মঙ্গলবার ● ২২ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » কৃষি » রাঙামাটি শহরের জনদুর্ভোগ দেখার দায়িত্ব কার ?
রাঙামাটি শহরের জনদুর্ভোগ দেখার দায়িত্ব কার ?

ষ্টাফ রিপোর্টার :: বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাংশে অবস্থিত  পার্বত্য  জেলা রাঙামাটি৷ রাঙামাটি পার্বত্য জেলাটি পাহাড়, দক্ষিণ এশিয়ার  কর্ণফুলী  কৃত্রিম লেক, ঝর্ণা ও বনভুমিতে পরিপূর্ণ প্রাকৃতিক সৌন্দয্যে  অপরুপ  শোভামন্ডিত পর্যাটন নগরী৷
রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সরকারী সকল ধরনের উন্নয়নমুখী কর্মকান্ড যেমন   যাতায়াত, কৃষি, শিক্ষা, ভৌত অবকাঠামো নির্মান, সমাজকল্যাণ, ক্রীড়া ও   সাংকৃতিক খাতসহ বিভিন্ন উন্নয়নমুলক উদ্যোগ গ্রহন করা ও বাস্তবায়ন করার   জন্য রয়েছে ; পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম   আঞ্চলিক পরিষদ, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ, রাঙামাটি জেলা প্রশাসন,   রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ ও রাঙামাটি পৌরসভা ইত্যাদি ৷

কিন্তু রাঙামাটি শহর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে জনদুর্ভোগ ও পৌর এলাকার বেহাল চিত্র ৷
বিগত তিন মাস যাবত্ শহরের কলেজ গেইট এলাকায় রাঙামাটি - চট্টগ্রাম মূল   সড়কের ওপর বিটিসিএল এর অপটিক্যাল ফাইভার লাইনের ম্যানহোল এর ডাকনার উপরের   অংশ ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে আছে ৷ যে কোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা ৷ পাশ্বে মাছ ও   সবজি বাজারের সমস্ত ময়লা পানি বিটিসিএল এর ম্যানহোল পড়ে এলাকার পরিবেশ   দুষিত হচ্ছে ৷ এলাকার জনসাধারন জননিরাপত্তার জন্য পুরাতন টায়ার, বাঁশ ও লাল   কাপড় দিয়ে স্থানটি চিহ্নিত করে দিয়েছেন৷ যেন বিষয়টি দেখার কেউ নাই ৷ যিনি   রাঙামাটি বিটিসিএল এর বিভাগীয় প্রকৌশলী অহিদুল ইসলাম এসব দেখার দায়িত্বে   আছেন তিনি প্রতি দিন তার অফিসে আসা যাওয়া করেন সেই কলেজ গেইটের ওপর দিয়ে,   তিনি এবিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি নয়৷ জনদুর্ভোগ নিয়ে এবং রাষ্ট্রিয় সম্পদ   অপটিক্যাল ফাইভার নষ্ট হচ্ছে বিধায়  মুঠোফোনে যোগযোগ করে কথা হয়, চট্টগ্রাম   - রাঙামাটি অপটিক্যাল ফাইভার লাইন দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা সহকারী   প্রকৌশলী হাফিজুর রহমানের সাথে ৷ তিনি বলেন, রাঙামাটি বিভাগীয় প্রকৌশলী   কোন দায়িত্ব পালন করছেন না, অপটিক্যাল ফাইভার বিষয়ে যে কোন কিছু সমস্যা হলে   রাঙামাটি’র বিভাগীয় প্রকৌশলী বার বার চট্টগ্রাম অফিসে যোগাযোগ করতে  বলেন,  তাহলে তিনি রাঙামাটিতে কি গ্রাহক সেবা দিচ্ছেন ! এক পর্যায়ে হাফিজুর  রহমান  বলেন, ঢাকনা তৈরী করা নাই, লোহার তৈরী ম্যানহোলের ঢাকনা পরিমাপ করে  তৈরীর  জন্য পাঠানো হয়েছে ৷
ভেদ ভেদী বাজার এলাকায় দেখা যায় তবলছড়ি - ভেদ ভেদী সড়কের দু’পাশে   মুরগি,মাছ ও সবজির দোকান খুলে বসে আছেন ব্যবসায়ীরা, ঐ রাস্তা দিয়ে নোংরা ও   দুর্গন্ধে চলাচল করা অসহনীয় ৷
এছাড়া রাঙামাটি - চট্টগ্রাম সড়কের দু’পাশে ভেদ ভেদী বাজার, ভেদ ভেদী সড়ক ও  জনপথ  বিভাগের আবাসিক এলাকা ও কলেজ গেইট সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্যালয়ের  জায়গাসহ ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র ক্ষমতাধর নেতারা  অবৈধভাবে  ভাগবাটোয়ারা করে সরকারী ভুমি বেদখল করে দোকানপাট ও ঘর বাড়ি  নির্মান করেছেন  বলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিভাগীয় তত্বাবধায়ক এর অভিযোগ। কলেজ গেইট টিটিসি রাস্তার মুখে দীর্ঘ দিন যাবত্ জনসাধারনের চলাচলের  বিঘ্ন  সৃষ্টি করে মুল সড়কের ওপর বড় বাঁশ ও গাছের খুটি মজুদ করে অবৈধ ভাবে   ব্যবসা করছে একটি চক্র ৷
রানী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যায়লের পূর্বপাশে জনসাধারনের চলাচলের জন্য নির্মীত ফুটপাত দখল করে বড় বাঁশ এর ব্যবসা করেছে আরেকটি মহল ৷
রাজবাড়ী এলাকায় ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়ের মালিকাধীন গাছের স মিল এ  প্রবেশ  পথে জনসাধারনের চলাচলের জন্য নির্মীত ফুটপাত ভেঙ্গে কাঠ বোঝাই ট্রাক  স  মিলে যাতায়াতের জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া রাস্তা তৈরী করা হয়েছে ৷ কাঠ   বোঝাই ট্রাক গুলির অতিরিক্ত চাপের কারনে রাঙমাটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল   অধিদপ্তরের পানি লাইন গুলি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, এতে প্রায় প্রতিদিন পানির  পাইপ  গুলি মেরামত করতে হয় বলে রাঙমাটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের   প্রকৌশলী জানান৷ তিনি বলেন ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় কাঠ ব্যবসা করছেন   কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থ পানির লাইন মেরামত করতে হচ্ছে সরকারী টাকায়,  ক্ষতিগ্রস্থ  পানির লাইন মেরামত করতে সরকার বা জেলা পরিষদ হতে জনস্বাস্থ্য  প্রকৌশল  অধিদপ্তরকে যেই টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয় তা সীমিত ৷ রাজবাড়ী এলাকায়  ব্যারিষ্টার  দেবাশীষ রায়ের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের কারণে গ্রাহকরা ঠিকমত  পানি সরবরাহ  পান না, পানি লাইনের পাইপ গুলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে হাজার হাজার  লিটার পানি নষ্ট  হচ্ছে ৷ শহরের মুল রাস্তায় পানি পড়ে রাস্তা বা রাঙামাটি -  চট্টগ্রাম যান  চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি ছাড়াও পৌর এলাকায় পায়ে হাটা  জনসাধারনের চলাচলে  সমস্যার কারন হয়ে দাড়িয়েছে ৷ পর্যটন শহরের সৌন্দয্য   নষ্ট হচ্ছে এবং সড়কটি  মেরামতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে ৷ এখানেও স্থানীয় প্রশাসন  নীরব ৷
বনরুপা বাজারের প্রবেশ পথে বনবিভাগের রেষ্ট হাউজের সামনে যত্রতত্র  আবর্জনা  ও মলমূত্র ত্যাগ করে পর্যটন নগরী রাঙামাটি শহরের প্রাণ কেন্দ্র বলে  খ্যাত  বনরুপা এলাকার পরিবেশ দুর্গন্ধে ভারী হয়ে পড়েছে ৷ কিন্তু প্রশাসনের  কর্তা  ব্যাক্তিদের নাকে সে দুর্গন্ধ লাগার কথা নয় কারণ তারা তো এসি গাড়িতে   জানালা বন্ধ করে সে পথে যাতায়াত করেন ৷

কাঠাঁলতলী এলাকায় রাঙমাটি চারুকলা একাডেমীর বিপরীতে মেসার্স হাকিম  এন্ড  সন্স নামের হার্ডওয়্যার দোকান চলছে জনসাধারণের চলাচলের ফুটপাতের ওপর ৷   পৌরসভা কর্তৃপক্ষ, আইন শৃখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় জেলা প্রশাসন   নির্বিকার৷
রাঙামাটি সমবায় সমিতি অফিসের বিপরীতে প্রায় প্রতিদিন এসএ পরিবহনের  কার্গো  ভ্যান গুলি আসবাবপত্র উঠানোর জন্য রাস্তার পাশে গাড়ি পার্কিং  করে অহেতুক  যানজট সৃষ্টি করছে ৷
রিজার্ভবাজার, তবলছড়ি ও রাঙামাটি শহরের রাসত্মার দু’পাশে  পায়ে  হাটার  রাস্তা গুলি দখল করে আছে ইটের স্তুপ, বালির স্তুপ, বাঁশ,গাছ ও   ফার্নিচার  ব্যবসায়ীদের তৈরীকৃত আসবাবপত্র ইত্যাদি ৷
রাঙামাটি পৌরসভার নির্বাচিত ২য় চেয়ারম্যান কাজী নজরুল ইসলাম জানান   তত্কালিন সরকার প্রধান রাঙামাটি পরিদর্শন কালিন অনগ্রসর এলাকা হিসাবে   প্রধান্য দিয়ে ১৯৭৭ - ১৯৮৩ সালের ভিতর ২৯ - ৩২ লক্ষ টাকায় তত্কালিন সড়ক ও   জনপথ বিভাগের সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী মোক্তাদের বেলাল রাঙামাটি শহরের   ফুটপাতটি জনসাধারনের চলাচলের জন্য তৈরী করেন ৷
ফুটপাত গুলি তৈরীর পর ৩২ বছর যাবত্ কোন সংস্থা বা প্রশাসন এই ফুটপাত  গুলি  সম্প্রসারণ বা সংস্কার করে নাই ৷  এখন শহরের ভিতর চলাচলের ফুটপাত গুলি   বেদখল হয়ে গেছে ৷
একদিকে স্থানীয় প্রশাসন ঢাকঢোল পিটিয়ে রাঙামাটি জেলাকে পর্যটন নগরী ঘোষণা করেছে অথচ শহরের রাস্তাঘাট গুলি চলাচলের অযোগ্য ৷
দেশী ও বিদেশী পর্যটকরা হাজার হাজার টাকা খরচ করে অনেক আশা নিয়ে  রাঙামাটি  জেলার দর্শনীয় স্থান গুলি দেখতে আসেন পাহাড়, লেক, ঝর্ণা ও বনভুমির   প্রাকৃতিক সৌন্দয্যে৷ কিন্তু জেলা শহরের বর্তমান যে দন্যদশা ! লেকের পাড়   গুলি অবৈধ স্থাপনায় এবং ময়লা আবর্জনায় ভর্তি ৷
সোমবার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা  মাসিক  সভায় বলেছেন, জেলার সামগ্রীক উন্নয়নের পাশাপাশি এশিয়ার বৃহত্তম কাপ্তাই  হ্রদটি  রক্ষা করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য৷ এটি আমাদের জন্য  একটি বড়  সম্পদ ৷ তাই হ্রদটিকে দূষণের হাত থেকে রক্ষায় সকলকে সচেতন হতে  হবে৷ তিনি  জনসাধারণ এবং বিভিন্ন মৌসুমে বেড়াতে আসা পর্যটকদেরকে  হ্রদ  দূষণ থেকে বিরত  থাকারও আহ্বান জানান ৷
কিন্তু রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে এই পর্যন্ত শহরের   সৌন্দয্যবৃদ্ধি ও পর্যটকদের জন্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিকরণে ভুমিকা   উল্লেখযোগ্য নয় ৷
রাঙামাটি জেলার অভিজ্ঞ মহলের প্রশ্ন জেলার মুল প্রশাসন কারা ? রাঙামাটি শহরের জনদুর্ভোগ দেখার দায়িত্ব কার ?
আপলোড : ২১ ডিসেম্বর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় : রাত ১০.২০ মিঃ

      
      
      



    আত্রাইয়ে পাট চাষে দিন দিন আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা    
    কাউখালীতে কৃষি অধিদপ্তরের পার্টনার ফিল্ড স্কুল কংগ্রেস অনুষ্ঠিত    
    কাউখালীতে জাতীয় ফল মেলা অনুষ্ঠিত    
    ঝালকাঠিতে আম বাগান হয়ে উঠেছে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত    
    বাগেরহাটে লবণাক্ত পতিত জমিতে মাঠজুড়ে সূর্যমূখীর হাঁসি ঝিলিক    
    আত্রাইয়ে বেড়েছে পেঁয়াজের বীজ চাষ    
    শরীরের জন্য পুষ্টি, তাপ ও শক্তি যোগাতে পুষ্টিকর খাবারে কোনো বিকল্প নেই : মনিরুজ্জামান খান    
    ফটিকছড়িতে বোরো চাষে নারী শ্রমিকরা    
    রাউজানে সরিষা ক্ষেতে হলুদের হাতছানি    
    সুরাইয়া বিলকিসের বিষমুক্ত ছাদ বাগান