শিরোনাম:
●   নবীগঞ্জে নির্বাচন সংক্রান্ত প্রেস ব্রিফিং প্যারেড ●   খাগড়াছড়িতে নির্বাচনি ব্রিফিং প্যারেড ●   পালাতক আসামি মিশন চাকমাকে ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ ●   রাঙামাটিতে ইউপিডিএফের আর্ধদিবস অবরোধ পালিত ●   জয়পুরহাটে আন্তর্জাতিক দাবা টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ ●   কুষ্টিয়া জেলা আ’লীগের সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ●   নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ কলেজের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত ●   রাউজানে বজ্রপাতে কৃষকের ২টি গরুর মৃত্যু ●   গাজীপুরে মাদক বিরোধী সেমিনার অনুষ্ঠিত ●   সন্দ্বীপে কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় চাচিকে কোপালো ●   সড়কদুর্ঘটনা এড়াতে রাবিপ্রবিতে চালক ও হেলপারদের প্রশিক্ষণ ●   রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় যুক্ত হলো নতুন গাড়ি ●   ঈশ্বরগঞ্জে বিরোধপূর্ণ জমি জোর দখলের চেষ্টা, দোকানপাট ভাংচুর ●   কাউখালীতে চরমোনাইর ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত ●   লংগদুতে পিসিজেএসএস এর গুলিতে ইউপিডিএফের দুইজন নিহত ●   রাঙ্গুনিয়াতে পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যু ●   ২০ মে রাঙামাটিতে অর্ধদিবস অবরোধের ডাক দিয়েছে ইউপিডিএফ ●   ঘোড়াঘাটে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৮ জনের কারাদণ্ড ●   প্রজন্ম ক্রীড়া সংঘের দিবারাত্রি মিনিবার ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ●   লংগদুতে সন্তু গ্রুপের সদস্যরা ইউপিডিএফ এর দুই সদস্যকে হত্যার নিন্দা ●   রাউজানে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন ●   প্রধানমন্ত্রী চান বাংলাদেশের সকল মানুষ এক ছাতার নিচে বাস করবে : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   সন্দ্বীপে কালভার্ট নয় যেন মরণ ফাঁদ ●   নির্বাচনী ডিউটিতে অর্থের বিনিময়ে অপ্রশিক্ষিত আনসার সদস্য নিয়োগের অভিযোগ ●   উচ্চশিক্ষার্থে নরওয়ে যাচ্ছে চুয়েটের ৮ শিক্ষার্থী ●   উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কমবে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ ●   আগামীতে কারা দেশ চালাবে ? …সাইফুল হক ●   পার্বত্যবাসীর কল্যাণে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   কাউখালীতে প্রান্তিক পর্যায়ে মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত ●   চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস রেগুলেশন ১৯০০ বাতিলসহ কেএনএফের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নির্মূলে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রাখার দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সংবাদ সম্মেলন
রাঙামাটি, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
শুক্রবার ● ২৬ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » অপসংস্কৃতির বিষাক্ত ছোবলে যুবসমাজের নৈতিকতার অবক্ষয়
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » অপসংস্কৃতির বিষাক্ত ছোবলে যুবসমাজের নৈতিকতার অবক্ষয়
৬৪৭ বার পঠিত
শুক্রবার ● ২৬ এপ্রিল ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

অপসংস্কৃতির বিষাক্ত ছোবলে যুবসমাজের নৈতিকতার অবক্ষয়

---নুর মোহাম্মদ রানা :: অপসংস্কৃতির কৃষ্ণ-কালো ধূম্রকুঞ্জ যে হারে বাংলাদেশের আকাশ-বাতাসকে গ্রাস করে চলেছে তা এক কথায় বর্ণনাতীত। অপসংস্কৃতির অপ্রতিহত বিস্তারের সাথে পাল্লা দিয়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবন থেকে অপসৃত হচ্ছে ধর্ম ও সমাজে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে লালিত মূল্যবোধভিত্তিক ধ্যান-ধারণা, নৈতিকতা, আদর্শ ইত্যাদি। আর সে শূন্যস্থান পূরণ করছে নিছক জৈবিক পরিতুষ্টির পাশবিক চিন্তাধারা। যার সুস্পষ্ট প্রভাব পড়ছে সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরে। ধর্মহীনতা, নৈতিকতাবিচ্ছিন্ন সংশয়বাদিতা, উন্নাসিকতার সুতীব্র প্লাবনে শিকড়বিহীন কচুরীপানার মত অস্থিরচিত্ত মানুষ ধাবিত হচ্ছে এক অনিশ্চিত অজানা গন্তব্যের পানে।
জীবনের সাথে সংস্কৃতির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। সমাজে বসবাসরত মানুষের প্রত্যেকটি কার্যকলাপই তাদের সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান। কোনো সমাজই তাদের সংস্কৃতিকে অস্বীকার করতে পারে না। মূলত সংস্কৃতি এবং জীবন একে অপরের পরিপূরক।
সংস্কৃতি সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে মোতাহের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, “সংস্কৃতি মানে সুন্দরভাবে, বিচিত্রভাবে, মহৎভাবে বাঁচা” অর্থাৎ বেঁচে থাকার জন্য মানুষের নৈমিত্তিক প্রচেষ্টাই সংস্কৃতি, আর অপসংস্কৃতি হলো এর বিপরীত। আত্মার মৃত্যু ঘটিয়ে অসুন্দরের উপাসনা করে, অকল্যাণের হাত ধরে বেঁচে থাকাই অপসংস্কৃতি। অপসংস্কৃতি মানুষকে কলুষিত করে এবং জীবনের সৌন্দর্যের বিকাশকে স্তব্ধ করে দিয়ে শ্রীহীনতার দিকে ঠেলে দেয়।
আজকের তরুণেরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। কিন্তু অপসংস্কৃতি তাদের জীবনকে ধ্বংসের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। যুবসমাজ শুদ্ধ সংস্কৃতি সাধনার পথ থেকে বিচ্যুত। তারা অসুন্দর ও কলুষিত সংস্কৃতি তথা অপসংস্কৃতির শিকার। যুবসমাজের একটা বড় অংশকে সুকৌশলে করা হয়েছে আদর্শভ্রষ্ট। সুন্দর জীবনের পথ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্ধকার জীবনের পথে। তারা তলিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার জগতে, অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে মাদকের নেশায়। বিপুল সংখ্যক তরুণের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে অস্ত্র, জড়িয়ে ফেলা হয়েছে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডে। তারা লিপ্ত হচ্ছে অসামাজিক কাজে। হিংসাশ্রয়ী-অশ্লীল চলচ্চিত্র, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পরিপন্থী বিকৃত রুচির নাচ-গান, রুচিগর্হিত পোশাক-পরিচ্ছদের প্রতি তাদেরকে আকৃষ্ট ও অনুরক্ত করার গভীর নীলনকশা ধীরে ধীরে কার্যকর হচ্ছে।
পোশাক-পরিচ্ছদে আমাদের নিজস্ব একটি ঐতিহ্য ছিল। বিদেশি সংস্কৃতির ব্যাপক প্রসার ও চর্চা আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক-পরিচ্ছদে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। জিন্স, টি-শার্ট, স্কার্ট এখন আমাদের ছেলেমেয়েদের খুবই প্রিয়। শাড়ি-লুঙ্গি কিংবা পাজমা-পাঞ্জাবি এখন আর তাদের কাছে তেমন গুরুত্ব পায় না। আমাদের মেয়েদের অনেকেই স্বল্পবসনকে আধুনিক জীবনের নমুনা বলে ভুল করে। পশ্চিমা সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণের ফলে তারা একদিকে যেমন আধুনিক জীবনের ধারাকে ধরতে পারে না তেমনি দেশীয় সংস্কৃতির সাথেও নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে না। ফলে তারা একটি দোদুল্যমান অবস্থায় পতিত হয় অবশেষে জীবন হয়ে পড়ে লক্ষ্যহীন ও হতাশাপূর্ণ।
বিদেশি সংস্কৃতি আমাদের জাতীয় জীবনে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিককে চরমভাবে আঘাত করছে, সেটি হলো আমাদের ধর্মীয় জীবনবোধ ও নৈতিক শিক্ষা। পশ্চিমা ভোগবাদী সংস্কৃতির ব্যাপক প্রচারের ফলে আমাদের যুবসমাজে ধর্মনিষ্ঠা এবং নৈতিকতাবোধ ক্রমহ্রাসমান। নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা আর অ্যালকোহলিক সংস্কৃতি আমাদের সংস্কৃতির পরিপন্থী। সুখী সুন্দর ও শান্তিময় জীবনের জন্য এসব কিছুর চেয়ে ধর্মীয় জীবনের নীতি অনুসরণ খুবই জরুরি। বিদেশি সংস্কৃতির আমাদের সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ে প্রধান অনুুঘটক হিসেবে কাজ করছে।
উনিশ শতকের বাংলায় পাশ্চাত্য সংস্কৃতি উদ্দাম ভোগ-বিলাসিতা ও উচ্ছৃংখলতার জন্ম দেয়। নতুন সংস্কৃতির উন্মত্ততায় সে সময়ে যে অনাচার ও উচ্ছৃংখলতা দেখা দিয়েছিল সেগুলোকে বর্জন করে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সদর্থক ইতিবাচক দিকগুলো গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছিল সমাজ-সংস্কারক বাঙালি মনীষীরা। বর্তমানে বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার অবাধ সুযোগে আমাদের জাতীয় জীবনে অপসংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। পাশ্চাত্য যুবসমাজ যে মাদক নেশা ও অবক্ষয়ে আক্রান্ত, আকাশ-সংস্কৃতির মাধ্যমে তা ক্রমবিস্তার লাভ করছে আমাদের তরুণ সমাজে। অসংযত পাশ্চাত্য মানসিকতা, উগ্র বিদেশিয়ানা ও ভোগপ্রবণ স্থূলতা আজ আমাদের সংস্কৃতির মূলধারাকে গ্রাস করতে বসেছে। বৈদেশিক সংস্কৃতির নির্বিকার গ্রহণ আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির জন্য এখন হুমকিস্বরূপ।
বাংলাদেশে জাতীয় জীবনে অপসংস্কৃতির প্রবল প্রতাপ লক্ষণীয়। অসুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ব্যক্তিগত লোভ-লালসা চরিতার্থ করার এক উদ্ভট জোয়ার চলছে এ দেশে। বিশেষত এ দেশের তরুণ সমাজ আজ দিকভ্রান্ত, দিশেহারা। তাদের বেঁচে থাকার সাথে নীতির সম্পর্ক নেই। এই বোধ থেকেই অপসংস্কৃতির জন্ম হয়। সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার প্রচেষ্টা এখন হাস্যকর দুর্নীতি এখন সামাজিকভাবে স্বীকৃত। আর এখন অনৈতিকতার সূত্রপাত হচ্ছে মানুষের অসৎ জীবিকার্জনের হাত ধরে। সৎভাবে যে জীবিকার্জন না করে তার পক্ষে অপসংস্কৃতির দাসত্ব ছাড়া উপায় নেই। প্রতিদিনের সংবাদপত্র আমাদের সামনে যে চালচিত্র তুলে ধরে, তাতে অপসংস্কৃতির আগ্রাসন অতি স্পষ্ট। অশ্লীলতা, নোংরামি, খুন, ছিনতাই, প্রতারণা সবই অপসংস্কৃতির ভিন্ন ভিন্ন নাম। আমাদের সমাজ আজ এসবেরই দাসত্ব করে চলেছে।
অপসংস্কৃতির আগ্রাসন আমাদের গোটা জাতিকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেধে ফেলেছে। ভারতীয় সিরিয়াল পারিবারিক সম্প্রীতি ও শান্তির পরিবেশে নাটকের মধুমাখা ভাষায় চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের বিষ মিশাচ্ছে। আকাশ সংস্কৃতির যন্ত্রণায় এমনিতে পুরো জাতি অতিষ্ঠিত। তার সাথে পশ্চিমা সমাজের অশ্লীলতা মোকাবেলা করা তো আরো কঠিন হয়ে গেছে। বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক, উগ্র পোশাক ও জীবনাচারের প্রচলন সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে।
ভারতীয় টিভি সিরিয়াল আর পশ্চিমা সংস্কৃতির অন্ধ অনুসরণ নেশার মতো। নেশা যেমন একটি ব্যক্তি, পরিবার,সমাজ বা রাষ্ট্রকে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করে। ঠিক তেমনি সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ও একটি দেশকে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দেয়। এটা অনুধাবন করার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদের পারিপার্শি¦ক ঘটনাগুলো তাই প্রমাণ করে। সিরিয়াল নাটকগুলো আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও পরিবার প্রথাকে ভেঙ্গে দিচ্ছে। এমনকি খুন-খারাবি বা সংসার ভাঙার ঘটনার সংবাদ পত্রিকার পাতায় মুদ্রিত হচ্ছে। আমাদের সমাজে পশ্চিমা সংস্কৃতির ভোগবাদ, পোশাক-পরিচ্ছদ, অশ্লীলতা আর বেলেল্লাপনার মহোৎসব শুরু হয়েছে। যে কারণে বাড়ছে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, বিবাহ-বিচ্ছেদ, অনৈতিক জীবনযাপনের অন্ধকারময়তার বিকৃত অনাচার। সমাজের মধ্যে এইসব নেতিবাচক পরিবর্তন বাতাসের গতিকেও হার মানায়। একশ্রেণির খুচরা অন্ধ বুদ্ধিজীবী রয়েছেন যারা সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলতে নারাজ। মৌলবাদের জুজুর ভয় দেখিয়ে তারা ভিনদেশীয় সংস্কৃতির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করলেও তাদের বিরুদ্ধে কেউ টু’শব্দ পর্যন্ত করেনি। হিন্দি সিরিয়ালে কী দেখানো হয়? ওই সব সিরিয়ালে যা দেখানো হয় তা সমাজ বা রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর নয়! কেননা হিন্দি সিরিয়ালের মূল দর্শক হচ্ছে দেশের গৃহিণী শ্রেণি ও তাদের সন্তানরা। প্রতিটি সিরিয়ালে অবৈধ প্রেমকে উৎসাহ জুগিয়ে থাকে।
ধ্বংসকে থামাতে না পারলে ধ্বংসের কবলে সকলেই নিপতিত হবে এটাই তো স্বাভাবিক। তরুণ প্রজন্ম এমনিতেই আবেগপ্রবণ। তাদেরকে উস্কে দেওয়া অনেক সহজ। তরুণ বয়সে অনেকে দিবা-রাত্রি স্বপ্নে বিভোর থাকে। সে জন্যে গভীর বিবেচনাবোধ তৈরি হয় না। জীবন ও যৌবনকে তারা উপভোগের মধ্যে আচ্ছাদিত করে রাখে। এমন সময় যদি নৈতিক বল বাড়ানোর বদলে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দিকে তাদেরকে উস্কে দেওয়া হয়, তাহলে ধ্বংসতো অনিবার্য। এ বিষয়টি অভিভাবকদের অনুধাবন করা প্রয়োজন।
জাতীয় সংস্কৃতির এমন চরম ক্রান্তিকালে যুবসমাজের সিংহভাগ যখন এক অনিশ্চিত গন্তব্যহীন মোহগ্রস্ত জীবনের পথ বেছে নিচ্ছে, এই বস্তাপচা সংস্কৃতির প্রধানতম শিকার হয়ে যখন তারা নিশ্চিত ধ্বংসের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তখন এই যুবসমাজেরই ধর্মীয় বিচারবুদ্ধি দ্বারা তাড়িত অপর একটি অংশ যারা শত বাধা মোকাবিলা করে সামাজিক দায়বদ্ধতার শিক্ষাকে নিজেদের মাঝে সুচারুরূপে বপন করতে সক্ষম হয়েছে, তাদের এগিয়ে আসতে হবে ত্রাতার ভূমিকায়। আসমান-জমিনের সৃষ্টিরাজির মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাববুল আলামীন মনোনীত একমাত্র ধর্ম ইসলামের সুমহান বৈপ্লবিক চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জাতিকে দেখাতে হবে চিরন্তন সত্য ও সুন্দরের বাহক এক সংস্কৃতির সত্যালোক শোভিত রাজপথ। যে সংস্কৃতির তীব্র আলোকচ্ছটায় বিশ্বজাহান আলোকিত হয়ে উঠেছিল মাত্র কয়েক বছরে। যে সংস্কৃতি শেখানোর জন্য কোন রূপকথার গল্প-উপন্যাস, নাটক-সিনেমার প্রয়োজন হয়নি, প্রয়োজন হয়নি তথাকথিত কোন মননবিদ্যার, ললিতকলার। মহান প্রভুর বিস্তৃীর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাজ্যের এক-একজন খলিফা হিসাবে তাদের মাঝে যে সুস্থ চেতনা, রুচিবোধ, আত্মমর্যাদা, ভ্রাতৃত্ববোধের উন্মেষ ঘটেছিল তা ছিল খুবই বাস্তবতাপূর্ণ ও প্রায়োগিক। ভাবের রাজ্যে বিচরণ করে অর্থহীন দিবাস্বপ্ন দেখার কোন জায়গা সেখানে ছিল না। ছিল না কোন বিলাস বাগাড়ম্বর বা নিরর্থক প্রগলভতা। যা ঘটেছিল তা ছিল অতি সরল, স্বাভাবিক ও জটিলতামুক্ত। সত্য, কল্যাণ ও ন্যায়ের চর্চা এবং তার স্বতঃস্ফূর্ত বাস্তবায়নই ছিল সে সংস্কৃতির একমাত্র লক্ষ্য। ফলে সেই মহান সংস্কৃতির ছায়াতলে বেড়ে উঠেছিলেন এমনসব মহৎ পুরুষ যারা আজও পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসে চিরস্মরণীয়-বরণীয় হয়ে রয়েছেন। যে সমাজ, যে রাষ্ট্র এ সংস্কৃতির ছায়াতলে প্রতিপালিত হয়ে তাবৎ বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়েছিল তা আজও পর্যন্ত বিশ্ববাসীর জন্য মডেল হয়ে রয়েছে।
পৃথিবীর বাসিন্দা হয়ে বিশ্ব সাম্রাজ্যে বাইরে যাওয়ার কোনো উপায় আমাদের নেই। তাই এর মধ্যে থেকে নিজেদের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আর স্মারককে বাঁচিয়ে রেখে চলতে হবে। এই ব্যাপারে সকল শ্রেণির মানুষকে সচেতন হতে হবে। নিষিদ্ধ করতে হবে অপসংস্কৃতির বেসাতি। দেশীয় সংস্কৃতি লালন করতে হবে, আর মোকাবিলায় টিকে তাকার জন্য দেশীয় সংস্কৃতিকে করে তুলতে হবে যুগোপযোগী। সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে যুবসমাজকে অপসংস্কৃতির করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করা ছাড়া কোনো বিকল্প নাই। যুবশক্তির পুনরুজ্জীবনে চাই শুভ সুন্দর জীবনের নবতর দীক্ষা।

লেখক: প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট ও গণমাধ্যম কর্মী।





আর্কাইভ