শনিবার ● ২৭ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » বাকৃবি গবেষকের দেশীয় প্রজাতির কৈ মাছের পোনা উৎপাদনে সফলতা
বাকৃবি গবেষকের দেশীয় প্রজাতির কৈ মাছের পোনা উৎপাদনে সফলতা
ময়মনসিংহ অফিস :: (১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.৩০মি.) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এ.কে শাকুর আহম্মদ দেশীয় প্রজাতির গুরুত্বপূর্ণ কৈ মাছটি বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে নিজে গবেষণা করে খাঁচায় দেশীয় প্রজাতির কৈ(Anabas testudineus)মাছের পোনা উৎপাদনে সফলতা লাভ করছেন।
তিনি ইতিমধ্যে পুকুরে খাঁচায় নিবিড় গবেষণায় মা মাছ উৎপাদন ও কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে গুণগতমানের পোনা উৎপাদনে আশানুরূপ ফলও পেয়েছেন। তঁর এ সফলতায় দেশি কৈ মাছের পোনা সহজে প্রাপ্তি যেমন সুগম হয়েছে ঠিক তেমনি বিপণনের মাধ্যমে এই মাছের জীববৈচিত্র সংরক্ষিত হবে।
তিনি পুকুরে খাঁচায় নিবিড় গবেষণার মাধ্যমে মা মাছ ও কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে গুনগতমানের পোনা উৎপাদন করছেন। খাঁচার মাধ্যমে মা দেশী কৈ মাছ উৎপাদন কৌশল এটিই প্রথম।
গবেষক ড. শাকুর আহম্মদ বলেন, দেশী কৈ মাছ প্রজনন মৌসুমে আকাশ যখন মেঘাচ্ছন্ন ও বৃষ্টি থাকে তখন পুকুর থেকে কানকোর সাহায্যে হামাগুরি দিয়ে অন্যত্র চলে যায়। এমনকি পুকুরে চারদিকে জাল দিয়ে বেড়া দিলেও সেখান থেকে চলে যায়।
এই সমস্যা রোধকল্পে পুকুরে খাঁচা পদ্ধতির (Cage culture system) মাধ্যমে চাষ করে গুনগত মা মাছ উৎপাদনে সফলতা পেয়েছি। পরবর্তীতে সেখান থেকে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তির থার্মোষ্ট্যাটের সাহায্যে ভ্রুনীয় অবস্থায় বিভিন্ন তাপমাত্রায় তাপ প্রয়োগ করে পোনা তৈরি করা হয়। সেখান থেকে অধিক ডিম ফোটার হারের ওপর নির্ভর করে উন্নত গুনগতমানের পোনা বাছাই করা হয়।
তিনি আরোও বলেন, বাছাইকৃত পোনা (Larvae) গুলোকে এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া বিশেষ করে Bacillus এর সাহায্যে নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অ্যাকুরিয়াম, জগ এবং পুকুরে হাপা সিস্টেমে চাষ করা হয়।
এক্ষেত্রে মৃত্যুর হার অনেক কম এবং উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। এই ব্যাকটেরিয়া গুলো পানির গুনাগুন বজায় রাখে ও পোনা মাছের Immune system বৃদ্ধি করে থাকে।
এছাড়া মাছের অন্ত্রে গিয়ে তাদের খাবার পরিপাক ও শোষণ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ফলে তারা বেশি পরিমান খেতে পারে এবং তাদের বৃদ্ধি বেশি হয়।
বাংলাদেশে মাছের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে দেশী কৈ মাছকে সংরক্ষণ ও বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে। যা দেশের আমিষের চাহিদা পূরণ এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
উচ্চ গুণসম্পন্ন অধিক সংখ্যক দেশী কৈ মাছের পোনা উৎপাদন করে যদি উন্মুক্ত জলাশয়ে বিশেষ করে হাওর এলাকায় ছাড়া যায় তাহলে সম্প্রতি হাওরে মাছের যে জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে তা অনেকটা লাঘব হবে সেইসাথে ওই এলাকার জেলেদের আয়েরও একটি ভাল সংস্থান হবে।