সোমবার ● ৪ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » পাবনা » ভাঙ্গুড়া পৌরসভার নব-নির্বাচিত মেয়র প্রজন্মের তৃতীয় জনপ্রতিনিধি
ভাঙ্গুড়া পৌরসভার নব-নির্বাচিত মেয়র প্রজন্মের তৃতীয় জনপ্রতিনিধি

মাহ্বুব-উল-আলম,ভাঙ্গুড়া :: ভাঙ্গুড়া পৌরসভার নব-নির্বাচিত মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল সর্বাপেক্ষা তরণ জনপ্রতিনিধি৷ তার নির্বাচনী প্রচারণায় উল্লেখযোগ্য শ্লোগান ছিল প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের জনসেবা৷ গোলাম হাসনাইন রাসেল হলেন এই প্রজন্মেরই তৃতীয় পুরুষ৷ এ প্রজন্মের প্রথম পুরুষ ছিলেন চলনবিলের খ্যাতিমান সমাজ সেবক,দয়ালু ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব হাজী মোঃ মহসীন আলী৷ ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন৷
মুসলিমলীগ থেকে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার পাশাপাশি হাজী মোঃ মহসীন আলীর জনসেবা ছিল মহান লক্ষ্য৷ দুই যুগের বেশি সময় তিনি ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট/চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷ তখন তিনি ভাঙ্গুড়ায় একটি সরকারি হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেন কিন্তু ইউনিয়ন পর্যায়ে এমন সেবামূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপনে সরকারের অপারগতার কারনে তিনি ব্যথিত হন৷ অতপর তিনি কলেজ স্থাপনে উদ্যোগী হন৷ কতিপয় দানশীল ব্যক্তির সহায়তায় ১৯৭০ সালে ভাঙ্গুড়ায় বড়াল নদীর পাড়ে তিনি গড়ে তোলেন হাজী জামাল উদ্দিন কলেজ৷ এটি এ অঞ্চলের এখন অন্যতম বড় বিদ্যাপিঠ৷
ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন হাইস্কুল ও শরত্নগর ফাজিল মাদ্রাসার মানোন্নয়ন এবং জরিনা-রহিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকাই ছিল মুখ্য৷ তখন ভাঙ্গুড়া ছিল ফরিদপুর থানার একটি ইউনিয়ন মাত্র৷ তিনি স্পষ্টতঃ উপলব্দি করেছিলেন একটি প্রশাসনিক ইউনিট ছাড়া ভাঙ্গুড়ার প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়৷ তাই তার প্রথম স্বপ্ন ছিল ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন থানায় রূপানত্মর করা৷ স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে তিনি ভাঙ্গুড়ায় থানা প্রতিষ্ঠার আবেদন জানান৷ বিদেশের মাটি ভারতে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলনকারি বীর মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রদূত এম.হোসেন আলীর সুপারিশে বঙ্গবন্ধু ভাঙ্গুড়ায় থানা প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করতে তত্কালিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে নির্দশ দেন৷ বঙ্গবন্ধুর শাহাদত্ বরণের পর বিষয়টি দীর্ঘদিন ফাইলবন্দি থাকে৷ পরবর্তিতে রাষ্ট্রপতি বিচাপতি আব্দুস সাত্তার এর নির্বাহী আদেশে ১৯৮১ সালে ভাঙ্গুড়ায় পুলিশ স্টেশনের উদ্বোধন করা হয়৷
১৯৮৩ সালে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এটাকে মানউন্নীত থানা ঘোষনা করেন৷ এসব ঘটনার প্রকৃত কুশিলব ছিলেন হাজী মোঃ মহসীন আলী৷ সব শেষে বৃদ্ধ বয়সে নারী শিক্ষার উন্নয়নে তিনি গড়ে তোলেন হাজী গয়েজ উদ্দিন মহিলা মাদ্রাসা ও ভাঙ্গুড়া মহিলা কলেজ৷ এসব ক্ষেত্রে তিনি অজস্র সম্পদ দান ও অর্থ ব্যয় করলেও তার নিজের নামে তিনি কিছুই করেননি৷ প্রকৃত পক্ষে তিনি নাম কিনতে চাননি বরং এখানকার প্রতিটি মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হতে চেয়েছিলেন৷ হাজী মোঃ মহসীন ছিলেন একাধারে সমাজ সেবক,শিক্ষানুরাগী,জনদরদী জনপ্রতিনিধি ও দানশীল ব্যক্তি৷
হাজী মোঃ মহসীন আলীর একমাত্র পুত্র বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ মোঃ মকবুল হোসেন ঐ প্রজন্মের দ্বিতীয় পুরুষ৷ তখন ১৯৮২ পর্যন্ত তিনি ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন৷ উপজেলা প্রতিষ্ঠার পর রাষ্ট্রপতি এরশাদ ঘোষনা করেন উপজেলা পরিষদের নির্বাচনী তফশীল৷ জনতার দাবি ওঠে হাজী সাহেবের কাছে তার পুত্রকে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী করতে৷ প্রজন্মের টানে নব-গঠিত ভাঙ্গুড়া উপজেলার দায়িত্ব নিতে পর পর দুইবার প্রার্থী হয়ে মকবুল হোসেন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন৷ এ সময় শ্রমিক নেতা ও পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ওয়াজি উদ্দিন খান এমপির সংষ্পর্শে ভাঙ্গুড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের গুরু দায়িত্ব নেন তিনি৷ স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন ব্যক্তিতে পরিণত হন৷ তার ললাটে লেগে যায় জাতীয় সংসদের স্বর্ণালী তিলক৷ তিনি পর পর দুইবার নির্বাচিত হন পাবনা-৩ এলাকার এমপি৷ সত্,কর্মঠ ও নিষ্ঠাবান রাজনীতিক হওয়ায় তিনি সম্মানীত হন (প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা সম্পন্ন) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কীত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে৷
সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনের জ্যেষ্ঠ পুত্র গোলাম হাসনাইন রাসেল প্রজন্মের তৃতীয় পুরুষ হিসেবে আওয়ামীলীগের মূল রাজনীতিতে আসীন হন ৷ ২০১৫ সালে দলের কাউন্সিলে তিনি ভাঙ্গুড়া পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন৷ হাজী মোঃ মহসীন আলীর ধারাবাহিকতায় আওয়ামী রাজনীতিতে আবির্ভাব ঘটে গোলাম হাসনাইন রাসেলের৷ এসময় স্থানীয় রাজনীতিতে যথেষ্ট আস্থাহীনতার বাতাস বইছিল৷ পৌরবাসী খোঁজ করেন মাদকমুক্ত,ভদ্র ও বিনয়ী একজন রাজনীতিক৷ শুরু হয় প্রজন্মের অনুন্ধান৷ একজোট হন জনতা,আবারো দাবি তোলেন হাজী মহসীন আলীর দ্রোহিত্রকে পৌর পিতার দায়িত্ব নিতে৷ এর মধ্যে ঘোষনা হয় ভাঙ্গুড়া পৌরসভা নির্বাচনের তফশীল৷ চাপের মুখে অলহাজ মকবুল হোসেন পুত্রকে মেয়র নির্বাচনের অনুমতি দেন৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাঙ্গুড়া পৌরসভায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতার জন্য গোলাম হাসনাইন রাসেলকে দলের টিকিট দেন এবং হাতে তুলে দেন জাতীয় প্রতীক নৌকা৷ স্বতঃস্ফুর্ত ও উত্সমুখর নির্বাচনের মাধ্যমে পৌরবাসী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী ও প্রজন্মের তৃতীয় পুরুষকে ভোটাররা জয়যুক্ত করেন৷ তাই গোলাম হাসনাইনের কাছে পৌরবাসীর প্রত্যাশা অনেক বেশি৷ পৌর পিতা হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে নাগরিকদের সে আশা তিনি পুরণ করবেন বলে সকলের বিশ্বাস৷ এই বিশ্বাসের যেন ফাটল না ধরে তার জন্য নব-নির্বাচিত মেয়রকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে৷ ভাঙ্গুড়া পৌরসভাকে মাদকমুক্ত সুন্দর,সুশৃংখল,পরিচ্ছন্ন ও সৌরলাকিত মডেল নগর হিসেবে গড়ে তুলতে হবে৷ এছাড়া প্রজন্মের প্রতি এখানকার মানুষের মনে যে ভালোবাসার নীড় তৈরী হয়েছে তা অটুট রাখতে হবে - এ কামনা রয়েছে পৌরসভার সকল অধিবাসীর মনে প্রাণে৷ আর এসব কাজ যখন তিনি সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন তখন সেটাই হবে নতুন প্রজন্মের কাছে সবচেয়ে বড় উপহার৷





সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যু, জাবিতে পড়তে যাওয়া হলোনা নোমানের
এসবি রেলওয়ে কলোনী স্কুল এন্ড কলেজ ফান্ডের টাকা আত্মসাত
ঘুরে এলাম প্রকৃতির লীলাভুমি নয়নাভিরাম চলনবিল
এফবিসিসিআইয়ের পক্ষে অক্সি জেনারেটর প্রদান
সুজানগর পৌর নির্বাচনের স্থগিতাদেশ খারিজ হওয়ায় ৩০ জানুয়ারী ভোট
চাটমোহরে পুকুর থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার
চাটমোহরে মামাতো ভাইয়ের হাতে দুই বছরের শিশু খুন
পাবনায় কৃষক কৃষাণীর মাঠ দিবস পালন
চাটমোহরে মোটর সাইকেল-ট্রলি মুখোমুখী সংঘর্ষে নিহত -১
বানিজ্যিক ভিত্তিতে মিশ্রফল চাষ করছেন চাটমোহরের বকুল চেয়ারম্যান