রবিবার ● ১ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » জনদুর্ভোগ » ভবানীপুর বাজারে অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মাণে ভগান্তিতে ব্যবসায়ীরা
ভবানীপুর বাজারে অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মাণে ভগান্তিতে ব্যবসায়ীরা
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভবানীপুর বাজারে ড্রেনের কাদা পানি ও বর্জ্যে একাকার হয়ে সৃষ্ট দুর্গন্ধে ক্রেতা, বিক্রেতা, পথচারীসহ স্থায়ী ব্যবসায়ী মহল অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা ড্রেনে নিয়মিত আবর্জনা ও নানা রকমের বর্জ্য পরার পরও এসব আবর্জনা পরিষ্কার না করার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ভবানীপুর বাজারের শত শত ব্যবসায়ী মহলকে।
এসব ড্রেনের বেশিরভাগই অপরিকল্পিত ও আবর্জনা পরিষ্কার না করার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ড্রেনের পানি পচে দুর্গন্ধ হয়ে মারাত্মকভাবে পরিবেশ দুষণ ঘটছে। দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে বিস্তার ঘটছে মশা-মাছিসহ নানা ধরনের রোগ জীবাণুর। ফলে এ সমস্ত এলাকায় নানা বয়সী মানুষের মধ্যে চর্মরোগসহ নানা ধরনের পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে বলে মনেকরছেন ব্যবসায়ী মহল।
জানা যায়, গত কয়েক বছর আগে উপজেলার ভবানীপুর বাজারের নানা কাজে ব্যবহৃত পানি ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ ব্যয় করে ড্রেন নির্মাণ করা হয়। সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা ও জনসচেতনতার অভাবে এসব ড্রেন নানাভাবে ভরাট হয়ে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকা সত্বেও সংস্কারের অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ভবানীপুর বাজারের শত শত ব্যবসায়ী মহলকে। বর্তমানে বাজারের এসব ড্রেন নির্মাণের পিছনে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় হলেও এগুলো সাধারণ মানুষের কোন উপকারে আসে না। বিশেষ করে বর্তমানে পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে বাজারের বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত পানি জমে থাকার ফলে বাজারের ব্যবসায়ীরাসহ এলাকার বাসিন্দাদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।
এ ব্যাপারে ভবানীপুর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ জানায়, ছোট্ট পরিসরে নির্মিত ড্রেনের পানি নিষ্কাশনতো হচ্ছেই না, উপরন্তু কাদা পানি ও বর্জ্যে একাকার হয়ে সৃষ্ট দুর্গন্ধে ক্রেতা সাধারণ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, মাছ বাজারের যাবতীয় মাছের পানি ড্রেনে পড়লেও ওই পানি সরানোর কোন ব্যবস্থা নাই। ড্রেনের পচা দুর্গন্ধে বাজারের সামগ্রিক পরিবেশ বিষিয়ে উঠেছে। ফলে জমাট বাঁধা মাছের পানির গন্ধে স্বাস্থ্যহানির মতো ভয়ানক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এতে শিশুরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে আমি মনেকরছি।
এ ব্যাপারে ভবানীপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল গফুর খাঁন বলেন, আমার বাজারের ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ বাজারের বিভিন্ন সমস্যার বিয়য়ে আমি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি কিন্তু তার পরও কোন কাজ হয়নি। এমনকি এ বাজারের প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকা হাট ইজারা ডাক হলেও তা থেকে কোন টাকার উন্নয়ন হয়না এ বাজারে।
এ ব্যাপারের স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, ভবানীপুর বাজার একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। এ বাজারের ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল অবস্থার কথা আমি উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশাকরছি খুব দ্রুতই এর সমাধান হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ছানাউল ইসলাম বলেন, ভবানীপুর বাজারের ড্রেনের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা সম্পর্ক আমার জানা ছিলনা। খুব দ্রুতই এর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এ দিকে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন, এসব ড্রেন নির্মাণের আগে সুবিধা-অসুবিধা, সম্ভাব্যতা ও প্রয়োজনীয়তা যাচাই করা এবং ড্রেনগুলো ব্যবহারের ব্যাপারে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা গেলে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ড্রেনগুলোর সুবিধা ভোগ করতে পারবে সাধারণ মানুষ।