মঙ্গলবার ● ১৯ জুন ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে দুই গ্রামে ছিলোনা ঈদের আনন্দ
বিশ্বনাথে দুই গ্রামে ছিলোনা ঈদের আনন্দ
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: (৫ আষাঢ় ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ রাত ৯.১০মি.) পঞ্চাশোর্ধ মমতা বেগম এই বয়সে এখনও ঘর বাধঁছেন একস্থান থেকে অন্যত্র। রাক্ষুসে সুরমা নদী গিলে খেয়েছে তার সবকিছু। সহায় সম্পত্তি নদীতে হারিয়ে এখন নদী ঘেষে ঘর করলেও প্রতি বছর নদী ভাঙ্গনে তাকে ২/৩বার করে বাঁধতে হয় নতুন কুঁড়েঘর। পরিবার নিয়ে প্রতিদিন নদী ভাঙ্গনের আতঙ্কে দিন-রাত কাটছে তার। তাই কোন আনন্দই তার মুখের হারানো হাসি আর ফিরিয়ে দিতে পারছে না। বরং নতুন নতুন কষ্টের ও দুঃখের চিহ্ন ফুটে উঠছে তার চোখে মুখে। মমতা বেগমের ভাষায় ‘ভাত খাইতে পারি না, ঈদ করবো কিভাবে ‘মোরাও এক সময়ে ঈদ করছি, নতুন জামা-কাপড় ফিন্দছি, আনন্দ করেছি। এখন মোর কিছুই নাই।
চুখের পানি মুছতে মুছতে কথাগুলো বললেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের মাহতাবপুর গ্রামের মৃত এতিম আলীর স্ত্রী মমতা বেগম।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার মাহতাবপুর ও শাহপুরের প্রায় দু’শ পরিবারের মধ্যে নেই কোন আনন্দ। এ নদী ঘেষা গ্রামগুলোর শিশুদের মধ্যেও নেই ঈদ আনন্দের কোলাহল। আনন্দ না, বেঁচে থাকাই এখন এই নদীর পাড়ের মানুষের চেষ্টা। প্রতি বছরই নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারাচ্ছে তারা। প্রবাসী অধ্যষুত এ উপজেলা নামকরণ থাকলেও তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসছে না কেউ।
ভাঙ্গনের শিকার মাহতাবপুরের আব্দুস শহীদের স্ত্রী ইয়ারুন নেছা, ছয়ফুল হকের স্ত্রী রুজিনা বেগম বলেন, নদীর ভাঙ্গনে তারা নিঃস্ব। মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই তাদের। এখন তারা শূন্য ভিটেয় বসে নিস্পলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকেন নদীর দিকে।
একই গ্রামের জিয়াউল হক, রুশন আলী, বশির মিয়া, ময়না মিয়া, রুবেল মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ২/৩বার করে তাদের বসতঘরটি নদীর ভাঙ্গনে হারিয়েছেন। সারা বছরই তারা নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে দিবারাত্রি যাপন করছেন। কিন্তু জনপ্রতিনিধি বা সরকারের কাছ থেকে তারা কোন সাহায্য সহযোগিতা পাননি। আলাপুর গ্রামের আব্দুল খালিক চৌধুরী, আব্দুল মন্নান, ইদ্রিস আলী জানান, মাটির টুকরো পড়ার দৃশ্যটি দেখলে গা শিউরে উঠে। সুরমা নদীর ভাঙ্গনে কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছু।
জানা গেছে, ২০০০সাল থেকে অব্যাহত ভাঙ্গনে মাথা গোজাঁর ঠাঁই হারিয়ে গৃহহারা হয়েছেন দুই গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। নিঃস্ব পরিবারগুলো এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন। মাহতাবপুর ও শাহপুর গ্রামের শতাধিক পরিবারের বসতঘর এখন মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোন সময় এসব ঘরগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। গৃহহারা পরিবারগুলো দু-তিনবার করে অন্যত্র বাড়িঘর তৈরী করলেও নদীর ভাঙ্গন থেকে তারা রক্ষা পাচ্ছেন না। ধীরে ধীরে সেই সব বাড়ি-ঘর ও বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, বিশ্বনাথ লামাকাজী রোড হতে পরগনা বাজার হয়ে হাজারীগাঁও পর্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ পাকা সড়কটির ১কিলোমিটারের মধ্যে ৩টি স্থানে ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। যেকোন সময় পুরো সড়কটি চলে যেতে পারে নদীতে। পরগনা বাজার জামে মসজিদ, আলাপুরের শারফিনের মাজারের কিছু অংশ ও আলাপুর, আতাপুর, আকিলপুরের বেশ কিছু ফসলি জমি ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। জরুরী ভিত্তিতে এসব গ্রামকে নদী ভাঙ্গন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।
এই এলাকাকে রক্ষার জন্য গত ২০জানুয়ারী পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া দ্রুত প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কোন প্রদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এছাড়াও বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদারও মাহতাবপুর পরিদর্শন করেছিলেন।
এভাবে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের অধিকাংশ বাড়ী ঘর, স্থাপনা ও ফসলি জমি বিলুপ্ত হওয়ার আশংকা করছেন এলাকাবাসী।





রাঙামাটিতে মহান বিজয় দিবসে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির শ্রদ্ধাঞ্জলী
আগামী নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধ করতে হবে
চট্টগ্রাম পুস্তক ব্যবসায়ী ঐক্য পরিযদ নির্বাচনে অধ্যাপক প্রদীপ কুমার দত্ত বিপুল ভোটে নির্বাচিত
রাঙামাটি ঘোষণার মাধ্যমে শেষ হলো পার্বত্য বড়ুয়া কনভেনশন-২০২৫
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি-৯৭ আদ্যোপান্ত শীর্ষক আলোচনা : চুক্তিতে অসংগতি থাকায় শান্তির বদলে অশান্তি বেড়েছে
মেহেরপুর শিক্ষা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে টেন্ডার বাণিজ্যের অভিযোগ
অবিলম্বে জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী টার্মিনাল চুক্তি থেকে সরে আসুন
সংকট নিরসনে জেলা পরিষদকে উদ্যোগ নেয়ার আহবান নাগরিক পরিষদের, হরতালে সমর্থন
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে সংকট উত্তরণের প্রচেষ্টা থাকলেও তা গুরুতর সাংবিধানিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে