সকালে গৃহবধুর স্বামী জাহিদুল ইসলাম ও তার স্বজনরা মুরগী মেরে ফেলেছে বলে প্রচারনা চালায় এবং সলঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। বৃহস্পতিবার সলঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক মোস্তাক আহমেদ ওই গ্রামে ঘটনাটির তদন্তে যান। এ সময় গ্রামবাসী ও স্বাক্ষীরা বিষয়টি সাজানো নাটক ও মিথ্যা বলে তদন্ত কর্মকর্তাকে জানান। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তার বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় আরো তথ্য জানার জন্য মোস্তাক, জাহিদুল ও মোতালবেককে থানায় আসতে বলেন। কিন্তু তারা থানায় না গিয়ে কৌশলে কোর্টে গৃহবুধুর স্বামী ও তার এক স্বজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
আসামী মোস্তফাদের দায়ের করা লিখিত অভিযোগের স্বাক্ষী জাহাঙ্গীর আলম ও আসাদুল ইসলাম বলেন, আমরা মুরগীর মারা যাবার বিষয়ে কিছুই জানি না। সকালে কান্নাকাটি দেখে ওই বাড়িতে যাই। পরে আমাদের মিথ্যা স্বাক্ষী বানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
প্রতিবেশী সালেহা খাতুন, আশরাফ আলী, আব্দুস সাত্তার, আবু বক্কর সিদ্দিক ও রমজান আলী জানান, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই মোস্তফা ও জাহিদুল নিজের র্ফামের মুরগী মেরে এ অভিযোগ করেছে। তারা আরো বলেন, ইতোপূর্বে মোস্তফা ও জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক নারী ধর্ষন ও ধর্ষন চেষ্টা মামলা রয়েছে। মামলা থেকে রক্ষা পেতেই তার এধরনের অহরহ নাটক তৈরী করেছে।
সলঙ্গা থানা যুবলীগের সদস্য ও দেওভোগ গ্রামের বাসিন্দা রিপন আহম্মেদ জানান, মোস্তফা ও জাহিদুল ইসলাম আপন দুই ভাই এক সাথেই সকল অপকর্ম করে। গ্রামে একাধিকবার তাদের নিয়ে ধর্ষন ও ধর্ষন চেষ্টা কারর অভিযোগে গ্রামের মাতব্বররা শালিশী বৈঠক করেছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ২০১২ সালে একই গ্রামের আকবর আলীর মেয়েকে ধর্ষনের চেষ্টা করে দুই ভাই। পরে আকবর আলী কোর্টে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা করলে ওই মামলায় তারা হাজত খাটে। পরে কোর্ট থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে নিজের বাড়ি ও রাস্তায় ধান ছিটিয়ে চুরির অভিযোগে আকবর আলীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। গ্রামবাসী অবিলম্বে লম্পট দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।
মিথ্যা মামলার বাদী মোতালেবের স্ত্রী জাহানারা খাতুন জানান, রাতে ফার্মে মুরগী দেখে সকলেই ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে ফার্মে গিয়ে দেখি প্রায় ৫শ মুরগী মারা গেছে। তবে কে মেরেছে, কিভাবে মেরেছে তা বলতে পারব না। যেহেতু সেরাজুল ও জাহিদুল আমাদের শত্রু তাই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
ধর্ষন চেষ্টা মামলার বাদীর স্বামী জাহিদুল ইসলাম বলেন, যে রাতে মুরগী মারার ঘটনা ঘটেছে সে রাতে আমি বাড়ীতেই ছিলাম না। আমি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালাই সিরাজগঞ্জ শহরে। রাতে সিরাজগঞ্জ শহরেই ছিলাম। মুলত আমার স্ত্রীর ধর্ষনচেষ্টা মামলা থেকে বাচঁতেই আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
সেরাজুল ইসলাম জানান, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমাদের সাথে জমিজমা নিয়ে মোতালেবের সাথে পূর্ব থেকে বিরোধ চলছিল। এ কারণে জমিজমার মাললা থেকে বাচঁতেই তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মাললা করেছে।
থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার তদন্ত অফিসার মোস্তাক আহমেদ জানান, মুরগী মরার বিষয়টি নিয়ে তদন্তের জন্য ওই এলাকায় গিয়ে গ্রামবাসীর কথা বলা হয়। পরে বাদীকে থানার আসার জন্য বলা হলেও তারা অজ্ঞাত কারনে থানায় আসেনি। পরে শুনেছি কোর্টে মামলা করেছে তারা।
কোর্ট থেকে প্রেরিত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সলঙ্গা থানা উপ-পরিদর্শক সুলতান মাহমুদ জানান, কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলাটি তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তিনি জানান, মুরগী মারা গেছে-এটা সত্য। তবে কিভাবে মারা গেছে, কারা মেরেছে-এটি সম্পুর্ন স্বাক্ষীদের উপর নির্ভর করছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।





আত্রাইয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অবৈধ ‘কচ জাল’ জব্দ
নলছিটি থেকে ডাবল মার্ডারের আসামী আয়েশা গ্রেপ্তার
ভবানীপুর-মধ্যপাড়া রেলপথের ফিসপ্লেট সহ ৬ হাজার নাটবল্টু চুরি
মাটিরাঙ্গায় সেনা অভিযানে শান্তি পরিবহন হতে মদ উদ্ধার : আটক-১
নবীগঞ্জে পিতা হাতে মেয়ে খুন
খাগড়াছড়ি আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে অস্ত্রের মুখে শিক্ষিকা ধর্ষণের অভিযোগ
ঝালকাঠিতে চেক জালিয়াতি মামলায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক গ্রেফতার
মিরসরাইয়ে ইয়াবা সহ গ্রেফতার-২
আত্রাইয়ে বিপুল পরিমাণ কারেন্ট জাল জব্দ
নারায়ণগঞ্জে সাংবাদিকতার আড়ালে সমকামিতা, মাদক, দেহব্যবসা ও ব্ল্যাকমেইলিং