শনিবার ● ২ মে ২০২০
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » করোনায় ভালো নেই মৃৎশিল্পের কারিগররা
করোনায় ভালো নেই মৃৎশিল্পের কারিগররা
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ভালো নেই নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মৃৎশিল্পীরা। উপজেলার ছোট যমুনা নদীর তীরবর্তী দাঁড়িয়ে থাকা ভবানীপুর পালপাড়া যেন শিল্পীর তুলিতে আকাঁ একটি স্বর্ণালী ছবি। উপজেলার ভবানীপুর, রাইপুর, মিরাপুর, সাহেবগঞ্জ, বহলা, পাঁচুপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য কুটিরের নয়নাভিরাম মৃৎ শিল্পীদের বাসস্থান। যা সহজেই যে কারোর মনকে পুলকিত করে। আর এ মৃৎশিল্প’র ঐতিহ্য আঁকড়ে থাকা পাল বংশের লোকদের টিকে থাকা যেন কঠিন হয়ে পড়েছে।
এক সময় এ গ্রামগুলিতে মৃৎশিল্প’র জৌলুস ছিল। এ শিল্পে জড়িয়ে ছিল এখানের শতাধিক পরিবার। হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার কষ্টে-শিষ্টে তাদের পূর্ব-পুরুষদের এ পেশা ধরে রেখেছেন। কিন্তু বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারনে সম্পুর্নরুপে বন্ধ হয়ে গেছে এ মাটির কাজ। তাই এই কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই হতাশা হয়ে পড়েছে।
এক সময় উপজেলার এসব গ্রামসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার পরিবারও প্রত্যক্ষভাবে এ শিল্পের সাথে জড়িত ছিল। পালরা খোলা, হাড়ি, পাতিল, কলসি, ব্যাংক, পিঠা তৈরির ছাঁচ, পুতুলসহ ছোট-ছোট খেলনা ইত্যাদি সব জিনিসপত্র তৈরি করত। এখানকার তৈরি মৃৎশিল্পের অনেক সুনাম ও সুখ্যাতি থাকলেও এখন শুধুমাত্র দধির পাত্র ও পিঠার খোলা তৈরি করে কোন রকমের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এ অঞ্চলে খোলা পাত্রের কদর বেশী রয়েছে।
একটি খোলা তৈরিতে মাটি ও পোড়ানো বাবদ প্রায় ৫ টাকা খরচ হলেও তা বাজারে বিক্রি হয় ১০ টাকা। এর মধ্যেই রয়েছে শ্রম ও মাল বহনের খরচ। ফলে লাভের মুখ তারা দেখে না। অথচ ঐ একটি খোলা এক হাত ঘুরে বাজারে খুচরা ক্রেতা কিনছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। ফলে সহজেই অনুমেয় মূল মুনাফা চলে যাচ্ছে মধ্যস্বত্ব ভোগীদের হাতে। ন্যায্য দাম না পাওয়ায় মৃৎশিল্পীরা এ পেশার প্রতি হতাশ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান প্রজন্ম এ ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে।
মৃৎশিল্পের নিপুণ কারিগরেরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে এখন অনেকটা অসহায় ও মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেক পুরুষ এ পেশা ছেড়ে ভিন্ন পেশায় চলে গেছেন। মাটির তৈরি জিনিসপত্র আগের মত দামে বিক্রি করতে পারছে না। মাটির এ সকল পাত্রের চাহিদাও আগের মত নেই।
রাইপুর গ্রামের মৃৎশিল্পের কারিগর বিপ্লব কুমার পাল বলেন, ‘লাভ লসের হিসাব করি না। বাপ-দাদার কাজ ছাড়ি কি করি। করোনার আমাগো সকল কাজ বন্ধ হইয়া গেছে। আমরা এখন অসহায় জীবন যাপন করছি। তিনি আরো বলেন, ‘পূর্বপুরুষের পেশা বাঁচিয়ে রাখতে গিয়ে করোনায় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটছে আমাদের।
এ ব্যাপারে উপজেলার ভবানীপুর পালপাড়া গ্রামের মৃৎশিল্পী শ্রী ধিরেন্দ্রনাথ পাল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নদী-খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় এখন মাটি সংগ্রহে অনেক খরচ করতে হয় তাদের। এ ছাড়াও জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন ও বিক্রির সঙ্গে মিল না থাকায় প্রতিনিয়ত লোকসান গুনতে হয় তাদের। তার মধ্যে আবার করোনার প্রভাব পড়েছে এখন কাজ কর্ম সব বন্ধ আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি।
এক কালের ঐতিহ্যের মাটির তৈরি বাসন, হাড়ি, পাতিল, কলসি, ব্যাংক, পিঠা তৈরির ছাঁচ, পুতুল এখন প¬্যাস্টিকের দখলে। ফলে উপজেলার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পের জৌলুস আর নেই। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এ শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। ঐতিহ্যের কারণেই মৃৎশিল্পকে টিকিয়ে রাখা দরকার বলে মনে করেন উপজেলার সচেতন মহল।
আত্রাইয়ে কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়ালেন এ্যাড.অমর ফারুক সুমন
আত্রাই :: নওগাঁর আত্রাইয়ে করোনা ভাইরাসের কারনে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ালেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক সুমন।
তিনি তার নিজ গ্রাম আত্রাই উপজেলার রসুলপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অসহায় দরিদ্র খেটে খাওয়া ও কর্মহীন মানুষের পাশে থেকে নিরলস ভাবে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে আসছে। সন্ধ্যায় বিতরণ করছেন ইফতার সামগ্রী।
তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকালে আহসানগঞ্জ স্টেশন চত্তরে নিজ উদ্যোগে ২৩০ জন কুলি, হোটেল ও চাস্টল শ্রমিক, হকার, তৃতীয় লিঙ্গ, দুস্ত মহিলা ও শ্রমিকদের মাঝে চাল, ডাল, আলু ও নগদ অর্থ বিতরণ করেন নওগাঁ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক সুমন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওমর ফারুক সুমন বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। যেহেতু করোনা সংকট শিথিল না হওয়া পর্যন্ত সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারছেন না। তাই সরকারকে এ দুর্যোগ মোকাবেলায় সমাজে বৃত্তবানদের সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহবান জানান তিনি।
আত্রাইয়ে কৃষকের কষ্টের ফসল কেটে বাড়ি পৌচ্ছে দিলেন ছাত্রলীগ
আত্রাই ::করোনা পরিস্থিতিতে ধান কাটা শ্রমিক সঙ্কটে বিপাকে পড়া নওগাঁর আত্রাইয়ে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগ।
শনিবার উপজেলার ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান রিংকু’র নেতৃত্বে দল বেঁধে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কোলা গ্রামের কৃষক সখিন ফৌজদার এর ১বিঘা জমির ধান কেটে দেন। সকাল ৮টা হতে বেলা ১টা পর্যন্ত ওই কৃষকের জমির ধান কেটে বাড়িতে পৌছে দেন।
আত্রাই ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান রিংকু জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আহবানে এবং আত্রাই-রানীনগরে অভিভাবক, প্রাণপ্রিয় জননেতা ইসরাফিল আলম এপির অনুপ্রেরণায় ও জেলা ছাত্রলীগের নির্দেশনায় আমরা নিজ এলাকার কৃষদের পাশে দাঁড়িয়েছি। কোন কৃষক যদি মনে করেন ধান কাটতে সহযোগিতা লাগবে। আমরা কৃষক এই সহযোগিতা চাইলে ধান কেটে দিতে প্রস্তুত আছি।
এদিকে ছাত্রলীগের এই মহতি উদ্যোগকে সর্বমহলের বেশ প্রশংসিত হয়েছে। তাদের স্বাগত জানিয়েছেন আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠন এবং সচেতন মহল।