শিরোনাম:
●   ইউএসএ বাংলা সাহিত্য সম্মেলনে আসতে শুরু করেছেন দুই বাংলার কবি সাহিত্যিকগন ●   ঈশ্বরগঞ্জে মহিলা এমপি ব্যরিস্টার ফারজানাকে বরণ ●   মানিকছড়িতে ছাদ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু ●   অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা ●   নিরাপদ সড়কের প্রয়োজনীয়তা ●   সাজেকে নিহত ৫ শ্রমিকের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম ●   রাঙামাটিতে ইউপিডিএফের ডাকা অর্ধদিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধ পালিত ●   সীমান্ত হত্যাকাণ্ড ও বাংলাদেশ - ভারত সম্পর্ক ●   আইন-শৃঙ্খলার ব্যত্যয় হলে সরকারের উন্নয়ন কাজেরও ব্যত্যয় ঘটবে রাঙামাটিতে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ●   তীব্র দাবদাহে মধ্যে কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার প্রক্রিয়া করেছে বন বিভাগ ●   কাপ্তাই সড়কে রাতেও চলছে চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ●   রাঙামাটিতে চোরাই কাঠ ও বিদেশী সিগারেটসহ ৩০ লক্ষ টাকার মালামাল জব্দ করেছে দক্ষিণ বন বিভাগ ●   পাহাড়ি দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে সাংবাদিক এর বাগান বাড়ি পুড়ে দেয়ার আজ ২ মাস : ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা প্রকাশ ●   আঞ্চলিক পরিষদসহ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ৩৫ বছর পরিচালিত হচ্ছে অনির্বাচিতদের দ্বারা ●   রাঙামাটির চার উপজেলায় প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ : ৮ মে নির্বাচন ●   কল্পনা অপহরণ মামলা রাঙামাটি কোর্টে ডিসমিস করায় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ক্ষোভ প্রকাশ ●   নিরীহ মানুষকে গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে ২৫ এপ্রিল রাঙামাটিতে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ ●   আনসারের অস্ত্রলুটের ঘটনায় রুমা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ৭ জন কারাগারে ●   বান্দরবানে গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ ●   নিজের অস্ত্র দিয়ে মাথায় গুলি করে আনসার সদস্যদের আত্মহত্যা ●   কাপ্তাই হ্রদকে বাঁচাতে ও বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে হ্রদের ড্রেজিং করা দরকার ●   রাবিপ্রবিতে ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয় সভা ●   ঝালকাঠি ২ উপজেলায় তিন পদে ২৪ জনের মনোনয়ন দাখিল ●   রুমা-থানচি ব্যংক ডাকাতির মামলায় কেএনএফ এর আরও ৫ জন রিমান্ডে ●   অপসংবাদিকতা রোধে সাংবাদিকদের ডাটাবেজ প্রণয়নে কাজ করছে প্রেস কাউন্সিল ●   খাগড়াছড়িতে বলি খেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ●   প্রচন্ড তাপদাহে পানির জন্য চলছে হাহাকার : পানি শূন্য কুষ্টিয়ার গড়াই নদী ●   ১৫ দিনের ঈদযাত্রায় ২৯৪ জনের মৃত্যু ●   নিত্যপণ্যের তুলনায় তামাকপণ্য সস্তা : দাম বাড়ানোর দাবি ●   তীব্র দাবদাহে ৭ দিন বন্ধ দেশের সকল স্কুল,কলেজ ও মাদ্রাসা
রাঙামাটি, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
সোমবার ● ২৮ ডিসেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » করোনা, ভ্যাকসিন রাজনীতি ও জনস্বাস্থ্যর সুরক্ষার প্রশ্ন : সাইফুল হক
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » করোনা, ভ্যাকসিন রাজনীতি ও জনস্বাস্থ্যর সুরক্ষার প্রশ্ন : সাইফুল হক
৬০০ বার পঠিত
সোমবার ● ২৮ ডিসেম্বর ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

করোনা, ভ্যাকসিন রাজনীতি ও জনস্বাস্থ্যর সুরক্ষার প্রশ্ন : সাইফুল হক

ছবি : সাইফুল হকবলা হচ্ছে বাংলাদেশেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। প্রথম ঢেউ এর বিপর্যয় সামাল দিতে না দিতেই আমরা আবারও বিপর্যয়ের মধ্যে নিপতিত হয়েছি। সরকারি ভাষ্যেই এখন প্রতিদিন করোনা সংক্রমনে গড় মৃত্যু ৩০ এর অধিক; আর সনাক্ত দেড় হাজারের বেশী। আগামী ক’মাস এই গুরুতর পরিস্থিতি অব্যাহত থাকারই আশংকা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সবাই এ ধরণের পরিস্থিতির শংকা প্রকাশ করে সরকারকে বারেবারে সতর্ক করলেও পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সমন্বিত সার্বিক তৎপরতা দেখা যায়নি। দেশে প্রথম করোনা সনাক্তের পরও দশ মাস পার হয়েছে। কিন্তু করোনার পরীক্ষা ও চিকিৎসার উপযুক্ত ব্যবস্থা এখনও গড়ে তোলা হয়নি। আমাদের উপজেলা, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত স্বাস্থ্য-চিকিৎসার যে অবকাঠামো রয়েছে তার উপর ভিত্তি করেই সারা দেশে এই মহামারীজনিত পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গড়ে তোলা যেত; আমাদের ডাক্তার, নার্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত টেকনিশিয়ানসহ যে পরিমান প্রশিক্ষিত জনশক্তি ছিল তাকেও এ পর্যন্ত যথাযথভাবে কাজে লাগানো হয়নি।

উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে দেশে করোনা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপসমূহ এখনও নেয়া হচ্ছে প্রধানত: রাজনৈতিক বিবেচনায়, প্রশাসনিকভাবে। এ সংক্রান্ত সরকারি পরামর্শক কমিটিসমূহের তৎপরতা ও সুপারিশ সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না। ডাক্তার ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত এসব কমিটিসমূহের মতামত ও পরামর্শসমূহ বিবেচনায় ও আমলে নেয়া হচ্ছে- একরকম কোন আলামতও দেখা যাচ্ছে না। প্রায় বছর গড়িয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পদক্ষেপ, পরীক্ষা ও চিকিৎসায় রয়েছে সমন্ববয়হীনতা, অব্যবস্থাপনা, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রিতা ও সর্বোপরি উপর থেকে নীচ পর্যন্ত এক বেহাল দশা। করোনার পরীক্ষা ও চিকিৎসাসহ গোটা ব্যবস্থার উপরই এখনও রয়েছে এক অভুতপূর্ব গণঅনাস্থা ও গণনৈরাশ্য। হাসপাতালগুলোকেই এখন বিস্ময়করভাবে অনিরাপদ মনে করা হচ্ছে। একান্ত বাধ্য না হলে বা জীবনাশংকা না থাকলে মানুষ হাসপাতালে যাচ্ছে না। এর সাথে যুক্ত হয়েছে ভুল চিকিৎসা আর ব্যয়বহুল চিকিৎসা। চিকিৎসার এই বিশাল ব্যয়ভারের আতংকেও মানুষ হাসপাতাল বিমুখ হয়ে পড়েছে।

দুনিয়ার অন্যান্য দেশের মত এই মহামারী আমাদের সমগ্র স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভয়ংকর ও দুর্বল ব্যবস্থাকে একেবারে উদোম করে দিয়েছে সন্দেহ নেই। রাজনৈতিক বিবেচনায় কতিপয় কথিত হাসপাতালকে লাইসেন্স ছাড়াই করোনা পরীক্ষার অনুমোদন, করোনার হাজার হাজার ভূয়া রিপোর্ট, করোনার পরীক্ষা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কেনাকাটায় সীমাহীন জালিয়াতি, দুর্নীতি, আই.সি.ইউসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি নিয়ে প্রায় অবিশ্বাস্যরকম ব্যবসা ও স্বেচ্ছাচারীতা, রাতারাতি কতিপয় হাসপাতাল, ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রভৃতি অনাচার এখনও আমাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হয়েই আছে। এখনও এর উল্লেখযোগ্য ইতরবিশেষ হয়নি। এতসব ঘটনার পরও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়নি; বহাল তবিয়তে আছেন গুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ কমকর্তারা। ভৎসনা বা বরখাস্ত করার পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী বরং পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাফল্যের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের প্রশংসাই করেছেন। আমাদের রাজনৈতিক পরিমন্ডলে দায় নেবার কোন সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি। করোনা দুর্যোগেও নজিরবিহীন দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও ব্যর্থতার জন্য কাউকে বিশেষ কোন দায়দায়িত্ব নিতে হয়নি। মিডিয়ায় আলোচিত দুই/তিনটি ঘটনা যে গোটা চিত্রের খন্ডাংশ মাত্র সচেতন যে কেউই তা বুঝতে পারেন।

দেশের আইন প্রণয়ন বিভাগ তথা জাতীয় সংসদের দিক থেকে এসব বিষয় দেখভালের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্বাস্থ্য বিষয়ক সংসদীয় কমিটি রয়েছে। কিন্তু গত ৯ মাসে এই সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির একটি মিটিং করারও প্রয়োজন অনুভূত হয়নি। কেন তারা একটি বৈঠকও করলেন না, তাহলে এই ধরনের কমিটির উপযোগিতা ও প্রয়োজনটাই বা কি এসব প্রশ্ন কারা উত্থাপন করবে? অনুমান করা যায় এই ব্যাপারে কমিটির সদস্যরা তাদের মাসিক পারিতোষিক নিতে নিশ্চয়ই অনীহা দেখাননি। এত বড় একটি বৈশ্বিক ও জাতীয় দুর্যোগে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটি যদি তাদের ন্যূনতম সামাজিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন না করেন তাহলে বাকি কমিটিসমূহের কি দশা তা অনুমান করা কঠিন নয়। এটা পুরো ব্যবস্থার দায় দায়িত্বহীনতার একটি নজির মাত্র।

এখন শুরু হয়েছে করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে মাতামাতি। এই মাতামাতি নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় সন্দেহ নেই। ভ্যাকসিনকে কেন্দ্র করে রাজনীতি-রাজনৈতিক অর্থনৈতিক তৎপরতাও প্রবল। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের এই ব্যবসা কারা নিয়ন্ত্রণ করবে, কোন কোন প্রতিষ্ঠান এর উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করবে তা নিয়ে ইতিমধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। “ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ” শব্দগুচ্ছও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে। ধনী দেশসমূহ বিশাল অংকের অর্থ দিয়ে আগেভাগেই ভ্যাকসিন ‘বুক’ করে রাখছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ক’টি দেশে ইতিমধ্যে এর প্রয়োগও শুরু হয়েছে। ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে উৎসাহব্যঞ্জক নানা দাবি করা হলেও কার্যকারিতার বাস্তব প্রমান পেতে বিশ্বের আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আর ভ্যাকসিন কারা আগে পাবে তা নিয়ে স্পষ্টতই রয়েছে শ্রেণীপক্ষপাত আর নানা ধরণের বাদবিচার। মানুষকে কিনে ভ্যাকসিন নিতে হলে স্বল্প আয়ের গরী মানুষ যে প্রান্তিক অবস্থায় থাকবে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। আর এর সাথে যুক্ত হয়েছে এই বড় প্রচারণা যে, শ্রমজীবী-মেহনতি স্বল্পআয়ের মানুষের রয়েছে তুলনামূলকভাবে বেশী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এর অর্থ হচ্ছে শ্রমজীবী-মেহনতি সাধারণ মানুষের দেরীতে ভ্যাকসিন পেলে, এমনকি তাদের ভ্যাকসিন না পেলেও বড় কোন ক্ষতি হবে না-এই ধরণের ভয়ংকর মনভাব।

বাংলাদেশ কিভাবে ভ্যাকসিন আমদানি করবে, ট্রায়াল বা প্রয়োগ করবে এখনও এই ব্যাপারে দেশের নাগরিকদেরকে সুস্পষ্ট কোন ধারণা দেয়া হয়নি। এই ব্যাপারে রাজনৈতিক বিবেচনা থেকে সিদ্ধান্ত নেবার কোন অবকাশ নেই। অপ্রকাশ্য কোন চাপ বা দায় থেকে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবারও সুযোগ নেই। বাংলাদেশের বিশেষ বাস্তবতায় এখানকার আবহাওয়া, পরিবেশ, বিশেষ করে এখানে ভাইরাসের জিনগত বিবর্তন মাথায় রেখে কোন কোন ভ্যাকসিন আমাদের জন্য বেশী উপযোগি হতে পারে- সংশ্লিষ্ঠ গবেষক ও বিশেষকদের সম্মিলিত মতামতের মাধ্যমেই এই ধরণের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। সম্ভব দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিপূর্ণ রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ভ্যাকসিন আমদানি ও বিনামূল্যে সকলের জন্য সহজলভ্য করা জরুরী।

বাস্তবে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন কবে আমদানি ও ব্যবহার করা যাবে সে অপেক্ষায় থেকে ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় এখনকার জরুরী কাজসমূহকে ছত্রভংগ ও বেহাল অবস্থায় ফেলে রাখা যাবে না। তাহলে আগামী ক’মাসে আমাদেরকে অকালে আরো অসংখ্য প্রাণ হারাতে হবে। বিনামূল্যে জনগণকে, বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষকে মাসক সরবরাহ করা, বিনা পয়সায় করোনার পরীক্ষার পরিধি বৃদ্ধি, দ্রুততম সময়ে নমুনা প্রদান ও রিপোর্ট দেয়া, সারাদেশে হাসপাতালে আইসিইউ শয্যাবৃদ্ধি, অক্সিজেন প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ চিকিৎসা ও হাসপাতালের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার কার্যকরি পরিবর্তন ঘটানো জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা ও সংবেদনশীলতা থাকলে তুলনামুলকভাবে স্বল্প সম্পদ ও জনবল নিয়েও যে করোনা মহামারীর মত দুর্যোগ সফলভাবে সামাল দেয়া সম্ভব পাশের দেশ ভারতের কেরালা রাজ্য, ভিয়েতনামসহ আরো কিছু ¯ল্প আয়ের দেশ তা ইতিমধ্যে প্রমান করেছে।

এটা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই যে আমাদেরকে আরো বহুদিন কোভিড ভাইরাসের সাথে বসবাস করতে হবে। আগামীতে এই ধরণের প্রাণঘাতি নতুন নতুন ভাইরাসের মুখোমুখি হবারও আশংকা রয়েছে। এর সাথে রয়েছে বিদ্যমান নানা ধরণের রোগবালাই। জনস্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে কিভাবে আমরা এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাব-এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সুস্থ্য মানুষকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসাবে বিবেচনা করে বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার দর্শন ও কাঠামোকে পুর্নবিন্যাস করাকে জাতীয় অগ্রাধিকার হিসাবে গ্রহণ করা জরুরী। প্রয়োজন স্বাস্থ্য সেবাকে মুনাফার পন্য হিসাবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটানো। চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিদ্যমান নৈরাজ্য ও স্বেচ্ছাচারীতা দূরীকরণে জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া।

দুনিয়ার উন্নত পুঁজিবাদী দেশগুলোর মত বাংলাদেশেও করোনা দুর্যোগ বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থা, বিশ্বমানের আধুনিক হাসপাতালসমূহের অকার্যকারিতা ও অসহায়ত্ব চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। বাস্তবে করোনা মোকাবেলায় ব্যয়বহুল এসব আধুনিক হাসপাতাল তেমন কোন কাজে লাগেনি। এই মহামারী বিদ্যমান পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থার আত্মঘাতি প্রবণতাই কেবল তুলে ধরেনি, একই সাথে তা উগ্র মুনাফালোভী পুঁজিতন্ত্রের গণস্বাস্থ্য বিরোধী নিষ্ঠুর ও অমানবিক চেহারাকেও নগ্ন করে দিয়েছে; খোলাসা করে দিয়েছে বিদ্যমান সভ্যতা ও উন্নয়নের স্ববিরোধীতাসমূহকে। নতুন নতুন ভাইরাসসহ এইসব সংকটের গভীরতা বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সংক্রান্ত নীতি কৌশল প্রণয়ন করা, বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদান, গণস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত অবকাঠামো সক্রিয় করা এবং সর্বোপরি দেশের প্রত্যেক মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনকে মূল্যবান মনে করে যাবতীয় পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে দেশজুড়ে গণস্বাস্থ্য আন্দোলন গড়ে তোলাও জরুরী।

সাইফুল হক
সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।
নিউ ইস্কাটন
২০ ডিসেম্বর, ২০২০।





আর্কাইভ